________________
সাত
গ্রন্থ-মতে, মহারাজ অশােকের সময়ে খ্ৰীষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকে উত্তরবঙ্গে পৌণ্ড বর্ধনে জৈনদিগের প্রভাব খুবই ছিল। খ্ৰীষ্টীয় সপ্তম শতকে উত্তরবঙ্গে জনৈক ব্রাহ্মণ ও তাহার স্ত্রী জৈন মন্দিরে নিয়মিত ভাবে প্রতি সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালাইবার জন্য অক্ষয়-নীবী রূপে ভূদান করিতেছেন, তাহা পাহাড়পুর লেখ হইতে জানা যায়। বাঙ্গালা দেশে জৈন তীর্থঙ্কর মূর্তির অসদ্ভাব নাই—পাল ও সেন যুগের যথেষ্ট তীর্থঙ্কর মূর্তি ও অন্য জৈনমূর্তি বঙ্গদেশের প্রায় সর্বত্র পাওয়া গিয়াছে। জৈনগণের দ্বারায় অনুপ্রাণিত সাহিত্য অবশ্য বঙ্গভাষায় উপলব্ধ হয় নাই। কারণ খ্রষ্টীয় ১০০০ এর পরে যখন বাঙ্গালার ভাষা নিজ বিশিষ্ট রূপ গ্রহণ করিল, তাহার পূর্বেই জৈন সম্প্রদায় বাঙ্গালা দেশ হইতে বিলুপ্তপ্রায়—অন্য সম্প্রদায়ের মধ্যে এই সম্প্রদায়ের ব্যক্তিগণ অনুপ্রবিষ্ট হইতেছিল ইহা অনুমান করা যায়। কিন্তু বাঙ্গালার বাহিরে, রাজস্থান-গুজরাটে, কর্ণাটকে ও তামিলনাড়ুতে জৈনদের অপ্রতিহত প্রভাব বহু শতক ধরিয়া ছিল। প্রাচীন, মধ্যকালীন ও আধুনিক কানড়ী সাহিত্যের অনেকটা অংশ, জৈন লেখকদের রচনা জুড়িয়া আছে। প্রাচীন তমি সাহিত্যেরও তেমনি একটী লক্ষণীয় অংশ জৈন কবি ও আচাৰ্যদের রচনা লইয়া। গুজরাট ও রাজস্থানের প্রাচীন ও অর্বাচীন সাহিত্যের বিস্তর শ্রেষ্ঠ রচনা জৈনদেরই কীর্তি। কেবল “আগম” বা “সিদ্ধান্ত” লইয়া নহে— জৈন সাহিত্য সংস্কৃতে, বিভিন্ন প্রাকৃতে ও অপভ্রংশে, এবং তমিলে ও কানড়ীতে বিদ্যমান, এবং ভারতীয় বাঙময়ের একটা মুখ্যঅংশ জৈন কবি ও ধর্মগুরুদের রচনা লইয়া বিরাজমান।
| এই বিরাট জৈন সাহিত্যের প্রাচীন অংশের একখানি লােকপ্রিয় শাস্ত্র-গ্রন্থের সহিত, বঙ্গাক্ষরে মূল ও বঙ্গানুবাদের মাধ্যমে,
Jain Education International
For Personal & Private Use Only
www.jainelibrary.org