Page #1
--------------------------------------------------------------------------
________________
দাদা ভগবান কথিত
এডজাস্ট এভরিহােয়্যার
Page #2
--------------------------------------------------------------------------
________________
দাদা ভগবান কথিত
(এডজাস্ট এভরিহােয়্যার)
সংকলন ঃ ডঃ নীরুবেন অমিন
Page #3
--------------------------------------------------------------------------
________________
প্রকাশক : অজীত সি. প্যাটেল,
দাদা ভগবান আরাধনা ট্রাস্ট দাদা দর্শন, ৫, মমতাপার্ক সােসাইটি, নবগুজরাট কলেজের পিছনে উসমানপুরা, আহমেদাবাদ - ৩৮০০১৪ ফোন ঃ (০৭৯) ৩৯৮৩০ ১০০
E-mail : info@dadabhagwan.org
কপিরাইট ঃ All Rights reserved - Deepakbhai Desai
Trimandir, Simandhar City, Ahmedabad-Kalol Highway. Adalaj, Dist: Gandhinagar - 382421, Gujarat, India. No part of this book may be used or reproduced in any manner whatsoever without written permission from the holder of this copyrights.
First Edition : 1000 copies, January 2016
ভাবমূল্য ও ‘পরম বিনয়’ আর
‘আমি কিছু জানি না এই জাগৃতি
দ্রব্যমূল্য : ১০ টাকা
মুদ্রক
| অম্বা অফসেট,
পার্শ্বনাথ চেম্বার্স (বেসমেন্ট), আর. বি. আই-এর নিকট, উসমানপুরা, আহমেদাবাদ - ৩৮০০১৪
ফোনঃ (০৭৯) ২৭৫৪২৯৬৪, ৩০০০৪৮২৩/২৪
Page #4
--------------------------------------------------------------------------
________________
ত্রি-মন্ত্র
| વર્તમાનતીર્થંકર
શ્રી સીમંધરસ્વામી
নমাে অরিহন্তান
নমাে সিদ্ধান
নমাে আয়রিয়ানম্
নমাে উজ্জ্বায়ানম
নমাে লােয়ে সব্বসাহুন
এ্যায়সসা পঞ্চ নমুক্কারাে;
সব্ব পাবপ্ননাশনাে
মঙ্গলানম চ সব্বেসি;
পঢ়ম হবই মঙ্গল ১ ওম্নমাে ভগবতে বাসুদেবায় ২
ওম্নমঃ শিবায় ৩
জয় সৎ চিৎ আনন্দ
Page #5
--------------------------------------------------------------------------
________________
দাদা ভগবান কে?
১৯৫৮ সালের জুন মাসের এক সন্ধ্যায় আনুমানিক ৬টার সময় ভীড়ে ভর্তি সুরত শহরের রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্ম নম্বর ৩-এর এক বেঞ্চে বসা শ্রী অম্বালাল মুলজীভাই প্যাটেলরূপী দেহমন্দিরে প্রাকৃতিকভাবে, অক্রমরূপে, বহুজন্ম ধরে ব্যক্ত হওয়ার জন্যে ব্যাকুল দাদা ভগবান পূর্ণরূপে প্রকট হলেন - অধ্যাত্মের এক অদ্ভুত আশ্চর্য্য প্রকট হল। অলৌকিকভাবে এক ঘন্টাতে ওনার বিশ্বদর্শন হল। আমি কে? ভগবান কে? জগত কে চালায়? কর্ম কি? মুক্তি কি?’ ইত্যাদি জগতের সমস্ত আধ্যাত্মিক প্রশ্নের সমস্ত রহস্য সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ হল। এইভাবে প্রকৃতি বিশ্বকে এক অদ্বিতীয় সম্পূর্ণ দর্শন প্রদান করল যার মাধ্যম হলেন গুজরাত-এর চরােতর ক্ষেত্রের ভাদরন গ্রামনিবাসী পাটীদার শ্রী অম্বালাল মুলজীভাই প্যাটেল যিনি কন্ট্রাকটরি ব্যবসা করেও সম্পূর্ণ বীতরাগী ছিলেন।
‘ব্যবসা-তে ধর্ম থাকা প্রয়ােজন, কিন্তু ধর্ম-তে ব্যবসা নয়’ এই নীতি অনুসারেই তিনি সম্পূর্ণ জীবন অতিবাহিত করেন। জীবনে কখনও উনি কারাের কাছ থেকে অর্থ নেন নি, উপরন্তু নিজের উপার্জনের অর্থ থেকে ভক্তদের তীর্থযাত্রায় নিয়ে যেতেন।
ওনার অদ্ভুত সিদ্ধজ্ঞান প্রয়ােগ দ্বারা ওনার যে রকম প্রাপ্তি হয়েছিল তেমনই অন্য মুমুক্ষুদের-ও তিনি কেবল দু’ঘন্টাতেই আত্মজ্ঞান প্রাপ্ত করাতেন। একে অক্রম মার্গ বলে। অক্রম অর্থাৎ বিনা ক্রমের আর ক্রম মানে সিঁড়ির পরে সিঁড়ি - ক্রমানুসারে উপরে ওঠা। অক্রম অর্থাৎ লিফট-মার্গ, সংক্ষিপ্ত রাস্তা।
উনি স্বয়ংই ‘দাদা ভগবান’কে? এই রহস্য জানাতেন। উনি বলতেন “যাকে আপনারা দেখছেন তিনি দাদা ভগবান নন। তিনি তাে এ.এম.প্যাটেল; আমি জ্ঞানী পুরুষ আর আমার ভিতর যিনি প্রকট হয়েছেন তিনিই ‘দাদা ভগবান’। দাদা ভগবান তাে চৌদ্দ লােকের নাথ। উনি আপনার মধ্যেও আছেন, সবার মধ্যেই আছেন; আপনার মধ্যে অব্যক্তরূপে আছেন, আর আমার মধ্যে সম্পূর্ণরূপে ব্যক্ত অবস্থায় আছেন। দাদা ভগবান’কে আমিও নমস্কার করি।”
Page #6
--------------------------------------------------------------------------
________________
সম্পাদকীয়
জীবনের প্রত্যেক প্রসঙ্গে বিচারপূর্বক আমি নিজে যদি অন্যের সাথে এড্জা না হই তাহলে ভয়ঙ্কর সংঘাত হতেই থাকবে। জীবন বিষময় হবে আর শেষ পর্য্যন্ত জগৎ তো জোর করে আমাকে দিয়ে এড্জামেন্ট করিয়েই নেবে। ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় যেভাবেই হোক, যেখানে হোক, এড্জা তো হতেই হবে। তাহলে কেন না বিচারপূর্বক এড্জা হয়ে যাও, তাতে কতরকম সংঘাত তো এড়ানো যাবেই আর সুখ-শান্তি স্থাপিত হবে।
