________________
811
পারে । প্রত্যক্ষের বিষয়ীভূত বস্তুর সত্তা জৈনগণ অস্বীকার করেন না ; তাঁহাদের সর্ববিধ সত্তাই আপেক্ষিক সত্তা বা “স্যাদস্তিত্ব”বান্। প্রত্যক্ষীভূত বস্তু মাত্রই “স্যাদস্তিত্ববান্”। দিবাভাগে 'সূর্য্য' স্যাদস্তিত্ববান, রাত্রিভাগে স্যান্নাস্তিত্ববান্ । আবার পর্যায়ক্রমে অর্থাৎ প্রতিদিবস দিবাভাগে স্যাদস্তিত্ববান্ ও রাত্রিভাগে স্যান্নাস্তিত্ববান্ বলিয়া সূর্য্যকে স্যাদস্তিনাস্তিত্ববান্ বলা যাইতে পারে। তর্কশাস্ত্র অনুসারে ‘বন্ধ্যা-সুত’ শব্দে প্রকাশ্য ভাবটি মিথ্যা হইলেও কল্পনার সাহায্যে ‘বন্ধ্যা' ও 'সুত' শব্দে প্রকাশ্য ভাব দুইটির সম্পর্ক অনুভূতি-গম্য এবং সেইজন্য স্বীকাৰ্য্য । শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘বিন্দুর ছেলে’ তাহার উদাহরণ। সুতরাং জৈনদর্শনের মতে ‘বন্ধ্যা-সুত' স্যাদস্তিত্ববান্ ।
মানুষের ভাষায় প্রত্যেকটি বস্তুর এক-একটি নাম ( বা শব্দ ) আছে। কিন্তু একটি নামে একাধিক বস্তু এককালে বুঝায় না। পৃথক্ পৃথক্ বস্তুর জন্য পৃথক্ পৃথক্ নাম বা শব্দ আবশ্যক । গোরু শব্দে আমরা পশু বিশেষকেই বুঝিয়া থাকি । কিন্তু জ্ঞানহীন মূর্খ মানুষ-বিশেষকেও কখনও কখনও ‘গোরু’বলা হয় ৷ কিন্তু সাধারণ ভাবে ব্যবহৃত 'গোরু' শব্দের অর্থ ও এই বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ‘গোরু' শব্দের অর্থ অভিন্ন নহে ৷ এই প্রসঙ্গভেদ বশতঃ এখানে অর্থভেদ সংঘটিত হইয়াছে। কিন্তু তৎসত্ত্বেও উদ্দেশ্য-ভূত বিশিষ্ট বা নির্দিষ্ট ব্যক্তি এবং বিধেয়-ভূত ‘গোরু’ শব্দে অর্থবিভিন্নতা স্বীকার্য । সুতরাং তাহাদের মধ্যে অভিন্নতারূপ সম্পর্ক কেমন করিয়া স্বীকার করা যায় ? তর্কশাস্ত্রের যুক্তি দ্বারা কিংবা ভাষাপ্রকাশ্য শব্দের দ্বারা উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের অভিন্নতা প্রতিপাদিত হয় না। কিন্তু তাই বলিয়া ইন্দ্রিয়াদির সাহায্যে অনুভূত প্রত্যক্ষীকৃত অভিন্নতাকে জৈনদর্শন অসত্য
Jain Education International
For Personal & Private Use Only
www.jainelibrary.org