________________
৩/ ০
৪৬ ও ৪৯ সংখ্যা, ১৯১৮ ও ১৯২০ খ্রীঃ। ] এই বিরাট ‘সংসারনাটকে’. মানবের নানা চিত্তবৃত্তি আরোপিত-ব্যক্তিত্ব হইয়া পাত্র-পাত্রীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হইয়াছে । অতি-পাণ্ডিত্যপূর্ণ সংস্কৃত রচনা, পণ্ডিতজনের জন্য লিখিত I অশিক্ষিত সাধারণ পাঠকের জন্য লিখিলে তিনি প্রাকৃত ভাষা ব্যবহার করিতেন। ভূরি ভূরি গল্প ও উপাখ্যান উপযুক্ত স্থলে ঢুকাইয়া দেওয়া হইয়াছে। কিন্তু তথাপি সাধারণ পাঠকের ধৈর্যচ্যুতি ঘটিবে। উপমিত অর্থাৎ রূপক কাহিনী দ্বারা ভবপ্রপঞ্চ অর্থাৎ জন্মান্তর বাহুল্যের বর্ণনা লইয়া এই গ্রন্থ ।
এই গ্রন্থে কবির নিজের জীবনের রূপক-কাহিনী বর্ণিত আছে : দুঃখ-দারিদ্র্য এবং নানা ব্যাধিতে পীড়িত ‘নিপুণ্যক’ নামে একজন ভিক্ষুক ‘স্বকর্মোদ্ঘাটক’ নামক দ্বারপালের সাহায্যে দৃঢ়স্থিতি রাজার রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করিয়া ‘ধর্মবোধক’ নামক পাচকের কন্যা ‘তৎকরুণা'র হাতে ‘শ্রেষ্ঠমঙ্গল' নামক খাদ্য ‘সত্যানন্দ সৃষ্টি' নামক লালারসের সাহায্যে খাইয়া ‘পূতদৃষ্টি’ নামক নেত্রাঞ্জন চক্ষে লাগাইয়া শনৈঃ শনৈঃ আরোগ্য লাভ করিয়া ‘পুণ্য-সমৃদ্ধ' ঋষিতে পরিণত হইয়াছিলেন এই 'সিদ্ধর্ষি'। তারপর বহু পল্লবিত বহু-বিস্তৃত রূপক কাহিনীতে তিনি ‘সংসারী জীব' নামক পর্যটকের নানা জন্মান্তরের মধ্য দিয়া সংসার-যাত্রার কাহিনী বিবৃত করিয়াছেন ৷
তাঁহার এই ‘সংসার নাটক' জৈনগণের মধ্যে বহুসমাদৃত হইয়াছে ৷ বর্ধমান ( ১০৩২ খ্রীঃ ), দেবেন্দ্রসূরি ও হংসরত্ন এই গ্রন্থের অংশ বিশেষের আলোচনা করিয়াছেন ৷ হেমচন্দ্ৰও তাঁহার ‘পরিশিষ্ট পর্বে' সিদ্ধর্ষির গ্রন্থের পাত্র-পাত্রীর নাম ব্যবহার করিয়াছেন । সুতরাং গ্রন্থখানির ঐতিহাসিক মূল্য আছে ।
Jain Education International
For Personal & Private Use Only
www.jainelibrary.org