লাইফ ইজ্ নাথিং বাট এড্জামেন্ট্ (জীবন এড্জামেন্ট্ ছাড়া আর কিছুই নয়!) জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি এড্জামেন্ট নিতে হবে, তা কেঁদেই নাও বা হেসে নাও! পড়াশুনা করতে ভাল লাগুক বা না লাগুক, এড্জা হয়ে পড়তে তো হবেই। বিয়ে করার সময় হয়তো খুশী হয়েই করে, কিন্তু পরে সমস্ত জীবন স্বামী-স্ত্রীকে একে অন্যের সাথে এড্জামেন্ট তো নিতেই হয়। দুই ভিন্ন প্রকৃতিকে সারা জীবন একসাথে থেকে যা দায়িত্ব আছে তা নির্বাহ করতে হবে। সারাজীবন একে অন্যের সাথে সমস্ত দিক থেকে এড্জা হয়ে থাকে এরকম ভাগ্যশালী ক’জন আছে এই কালে? আরে, রামচন্দ্রজী আর সীতাজীর-ও কি বহুবার ডিসএডজাস্টমেন্ট হয় নি? স্বর্ণমৃগ, অগ্নিপরীক্ষা আর গর্ভবতী হওয়া সত্ত্বেও বনবাস? তাঁদের কত-কত এড্জামেন্ট নিতে হয়েছে।
মাতা-পিতা আর সন্তানদের একে অন্যের সাথে প্রতি পদে এড্জামেন্ট নিতে হয় না কি? যদি বিচারপূর্বক এড্জা হওয়া যায় তাহলে শান্তি থাকে আর কর্মবন্ধন হয় না। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, কাজ-কর্ম সমস্ত কিছুতে, ‘বস’-এর সাথে কি ব্যবসায়ী বা দালালের সাথে অথবা তেজী-মন্দী ভাবের সাথে, সব জায়গায় যদি তুমি এড্জামেন্ট না নাও তো কত কত দুঃখের পাহাড় জমে যাবে।
সেইজন্যে ‘এড্জা এড্েিহায়্যার’-এর ‘মাস্টার কী’ নিয়ে যে জীবনযাপন করে তার জীবনের কোন তালা খুলবে না, এরকম হয় না । জ্ঞানীপুরুষ পরমপূজ্য দাদাশ্রীর স্বর্ণময় সূত্র ‘এড্জা এেিহায়্যার' জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে সংসার সুখময় হয় !
-ডঃ নীরুবেহন অমীন-এর জয় সচ্চিদানন্দ
Page #7
--------------------------------------------------------------------------
________________
আত্মজ্ঞান প্রাপ্তির বর্তমান সূত্র
‘আমি নিজে কয়েকজনকে সিদ্ধি (বিশেষ আধ্যাত্মিক ক্ষমতা) প্রদান করে যাব। আমি চলে যাওয়ার পরে তাদের কি প্রয়ােজন থাকবে না? ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যেও এই মার্গের প্রয়ােজন আছে, নয় কি?
--দাদাশ্রী পরমপূজ্য দাদাশ্রী শহর থেকে শহরে, দেশ-দেশান্তরে ঘুরে বেড়াতেন। সৎসঙ্গ করার জন্য আর যারা তার কাছে আসত তাদের আত্মজ্ঞান প্রদান করতেন এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ সাংসারিক ব্যবহারের শিক্ষাদান করতেন। ১৯৮৭ সালের শেষ দিকে তার জীবনের অন্তিম দিনগুলিতে তিনি ডাঃ নীরুবেন অমিনকে তাঁর কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যে সিদ্ধি প্রদান করেন।
১৯৮৮ সালের ২রা জানুয়ারি পরমপূজ্য দাদাশ্রীর দেহবিলয়ের পর ডাঃ নীরুবেন তার কাজ এগিয়ে নিয়ে চলেন ভারতবর্ষের শহরে-গ্রামে এবং বিদেশে পৃথিবীর সমস্ত মহাদেশ পরিভ্রমণ করে। তিনিই ছিলেন দাদাশ্রীর অক্রমবিজ্ঞানের প্রতিনিধি। ২০০৬ সালের ১৯শে মার্চ তার দেহবিলয়ের সময় তিনি দাদাশ্রীর সমস্ত কাজ শ্রী দীপকভাই দেশাই-কে দিয়ে যান। বর্তমান সময়ে অক্রমবিজ্ঞানকে আত্মজ্ঞান প্রাপ্তির সরল এবং প্রত্যক্ষ মার্গ হিসাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে তিনিই প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন। হাজার-হাজার মুমুক্ষু এর সুযােগ নিয়ে সাংসারিক। দায়-দায়িত্ব পালন করতে করতেও আত্মানুভবে স্থিত হয়েছে। তাদের দৈনন্দিন সংসারিক জীবনেও তারা মুক্তির সুখ অনুভব করেছে। পূজ্য নীরুবেন অমিনএর উপস্থিতিতে জ্ঞানীপুরুষ দাদাশ্রী তার অক্রম-বিজ্ঞানের সৎসঙ্গ করার জন্য শ্রী দীপকভাইকে সিদ্ধি প্রদান করেন। তিনি দাদাশ্রীর নির্দেশ মত এবং ডাঃ নীরুবেন আমিনের তত্ত্বাবধানে ১৯৮৮ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে দেশে এবং বিদেশে সৎসঙ্গ করেছেন। এখন আত্মজ্ঞানী শ্রী দীপকভাই দেশাই-এর মাধ্যমে অক্রমবিজ্ঞানের জ্ঞানবিধি এবং সৎসঙ্গ পুরােদমে প্রসারিত হয়ে চলেছে।
শাস্ত্রের প্রভাবশালী বাণী মুমুক্ষুর মুক্তির ইচ্ছা জাগিয়ে তােলে এবং পথনির্দেশ করে। সমস্ত মুমুক্ষুর অন্তিম লক্ষ্য আত্মজ্ঞান প্রাপ্তি। আত্মজ্ঞান ছাড়া মুক্তি অসম্ভব। আত্মজ্ঞান বইতে থাকে না; তা জ্ঞানীর হৃদয়ে অবস্থিত। কেবলমাত্র জ্ঞানীর সাক্ষাতেই আত্মজ্ঞান লাভ করা সম্ভব। দেহধারী আদ্মজ্ঞানীর সাক্ষাৎ পেলে আজকের দিনেও অক্রমবিজ্ঞানের বৈজ্ঞানিক প্রয়ােগ দ্বারা কেউ। আত্মজ্ঞান প্রাপ্ত করতে পারে। একটা জ্বলন্ত প্রদীপ-ই পারে অন্য প্রদীপকে জ্বালাতে!
