________________
অশ্বমেধ প্রভৃতি যজ্ঞের পর সর্বমেধ যজ্ঞের বর্ণনা বাজসনেয় সংহিতায় স্থান পাইয়াছে। এই যজ্ঞে যজমান রাজা তাহার সর্বস্ব পুরােহিতকে দান করিয়া বানপ্রস্থ অবলম্বন করেন। এই যজ্ঞকে দান যজ্ঞ বলা যায়। ইহা অহিংসারই নামান্তর। সুতরাং যজ্ঞ শব্দের প্রাচীন অর্থের বিপরীত অর্থেই যজ্ঞ শব্দ এখানে ব্যবহৃত হইয়াছে। | ঋগবেদ সংহিতায় ইন্দ্র-বরুণাদি ঋত-দেবতার নামে যে সকল অসংখ্য স্তোত্র স্থান পাইয়াছে তাহাতে এই সকল দেবতার প্রতি বৈদিক আর্যগণের অচলা নিষ্ঠা ও ভক্তির পরিচয় পাওয়া যায় বটে, কিন্তু এই মন্ত্রগুলির পরে রচিত কতকগুলি মন্ত্রে দেখা যায় যে এই সকল দেবতার প্রতি বৈদিক ঋষিদের বিশ্বাস হ্রাসপ্রাপ্ত হইয়াছে এবং তাহাদের অন্তঃকরণ সংশয়াকুল হইয়া পড়িয়াছে। এই শেষের যুগের বৈদিক ঋষিগণ বহু দেবতা ত্যাগ করিয়া একজন অদ্বিতীয় দেবতাকে খুঁজিয়াছেন। মনে হয় বহু দেবতায় বিশ্বাসবান্ আর্য-সমাজে সাম্প্রদায়িকতা প্রবেশ করিয়াছে। প্রাচীন বেদবাক্যে অবিচলিত বিশ্বাস রাখিতে না পারিয়া কোনও কোনও ঋষি দেবতত্ত্ব, সৃষ্টিতত্ত্ব, পরলােকতত্ত্ব প্রভৃতি বিষয়ে নূতন তথ্য আবিষ্কার করিবার চেষ্টায় উৎকণ্ঠিত হইয়া পড়িয়াছেন। বৈদিক সভ্যতার এই কালটিতে ধর্মমত বিষয়ে যুগান্তর সৃষ্টির পূর্বসূচনা দেখা যায়। ভারতীয় নূতন দার্শনিক চিন্তার প্রথম উন্মেষ এই কালেই হইয়াছে। একজন ঋষি বলিয়া উঠিলেন :
| কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম? কোন্ দেবতাকে হবি দান করা হইেবে? কোন্ দেবতার নামে যজ্ঞ উৎসৃষ্ট হইবে ? এই সন্দেহের বশবর্তী ঋষি জগতের সৃষ্টিকর্তা হিরণ্যগর্ভ দেবতাকেই সর্বোচ্চ আসন দান করিয়াছেন।
o. P93–2
Jain Education International
For Personal & Private Use Only
www.jainelibrary.org