________________
প্রকা
৮
উৎফুল হয়ে উঠল কারণ সে মনে মনে তাঁরই আগমন প্রতীক্ষা করছিল। তাৰছিল, আজ তিন দিনের আমার উপস। এই সময় যদি তিনি আসেন তবে তাঁকে ভিক্ষা দিয়ে আমি আহার গ্রহণ করি। | মেয়েটি তাই উদ্ভাসিত মুখে স্খলিত পায়ে বর্ধমানকে ভিক্ষা দিতে গেল।
বর্ধমান ভিক্ষা নেবার জন্য হাত দুটি প্রসারিতও করেছিলেন কিন্তু তখুনি আবার তা গুটিয়ে নিলেন।
তবে কি তার অন্তরের প্রার্থনা বর্ধমানের কানে পৌঁছয় নি-না তার হৃদয়ের আকুতি।
মুহূর্ত মাত্রই। মুহুর্তের মধ্যে নামল মেয়েটির চোখ বেয়ে শ্রাবণের অজস্র বঙ্গা। অঝাের ধারায়। সেই জলের ধারায় তার চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে গেল। সব আজ তার ব্যর্থ। তার জীবন, তার প্রতীক্ষা, তার প্রার্থনা, সব। সে কি এতই ভাগ্যহীন যে তার হাতে শ্রণ বর্ধমানও ভিক্ষা গ্রহণ করলেন না।
কিন্তু না। সেই ঝাপসা দৃষ্টির মধ্যে দিয়েই সে দেখল বর্ধমান যেন থমকে দাড়ালেন। তারপর এক এক পা করে এগিয়ে এলেন। আবার হাত দুটো প্রসারিত করলেন তার সামনে। না, আর এক মুহূর্তও দেরি নয়। সে কম্পিত হাতে কুলাের কোণে রাখা সেই কলাই সেদ্ধর সমস্তটা বর্ধমানের হাতে ঢেলে দিল।
মুহুর্তের মধ্যে সেই কথা রাষ্ট্র হয়ে গেল কৌশাম্বীতে-বর্ধমান ভিক্ষাগ্রহণ করেছেন শ্রেষ্ঠী ধনৰাহের ঘরে ক্রীতদাসী চন্দনার হাতে। এই সেই চন্দন যাকে তিনি নগরের চৌমাথা হতে কিনে নিয়ে এসে ছিলেন। মেয়েটি রূপসীই ছিল না; তায় চাপাশে ছিল শুভ্রতার, নির্মলতার এক পরিমণ্ডল। তাই তিনি তাকে ক্রীতদাসীদের ঘরে না পাঠিয়ে নিজের অন্তঃপুরে স্থান দিয়েছিলেন, নিজের মেয়ের মত ব্যবহার করেছিলেন। আর চন্দনের মত শীতল তার ব্যবহার বলে তার নাম দিয়েছিলেন চন্দনা।