________________
बका অবধি বর্ধমানের শরীর মাটিতে প্রােথিত হল। তবু তার ধ্যান ভঙ্গ হল না।
প্রতিকূল উপসর্গে সংগমক যখন তাঁর ধ্যান ভঙ্গ করতে সমর্থ হলেন না তখন তিনি অনুকূল উপসর্গের সৃষ্টি করলেন। বৈমানিক দেব হয়ে তার সামনে দাড়িয়ে বলতে লাগলেন, বর্ধমান, তােমার তপস্যায় আমি তুষ্ট হয়েছি। বল তােমার কি চাই?খন, জন, সুখ, আয়ু এমন কি স্বর্গীয় বৈভবও আমি তােমায় দিতে পারি। | বর্ধমান যখন তাতেও সাড়া দিলেন না তখন তিনি বসন্ত ঋতুর সৃষ্টি করলেন। বসন্ত ঋতুর আবির্ভাবে মুহূর্তেই উদ্দাম হয়ে উঠল কিংশুক বন। মাধবীলতার পরাগে গন্ধবিধুর হল দিগন্ত। অশােকের শাখায় শাখায় শিউরে উঠল রক্ত পল্লবের আলােলগুচ্ছ। বৃষ্টির মত ঝরে পড়ল আমঞ্জরীর মকরল। মনে হল আকাশে আকাশে কে যেন ছড়িয়ে দিয়ে গেল অনুরাগের বর্ণ, হাওয়ায় হাওয়ায় জাগিয়ে দিয়ে গেল আদিম প্রাণের উন্মাদনা।
শুধু তাই নয়, সেই বসন্তের সমাগমে সেই সুন্দর বনভূমে নেমে এল অপ্সরী ও কিয়ীর দল যাদের কটাক্ষে অতিনীল পদ্মবনের সৃষ্টি, জ্বলতায় পুষ্পধনুর বক্রতা, অধরের হাস্যাগে চৈত্রদিনের প্রসূনতা, নিশ্বাসে মলয় পাহাড়ের দক্ষিণ বাতাস। তাদের দিকে চেয়ে কে নিজেকে সংবরণ করে নিতে পারে। কিন্তু সেই নব বসন্তের সমাগমে মধুকণ্ঠী দিব্যাঙ্গনাদের গীতস্বয়েও বমানের ধ্যান ভঙ্গ হল না। নিবাত দীপশিখার মত তিনি আরও প্রােজল হয়ে উঠলেন।
সূর্যের আলাে তখন ফুটতে আরম্ভ করেছে পূব আকাশে। সেই আলাে কমে আরও উল হয়ে উঠল। বর্ধমান তখন মহাপ্রতিমার ধ্যানে সিদ্ধ হয়ে ধ্যান ভঙ্গ করে উঠে দাঁড়ালেন। তারপর চলে গেলেন বালুকায় দিকে। | সংগমক পর্ভূত হয়েছেন, সম্পূর্ণরূপে পরাভূত। মরুর মত বর্ধমানের ধৈর্য, সাগরের মত বর্ধমানের গভীরতা। কিন্তু পরাভূত হৰে সংগম এখন কোন মুখে স্বর্গে ফিরে যাবেন। ফিরে যাবার