Page #8
--------------------------------------------------------------------------
________________
এডজাস্ট এভরিহােয়্যার
একটাই শব্দ আত্মস্থ করাে প্রশ্নকর্তা ঃ এখন তাে জীবনে শান্তির সরল মার্গ চাই।
দাদাশ্রী ঃ একটাই শব্দ জীবনে ফলিত করতে পারবে, একদম এজ্যাক্ট (অবিকল) ?
প্রশ্নকর্তা ঃ হ্যা, এগজ্যাক্ট।।
দাদাশ্রী ও ‘এডজাস্ট এভরিহােয়্যার’ এই যে শব্দ এটা যদি তুমি জীবনে ফলিত করতে পার তাহলেই অনেক হল, তােমার শান্তি স্বয়ং স্থাপিত হবে। প্রথম ছমাস পূর্বের রি-অ্যাকশন থাকবে, কিন্তু তারপরে শান্তি ফিরে আসবে। সুতরাং এডজাস্ট এভরিহােয়্যার’। কলিযুগের এই ভয়ঙ্কর কালে এডজাস্ট না করতে পারলে তাে মারা পড়বে।
সংসারে অন্য কিছু না জানলেও চলবে, কিন্তু এডজাস্ট করতে তাে জানা চাই। সামনের জন্য ‘
ডিএডজাস্ট করলেও তুমি যদি ‘এডজাস্ট করাে তাে সংসারসমুদ্র পার হয়ে যাবে। অন্যের অনুকুল হতে পারলে আর কোন দুঃখ-ই হবে না। এডজাস্ট এভরিহােয়্যার। প্রত্যেকের সাথে ‘এডজাস্টমেন্ট’ হয়, এটাই সবথেকে বড় ধর্ম। বর্তমান কালে তাে প্রকৃতি ভিন্ন-ভিন্ন তাহলে ‘এড জাস্ট’ না হয়ে কি করে চলবে?
দখল নয়, ‘এডজাস্ট’ হও। সংসারের অর্থ-ই সশরণ মার্গ, অর্থাৎ নিরন্তর পরিবর্তন হয়। এই স্থিতিতে এই বৃদ্ধেরা পুরানাে যুগেই আটকে থাকে। আরে, যুগের হিসাবে
চললে মার খেয়ে মরে যাবে। যুগের উপযুক্ত এডজাস্টমেন্ট নিতে হবে। আমার তাে চোরের সাথে, পকেটমারের সাথে, সবার সাথেই ‘এডজাস্টমেন্ট’ হয়। আমি চোরের সাথে কথা বললে সে বুঝতে পারে যে এ করুণাময়। আমি চোরকে ‘তুই খারাপ’ এমন কথা বলি না। কেননা
| [ ৫ ]
Page #9
--------------------------------------------------------------------------
________________
এটা তার ‘ভিউ-পয়েন্ট। তখন লােকে একে ‘না-লায়েক’ বলে গালি দেয়। তাহলে এই উকিলরা মিথুক নয় ? ‘স্যার, মিথ্যা মামলা জিতিয়ে দেব’ এরকম যে বলে তাকে ঠগ বলবে না? চোরকে লুচ্চা বলে আর এই সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলাকে সত্যি বলে তাকে সংসারে বিশ্বাস কিভাবে করা যায়? অথচ এমনিভাবেই চলছে। কাউকেই অমি খারাপ বলি না। সে তার ‘ভিউ-পয়েন্ট থেকে নিশ্চয়ই ঠিক। কিন্তু তার সাথে কথা বলে তাকে বােঝাই যে এই চুরি করার পরিণাম কি।।
বয়স্ক লােকেরা ঘরে এসেই বলবে এই লােহার দরজা ? এই রেডিয়াে ? এটা এমন কে? সেটা তেমন কেন? এইভাবে হস্তক্ষেপ করে। এখন নবীন প্রজন্মের সাথে বন্ধুত্ব কর। এই যুগ তাে বদলাতে থাকে। তাহলে এইসব ছাড়া এরা বাঁচবে কি করে? কিছু নতুন দেখলে সেটাতে এদের মােহ উৎপন্ন হয়? নতুন কিছু না হলে বাঁচবেই বা কিভাবে? এইরকম নতুন তাে অনন্ত এসেছে আর গেছে, এতে তুমি হস্তক্ষেপ করবে না। তােমার অ-পছন্দ হলে সেটা তুমি করবে না। এই আইসক্রীম তােমাকে এরকম বলে না যে আমার থেকে দূরে সরে যাও। তুমি না খেতে চাইলে খাবে না। কিন্তু বয়স্করা এর উপরে বিরক্ত হয়। এই মতভেদ তাে যুগ বদলানাের কারণে হচ্ছে। নবীনরা তাে যুগের অনুসারে কাজ করে। মােহ অর্থাৎ নতুন নতুন উৎপন্ন হয় আর তা নতুন-ই দেখায়। আমি তাে বালক-বয়স থেকেই বুদ্ধি দিয়ে অনেক বিচার করে দেখেছি এই জগৎ উল্টো চলছে না সােজা চলছে। আর এটা বুঝেছি যে এই জগৎকে বদলানাের ক্ষমতা কারাের নেই। তবুও আমি বলছি যে যুগের অনুসারে এডজাস্ট হও। ছেলে নতুন ধরনের টুপি পরে এলে তাকে বলবে না যে এরকম কোথা থেকে আনলে? এই বলে এডজাস্ট করবে যে এমন সুন্দর টুপি কোথায় পেলে? কত দিয়ে আনলে? খুব সস্তা পেলে ? এইভাবে এডজাস্ট হওয়া চাই।
