________________
প্রজা
দংশ মশকের জ্বালা ও তৃণশয্যার রুক্ষ স্পর্শ সহ করতে অসমর্থ হয়ে সে তখন মনে করে পরলােক আমি প্রত্যক্ষ করিনি কিন্তু মৃত্যুকে প্রত্যক্ষ করছি।
অনার্য পুরুষের অত্যাচার বা অজ্ঞানের ‘এ চর’, ‘এ চোর’ এই সন্দেহে, বন্ধনে, পড়নে সে বন্ধু-বান্ধবের কথা স্মরণ করে, যেমন স্মরণ করে ক্রোধবশে গৃহ পরিত্যাগ করে আসা পৌর স্ত্রী।
তবু বর্ধমান গােশালককে নিবারণ করলেন না। বললেন, গােশালক, যেমন তােমার অভিরুচি।
গােশালক তাই বর্ধমানের সঙ্গ ত্যাগ করে রাজগৃহের পথ নিলেন। আর বর্ধমান ? বর্ধমান এলেন বৈশালী।
বৈশালীতে এক কর্মকারশালায় তিনি আশ্রয় নিলেন।
সেই কর্মকারশালার যিনি অধিকারী তিনি দীর্ঘ দিন রােগ ভােগর পর সেই সেদিনই প্রথম এসেছেন তাঁর কর্মশালায়।
তিনি কর্মশালায় প্রবেশ করতে যাবেন সহসা তার চোখ গিয়ে পড়ল বর্ধমানের ওপর। তিনি শ্ৰমণ ধর্মের অনুযায়ী ছিলেন না; তার ওপর দীর্ঘ দিন লােগ তােগের অন্য একটু ক্লিষ্ট ছিলেন। তাই বর্ধমানকে দেখা মাত্রই তিনি কুদ্ধ হয়ে উঠলেন। যা ছিল তাঁর পরম সৌভাগ্যের তাকে অমঙ্গল মনে করে হাতুড়ি নিয়ে তিনি বর্ধমানকে মারতে ছুটলেন।
কিন্তু বর্ধমানের কাছ পর্যন্ত তিনি পৌছতে পারলেন না। অত্যধিক রাগের জন্যই হােক বা দুর্বলতার জন্য তিনি কঁপতে কাঁপতে মাটিতে পড়ে গেলেন এবং সেই যে সংজ্ঞা হারালেন সেই সংজ্ঞা আর ইহজীবনে ফিরে পেলেন না। সেইখানে সেইভাবে তাঁর মৃত্যু হল।
| সেই দুর্ঘটনার পর বর্ধমান আর সেখানে অবস্থান করবেন না। সেখান হতে চলে এলেন শালীৰে। সেখানে নগরের বাইরে যে উদ্যান ছিল সেই উদ্যানে এক বৃক্ষতলে তিনি ধ্যানতি হলেন। | বর্ধমান যে বৃক্ষতলে ধ্যানস্থিত হলেন সেই বনে বাস করে এক নি ধরনের অপদেবতা। নাম কটনা।