________________
৬৮০
মধ্যে প্রচলিত ছিল, এবং আধুনিক-যুগের মতাে বহুলভাবে ব্যবহৃত হইত, তাহা মনে করা যায় না। ব্রাহ্মী লিপির অক্ষরগুলি পর্যবেক্ষণ করিয়া দেখিলেই বুঝা যায় যে, এগুলি বহুকাল হইতে দেশে বহু-প্রচলিত ছিল না। প্রত্যেকটি অক্ষর পৃথক পৃথক ভাবে লিখিত হইত। কোনও দুইটি অক্ষর বেমালুম একসঙ্গে জুড়িয়া যায় নাই। কিন্তু জনসাধারণের মধ্যে ব্রাহ্মী লিপির বহুল প্রচার না হইয়া থাকিলেও, শিক্ষিত সমাজে যে ঐ লিপি প্রচলিত ছিল না, তাহা মনে করিবার কোনও হেতু নাই। কিন্তু, ব্রাহ্মী লিপি শিক্ষিত সমাজের মধ্যে সুপরিচিত ছিল—ইহা ধরিয়া লইলেও মনে হয় না যে, তখনকার দিনেও শিক্ষিত ব্যক্তিগণ এখনকার মতাে বসিয়া বসিয়া বই লিখিতেন বা বঙ্কিমচন্দ্র-শরৎচন্দ্র-রবীন্দ্রনাথের মত অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করিয়া কেহ যশস্বী হইতে পারিয়াছিলেন। এখনকার দিনে ও তখনকার দিনে একটা মস্ত বড়াে প্রভেদ এই যে, তখনকার শিক্ষিতেরা স্মৃতিশক্তির উপর অধিক নির্ভর করিতেন, লিপির উপর করিতেন না। তাহাদের স্মৃতিশক্তি এ-কালের শিক্ষিত জনগণের স্মরণশক্তি অপেক্ষা অনেক বেশি প্রখর ছিল। তাহারা একবার যাহা শুনিতেন, তাহা আজীবন মনে রাখিতে পারিতেন। অধীত বিষয়সমূহ ঘন ঘন আবৃত্তি করিয়া কণ্ঠস্থ করিতেন। এইটিই প্রাচীন ভারতের শিক্ষার বৈশিষ্ট্য। এই কথাটি মনে থাকিলে প্রাচীন যুগের সাহিত্য-বিষয়ে আলােচনাকালে আমাদের কথা-কাটাকাটি অনেক কমিয়া যাইবে। ভদ্রবাহুর নামে অনেক গ্রন্থ প্রচলিত আছে। জৈন আগমগুলির তিন-চারিখানি ভদ্রবাহুর নামে প্রচলিত। ইতঃপূর্বে বলা হইয়াছে যে, ‘ভাদ্ৰবাহবী সংহিতা', ও ‘ভদ্রবাহু সংহিতা' ভদ্রবাহুর রচনা নহে। কিন্তু তাই বলিয়া জৈন আগম গ্রন্থগুলি ও কল্পসূত্র যে
Jain Education International
For Personal & Private Use Only
www.jainelibrary.org