আমার ধর্ম কি বলছে প্রতিকূলতায় অনুকূল দেখবে। রাত্রে মনে হলাে। এই চারদরটা ময়লা’, তবু পরে এডজাস্টমেন্ট করে নিলাম তখন এত নরম লাগল যে সে আর বলার নয়। পঞ্চেন্দ্রিয়জ্ঞান প্রতিকূল দেখায় আর আত্মা অনুকূল দেখায়। সেইজন্যে আত্মায় থাকো।
| [ ৬ ]
Page #10
--------------------------------------------------------------------------
________________
দুর্গন্ধ-এর সাথে এডজাস্টমেন্ট এই যে বান্দ্রার খাঁড়ি (মুম্বইয়ের শহরতলী) থেকে দুর্গন্ধ আসে, তাে এর সাথে কি ঝগড়া করতে যাবে? তেমনি এইসব মানুষ-ও দুর্গন্ধ ছড়ায়, তাদের কি বলবে? যা কিছু দুর্গন্ধ ছড়ায় তাদের খাঁড়ি বলে আর সুগন্ধ ছড়ালে তাদের বাগান বলে। যারা দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে তারা বলছে, তুমি আমাদের প্রতি বীতরাগ হও।
এই যে ভালাে - মন্দ বলা হয় তা নিজেকেই উত্ত্যক্ত করে। আমাদের তাে উভয়কে একই মনে করে চলতে হবে। একটাকে ভালাে বলা হলে অন্যটা অটোম্যাটিক খারাপ হয় আর পরে তা উত্যক্ত করে। সেইজন্য দু’য়ের ‘মিক্সচার’ করে ফেলে দাও যাতে আর ফল দিতে না পারে। এডজাস্ট এভরিহােয়্যার’ তাে আমি আবিষ্কার করেছি। ভালাে-ই বলুক আর খারাপই বলুক, দু’য়ের সাথেই এডজাস্ট হয়ে যাও। আমাকে যদি কেউ বলে, ‘তােমার কোন আক্কেল নেই’ তাে আমি তার সাথে তৎক্ষণাৎ এডজাস্ট হয়ে যাই আর বলি “সে তাে কোনদিনই নেই। আমাকে আর তুমি কি বলবে। তুমি তাে একথা আজকে জানলে; আমি তাে ছােটবেলা থেকেই তা জানি। এরকম বললে ঝামেলা মেটে তাে? আর এ আমার কাছে আক্কেল-এর কথা বলবে না। এইভাবে না চললে নিজের ঘর’ (মােক্ষ) কখন পৌঁছাবে?
ওয়াইফ (স্ত্রী)-এর সাথে এডজাস্টমেন্ট প্রশ্নকর্তা : এডজাস্ট কেমন করে করব এটা একটু বুঝিয়ে দিন।
দাদাশ্রী ? তােমার কোন কারণবশতঃ দেরি হয়ে গেল আর স্ত্রী উল্টাসিধা বলতে লাগল, এত দেরী করে এলে, আমার পছন্দ নয় এই সব, এটা সেটা...' মানে মাথা খারাপ হয়ে গেল। তখন তুমি বলবে, হ্যা, তােমার কথা ঠিক। তুমি বললে ফিরে যাই, তুমি বললে ঘরে এসে বসি। তখন বলবে, না, ফিরে যেতে হবে না, এখন চুপচাপ শুয়ে পড়াে। তবুও বলবে, ‘তুমি বললে খাব, নয়তাে সুয়ে পড়বাে”। তখন বলবে, “না, খেয়ে নাও। অর্থাৎ তুমি একে শান্ত করে খেয়ে নেবে। মানে এডজাস্ট হয়ে গেল। এর
[৭]
Page #11
--------------------------------------------------------------------------
________________
ফলে সকালে ফার্স্টক্লাস চা দেবে আর যদি উপর থেকে রাগারাগি করাে তাে চায়ের কাপ ঠক্ করে রাখবে। এটা তিনদিন ধরে চলতেই থাকবে।
খিচুড়ি খাব না হােটেলে পীঞ্জা এডজাস্ট করতে না জানলে কি করবে? লােকে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করবে?
