________________
প্রব্রজ্যা
বর্ধমান মোসলি হতে আবার এলেন তোসলি। তোসলিতে এবার সংগমকের চক্রান্তে আরক্ষকদের হাতে ধৃত হলেন। তারা তাঁকে ক্ষত্রিয়ের কাছে প্রেরণ করল । ক্ষত্রিয় যখন নানা ভাবে প্রশ্ন করেও কোনো প্রত্যুত্তর পেলেন না তখন তাঁকে চোর ভেবে ফাঁসীর সাজা দিলেন ।
বর্ধমানকে ফাঁসীর মঞ্চে তুলে দেওয়া হল। কিন্তু যতবারই তাঁর গলায় ফাঁস পরান হয় ততবারই তা ছিঁড়ে যায় । এ ভাবে এক আধবার নয়, সাত সাত বার । রাজপুরুষেরা সেকথা ক্ষত্রিয়কে গিয়ে নিবেদন করল। ক্ষত্রিয় তখন তাঁর মুক্তির আদেশ দিলেন।
তোসলি হতে বর্ধমান গেলেন সিদ্ধার্থপুর। সেখানেও তিনি চোর অপবাদে ধৃত হলেন কিন্তু অশ্বৰণিক কৌশিক তাঁর পরিচয় দিয়ে তাঁকে মুক্ত করিয়ে নিল ।
সংগমক যখন এভাবে তাঁকে পর্যুদস্ত করতে পারলেন না তখন ভিন্ন পথ নিলেন। বর্ধমান যখন যেখানে ভিক্ষা নিতে যান, সংগমক তাঁর আগে আগে সেখানে গিয়ে উপস্থিত হন। বর্ধমানকে শ্ৰমণ ধর্মের নিয়মানুযায়ী তাই ভিক্ষে না নিয়েই সেখান হতে ফিরে যেতে হয়। এভাবে এক আধ দিন নয় দীর্ঘ ছ'মাস তিনি কোথাও ভিক্ষে গ্রহণ করতে পারলেন না ।
বজ্রগ্রামে সেদিন ভিক্ষা গ্রহণ করতে গেছেন বর্ধমান । গিয়ে দেখেন সংগমক সেখানে আগে হতেই উপস্থিত ।
be
বর্ধমান যখন ভিক্ষা না নিয়েই সেখান হতে ফিরে যাচ্ছেন তখন সংগমক তাঁর সামনে গিয়ে উপস্থিত হলেন ও তাঁকে নমস্কার করে বললেন : দোৰ্য, ইন্দ্র আপনার সম্বন্ধে যা বলেছিলেন — আপনার মত ধ্যানী বা ধীর নেই, তা অক্ষরশঃ সত্য। আমি এতদিন আপনাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করেছি, আপনার ধ্যান ভাঙবার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি। ৰাস্তবে আপনি সত-প্রতিজ্ঞ, আমি ভগ্ন-প্রতিজ্ঞ। আপনি আমায় ক্ষমা করুন। আমি আর বাধা দেব না। আপনি ভিক্ষের যান ।
বর্ধমান সেদিনও ভিক্ষা না নিয়ে ফিরে গেলেন। পরদিন এক গ্রামবৃদ্ধার হাতে পারমার গ্রহণ করে দীর্ঘ ছ'মাসের উপবাস ভঙ্গ করলেন।