________________
প্রব্রজ্যা
অবসরে এক ক্ষৌরকারকে ডেকে তাঁর স্বামী চন্দনার যে চুল স্পর্শ করেছিলেন তা কাটিয়ে ফেললেন । তারপর তার হাতে কড়া, পারে বেড়ী পরিয়ে নীচের এক অন্ধকার কুঠুরীতে বন্ধ করে দিয়ে পিতৃগৃহে চলে গেলেন । যাবার আগে অন্যান্য দাসদাসীদের বলে গেলেন একথা যেন তারা শ্রেষ্ঠীর কাছে ঘুণাক্ষরেও প্রকাশ না করে ।
শ্রেষ্ঠী ফিরে এসে তাই মূলার পিতৃগৃহে যাবার সংবাদ পেলেন কিন্তু চন্দনার কোনো খবরই পেলেন না ।
শ্রেষ্ঠী চন্দনার জন্য চিন্তিত হলেন ও তার ব্যাপক অনুসন্ধান করতে শুরু করলেন। তখন এক বৃদ্ধা দাসী সমস্ত কথা তাঁকে খুলে বলল। বলল, মূলার ভয়েই তারা শ্রেষ্ঠীকে এতক্ষণ সমস্ত কথা খুলে বলতে পারে নি ।
১১
শ্রেষ্ঠী তখন চন্দনা যে কুঠরীতে বন্ধ ছিল সেই কুঠরীর দরজায় গিয়ে উপস্থিত হলেন ও দরজা খুলে তাকে ঘরের বাইরে টেনে নিয়ে এলেন ৷ চন্দনার তখনকার স্থিতি দেখে তাঁর চোখেও জল এসে গিয়েছিল । কিন্তু চন্দনাকে তখনই কিছু খেতে দেওয়া দরকার। ঘরে আর কিছু নেই । রান্নাঘরেও কুলুপ দেওয়া । শ্রেষ্ঠী তাই গাই বাছুরের জন্য যে কলাই সেদ্ধ করা ছিল তাই পাত্রের অভাৰে কুলোর এক কোণে রেখে নিয়ে এলেন ও চন্দনাকে তাই খেতে দিয়ে কামার ডাকতে গেলেন— চন্দনার হাতের কড়া, পায়ের বেড়ী কাটিয়ে দিতে হবে। শ্রেষ্ঠী যেই গেছেন আর বর্ধমানও সেই এসেছেন।
কিন্তু কে এই চন্দনা ? কে সেই ভাগ্যবতী যার হাতে বৰ্ধমান ভিক্ষা গ্রহণ করলেন ? শ্রেষ্ঠীর গৃহে কৌশাম্বীর সমস্ত লোক ভেঙে পড়েছে। শতানীক এসেছেন আর পদ্মগন্ধ৷ মৃগাতী। সুগুপ্ত এসেছেন ও নন্দা । সকলের দৃষ্টি এখন চন্দনার ওপর ।
তোমরা কাকে বলছ চন্দনা? এত বসুমতী—বলে এগিয়ে এল রাজান্তঃপুরের এক বৃদ্ধা দাসী। এ যে রাজা দধিবাহনের মেয়ে বসুমতী ।