________________
তীর্থংকর
১০। নন্দীসেন। দুই বিচিত্র জীবন। এই দুই জীবনকে বর্ধমান যেভাবে পরিচালিত করে ছিলেন তা হতে পরিস্ফুট হয়ে ওঠে তার লােকশিক্ষা দেবার পদ্ধতি, যা বাধ্য করে না উদ্বুদ্ধ করে, পরমুখাপেক্ষী করে না, নির্ভয় আনে।
শ্ৰমণ দীক্ষা গ্রহণ করার পর গুণশীল চৈত্যে রাত্রে শুয়ে আছেন রাজকুমার মেঘ। দীক্ষায় সর্বকনিষ্ঠ তাই সকলের শেষে তার শয্যা।
হঠাৎ পাদস্পৃষ্ট হওয়ায় তার ঘুম ভেঙে গেল।
সেই যে ঘুম ভাঙল, সেই ঘুম তার আর এল না। তাঁর মাথার মধ্যে নানান চিন্তা ঘুরতে লাগল। ঘুরতে লাগল কারণ তিনি যে রাজকুমার সেকথা তিনি তখনাে ভুলতে পারেন নি।
| মেঘকুমার ভাবলেন সাধুদের এ ইচ্ছাকৃত অবহেলা। বর্ধমানও কি ইচ্ছা করলে তাকে একটু ভালাে জায়গায় শুতে দিতে পারতেন
? তা নয় দিয়েছেন সকলের শেষে দরজার কাছে। তাই রাত্রে বয়ােবৃদ্ধ সাধুদের কেউ উঠে যখন বাইরে যাচ্ছেন তখন তাকে মাড়িয়ে যাচ্ছেন।
ভাবতে ভাবতে মেকুমারের মাথা গরম হয়ে উঠল। তিনি শেষপর্যন্ত নির্ণয় করলেন এভাৰে মুনিধর্ম পালন করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হবে না। তার চাইতে সংসার আশ্রমেই আবার ফিরে যাওয়া গলাে।
মেঘকুমার সেকথা বলবার জন্যই তাই পয়দিন সকালে বর্ধমানের কাছে গিয়ে উপস্থিত হলেন।
মেঘকুমারের মনােভাব বর্ধমানের অজ্ঞাত ছিল না। তাই তাকে তাঁর কাছে এসে চুপ করে দাঁড়াতে দেখে বলে উঠলেন, মেঘকুমার, তুমি একদিনেই সংযম পালনে ধৈর্য হারিয়ে ফেললে? কিন্তু তুমি ত এমন দুর্বলচিত্ত ছিলে না। তােমার পূর্বজন্মের কথা স্মরণ কর। | মেকুমারের চোখের সামনে হতে তখন যেন বিস্মরণের কালাে পদাটা সরে গেল। সেখানে ফুটে উঠল এক মি নীলাভ আলাে। সেই নীলাত আলােয় সে দেখল এক প্রকাণ্ড বন। সেই বনে যেন