________________
প্রব্রজ্যা
1
আর মনে করেন না । তাই সেই দগ্ধ পা নিয়েই তিনি হেঁটে এলেন নংগলা গ্রামে। দ্বিপ্রহরে সেখানে বাসুদেব মন্দিরে খানিক বিশ্রাম নিয়ে চলে গেলেন আবত্তা। আত্তায় বলদেব মন্দিরে অবস্থান করলেন । আত্তা হতে তাঁরা গেলেন চোরায় । চোরায় হতে কলংবুকা । কলংবুকার নিকটেই থাকেন শৈলপ মেঘ ও কালহস্তী। কালহস্তী সসৈন্য তখন দুর্বৃত্ত দমনে গমন করছিলেন। পথে বর্ধমান ও গোশালককে দেখে গুপ্তচর ভেবে তাঁদের ধরে মেঘের কাছে পাঠিয়ে দিলেন ।
৬৭
মেঘ একবার বর্ধমানকে ক্ষত্রিয়-কুগুপুরে দেখেছিলেন । তাই তিনি তাঁকে দেখা মাত্রই চিনতে পারলেন ও তাঁদের মুক্ত করে দিলেন ।
এই অপ্রত্যাশিত মুক্তিলাভে বর্ধমানের মনে হল এবার তাঁদের অনার্যদেশের দিকে যাওয়া উচিত যেখানে কেউ তাঁদের পরিচিত নেই । কলংবুকায় এই প্রথম তিনি মুক্তিলাভ করেন নি। এর আগে চোরাকেও তিনি মুক্তিলাভ করেছেন। এতে কর্ম নির্জরারই বিলম্ব হচ্ছে। তাঁর কৃচ্ছ্রসাধনা হতে হবে আরও কঠোর, তপস্যা আরও তীব্র।
বর্ধমান তাই গোশালককে সঙ্গে নিয়ে আর্যসীমা অতিক্রম করে পথহীন রাঢ় প্রদেশে প্রবেশ করলেন ।
সেকালে রাঢ়প্রদেশ অনার্যদেশ বলেই পরিগণিত হত। তা ছিল আর্যপরিধির বাইরে।
সেই দুর্গম রাঢ় প্রদেশের বজজ ও সুব্রত ভূমিতে বর্ধমান ও গোশালক দীর্ঘদিন প্রব্রজন করলেন। প্রব্রজন কালে তাঁদের বহুবিধ বিপদের সম্মুখীন হতে হল । ৰালু ও কঙ্করময় ভূমিতে অবস্থান
করতে হল।
রাঢ়দেশের অধিবাসীরা রুক্ষ ও শুষ্ক ভোজী ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির ছিল। তাই রাঢ় প্রদেশে তাঁদের অনেক কষ্ট সহ্য করতে হল।
সেখানে তাঁরা রুক্ষ, শুষ্ক ও জয়পরিমিত আহারই প্রাপ্ত হতেন ।