প্রশ্নকর্তা : হ্যা।
দাদাশ্রী ও এমনি? কি ভাগ ঠিক করলে? স্ত্রীর সাথে কি ভাগ - বাঁটোয়ারা করবে? সম্পত্তির ভাগীদারী তাে আছেই।
প্রশ্নকর্তা ও স্বামীর গুলাবজামুন খাওয়ার ইচ্ছে আর স্ত্রী খিচুড়ি বানায়। তারপর ঝগড়া হয়।
দাদাশ্রী ও ঝগড়া করার পরে কি গুলাবজামুন আসে? খিচুড়ি-ই তাে খেতে হয়।
প্রশ্নকর্তা ও পরে বাইরে হােটেল থেকে পীৎজা আনাই।
দাদাশ্রী ? এইরকম? অর্থাৎ এটাও হলাে না আর ওটাও হলাে না। পীজা তাে আসে, তাই না? কিন্তু গুলাবজামুন তাে তােমার হাত থেকে বেরিয়ে গেল। এ না করে বলতে হতাে তােমার যা ভাল লাগে তাই বানাও। তার-ও তাে কোনদিন খাওয়ানাের ইচ্ছা হতে পারে। সে কি খাবে না? তখন তুমি বলবে তােমার যা সুবিধা হয় তাই বানাও। তাহলে সে বলবে না, তােমার যা ভাল লাগে তাই বানাব। তখন তুমি বলতে পারবে ‘তাহলে গুলাবজামুন বানাও। আর যদি প্রথমেই গুলাবজামুন বানাতে বলাে তাহলে খিচুড়ি বানাবে। এইরকম উল্টো-ই চলবে।
প্রশ্নকর্তা ঃ এই মতভেদ দূর করার উপায় কি?
দাদাশ্রী ঃ আমি তাে এই রাস্তা-ই দেখাই যে এডজাস্ট এভরিহােয়্যার। সে যদি বলে যে “আজ খিচুড়ি বানাব’ তাে তুমি এডজাস্ট হয়ে যাবে। আর তুমি যদি বলাে না, আজ আমরা বাইরে যাব, সৎসঙ্গে যাব’ তাহলে তাকে এডজাস্ট হতে হবে। যে আগে বলবে তার সাথে অন্যকে এডজাস্ট হতে হবে।।
[ ৮ ]
Page #12
--------------------------------------------------------------------------
________________
প্রশ্নকর্তা : তাহলে তাে প্রথমে বলার জন্যেই মারামারি হবে।
দাদাশ্রী ঃ হ্যা, তাই করবে কিন্তু এডজাস্ট হয়ে যাবে। কেননা তােমাদের হাতে কোন ক্ষমতা নেই। সত্ত্বা কার হাতে আছে তা আমি জানি। তাহলে ভাই, এখানে এড জাস্ট হতে কোন অসুবিধা আছে কি ?
প্রশ্নকর্তা ঃ না, কিছুই নয়। দাদাশ্রী ও বহেনজী, তােমার আপত্তি আছে? প্রশ্নকর্তা ঃ না।।
দাদাশ্রী ? তাহলে এর একটা ফয়সালা করে নাও না। এডজাস্ট এভরিহােয়্যার’! এতে কোন আপত্তি আছে?
প্রশ্নকর্তা ঃ না, একটুও নয়। | দাদাশ্রী ঃ ও যদি প্রথমে বলে যে আজ পিঁয়াজ-পকোড়া,লাড়, সবজী। সব বানাও তাহলে তুমি এডজাস্ট হয়ে যাবে আর তুমি যদি বলাে আজ তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়বাে তাহলে ওর এতে এডজাস্ট হয়ে যাওয়া উচিৎ। (ভাইকে উদ্দেশ্য করে) তােমার যদি কোন বন্ধুর কাছে যাওয়ার থাকে তাহলে সেটা মুলতুবী রেখে শুয়ে পড়বে কারণ বন্ধুর সাথে ঝামেলা হলে পরে দেখে নেওয়া যাবে, কিন্তু এখানে এই প্রথম ঝামেলা তাে হতেই দেবে
। ওখানে বন্ধুর সাথে ভালাে হওয়ার জন্যে এখানে ঝামেলা করবে, তা হওয়া চলবে না। অর্থাৎ ও যদি প্রথমে বলে তাহলে তুমি এডজাস্ট হয়ে যাবে।
প্রশ্নকর্তা ? কিন্তু আমার যদি আটটার সময় মীটিং-এ যাওয়ার হয়। আর স্ত্রী বলে যে এখন শুয়ে পড়ে তাহলে সেটা কেমন করে করবাে?
দাদাশ্রী ? এরকম কল্পনা করবে না। প্রকৃতির নিয়ম হলাে ‘হােয়্যার দেয়ার ইজ এ উইল, দেয়ার ইজ এ ওয়ে’ (ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়)। কল্পনা করবে তাে গন্ডগােল হবে। সে দিন সে নিজেই বলবে তাড়াতাড়ি যাও’, নিজে গ্যারেজ অবধি ছাড়তে আসবে। কল্পনা করার জন্যেই সব নষ্ট হয়। এইজন্যে আমি একটা বইতে লিখেছি ‘হোয়্যার দেয়ার ইজ এ উইল, দেয়্যার ইজ এ ওয়ে’ পালন করতে পারলেই অনেক হবে। পালন করবে। তাে ?
প্রশ্নকর্তা : হাঁ, জী।
[ ৯ ]
Page #13
--------------------------------------------------------------------------
________________
দাদাশ্রী ঃ নে প্রমিস কর। ঠি! ঠি! একেই বলে শূরবীর, প্রমিস করেছে!
