________________
ত্রা
৪৩
তাকে নিরস্ত করতে চাইল। বলল, ভালাে হয় যদি তিনি বাইরের পথ দিয়ে যান।
কিন্তু বর্ধমান সে পথ হতে নিবৃত্ত হলেন না। শুধু হেসে বললেন, আমার কোন ভয় নেই।
| খানিক হেঁটে বর্ধমান সেই আশ্রমপদের কাছাকাছি এসে গেলেন। দেখলেন যে বিভীষিকার সৃষ্টি করে রেখেছে সেখানে সেই দৃষ্টিবিষ সাপ। আশ্রমপদের কাছাকাছি গাছে পাতা নেই, মাটিতে ঘাস নেই, আকাশে পাখির আনাগােন নেই—না, কোথাও প্রাণের কোনাে চিহ্ন নেই।
বর্ধমান তখন সেই পথ ছেড়ে আশ্রমপদের মধ্যে প্রবেশ করলেন।
তারপর সেই অনেককালের কুটিরের ভাঙা দাওয়ায় বসে কামােৎসর্গ ধ্যানে স্থির হলেন।
দৃষ্টিবিষ সাপটি তখন সেখানে ছিল না, কিছু দূরে ছিল। কিন্তু আশ্রমপদে মানুষ এসেছে সে খবর সে পেয়ে গেল বাতাসে মুহূর্তেই। তাই সে তাড়াতাড়ি আশ্রমপদে ফিরে এল। দৃষ্টি প্রসারিত করে বর্ধমানের দিকে চেয়ে দেখল। এ পথে মানুষ এনেছে তাইতেই তার বিস্ময়ের সীমা নেই। তারপর যখন সে দেখল তার দৃষ্টিপথে পড়েও সে ভস্ম হয়ে গেল না তখন সে আরও আশ্চর্য হয়ে গেল। | সাপটি এতে পরাভূত হয়েছে মনে করে আরও ক্রুদ্ধ হল। ছুটে গিয়ে তার পায়ে দংশন করল।
কিন্তু সে কি দেখল। দেখল রক্তের পরিবর্তে সেই ক্ষতস্থান হতে দুগ্ধধায়া বেরিয়ে এল।
এতে সে আরও আশ্চর্য, আরও ক্রুদ্ধ হল ও বার কয়েক আরও তাঁর পায়ে দংশন করে দূরে সরে গেল। ভাবল, পাছে বর্ধমান তার গায়ের ওপর এসে পড়েন। | কিন্তু বর্ধমান পড়ে গেলেন না। ধ্যানে যেমন দাড়িয়ে ছিলেন তেমনি দাড়িয়ে রইলেন—নিশ্চল, নিস্পন্দ। বিষের কোনো এতিক্রিয়াই তাঁর শরীরে দেখা গেল না।