Book Title: Uttaradhyayan Sutra Part 01 Bengali
Author(s): Calcutta Vishvavidyalay
Publisher: Calcutta Vishvavidyalay

View full book text
Previous | Next

Page 419
________________ উত্তরাধ্যয়ন সূত্র লোগপঈবস ( লোকপ্রদীপ=জগদুজ্জ্বলকারী ) তস (তাঁহার= পার্শ্বনাথের ) কেসীকুমারসমণে ( কেশীকুমার শ্রমণ ) বিজ্জাচরণপারগে ( বিদ্যাচরণপারগ= 8.2 প্রত্যেক তীর্থঙ্করেরই একটা করিয়া লাঞ্ছন বা চিহ্ন আছে, তাহা তাঁহাদের প্রতিমার নীচের দিকে উৎকীর্ণ থাকে। পার্শ্বনাথের শরীর নীলবর্ণের ছিল। পার্শ্বনাথের শরীরের বর্ণ, প্রতিমায় সর্পের ফণা ও লাঞ্ছন, নাগরাজ ধরণেন্দ্র কর্তৃক সন্ন্যাসীর কোপানল হইতে রক্ষা প্রভৃতি বিষয় ইঁহার সর্প বা নাগ বংশে উৎপন্ন হইবার সম্ভাবনার প্রতি ইঙ্গিত করে। ভারতের এই সমস্ত আর্যপূর্ব অধিবাসিগণ আর্যগণ কর্তৃক সৰ্প, নাগ, তক্ষক, বানর, রাক্ষস প্রভৃতি নামে অভিহিত হইতেন। খুব সম্ভব ইঁহারা শ্রমণ ধর্মাবলম্বী ছিলেন ও যজ্ঞকে হিংসাত্মক বলিয়া নিন্দা করিতেন ৷ যাহা হউক পার্শ্বনাথ ৩০ বৎসর পর্যন্ত গৃহস্থাবাসে ছিলেন। দীক্ষা গ্রহণের ৮৪ দিবস পরে কেবল জ্ঞান প্রাপ্ত হন ও তৎপরে ৭০ বৎসর পর্যন্ত ধর্মপ্রচার করিয়া একশত বর্ষ বয়সে সম্মেতশিখর পর্বতে নির্বাণ লাভ করেন ৷ এই পর্বতকে বর্তমানে পার্শ্বনাথ পাহাড় বলে । পার্শ্বনাথের নির্বাণের ২৫০ বৎসর পরে চতুর্বিংশতিতম তীর্থঙ্কর মহাবীরের নির্বাণ হয়। মহাবীরের নির্বাণ খ্রীঃ পুঃ ৫২৭-৫২৮ অব্দে হয় বলিয়া স্বীকৃত হইয়াছে। অতএব পার্শ্বনাথের নির্বাণ খ্রীঃ পূঃ ৭৭৭-৭৭৮ অব্দে ও জন্ম ৮৭৭-৮৭৮ খ্রীঃ পূঃ অব্দে হইয়াছিল বলিয়। স্থির করা যাইতে পারে । চব্বিশ জন তীর্থঙ্করগণের মধ্যে জ্ঞানে ও বিভূতিতে কোন পার্থক্য নাই কিন্তু তাহা হইলেও জৈন সমাজে ভগবান্ পার্শ্বনাথের খ্যাতি অত্যন্ত অধিক । ২। ‘লোগল্পঈবস' টীকা ২ । ৩। কেশীকুমার পার্শ্বনাথের প্রথম গণধর শুভদত্ত হইতে চতুর্থ পট্টধর ছিলেন। শুভদত্ত প্রথম, তৎপরে হরিদত্ত, তাহার পর আর্যসমুদ্র ও চতুর্থ কেশীকুমার। ইঁহার নামের সহিত কুমার শব্দ সংযোজিত থাকায় টীকাকারগণ ইঁহাকে অবিবাহিত বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন । ইনি ভগবান্ মহাবীরের সমসাময়িক ও তৎসময়ের পার্শ্বনাথের সম্প্রদায়ভুক্ত সাধুগণের অধিনায়ক ছিলেন। পার্শ্বনাথের সম্প্রদায়ের ভ্রমণগণ ৪টি মহাব্রত পালন করিতেন। ব্রহ্মচর্য ব্রতকে অপরিগ্রহ ব্রতের অন্তর্ভুক্ত বলিয়াই গণ্য করিতেন এবং যে কোন প্রকার বস্ত্র এমন কি মূল্যবান্ বস্ত্রও পরিধান করিতেন। কিন্তু ভগবান্ মহাবীর ব্রহ্মচর্য ব্রতকে পৃথক্ করিয়া পঞ্চমহাব্রত প্রচলন করেন এবং শ্রমণগণের বস্ত্র পরিধান করিবার কঠোর নিয়ম প্রবর্তন করেন। মহাবীরের সম্প্রদায়ের শ্রমণগণ দুইপ্রকার, জিনকল্পী ও স্থবিরকল্পী। জিনকল্পিগণ সম্পূর্ণ উলঙ্গ থাকিয়া বনে তপস্যা করিতেন ও আহার গ্রহণের সময় লোকালয়ে গমন করিতেন মাত্র। স্থবিরকল্পিগণ লোকালয়ে থাকিতেন ও জীর্ণ ১টা, ২টা কিংবা ৩টা বস্ত্র পরিধান করিতেন। কেশীকুমার সাধুগণের আচরণের পার্থক্য দেখিয়া মহাবীরের সম্প্রদায়ে মিলিত হইতে অস্বীকার করিয়া - ছিলেন। কিন্তু মহাবীরের প্রথম গণধর ইন্দ্রভূতি গৌতমের সহিত আলাপ করিয়া মহাবীরের সঙ্ঘে মিলিত হন। এই আলাপের বিবরণই বর্তমান অধ্যয়নে লিখিত আছে। এই সময়ে পার্শ্বনাথের সম্প্রদায়ের বস্ত্রধারী সাধুগণ মহাবীরের সম্প্রদায়ের প্রায়নির্বস্ত্র শ্রমণসঙ্ঘে মিলিত হইয়া তাঁহাদের আচার গ্রহণ করেন কিন্তু পরবর্তিকালে বস্ত্র পরিধানের নিয়মের পার্থক্যের জন্যই জৈন সঙ্ঘ শ্বেতাম্বর ও দিগম্বর এই দুই ভাগে বিভক্ত হইয়া যায় ।

Loading...

Page Navigation
1 ... 417 418 419 420 421 422 423 424 425 426 427 428 429 430 431 432 433 434 435 436 437 438 439 440 441 442 443 444 445 446 447 448 449 450 451 452 453 454 455 456 457 458 459 460 461 462 463 464 465 466 467 468 469 470 471 472 473 474 475 476 477 478 479 480 481 482