________________
১৮
বর্ধমান মহাবীর | বর্ধমান মধ্যমা পাৰায় এসে মহাসেন উদ্যানে আশ্রয় নিলেন।
বৈশাখ ৩া দশমী। বর্ধমানের উপদেশ শুনতে দলে দলে মানুষ চলেছে। কেউ হেঁটে, কেউ মুখে, কেউ চতুর্দোলায়। কারু চিনাংতকের বসন, কেউ নিরাভরণ। পশুপক্ষীও চলেছে। আকাশ পথে দেবতারা।
বর্ধমান সেই উপদেশ সভায় সকলকে সম্বােধিত করে উপদেশ দিলেন। বললেন জীব ও অজীবের কথা, পাপ ও পুণ্যের কথা, আব ও বন্ধের কথা, সংবর, নির্জয়া ও মােরে কথা।
মানুষ যেমন কর্ম করে তেমনি ফলভােগ। সৎকর্ম করলে স্বর্গ, অসৎ কর্ম করলে নরক।
কিন্তু স্বৰ্গও কি কাম্য? মানুষ স্বর্গ কামনায় যজ্ঞ করে। যজ্ঞে পশু বলি দেয়। জীবহত্যা করে।
হিংসা কখনো ধর্ম হতে পারে না । স্বর্গ-মুখও অশাশ্বত। স্বর্গ হতেও মানুষ ভ্রষ্ট হয়। তাই মুক্তিই একমাত্র কাম্য।
জীৰ মুক্তই। অনন্ত জ্ঞান, দর্শন, বীর্য ও আনন্দ তার স্বরূপ । শুধু কর্মের আবরণ তাকে আবৃত করে রেখেছে। যেমন লাউয়ের খােল। মাটির প্রলেপ দিয়ে জলে ফেলে দিলে ডুবে যায়। কিন্তু মাটি গলে গেলেই আবার ভেসে ওঠে।
কর্মসংস্পৃষ্ট মানুষ সংসারসমুদ্রে ডুবে রয়েছে। কর্মের আবরণ। দূর করে দাও আবার ভেসে উঠবে, উবগতি লাভ করবে।
কর্মসংস্পৃষ্ট হওয়ার নামই আৰ। আবের পরিণাম বন্ধ।
সঞ্চিত কর্মের যেমন ক্ষয় করতে হবে, তেমনি নূতন কর্ম বন্ধনের নিরােধ। এরই নাম সংবর ও নির্জরা। চৌবাচ্চায় জল খালি করে দিলেই হবে না, দেখতে হবে তাতে যেন নুতন জল মে না ওঠে।
কর্ম যখন নিঃশেষে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় তখন মুক্তি।
এর সর্ব নিয়ন্তা ঈশ্বরের কল্পনা করৰার দরকার নেই কারণ তিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন বললে কে কে করেছিল, তাঁর রূপ কি সে সব প্রশ্নও তুলতে হয়।