________________
৫। কল্পসূত্র * ভদ্রবাহুর নামে প্রচলিত গ্রন্থখানির নাম কল্পসূত্র [ কষ্পসুত্তং ]। যদিও গ্রন্থখানি জৈন প্রাকৃত ভাষায় রচিত, তথাপি গ্রন্থের প্রচলিত নাম ‘কল্পসুত্ত নহে,‘কল্পসূত্র। যাকোবিও ‘কল্পসূত্র’ নামেই গ্রন্থখানির সম্পাদন করিয়াছেন। কিন্তু কল্পসূত্র’ মানে কি? ‘কল্প’ শব্দের অর্থ যজ্ঞ-বিধি বা পর্বকালে পালনীয় বিধান। সূত্র’ শব্দের সংজ্ঞা : “স্বল্পাক্ষরমসন্দিগ্ধ সরব বিশ্বততামুখম্। অস্তোভ অনবদ্যং চ সূত্রং , সূত্রবিদোবিদুঃ।” অর্থাৎ স্বল্পাক্ষর, সারবান্, সর্বত্র প্রযােজ্য, অসন্দিগ্ধার্থ, সূত্রাকারে গ্রথিত সুন্দর গদ্য রচনাকে ‘সূত্র বলা হয়। আলােচ্য গ্রন্থখানি ব্যাকরণের মতাে সূত্রাকারে গ্রথিত সংক্ষিপ্ত রচনা নয় : বৈদিক যজ্ঞানুষ্ঠানের বিধান-সংবলিত ব্যবহারিক গ্রন্থ ‘কল্পসূত্রের অনুকরণে কতকটা সংগ্রথিত। বলা বাহুল্য, জৈন-ধর্ম যজ্ঞবিরােধী এবং জৈন ‘কল্পসূত্রে কোনও যজ্ঞের বিধান নাই। এই গ্রন্থখানির তিনটি অংশ : [১] জিনচরিত্র, [২] স্থবিরাবলী, ও [ ৩ ] সামাচারী। ইহার তৃতীয় অংশ, অর্থাৎ সামাচারী’ জৈনদিগের প্রধান ধর্মোৎসব পর্যষণা কৃত্যের বিধান সমষ্টি। এইটিই জৈনগণের প্রধান উৎসব বা পর্ব। এই উৎসবের প্রথম রাত্রিতে সমগ্ৰ কল্পসূত্র পাঠ করিবার রীতি ছিল।
জৈনদিগের এই সর্বপ্রধান উৎসবের অন্য নাম ‘সাংবৎসরিক', কারণ জৈনবৎসরের শেষভাগে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। চরিমাসব্যাপী বর্ষা ঋতু তাহাদের বৎসরের শেষ ঋতু। শ্রাবণ, ভাদ্র, আশ্বিন ও কার্তিক এই চারিমাস বর্ষা ঋতু।
Jain Education International
For Personal & Private Use Only
www.jainelibrary.org