ভােজনে এডজাস্টমেন্ট ব্যবহার সঠিক তখনই বলা যাবে যখন ‘এডজাস্ট এভরিহােয়্যার’ হবে। এখন ডেভেলপমেন্টের (প্রগতি-র) সময় এসেছ। মতভেদ হতে দেবে না। এইজন্যে এখন লােকেদের আমি সূত্র দিয়েছি, ‘এডজাস্ট এভরিহােয়্যার’! এডজাস্ট, এডজাস্ট, এডজাস্ট। কড়ী (এক প্রকার ব্যঞ্জন) নুন বেশী হলে বুঝে নেবে দাদাজী এডজাস্টমেন্ট নিতে বলেছেন। সুতরাং কড়ী একটু খেয়ে নেবে। হ্যা, আচার মনে পড়লে আনিয়ে নেবে একটু আচার আনাে বলে। কিন্তু ঝগড়া করবে না, ঘরে ঝগড়া হওয়া উচিৎ নয়। নিজে কোন জায়গায় মুস্কিলে পড়লে সেখানে স্বয়ং-ই এডজাস্টমেন্ট করে নেবে, তাহলেই সংসার সুন্দর লাগে।
পছন্দ না হলেও মেনে নাও তােমার সাথে যারা ডিসএডজাস্ট হতে আসবে তাদের সাথে তুমি এডজাস্ট হয়ে যাও। প্রাত্যহিক জীবনে যদি শাশুড়ী-বৌয়ের বা বড়বৌছােটবােয়ের মধ্যে ডিসএডজাস্টমেন্ট হয় তাহলে যার এই সংসারের ঘটনাচক্র থেকে মুক্তি পাওয়ার ইচ্ছা আছে তাকেই এডজাস্ট হতে হবে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যদি কেউ একজন ফাটল ধরায় তাহলে অন্যজনকে জোড়া লাগাতে হবে, তাহলেই সম্পর্ক বজায় থাকবে আর শান্তি থাকবে। যে এডজাস্টমেন্ট করতে না পারে লােকে তাকে মেন্টাল (পাগল) বলে। এই রিলেটিভ সত্যের প্রতি আগ্রহ বা জেদ করার কিছুমাত্র প্রয়ােজন নেই। মানুষ কাকে বলে ? যে এভরিহােয়্যার এডজাস্টেবল। চোরের সাথেও এডজাস্ট হয়ে যেতে হয়।
[ ১০ ]
Page #14
--------------------------------------------------------------------------
________________
শােধরাব অথবা এঞ্জাস্ট হয়ে যাব প্রত্যেক পরিস্থিতিতে যদি আমি সামনের লােকের সাথে এডজাস্ট হতে পারি তাে সবকিছু কত সরল হয়ে যায়। আমি সাথে কি নিয়ে যাব? কেউ বলবে ‘ভাই, স্ত্রী-কে সিধা করে দাও। আরে, ওকে সিধা করতে গেলে তুমিই বাঁকা হয়ে যাবে। সেইজন্যে স্ত্রী-কে সিধা করতে যেও না, যেমন হােক তাকেই কারেক্ট বলবে। তার সাথে তােমার চিরকালের সম্বন্ধ হলে আলাদা কথা, এ তাে একজন্ম, তারপর না জানি কোথায় হারিয়ে যাবে। দু’জনের মৃত্যুর সময় আলাদা, দু’জনের কর্ম আলাদা! কিছু নেওয়ারও নেই, দেওয়ারও নেই! এখান থেকে ও কার কাছে যাবে তার ঠিকানা কি? তুমি ওকে সােজা করবে আর সামনের জন্মে যাবে আর কারাের ভাগে!
এইজন্যে না তাে তুমি ওকে সিধা করবে আর না ও তােমাকে সিধা করবে। যা পেয়েছাে তাই সােনা হেন। প্রকৃতি কারাের কখনও সােজা হয়
, হতে পারে না। কুকুরের লেজ বাঁকা তাে বাঁকাই থাকে। এইজন্য তুমি সাবধান হয়ে চলাে। যেমন আছে সেটাই ঠিক আছে, ‘এডজাস্ট এভরিহােয়্যার।
| পত্নী তাে ‘কাউন্টার ওয়েট প্রশ্নকর্তা : আমি স্ত্রীর সাথে এডজাস্ট করার অনেক চেষ্টা করি, কিন্তু এডজাস্টমেন্ট হয় না।
দাদাশ্রী ও সবই হিসাব অনুযায়ী হয়। বলটুও বাঁকা আর নাটও বাঁকা, তাে সেখানে সােজাভাবে ঘােরালে কিভাবে চলবে? আপনার মনে হতে পারে যে স্ত্রী-জাতি এরকম কেন? কিন্তু স্ত্রী-জাতি তাে আপনার কাউন্টার ওয়েট। যতটা আপনার দোষ, ততটাই ও ট্যাড়া; এইজন্যেই তাে সব ‘ব্যবস্থিত, এইরকম আমি বলেছি না?
প্রশ্নকর্তা ও সবাই আমাকে সােজা করতে এসেছে, এরকম-ই মনে হচ্ছে।
দাদাশ্রী ? সে তাে তােমাকে সােজা করাই দরকার। সােজা না হলে। কি দুনিয়া চলে? সােজা না হলে বাবা কি করে হবে? সােজা হলে তবেই বাবা হতে পারবে। স্ত্রী-জাতি এমনই যে বদলাবে না, তাই আমাদের বদলাতে
[ ১১ ]
Page #15
--------------------------------------------------------------------------
________________
হবে। ওরা সহজ জাতি, বদলে যাবে এমন নয়। স্ত্রী, সেটা কি বস্তু? প্রশ্নকর্তা ঃ আপনিই বলুন।
দাদাশ্রী ঃ ওয়াইফ ইজ দ্য কাউন্টার ওয়েট অফ্ মেন। ওই কাউন্টার ওয়েট না থাকলে মানুষ (পুরুষ) লুটিয়ে পড়বে।
প্রশ্নকর্তা ঃ এটা বুঝতে পারলাম না।
দাদাশ্রী ও ইঞ্জিনে কাউন্টার ওয়েট রাখা হয় নইলে ইঞ্জিন চলতে চলতে ভেঙ্গে যাবে। এইরকমেই মানুষের কাউন্টার ওয়েট স্ত্রী। স্ত্রী থাকলে ভেঙ্গে পড়বে না। নয়তাে দৌড়-ঝাপ করেও কোন ঠিকানা থাকত না। আজ এখানে তাে কাল কোথা থেকে কোথায় চলে যেত। স্ত্রী আছে তাই ঘরে ফিরে আসে, নয়তাে ঘরে ফিরতাে কি?
