________________
মহাবীব বললেন, যে অধার্মিক, যে অধর্মেব আচরণ করে বেড়ায় তাৰ অলস হওয়াই ভালো। তাতে সে অনেকের সামান্যই ক্ষতি করতে পারবে। কিন্তু যে ধার্মিক, ধর্মানুষ্ঠান করে, তাৰ উদ্যমী হওয়াই ভালাে, কারণ তাতে সে অনেকের মঙ্গল সাধন করতে পারবে।
| এ সমস্ত প্রশ্নোত্তৰ সামান্যই মনে হতে পাবে, কিন্তু এদের পেছনে যে দৃষ্টিভঙ্গী রয়েছে তা সামান্য নয়। সে দৃষ্টিভঙ্গী আপেক্ষিক বা অনেকান্তবাদের। আপেক্ষিকবাদ বা Relativity আজ আমাদেব কাছে নূতন নয় কিন্তু আজ হতে ২৫০০ বছর আগে এই দৃষ্টিভঙ্গী নিশ্চয়ই নৃতন ছিল। ভারতীয় মনীষার ক্ষেত্রেও নৃতন কারণ আপেক্ষিক দৃষ্টিভঙ্গী একমাত্র জৈন দর্শন ছাড়া আর কোথাও দেখা যায় না। এজন্য জৈন দর্শনকে অনেক সময় অনেকান্ত দর্শন বলে অভিহিত কৰা হয়। আব এই যুগান্তকারী অনেকান্ত দর্শনের প্রবর্তক ছিলেন ভগবান মহাবীব।
সংক্ষেপে আপেক্ষিকদের তাৎপৰ্য হল বিভিন্ন প্রকার দৃষ্টিকোণ হতে বিচাব বা দেখা। পদার্থ মাত্র যখন অনন্তধর্ম তখন একান্ত ব্য নিশ্চযাত্মকৰূপে কোন বস্তুর ধর্ম নিরুপণ কৰবাব চেষ্টা কখনাে সত্য হতে পাবে না। তাকে নানা ধর্ম দিয়ে বিচার কবে দেখতে হয়। লােকটি পিতা বলে তার সম্পূর্ণ পরিচয় দেওয়া হয় না। পুত্রেব অপেক্ষা সে যেমন পিতা, পিতাব অপেক্ষায় সে তেমনি পুত্রও। তাই লােকটিকে যথার্থভাবে জানতে গেলে তার সমস্ত ধর্মকে গ্রহণ করতে হয়। আমাদের উপবােক্ত উদাহবণেব ঘুমিয়ে থাকা ভালাে না জেগে থাকা, সবল হওয়া ভালাে না দুর্বল, উদ্যগী হওয়া ভালাে না অলস—অন্য কেউ হলে নিশ্চয়ই বলত, জডত্ব ভালাে নয়, দুর্বলতা পাপ, উদ্যমী হওযাই পুরুষার্থ। কিন্তু মহাবীর তা বলেননি। বলেননি তাব কাবণ তব অনেকান্ত দৃষ্টি। জডত্ব যেমন দোষ, ক্ষেত্রও সময় বিশেষে তা আবাবগুণও। যে দুরাচাব, যে সমাজ বিবােধী, সে সদি ঘুমিয়ে থাকে তাতে যেমন সামূহিক মঙ্গল, তেমনি তাতে তার ব্যক্তিগত কল্যাণও। কুম্ভকর্ণ বছবেব পৰ বছৰ না ঘুমিযে যদি জেগে থাকতাে, তবে সংসাবেব কি হত ভাবতেও ভযু কবে ! বাবণ যদি উদ্যমী না হতেন তবে সীতা হবণ কবতেন না, লাবও বিনাশ হত না।
দুষ্ট লােকেব কোনাে যুগেই অভাব নেই। সেদিনও ছিলনা, আজো নেই। তাদেব দিকে চেযে ভগবান মহাবীরের সেই কথাই মনে পডে—এবা যদি ঘুমিযে থাকত বা বলহীন হত বা উদ্যমহীন তাহলে সমাজের যেমন তাতে কল্যাণ ছিল, তেমনি তাদেব নিজেদের ব্যক্তিগত ভাবেও কল্যাণ ছিল।