________________
বর্ধমান মহাবীর
বর্ধমান বললেন, হ্যাঁ গোশালক, এই গাছে সাতটি পুষ্প বীজ তাতে সাতটি তিল বীজ ।
রয়েছে।
এতে একটি শুঁটি হবে।
সেকথা শুনে গোশালক সেই গাছটি তুলে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন । মনের ভাব, দেখি এতে কি করে সাতটি তিল ৰীজ
হয় ।
যদি না হয় তবে নিয়তিবাদ অসত্য । বর্ধমান সর্বজ্ঞ নন । বর্ধমান সেদিকে চেয়ে একটু হাসলেন, কিছু বললেন না । তারপর তাঁরা এলেন কুর্ম গ্রামে । বেলা তখন দ্বিপ্রহর ।
সেই দ্বিপ্রহরের রোদে কুর্ম গ্রামের বাইরে এক আধাবয়সী যুৰক বৃক্ষের ভাল হতে ঝুলে নিম্নমুখ ও উর্ধ্বপদ হয়ে সূর্যের দিকে মুখ করে তপস্যা করছিল। তার আলুলায়িত জটা হতে রোদের তাপে ব্যাকুল হয়ে উকুন থেকে থেকে মাটিতে ঝরে পড়ছিল আর সে তাদের তুলে তুলে আবার মাথায় রাখছিল।
সেদিকে চেয়ে গোশালকের বিস্ময়ের সীমা নেই। মনে মনে ভাবছেন এই উকুন পোষা সন্ন্যাসী মানুষ না পিশাচ ?
মানুষই, পিশাচ নয় । এই তরুণ সন্ন্যাসীর নাম বৈশায়ন । বৈশ্যায়নের প্রথম জীবনের ইতিহাস যেমন করুণ তেমনি বৈচিত্র্যপূর্ণ।
বৈশ্যায়নের বয়স যখন দুই, তখন তাদের বাড়ীতে একবার ডাকাত পড়ে। ডাকাতেরা তার বাবাকে হত্যা করে তাদের ঘরে যা কিছু ছিল তা লুট করে নিয়ে যায় ও সেই সঙ্গে তার মাকেও ধরে নিয়ে যায় । এবং তাকে তার মার কোল হতে ছিনিয়ে এক গাছের তলায় ফেলে দিয়ে যায়।
বৈশ্যায়নের হয়ত সেইখানে সেইভাবেই মৃত্যু হত। কিন্তু তার আয়ু ছিল। তাই তাদের চলে যাবার পর পরই সে পথ দিয়ে এল গোবর গ্রামের আভীর গোশঙ্খী। গোশঙ্খা অসহায় বালককে গাছের তলায় পড়ে থাকতে দেখে তুলে ঘরে নিয়ে গেল ও নিজের সন্তানের মত প্রতিপালন করতে লাগল ।
বৈশ্যায়ন ক্রমে বড় হয়ে উঠল।