প্রশ্নকর্তা ও আসতাে না। দাদাশ্রী ও স্ত্রী ওর কাউন্টার ওয়েট।
সংঘর্ষ, শেষ পর্যন্ত অন্ত পায় | প্রশ্নকর্তা ঃ সকালের সংঘাত দুপুরে ভুলে যাই আর সন্ধ্যায় আবার নতুন হয়।
দাদাশ্রী ও সংঘর্ষ কোন শক্তিতে হয় তা আমি জানি। ও উল্টো বলে, তাতে কোন শক্তি কাজ করছে? বলার পরে আবার এডজাস্ট’ হয়ে যায়, এসব জ্ঞান দ্বারাই বােঝা যায়, এইরকম ব্যাপার। তবুও সংসারে ‘এডজাস্ট’ হতে হবে। কেননা প্রত্যেক বস্তুর-ই অন্ত আছে। আর ধরে নাও যদি লম্বা সময় চলেও তাহলেও তুমি তাকে সাহায্য করছে না বরং বেশী লােকসান করছাে। তুমি নিজেরও লােকসান করছাে আর সামনের জনেরও লােকসান করছাে।
অথবা প্রার্থনার ‘এডজাস্টমেন্ট প্রশ্নকর্তা ও সামনের লােককে বােঝানাের জন্য আমি আমার পুরুষার্থ করলাম, তারপরে সে বুঝলাে - না বুঝলাে সেটা তার পুরুষার্থ ?
[১২]
Page #16
--------------------------------------------------------------------------
________________
দাদাশ্রী ঃ আমার দায়িত্ব এইটুকুই যে আমি ওকে বােঝাবাে। তাতে ও না বুঝলে তার আর কোন উপায় নেই। তারপর তুমি এটুকুই বলবে, ‘হে দাদা ভগবান! একে সদবুদ্ধি দিন। এটা তাে বলতে হবে। তাকে মাঝখানে ঝুলিয়ে রাখতে পারাে না। এটা কোন গাল-গল্প নয়। এটা দাদাজীর ‘এডজাস্টমেন্ট’-এর বিজ্ঞান, আশ্চর্যজনক এই ‘এডজাস্টমেন্ট। আর যেখানে ‘এডজাস্ট’ হতে পারাে না সেখানে ওর স্বাদ তাে তুমি নিশ্চয়ই পাও? ‘ডিসএডজাস্টমেন্ট’-ই মূখত। কারণ ও মনে করে যে আমি আমার স্বামীত্ব ছাড়ব না আর আমার কথামত-ই সব চলবে। এরকম মেনে চললে সারা জীবন ক্ষুধায় কষ্ট পাবে আর একদিন থালায় ‘পয়জন’ (বিষ) এসে পড়বে! সহজরূপে যা চলছে তাকে চলতে দাও! বাতাবরণ-ই কেমন?! এইজন্যে স্ত্রী যখন বলবে যে, তুমি নালায়েক’, তখন বলবে ‘খুব ভালাে।
কুটিল প্রকৃতির লােকের সাথে এডজাস্ট হয়ে যাও প্রশ্নকর্তা ও ব্যবহার তাে তাকেই বলব যে এডজাস্ট হয়ে যায় যাতে প্রতিবেশীও বলে যে সব বাড়িতে ঝগড়া হয়, কিন্তু এই বাড়িতে ঝগড়া হয় না। এর ব্যবহার সর্বোত্তম বলা যায়। যার সঙ্গ পছন্দ হয় না, সেখানেই শক্তি বিকশিত করতে হবে। যেখানে অনুকূল সেখানে তাে শক্তি আছেই। প্রতিকূল ভাবা - সে তাে দুর্বলতা। আমার সবার সাথে অনুকূলতা থাকে কেন? যত এডজাস্টমেন্ট নেবে তত শক্তি বাড়বে আর দুর্বলতা নষ্ট হবে। সত্যিকারের বােধ তাে তখন আসবে যখন সমস্ত উল্টো বােধে তালা লেগে যাবে।
নরম স্বভাবের লােকের সাথে তাে সবাই এডজাস্ট হবে কিন্তু কুটিল, কঠোর, গরম মেজাজের লােকের সাথে এডজাস্ট হতে পারলে কাজে আসবে। যতই নির্লজ্জ মানুষ হােক না কেন তার সাথে যদি মাথা গরম
করে এডজাল্ট হতে পারা যায় তাহলে তা কাজের। রেগে গেলে চলবে । জগতের কোন বস্তুই তােমার সাথে ‘ফিট’ হবে না। তুমি যদি সবার সাথে “ফিট হয়ে যাও তাহলে জগৎ সুন্দর আর সবাইকে ‘ফিট’ করানাের চেষ্টা করতে গেলে জগৎ বাঁকা। সুতরাং এডজাস্ট এভরিহােয়্যার’! তুমি যদি এতে ‘ফিট’ হয়ে যাও তাে কোন অসুবিধা নেই।
[ ১৩ ]।
Page #17
--------------------------------------------------------------------------
________________
ডোন্ট সী ল, সেল্ (নিয়ম দেখতে যেও না, মিটিয়ে নাও)
সামনের লোক যদি ট্যাড়া হয় তো জ্ঞানী তার সাথেও এডজাস্ট হয়ে যান। ‘জ্ঞানীপরুষ’কে দেখে চললে সব রকমের এডজাস্টমেন্ট নেওয়া শিখে যাবে। এর পিছনের বিজ্ঞান বলছে যে বীতরাগ হও, রাগ-দ্বেষ কোরো না। এ তো ভিতরে কিছুটা আসক্তি থেকে যায় সেইজন্যে মার খেতে হয়। ব্যবহারে যে একতরফা নিস্পৃহ হয়ে গেছে তাকে ট্যাড়া বলে। তোমার প্রয়োজন থাকলে সামনের জন ট্যাড়া হলেও তাকে মানিয়ে নিতে হবে। স্টেশনে কুলীর দরকার আর সে হ্যাঁ-না করছে, তাহলেও তাকে চার-আনা বেশী দিয়ে রাজী করাতে হবে। রাজী করাতে না পারলে ব্যাগ নিজেকেই বইতে হবে!
