________________
প্রব্রজ্যা
॥ ১। বর্ধমান সেই জ্ঞান লাভ করে কময়ী গ্রামের দিকে হাঁটতে আরম্ভ করলেন।
নন্দীবর্ধন ও আত্মীয় পরিজনেরা আরও কিছু দূর তাঁর অনুগমন করলেন। তারপর চোখের জল মুছতে মুছতে ঘরে ফিরে গেলেন।
তারা ফিরে যেতেই বর্ধমান তাঁর পায়ের গতি আরও দ্রুত করে দিলেন। তারপর সন্ধ্যার মুখে মুখে এসে পৌঁছলেন কমন্ত্রী গ্রামের বাহির সীমায়। সূর্য অস্ত যেতে তখন মুহুর্ত মাত্র বাকী।
বর্ধমান প্রব্রজ্যা নেবার সময় প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, যে পর্যন্ত তার দেহবােধ সম্পূর্ণ লুপ্ত হচ্ছে, যে পর্যন্ত না তিনি কেৰল জ্ঞান লাভ করছেন সে পর্যন্ত তিনি শরীরকে শরীর বলে মনে করবেন না। সমস্ত রকম দুঃখ কষ্ট- দৈৰ সৃষ্টই হােক বা মানুষের কৃত অদীন মনে গ্রহণ করবেন। মনে কোন উদ্বেগ ভাবই আসতে দেবেন না।
বর্ধমান তাই গ্রামে প্রবেশ করবার ইচ্ছা করলেন না। সেইখানেই পথ হতে নেমে দাড়ালেন তারপর এক গাছের তলায় নাসা দৃষ্টি অবলম্বন করে কায়ােৎসর্গ ধ্যানে স্থিত হলেন।
বর্ধমান যেখানে ধ্যানে স্থিত হলেন সেখানে খানিক আগে এক গােপ তার বলদ দুটো ছেড়ে দিয়ে গ্রামের দিকে গিয়েছিল। ভেবেছিল এই তরসন্ধ্যায় কেই তার বলদ দুটো চুরি করবে। গ্রাম হতে ফিরে এসে সেখান হতেই তাদের সঙ্গে নিয়ে সে ঘরে ফিরবে কিন্তু খানিকবাদে যখন সে তার কাজ শেষ করে ফিরে এল, তখন দেখল সেখানে বলদ নেই।
হঠাৎ তার চোখ গিয়ে পড়ল বর্ধমানের ওপর। ভাৰ, ৰমান হয়ত দেখে থাকৰে তাৰ ৰলদ দুটোকে। তাই সে তাঁর কাছে গিয়ে বলল, দেব, আপনি কি আমার বলদ দুটো দেখেছেন।