________________
১২৬
উত্তরাধ্যয়ন সুত্র চত্তপুকলত্ত (ত্যক্তপুত্ৰকলত্র =যে স্ত্রীপুত্র ত্যাগ করিয়াছে তাহার ) ণিব্বাবার ( নিৰ্যাপার=যাহার কোন প্রকার ব্যাপার অর্থাৎ ব্যবসায়াদি কার্য নাই তাহার ) ভিখুণণা (ভিক্ষুর) কিংচি ( কিছুই) পিয়ং (প্রিয়) ন বিজ্জঈ (থাকে না=নাই) (বা) অপ্পিয়ংপি ( অপ্রিয়ও) ন বিজ্জঈ ( থাকে না) ॥১৫||
স্ত্রীপুত্ৰপরিত্যাগী নিরারম্ভ ভিক্ষুর কোন বস্তুই প্রিয় বা অপ্রিয় থাকে ১৫||
বহুং খু মুণিণণা ভদ্দং, অণগারস্ ভিখুণে। সব্বও বিপ্নমুক, এগংতমণুপও [১৬
সব্বও ( সমস্ত স্থান হইতে সমস্ত পরিগ্রহ হইতে) বিপ্নমুকস্ ( বিপ্রমুক্ত ) এগংতমণুপসসও (একান্ত বিচার সম্পন্ন =‘আমি একা এইরূপ একত্ববিচার
১। কর্মের আগমনকে প্রতিরােধ করিবার জন্য এবং আত্মার বিকাশে সহায়তা পাইবার জন্য দ্বাদশ প্রকার ভাবনা বা অনুপ্রেক্ষা জিনশাস্ত্রে উপদিষ্ট আছে। একত্ব ভাবনা এই দ্বাদশ প্রকারের মধ্যে একটী। এই ভাবনাগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রদত্ত হইল। ১ম অনিত্যভাবনা—শরীর, জীবন, যৌবন, ধনসম্পত্তি আদি-সমস্তই অনিত্য। এইসকলের
বিনাশ আছে। তজ্জন্য এই সমস্ত বস্তুর বিয়ােগে দুঃখ করা এবং এই সমস্ত বস্তুর প্রতি
আসক্তি করা অনুচিত। এইরূপ চিন্তনকে অনিত্য ভাবনা বলে। ২য় অশরণভাবনা—যেমন সিংহ ব্যাদির কবলে পতিত মৃগের কোন শরণ নাই অর্থাৎ
তাহাকে রক্ষা করিতে কেহই সমর্থ হয় না তােপ আধি, ব্যাধি ও উপাধির কবলে পতিত মনুষের একমাত্র ধর্ম ব্যতীত অন্য কোনও শরণ অর্থাৎ রক্ষাকর্তা নাই। এইরূপ চিন্তনকে অশরণ ভাবনা বলে।
৩য় সংসারভাবনা—এই জন্মমরণরূপ সংসার চক্রে প্রকৃতপক্ষে আমার আত্মীয়, বন্ধু কিম্বা
শত্রু কেহ নাই। কেননা প্রত্যেক জীবের সহিত অনন্ত জন্মজন্মান্তরে নানা প্রকার সম্বন্ধে সম্বন্ধিত হইয়াছি। সংসারের এই বৈচিত্র্য একমাত্র কর্মেরই ফল এবং এই কর্মের দ্বারা বিবশ হইয়া প্রাণিগণ দেব, মনুষ, তির্যক্ ও নরকগতিতে পরিভ্রমণ
করিতেছে। এইরূপ বৈরাগ্য উংপাদক ভাবনাকে সংসারভাবনা বলে। ৪র্থ একত্বভাবনা—আমি একাকী জন্ম গ্রহণ করি ও একাই মৃত্যু প্রাপ্ত হই। আমার
নিজের কৃতকর্মের জন্য সুখদুঃখাদি ফল আমাকে একাকীই ভােগ করিতে হইবে। স্ত্রী, পুত্র, আত্মীয় স্বজন কেহই এই সুখদুঃখের অংশভাগী হইতে পারে না। এইরূপ ভাবনাকে একতৃভাবনা বলে।