________________
১১২
বর্ধমান মহাবীর আপনি যখন সকলকে চারিত্র গ্রহণ করবার জন্য অনুপ্রাণিত করছেন তখন কেন নন্দীসেনকে নিরস্ত করতে চাইলেন।
প্রত্যুত্তরে বর্ধমান বললেন, গৌতম, সংসারে তিন রকমের কামী হয় : মন্দকামী, মধ্যকামী ও তীব্রকামী। মকামীর কামবাসনা অল্প। তীব্র নিমিত্ত উপস্থিত না হলে তা জাগ্রত হয় না। সে তাই সহজেই সংযম পালন করতে পারে। স্ত্রীলােক হতে সে যদি দূরে থাকে তবে তার কামবাসনা জাগ্রত হবে না। সে এমণ হতে পারে।
যার মধ্যকামী তাদের যেমন স্ত্রীলােক হতে দূরে থাকতে হয় তেমনি কঠোর তপশ্চর্যাও করতে হয়। এদেরও শ্রমণ হতে বাধা নেই যদি তারা তপঃনিত থাকে। সংসারের শতকরা পঁচানব্বই জনই মধ্যকামী।
কিন্তু যারা তীব্রকামী তাদের ভােগৰাসনা ভােগ ছাড়া উপশান্ত হয় না। তাদের শরীরের গঠনই এই রকম যে ইচ্ছে করলেও তারা কামবাসনা জয় করতে পারে না, তপশ্চর্যাতেও না। নন্দীসেন তীব্রকামী। তাই তার এখুনি শ্ৰমণ হওয়া উচিত হয়নি। নন্দীসেনের মনে শ্রদ্ধার উদয় হয়েছে তবু যখন তার কামবাসনার উদয় হবে তখন সে নিজেকে দমন করতে পারবে না। তাই তাকে আমি নিষেধ করেছিলাম।
ভদন্ত, তবে তাকে আপনি আবার শ্রমণ সঙ্গে গ্রহণ করলেন কেন?
গৌতম, এই জন্যই তাকে গ্রহণ করলাম যে সে চারিত্র হতে বিচ্যুত হলেও তীব্র শ্রদ্ধার জন্য সম্যকত্ব হতে বিচ্যুত হবে না। সেই সম্যকন্যই তাকে একদিন আবার চাষিত্রে ফিরিয়ে আনবে।
হােলও ঠিক তাই। নন্দীসেন ভিক্ষাচর্যায় গিয়ে একদিন প্রেমে পড়ে গেল এক গণিকাৰ। গণিকার চোখের জলে তার সংযমের বেড়া রইল না। সে তাই এমণবেশ পরিত্যাগ করে তার সঙ্গে জাগতিক সুখতােগে লিপ্ত হল। লিপ্ত হল কিন্তু সম্যকত্ব হতে দ্যুিত হল না। তাই যেদিন তার ভােগবাসনা উপশা হল, সেদিন সে আবার বর্ধমানের কাছে ফিরে এল।