________________
তীর্থংকর
এই তত্ত্বলোচনায় গাঙ্গের সন্তুষ্ট হলেন। তিনি ভগবান পার্শ্বের চতুর্যাম ধর্ম পরিত্যাগ করে বর্ধমানের পঞ্চৰাম ধর্ম গ্রহণ করলেন । বৰ্ধমান বাণিজ্যগ্রাম হতে বৈশালী এলেন, সেই বছরের বর্ষাবাস তিনি বৈশালীতেই ব্যতীত করলেন ।
১৭৫
॥ ২১ ॥
বৈশালী হতে প্রব্রজন করে বর্ধমান মগধভূমি ও নানাস্থানে ধর্মোপদেশ দিতে দিতে রাজগৃহের গুণশীল চৈত্যে এসে অবস্থান করলেন ।
গুণশীল চৈত্যে অন্যতীধিক সাধু ও শ্রমণেরা থাকেন। তাঁরা পরস্পর বার্তালাপ করেন, পরস্পরের মত খণ্ডন ও মণ্ডন করেন । গৌতম তাঁদের সেই খণ্ডন মণ্ডন বার্তালাপ শুনে বর্ধমানকে এসে একদিন প্রশ্ন করলেন, ভগবন্, অন্যতীর্থিক শ্রমণদের কেউ বলেন শীল ( সদাচার ) শ্রেষ্ঠ, কেউ বলেন শ্ৰুত ( জ্ঞান ) শ্রেষ্ঠ । আবার অন্যরা বলেন শীল ও শ্রুত হুই-ই শ্রেষ্ঠ । সে কি রকম ?
বর্ধমান বললেন, গৌতম, অন্যতীর্থিকদের কথা ঠিক নয় । এই বিষয়ে আমার মত এই : সংসারে পুরুষ চার রকম—কেউ শীলসম্পন্ন, শ্ৰুতসম্পন্ন নয় ; কেউ শ্রুতসম্পন্ন, শীলসম্পন্ন নয়; কেউ শীল সম্পন্ন, শ্রুত সম্পন্নও ; কেউ শীল সম্পন্নও নয়, শ্রুত সম্পন্নও নয়। গৌতম যে শীলবান কিন্তু শ্রুতবান নয় অর্থাৎ যে পাপ প্রবৃত্তি হতে দূরে থাকে কিন্তু ধর্মের জ্ঞাতা নয় তাকে আমি দেশারাধক ( ধর্মের একাংশের আরাধক ) বলি । যে শীলবান নয় কিন্তু শ্রুতবান অর্থাৎ পাপ প্রবৃত্তি হতে যে দূরে নয়, অথচ যে ধর্মের জ্ঞাতা তাকে আমি দেশ-বিরাধক ৰলি । যে শীলবান ও শ্ৰুতান অর্থাৎ পাপ হতে নিবৃত্ত ও ধর্মের জ্ঞাতা তাকে আমি সর্বারাধক বলি। যে শীলবানও নয়, শ্ৰুতৰানও নয় অর্থাৎ যে পাপ হতে দূরে থাকে না ও ধর্মতত্ত্বের জাভাও নয়, তাকে আমি সৰ্বৰিয়াধক বলি ।