________________
৪ ০৫
কেশীগৌতমীয় অহ ( অথ) তেণেব কালেণং (সেই সময়ে) সব্বলােগংমি বিসএ (সর্বলােকে বিশ্রুত ) ভয়বং বদ্ধমানুত্তি (ভগবান্ বর্ধমান নামে) ধম্মতিথয়রে (ধর্মতীর্থ প্রবর্তক) জিণে ( জিন=তীর্থঙ্কর ) ( ছিলেন) ॥৫। | এবং সেই সময়ে সর্বলােকে বিখ্যাত ভগবান্ বর্ধমান নামে ধর্মতীর্থ প্রবর্তক তীর্থঙ্কর ছিলেন ॥৫॥
তসস লােগপঈব, আসি সীসে মহাজসে। ভয়বং গােয়মে নামং, বিজ্জাচরণপারগে ॥
খ্রঃ পূঃ ৫২৭-৫২৮ অব্দ ইহার নির্বাণাব্দ বলিয়া নির্ধারিত হইয়াছে। বিস্তারিত বিবরণের জন্ত কল্পসূত্রের জিনাবলীতে লিখিত মহাবীরের বিবরণ দ্রষ্টব্য। | ১। ইহার পূর্ণ নাম ইন্দ্রভূতি গৌতম। মগধদেশের অন্তর্গত গুব্বর নামক গ্রাম নিবাসী গৌতম গােত্রীয় বসুভূতি নামক ব্রাহ্মণের জ্যেষ্ঠ পুত্র। ইহার মাতার নাম পৃথিবীদেবী। ইনি বৈদিক শাস্ত্রে অসাধারণ পারদর্শী ছিলেন ও সােমিল নামক ব্রাহ্মণের দ্বারা অনুষ্ঠিত যজ্ঞে পাচশত শিষ্যসহ মধ্যপাপাতে আগমন করেন। এই সময়ে ভগবান্ মহাবীরও মধ্যপাপাতে অবস্থান করিতেছিলেন। ইন্দ্রভূতি গৌতম মহাবীরের যােগৈশ্বর্যের কথা শ্রবণ করিয়া তাহাকে তর্কে পরাস্ত করিতে শিষ্যগণসহ তাহার নিকট গমন করিলেন। কিন্তু মহাবীরের জ্ঞানের দ্বারা অভিভূত হইয়া স্বয়ং সমস্ত শিষ্যগণসহ তাহার নিকট দীক্ষিত হন। ইনি গৌতম গোত্রীয় বলিয়া সাধারণত ইহাকে গৌতম বলিয়াই অভিহিত করা হইত। ইনি মহাবীরের প্রথম শিষ্য, প্রথম গণধর ও সমস্ত জৈন সাধু সঙ্ঘের নিয়ন্তা ছিলেন। ৫০ বৎসর বয়সে ইনি দীক্ষা গ্রহণ করেন ও ৩০ বৎসর কাল মহাবীরের সহিত ধর্মপ্রচারে নিযুক্ত থাকেন। যে রাত্রে মহাবীরের নির্বাণ হয় সেই রাত্রের অন্তে প্রাতঃকালে গৌতম কেবলজ্ঞান লাভ করেন ও ১২ বৎসর পর্যন্ত ধর্মপ্রচার করিয়া রাজগৃহ নগরের নিকটবর্তী গুণশীল নামক উদ্যানে ৯২ বৎসর বয়সে নির্বাণ প্রাপ্ত হন। ভগবান্ মহাবীরের ১১ জন গণধর ছিলেন তাহা ইতিপূর্বে ১১ সূত্রের ২নং পাদটীকায় লিখিত হইয়াছে। ১১ জন গণধরের নাম এইরূপ, ১। ইন্দ্রভূতি গৌতম, ২। অগ্নিভূতি গৌতম, ৩। বায়ুভূতি গৌতম। ইহারা তিনজন সহােদর ভ্রাতা ছিলেন, ৪। আর্যব্যক্ত, ৫। সুধর্ম, ৬। মণ্ডিতপুত্র, ৭। মৌর্যপুত্র, ৮। অকম্পিত, ৯। অচলভ্রাতা, ১০। মেদাৰ্য ও ১১। প্রভাস। ইহার মধ্যে ইন্দ্রভূতি গৌতম ও সুধর্ম ব্যতীত অপর নয়জন মহাবীরের জীবদ্দশাতেই নির্বাণ প্রাপ্ত হন। ইন্দ্রভৃতি কেবলজ্ঞান লাভ করায় সঙ্ঘের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন নাই বলিয়া সুধর্ম সঙ্ঘের নেতা হন ও বর্তমান সময় পর্যন্ত তাহারই শিষ্যপরম্পরা চলিয়া আসিতেছে। তাহার দ্বারা মহাবীরের প্রবচনানুযায়ী রচিত দ্বাদশটী অঙ্গের নাম এইরূপ, ১। আচার, ২। সূত্রকৃৎ, ৩। স্থান, ৪। সমবায়, ৫। ব্যাখ্যাপ্রজ্ঞপ্তি বা ভগবতী, ৬। জ্ঞাতাধর্মকথা, ৭। উপাসকদশা, ৮। অকৃর্দশা, ৯। অনুত্তরেপাতিকদশা, ১০। প্রশ্নব্যাকরণ, ১১। বিপাকসূত্র ও ১২। দৃষ্টিবাদ। এই দ্বাদশটী অঙ্গের মধ্যে প্রথম একাদশটী বর্তমানে উপলব্ধ আছে। দ্বাদশতম অঙ্গ দৃষ্টিবাদ বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে।