________________
পূর্বাশ্রম শুনে সিদ্ধার্থ বললেন, বেশ ত। তাতে আমার আর কি অমত। তবে ওর কিছু শিখবার আছে বলে মনে হয় না। দেখনি ওর চোখের দীপ্তি। ওর যা জ্ঞান আমাদের সকলের জ্ঞান একত্র করলেও সেখানে পৌছবে না। ও ত জ্ঞানী নয়, বিজ্ঞানী।
জ্ঞানে সত্যের একটি দিকের প্রতিভাস হয়, বিজ্ঞানে সমস্ত দিকের। বিজ্ঞান তাই বিশিষ্ট জ্ঞান। তত্ত্বকে যথার্থ রূপে জানা।
সেই জানার জন্যই অনেকান্ত।
ত্রিশলা এর জবাব দিলেন না। কিন্তু অলক্ষ্যে তার একটা দীর্ঘ নিশ্বাস পড়ল। বিজ্ঞানী বলেই তার যত ভয়। ও যদি আর দশ জনের মত হত।
শেষে ত্রিশলার তাগিদেই লেখশালে যেতে হল বর্ধমানকে।
কিন্তু বর্ধমানের লেখশালে যাওয়া যেন আম গাছে আম্র-পল্লব টাঙানাে, সরস্বতীকে শিক্ষা দেওয়া, চাদকে ধবল করা, সমুদ্রে লবণ নিক্ষেপ।
কিন্তু মানুষের মন কিছুতেই সেকথা বুঝতে চায় না।
বর্ধমান গুরুগৃহে এসেছে। বসেছে আর আর বালকদের সঙ্গে। আজ হতে শুরু হবে তার বিদ্যাভ্যাস।
সহ বিদ্যামন্দিরের দ্বারে আবির্ভাব হল এক ব্রাহ্মণের। তপ্ত সােনার মত ওঁর গায়ের রঙ। মুখে একটা দিব্য বিভা। শ্রদ্ধা হয় প্রথম দর্শনেই।
আচার্য পাথ অর্ঘ্য দিয়ে তাকে ভেতরে এনে বসালেন। ব্রাহ্মণের চোখ পড়েছে গম্ভীকৃতি বর্ধমানের ওপর। তিনি বার বার তার দিকে চেয়ে দেখছেন। তারপর একসময় জিজ্ঞাসাই করে বসলেন, কে এই সৌম্যদর্শন ৰালক। রাজপুত্র বর্ধমান, বললেন আচার্য। আজই এসেছে লেখশালে।