________________
৮৪
বর্ধমান মহাবীর
সেই লজ্জাই যেন তাঁকে বর্ধমানের প্রতি আরও অকরুণ করে তুলেছে। বর্ধমানকে অপদস্থ করবার জন্য তিনি তাই বদ্ধপরিকর হলেন ।
বর্ধমান বালুকা হয়ে এসেছেন সুযোগ, তারপর সুচ্ছেত্তা, মলয়, হস্তীশীর্ষ আদি স্থান হয়ে তোসলি গ্রাম। তোসলি গ্রামে তিনি যখন এক বৃক্ষমূলে ধ্যানারূঢ় হয়েছেন তখন সংগমক গ্রামে গিয়ে গ্রামীণের ঘরে সিধ দিতে আরম্ভ করলেন।
সংগমক লোক দেখিয়েই সিঁধ দিতে গিয়েছিলেন তাই সহজেই ধরা পড়ে গেলেন । ধরা পড়ে যখন মার খেতে আরম্ভ করলেন তখন তিনি তাদের বললেন, তোমরা কেন অনর্থক আমাকে মারছ। আমি আমার গুরুর আদেশে সিধ দিতে এসেছিলাম । এতে আমার কী দোষ ?
লোকেরা তখন তাঁর নির্দেশ মত বর্ধমানের কাছে গিয়ে উপস্থিত হল ও তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। কিল চড় লাথি ঘুষি যখন নিঃশেষ হল তখন তাঁকে বেঁধে আরক্ষালয়ে পাঠাবার ব্যবস্থা হল। এমন সময় সেখানে এসে পড়লেন ঐন্দ্রজালিক মহাভূতিল । মহাভূতিল বর্ধমানকে দেখামাত্রই বলে উঠলেন, এঁকে কেন তোমরা বাঁধছ। এর সমস্ত গায়ে রাজচক্রবর্তীত্বের লক্ষণ। তাই মনে হয় ইনি ধর্মচক্রবর্তী। ইনি কখনো চোর নন্
সেকথা শুনে তারা লজ্জিত হয়ে সংগমকের সন্ধান করতে লাগল । কিন্তু ততক্ষণে সংগমক অন্তর্ধান করেছেন।
বর্ধমান তোসলি হতে এলেন মোসলি। মোসলিতেও বর্ধমান যখন ধ্যানমগ্ন হয়েছেন তখন সংগমক তাঁর পাশে সিঁধ কাটার যন্ত্রাদি রেখে সরে পড়লেন।
আরক্ষকেরা তাঁর কাছে সিঁধ কাটবার যন্ত্রাদি পেয়ে তাঁকে ধৃত করে রাজসভায় উপস্থিত করল ।
সেই সময় রাজসভায় সুমাগধ নামে এক রাষ্ট্রীয় উপস্থিত ছিলেন। তিনি রাজা সিদ্ধার্থের মিত্র ছিলেন। বর্ধমানকে দেখা মাত্রই তাই তিনি তাঁকে চিনতে পারলেন ও রাজাকে তাঁর পরিচয় দিয়ে তাঁকে বন্ধন মুক্ত করিয়ে দিলেন ।