________________
ক্রমপত্রক
হে গৌতম, অশরীরী অর্থাৎ সিদ্ধাবস্থা প্রাপ্তির সময়ে কর্মক্ষয়ের জন্য উত্তরােত্তর শুভ পরিণাম প্রাপ্তিরূপ ক্ষপকশ্রেণী অবলম্বন করিয়া কল্যাণময়, মঙ্গলময় ও সর্বোৎকৃষ্ট সিদ্ধিলােকে গমন। করিবে অতএব সময় মাত্রের জন্যও প্রমাদ করিও না ॥৩৫||
বুদ্ধে পরিণিঝড়ে চরে, গামগএ নগরে ব সংজএ। সংতিমগং চ ৰূহ, সময়ং গোয়ম মা পমায় ॥৩৬||
গামগএ (গ্রামগত = গ্রামে থাকিলে) ণগরে ব (নগরেও =নগরে থাকিলে, যে কোন স্থানে থাকিলে) সংজএ (সংযত ) বুদ্ধে ( বুদ্ধ =তত্ত্বজ্ঞ ) পরিণিঝড়ে ( পরিণিবৃত=কয়াদি উপশম করিয়া, শান্ত হইয়া, শান্তিরসপ্লত চিত্ত হইয়া ) চরে (বিচরণ কর=সংযম পালন কর) চ (এবং) সংতিমগং (শাস্তিমার্গকে) বৃহএ ( বৃদ্ধি কর) গােয়ম (হে গৌতম ) ইত্যাদি ॥৩৬।
| গ্রামে, নগরে বা যে কোন স্থানে অবস্থান কর না কেন সংযত, বুদ্ধ ও উপশান্ত হইয়া বিচরণ কর এবং শান্তিমার্গের বা মুক্তিমার্গের উন্নতি করিতে থাক। হে গৌতম ইত্যাদি ॥৩৬||
স্থিত সঞ্চিত কর্ম পুনরায় উদিত হইয়া সেই জীবকে সেই উচ্চ ভূমিকা হইতে অধঃপতিত করে। একাদশ ভূমিকাটী অধঃপতনেরই, কেননা এই ভূমিকাতে আগত জীবকে পতিত হইতেই হইবে। অবশ্য অধঃপতিত অবস্থা হইতে সে পুনরায় বিকাশমার্গে আরােহণ করিতে সমর্থ হয়। দ্বিতীয় প্রকারে জীব মােহনীয় কর্মকে ক্ষয় করিয়া অগ্রসর হইতে থাকে ইহাকে ক্ষপক শ্রেণী কহে। এই শ্রেণী অবলম্বন করিয়া বিকাশের মার্গে অগ্রসর জীব উত্তরােত্তর উচ্চতর ভূমিকায় আরােহণ করিতে করিতে দশম ভূমিকা হইতে একেবারে দ্বাদশ ভূমিকায় উপস্থিত হইয়া মােহনীয় কর্মকে সম্পূর্ণ ক্ষয় করে এবং সেই সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞানাবরণীয়, দর্শনাবরণীয় ও অন্তরায় কর্মকেও। সম্পূর্ণ রূপে ক্ষয় করিয়া আত্মার স্বাভাবিক অনন্ত জ্ঞান ও অনন্তদর্শন প্রাপ্ত হয়। ইহাকেই ত্রয়ােদশ ভূমিকা বা গুণস্থান বলে এবং এই গুণস্থানে স্থিত পুরুষকে কেবলী বলে। ক্ষপক শ্রেণী হইতে কখনও পতন হয় না। পরবর্তী ভূমিকায় অর্থাৎ চতুর্দশ গুণ স্থানে কেবল জ্ঞান সম্পন্ন পুরুষ মন, বচন ও কায়ের যােগকে সম্পূর্ণ রূপে নিরুদ্ধ করিয়া শরীর ত্যাগপূর্বক নির্বাণ প্রাপ্ত হয়। চতুর্দশগুণস্থানের বিশেষ বিবরণের জন্য শ্রীআত্মানন্দ জৈন পুস্তক প্রচারক মণ্ডল, আগ্রা হইতে প্রকাশিত পণ্ডিত সুখলালজী কর্তৃক সম্পাদিত “কৰ্ম্মস্তব” নামক দ্বিতীয় কর্মগ্রন্থ ও ষড়শীতি নামক চতুর্থ কর্মগ্রন্থ এবং চতুর্থ কর্ম গ্রন্থের প্রস্তাবনা পৃঃ ১০-৩১ দ্রষ্টব্য।
১। পরিণিব্ব’ টীকা ৩।