________________
প্রব্রজ্যা
দুঃখিত হলেন কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে আনন্দিত যখন তিনি বুঝতে পারলেন বর্ধমান কেন তাঁর ঘরে ভিক্ষা নিতে আসেন নি ।
॥ ১২ ॥
৮৭
বর্ধমান বৈশালী হতে এলেন সুংসুমারপুর । সুংসুমারপুর হতে ভোগপুর । তারপর নন্দীগ্রাম, মেঢ়িয়গ্রাম হয়ে কৌশাম্বী
I
কৌশাম্বীতে বর্ধমান এক ভীষণ অভিগ্রহ গ্রহণ করলেন । অভিগ্রহ অর্থ মানসিক সঙ্কল্প- —যে সঙ্কল্প পূর্ণ হলে তিনি ভিক্ষা গ্রহণ করবেন, নইলে নয় । সে অভিগ্রহ মুণ্ডিত মাথা, হাতে কড়া পায়ে বেড়ী, তিন দিনের উপবাসী দাসত্ব প্রাপ্ত কোনো রাজকন্যা ভিক্ষার সময় অতীত হয়ে গেলে কুলোর প্রাস্তে কলাই সেদ্ধ নিয়ে চোখের জল ফেলতে ফেলতে তাঁকে যদি ভিক্ষে দেয় তবেই তিনি ভিক্ষা গ্রহণ করবেন।
কিন্তু এধরনের অভিগ্রহ সহজেই পূর্ণ হবার নয়। তাই বর্ধমান রোজই নগরে ভিক্ষায় যান আর রোজই ভিক্ষা না নিয়ে ফিরে আসেন । একদিন বর্ধমান ভিক্ষা নেবার জন্য এসেছেন কৌশাম্বীর অমাত্য হুগুপ্তের ঘরে। সুগুপ্তের স্ত্রী নন্দা নিজের হাতে পরমান্ন সাজিয়ে তাঁকে ভিক্ষা দিতে এলেন। কিন্তু বর্ধমান সে ভিক্ষা না নিয়ে ফিরে গেলেন ।
নন্দ৷ জৈন শ্ৰাৰিকা ছিলেন। তাই মনে মনে দুঃখিতা হলেন নিজের মন্দ ভাগ্যের কথা চিন্তা করতে লাগলেন ।
নন্দাকে বিষাদগ্রস্ত। দেখে তাঁর পরিচারিকা তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল, দেৰী, উনি ভিক্ষা নেননি বলে আপনি দুঃখিত হবেন না । উনি প্রতিদিনই নগরে ভিক্ষাচর্যার আসেন আর প্রতিদিনই ভিক্ষা না নিয়ে ফিরে যান ।
সেকথা শুনে নন্দা বুঝতে পারলেন বর্ধমানের এমন কোনো অভিগ্রহ রয়েছে যা পূর্ণ না হবার জন্য তিনি ভিক্ষা গ্রহণ করতে পারছেন না ।