________________
উত্তরাধ্যয়ন সূত্র
( দ্বিতীয় অর্থ )
( যদিও ) অজ্জ ( অদ্য = বর্তমানে ) ( তুমি ) জিণে ( জিন = কেবলজ্ঞানসম্পন্ন ) ন হু দীসঈ ( দৃষ্ট হও না=অর্থাৎ যদিও তুমি এখনও কেবলজ্ঞান প্রাপ্ত হও নাই ) ( তথাপি ) বহুমএ ( বহুজনমান্য ) মগ্গদেসিএ ( আমার দ্বারা উপদিষ্ট মার্গ ) দীসঈ ( তুমি দেখিতেছ=তুমি অবগত আছ ) ( অতএব ) গোয়ম ( হে গৌতম ) সংপই ( সম্প্রতি=আমি বর্তমান থাকিতে ) ইত্যাদি পূর্ববৎ ॥৩১||
হে গৌতম, যদিও বৰ্তমান সময়ে তুমি কেবলজ্ঞান প্রাপ্ত হও নাই তথাপি আমার উপদিষ্ট বহুজনমান্য মুক্তিমার্গ তুমি অবগত আছ অতএব আমি বর্তমান থাকিতে মুক্তিমার্গে সময় মাত্রের জন্যও প্রমাদ করিও না। ( টীকা ১ । দ্বিতীয় ব্যাখ্যানুযায়ী এই ব্যাখ্যা করা হইল ) ॥৩১॥
( তৃতীয় অর্থ )
১৫৬
....মগ্গদেসিএ ( মার্গোপদেশক )... ইত্যাদি প্ৰথম অর্থানুযায়ী ॥
বর্তমান সময়ে তীর্থঙ্কর বা কেবলী দৃষ্ট হন না কিন্তু বহুজনমান্য মার্গোপদেশক রহিয়াছেন অতএব সম্প্রতি যুক্তিযুক্ত পথে থাকিয়া হে গৌতম,সময় মাত্রের জন্যও প্রমাদ করিও না। Dr. Jacobiর অনুবাদ অনুযায়ী এই ব্যাখ্যা করা হইল ।*
*Dr. Jacobi এই সূত্রটীকে প্রক্ষিপ্ত বলিয়াছেন কারণ এই অধ্যয়নকে স্বয়ং মহাবীরের উক্তি বলিয়া স্থির করিলে এই সূত্রটা এইস্থলে সম্পূর্ণ অসঙ্গত হইয়া পড়ে। টীকাকারগণও এই সূত্রের ভিন্ন ভিন্ন ভাবে একাধিক অর্থ করিয়াছেন। এই অধ্যয়নের প্রথম হইতে ২৭ নং সূত্র পর্যন্ত যেরূপ ভাষা ও ভাব দৃষ্ট হয় ২৮ নং সূত্র হইতে তাহার যেন ব্যতিক্রম হইয়াছে বলিয়া মনে হয় ৷ ২৯ নং ও ৩০ নং সূত্র পাঠ করিলে মনে হয় যে গৌতম সংযমমার্গে সংশয়ান্বিত হওয়ায় ভগবান্ মহাবীর তাঁহাকে উপদেশ প্রদান করিয়া স্থির করিতেছেন। যদিও মহাবীর সাধারণ ভাবে উপদেশ প্রদান করিবার সময় গৌতমকেই উদ্দেশ করিয়! বলিতেন তথাপি প্রথম ২৭ নং বা ২৮ নং সূত্রে কথিত সাধারণ ভাবের উপদেশ হইতে পরবর্তী সূত্রের উপদেশগুলি অন্যরূপ বলিয়াই ধারণা হয় । গৌতম মহাবীরের প্রথম শিষ্য। প্রথম গণধর এবং বিশিষ্টরূপে মানিত। তাঁহার মনে যে কখনও সামান্য সংশয়ও হইয়াছিল এরূপ উল্লেখ অন্য কোনও স্থানে নাই। বিশেষতঃ শেষ সূত্রে লিখিত আছে যে ভগবান্ মহাবীরের এই উপদেশ শ্রবণ করিয়া রাগদ্বেষকে ছিন্ন করিয়া গৌতম সিদ্ধিগতি প্রাপ্ত হইলেন কিন্তু গৌতম মহাবীরের নির্বাণের অল্পক্ষণ পরে কেবলজ্ঞান লাভ করেন ও দ্বাদশ বর্ষ কেবলী রূপে জীবিত থাকিয়া বীর নির্বাণের দ্বাদশ বর্ষ পরে সিদ্ধিগতি প্রাপ্ত হন ৷ এই সমস্ত বিষয় পর্যালোচনা করিয়া ইহা অনুমিত হয় যে ২৮ নং কিংবা ২৯ নং সূত্র হইতে পরবর্তী সমস্ত সূত্রগুলি পরে কোনও সময়ে রচিত হইয়া সন্নিবিষ্ট হইয়াছে বা সূত্র প্রথম লিপিবদ্ধ হওয়ার সময় ভ্রমক্রমে অন্য কোনও সূত্রের অংশ এই অধ্যয়নের সহিত সম্মিলিত করা হইয়াছে ।