________________
১৮
বর্ধমান মহাবীর | রাজগৃহ তখন মগধের রাজধানীই ছিল না, ছিল পূর্বভারতের একটি প্রখ্যাত শহর। সেখানে তখন রাজ করছেন শ্রেণিক বিম্বিসার। এই শ্রেণিকের প্রিয় মহিষী ছিলেন চেলনা। তিনি বর্ধমানের মামাতাে বােন ছিলেন ও এমপােপাসিকা। পার্শ্বনাথ সম্প্রদায়ের অনেক শ্রাবকও তখন বাস করতেন রাজগৃহে। বর্ধমান তাই রাজগৃহে এসে ঈশান কোণস্থিত গুণশীল চৈত্যে অবস্থান করলেন।
বর্ধমানের আসবার খবর পেয়ে রাজগৃহের লােক গুণশীল চৈত্যে ভেঙে পড়ল। শ্রেণিকও এলেন সপৰিকরে।
বর্ধমান নিগ্রন্থমের উপদেশ দিলেন। প্রথমে নিরূপণ করলেন মুনিধর্ম। তারপর শ্রাবকাচার। মুনিদের জন্য সর্ববিতি তাই অহিংসা, সত্য, অস্তেয়, ব্রহ্মচর্য ও পরিগ্রহ তাদের সর্বথা পরিত্যাগ করতে হবে। শ্রাবকদের জন্যও অবশ্য সেই নিয়ম তবে তাদের ছুট দেওয়া হল। তাই আংশিক বা দেশ বিরতি—অণুব্রত। তারাও সেই একই ব্রত পালন করবে তবে স্কুলভাবে।
| তবে লক্ষ্য সেই এক। তাই শ্ৰাৰকাচারে বর্ধমান আরও যুক্ত করে দিলেন শিক্ষা ও গুণব্রত। গুণতে অণুব্রতকে আরও পরিশুদ্ধ করা ও শিক্ষাৰতে মুনিধর্ম গ্রহণের জন্য নিজেকে আরও প্রস্তুত করা।
বর্ধমান কুশলী সংগঠক ছিলেন। তাই একসুত্রে গেঁথে দিয়ে গেলেন তার সঙ্ঘের দুইটি অঙ্গ : গৃহী ও মুনি, শ্রাবক ও শ্রমণ।
বর্ধমানের উপদেশ অনেককেই আকৃষ্ট করল। আকৃষ্ট করল কারণ, বর্ধমান ধর্মকে মুক্ত করলেন দেৰবাদের নাগপাশ হতে। মুক্তি দয়ার দান নয়, মুক্তি মানুষের জন্মগত অধিকার, তাকে অর্জন করতে হয় নিজের প্রচেষ্টায়, আত্মার নির্মাণে। সেখানে পুষােহিতের কোনাে ভূমিকাই নেই।
ধর্মজগতে এ এক রক্তহীন বিপ্লব। মনুষ্যরে এ এক নবীন উজীবন। এই আকর্ষণে মগধবাসীদের অনেকেই সেদিন তাঁর ধর্ম গ্রহণ করল।, কেউ শ্ৰমণৰম, কেউ গ্রাম।
শ্ৰমণৰ এহণকারীদের মধ্যে ছিলেন রাজপুত্র মেকুমায় ।