________________
৭৮
উত্তরাধ্যয়ন সূত্র অহ জে সংবুড়ে ভিকু, দোহ্নমগ্নয়রে সিয়া।
সব্বদুখৰ্গহীণে বা, দেবে বাবি মহিড়টিএ |২৫|| অহ (অথ =তৎপরে) জে (যে ) সংবুড়ে (সংবৃত =যাহার আশব নিরুদ্ধ। হইয়াছে, নিরুদ্ধাশব) ভিখু (ভিক্ষু ) (সে) সব্বদুখপ্পহীণে (সর্বদুঃখপ্রহীণ=যাহার সমস্ত দুঃখ রহিত হইয়াছে অর্থাৎ মুক্তিপ্রাপ্ত) বা ( অথবা ) মহিড়টিএ (মহর্কিক =মহা সমৃদ্ধিসম্পন্ন ) দেবে বাবি (দেবলােকে ও) (গমন করে) দোহ্নং (এই উভয়ের) অন্নয়রে ( অন্যতরে) সিয়া ( হয় ) |২৫||
তৎপরে যে সাধু আশ্রব নিরােধ করিয়াছে সে সমস্ত দুঃখ ক্ষয় করিয়া মুক্তি প্রাপ্ত হয় বা অত্যন্ত সমৃদ্ধিশালী দেবলােকে গমন করে। এই উভয় অবস্থার মধ্যে একটী প্রাপ্ত হয় ॥২৫)।
ইহা দ্বারা এই একমাত্র কার্য সাধিত হয়। কার্যান্তে এই শরীর যে সমস্ত পরমাণু দ্বারা রচিত হইয়াছিল সেই সমস্ত পরমাণু বিশ্লিষ্ট হইয়া আকাশে বিলীন হইয়া যায়। এই শরীর অত্যন্ত সূক্ষ্ম বলিয়া ইহার গতি কোনস্থলে বাধা প্রাপ্ত হয় না। | তৈজসপ্রাণিগণের শরীরে যে তেজ অর্থাৎ দীপ্তি ও উষ্ণতা থাকে তাহা তৈজস শরীর জন্য। এই তৈজস শরীর এক বিশিষ্ট প্রকার পরমাণুদ্বারা গঠিত এবং আরও সূক্ষ-জীবের সহিত অনাদিকাল হইতে সংশ্লিষ্ট এবং মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত এক দেহ হইতে দেহান্তরে গমন করে। অন্যদর্শনের প্রাণময় কোষকে আমরা জৈনদর্শনের তৈজস শরীরের সহিত তুলনা করিতে পারি।
কার্মণ—প্রাণিগণ যে সমস্ত কর্ম করে তাহার ফলস্বরূপ রাগদ্বেষাদি দ্বারা আকৃষ্ট হইয়া এক বিশিষ্ট প্রকারের অতি সূক্ষ্ম পরম আত্মার সহিত সংশ্লিষ্ট হয়। এই প্রকারের পরমাণুকে কার্মণ বর্গের পরমাণু কহে এবং এই প্রকারের অনন্ত পরমাণুসমূহের দ্বারা গঠিত স্কন্ধসমূহের নির্মিত যে শরীর তাহাকে কার্মণ শরীর বলে। এই শরীরও প্রত্যেক জীবের সহিত অনাদিকাল হইতে সংশ্লিষ্ট আছে এবং নির্বাণ বা মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট থাকে। মৃত্যু হইলে যে কোন দেহ হইতে জীবাত্মা যখন অন্য যোনিতে জন্মগ্রহণ করিতে যায় তখন এই কাৰ্মণ ও তৈজস শরীর সেই জীবাত্মার সহিত গমন করে। এই কাৰ্মণ শরীরের প্রভাবেই জীবসংসারে নানাপ্রকার দেহ ধারণ করিয়া জন্ম, জরা ও মৃত্যুর দুঃখ ও সুখ অনুভব করিতে করিতে পরিভ্রমণ করে। এই শরীরের বিচ্যুতি হইলেই জীব শুদ্ধ, বুদ্ধ ও মুক্ত হয়। অন্যদর্শনের বিজ্ঞানময় কোষ বা লিঙ্গ শরীরের সহিত এই ফার্মণ শরীরের তুলনা করিতে পারা যায়।
১। আব—৩১১ সূত্রের ৩নং পাদটীকা দ্রষ্টব্য।