________________
তীর্থংকর
কুশল, মেধাবী ও পণ্ডিত ভিক্ষু এসে থাকেন । এমন না হয়ে যায় যাতে কোনো ভিক্ষু তাঁকে কোনো প্রশ্ন করে বসেন আর তিনি তার উত্তর দিতে না পারেন। তাই তিনি আর সেই সব জায়গায় যান না ।
আর্য, এ হতেই বোঝা যায় আপনি আমার ধর্মাচার্য বিষয়ে সম্পুর্ণ অনভিজ্ঞ । লোকে তাঁকে মহাবীর বলে। তিনি নামেও যেমন মহাবীর, কাজেও তেমনি মহাবীর। তাঁর মধ্যে কোথাও ভয়ের লেশমাত্র নেই। তিনি সম্পুর্ণ নির্ভয় ও স্বতন্ত্র। মংখলী শ্রমণ, শুনুন, যাঁর কাছে দিগ্বিজয়ী পণ্ডিতেরা পরাস্ত হয়েছেন, তিনি কিনা ভয় পাবেন পান্থশালার উদরার্থী ভিক্ষুদের ? কখনো না। মহাবীর বর্ধমান এখন সাধারণ ছদ্মস্থ ভিক্ষু নন্ তিনি এখন জগৎ উদ্ধারক তীর্থংকর। ইনি যখন ছদ্মস্থ ছিলেন তখন ইনিও একান্তবাস করেছেন কিন্তু এখন যখন কেবল-জ্ঞান লাভ করেছেন তখন সেই জ্ঞান লোক কল্যাণের ভাবনায় সম্পূর্ণ নিরাসক্ত হয়ে জনে জনে বিতরণ করছেন । তাই এমন সব জায়গায় অবস্থান করেন যেখানে বহু সংখ্যক লোকের সম্পর্কে আসা সম্ভব হয়। এতে ভয়েরই বা কি আছে ? আগ্রহেরই বা কী আছে ? তাছাড়া কোথাও যাওয়া, কার সঙ্গে কথা বলা এ সমস্তই তাঁর ইচ্ছাধীন। তবে পান্থশালায় বা উদ্যানগৃহে যে আর যান না তারও একটি কারণ আছে। কারণ সেখানে ত সাধারণতঃ কুতর্কী ও অবিশ্বাসী ব্যক্তিরাই ঘোরাফেরা করে ।
তবেই আর্দ্রক, শ্রমণ জ্ঞাতপুত্র নিজের স্বার্থের জন্য প্রবৃত্তিমুখী লাভার্থী বণিকের মত হলেন না কি ?
১২
না মংখলীপুত্র, লাভার্থী বণিক পরিগ্রহ করে, জীবহিংসা করে, আত্মীয়-স্বজনকে পরিত্যাগ না করে নূতন নূতন কর্ম প্রবৃত্তিতে আত্মনিয়োগ করে । এ রকম বিষয়বদ্ধ বণিকের উপমা বর্ধমানের সঙ্গে কিছুতেই দেওয়া যায় না। তাছাড়া আরম্ভ ও পরিগ্রহসেৰী ৰণিকদের প্রবৃত্তিকে যে আপনি লাভজনক বলেছেন তাও ঠিক নয়। সে প্রবৃত্তি লাভের জন্য নয়, দুঃখের জন্য। সেই প্রবৃত্তির জন্যই না মানুষ সংসার - চক্রে পরিভ্রমণ করে। তাই তাকে কি আর লাভদায়ক বলা যায় ?