ডোন্ট সী ল’জ্, প্লীজ্ সে। সামনের লোককে মানিয়ে চলার জন্যে বলা, ‘আপনি এই রকম করুন, ওইরকম করুন' এসব বলার সময়ই কোথায়? সামনের জনের শত ভুল হলেও তোমাকে তো ‘আমার-ই ভুল’ বলে এগিয়ে যেতে হবে। এই কালে ল’(নিয়ম) কি দেখা হয় ? এ তো শেষ সীমায় পৌঁছে গেছে। যেখানেই দেখো সেখানেই দৌড়ঝাঁপ আর ব্যস্ততা! লোক তিতিবিরক্ত হয়ে গেছে। ঘরে গেলে স্ত্রী-র চেঁচামেচি, বাচ্চার নালিশ, চাকরীতে গেলে সেঠজীর নালিশ, রেলে গেলে ভীড়ের ধাক্কা খেতে হয়। কোথাও শান্তি নেই। শান্তি তো দরকার না? কেউ যদি ঝগড়া করে তো তার উপর দয়া হওয়া উচিৎ যে, ‘আরে, এর কত অশান্তি যে ঝগড়া শুরু করেছে।' যারা আকুল হয়, তারা সবাই দুর্বল হয়।
নালিশ? না, ‘এডজাস্ট’
ব্যাপারটা এইরকম যে ঘরেও ‘এডজাস্ট’ হতে জানা চাই। তুমি সৎসঙ্গ থেকে দেরীতে ঘরে ফিরলে ঘরের লোক কি বলবে? ‘একটু-আধটু সময়ের খেয়াল তো রাখা চাই?' তখন আমি তাড়াতাড়ি বাড়ী ফিরলে অসুবিধা কোথায়? বলদ না চললে তেলী তাকে অঙ্কুশের খোঁচা মারে; তার বদলে যদি ও আগে চলতে থাকে তো তেলী ওকে খোঁচা মারবে না! নইলে তেলী আরও খোঁচা মারবে আর তাকে চলতে হবে। চলতে তো হবে, না কি?
[ ১৪ ]
Page #18
--------------------------------------------------------------------------
________________
তুমি এরকম দেখেছাে কি? আগায় পেরেক লাগানাে লাঠি দিয়ে খােচা দেয়, বােবা প্রাণী কি করবে? ও কাকে নালিশ জানাবে?
এইসব লােককে যদি কেউ খোঁচা দেয় তাে তাদের বাঁচাতে অন্য লােকজন এগিয়ে আসবে, কিন্তু এই বােবা প্রাণী কার কাছে নালিশ করবে? এখন ওর এরকম মার খাওয়ার সময় কেন এল ? কারণ আগে অনেক নালিশ করেছিল। তার এই পরিণাম এসেছে। সেইসময় ক্ষমতায় ছিল, তখন নালিশের পর নালিশ করেছে। এখন ক্ষমতায় নেই, সেইজন্যে নালিশ
করেই থাকতে হবে। এখন তাই ‘প্লাস-মাইনাস করে ফেল। এর বদলে ফরিয়াদী হােয়াে না। এতে ভুল কোথায়? ফরিয়াদী হলে তবেই না আরােপী হওয়ার সময় আসবে? আমার তাে আরােপী হওয়ারও দরকার নেই আর ফরিয়াদী হওয়ারও দরকার নেই! কেউ গালি দিয়ে গেলে তা জমা করে নেবে। ফরিয়াদী হবেই না। তােমার কি মনে হচ্ছে? ফরিয়াদী হওয়া ভালাে? তার বদলে যদি অগে থেকেই ‘এডজাস্ট’ হয়ে যাও তাে তাতে ভুল কোথায় ?
উল্টো বলে ফেলার পরে ব্যবহারে ‘এডজাস্টমেন্ট নেওয়া – একে এই কালে জ্ঞান বলে। হ্যা, এডজাস্টমেন্ট করে নেবে। এডজাস্টমেন্ট ভেঙে গেছে, তবুও এডজাস্ট করে নেবে। তুমি কাউকে ভাল-মন্দ কিছু বলে ফেলেছে। এখন বলাটা তােমার হাতে নয়। তুমিও তাে কখনও এরকম বলে দাও, না কি বলাে না? বলে তাে দিলে, কিন্তু পরে সাথে-সাথেই বুঝতে পারাে যে ভুল হয়ে গেছে। বুঝতে পারবে না এরকম হয় না, কিন্তু সেই সময় আমরা এডজাস্ট করতে যাই না। পরে তাড়াতাড়ি তার কাছে গিয়ে বলা উচিৎ, ভাই, আমার মুখ থেকে সেইসময় খারাপ কথা বেরিয়ে গিয়েছিল, আমার ভুল হয়ে গেছে, এজন্য ক্ষমা করাে!' তাে এডজাস্টমেন্ট হয়ে গেল। এতে কোন অপত্তি আছে?
প্রশ্নকর্তা : না, কোন আপত্তি নেই।।
[ ১৫ ]
Page #19
--------------------------------------------------------------------------
________________
সব জায়গায় এডজাস্টমেন্ট প্রশ্নকর্তা ঃ অনেক বার এমন হয় যে একই সময়ে একই বিষয়ে দুজনের সাথে এডজাস্টমেন্ট নিতে হয়, তাে তখন দুজনের কাছে কি করে পৌঁছাব?
দাদাশ্রী ও দুজনের সাথেই নেওয়া যায়। আরে, সাতজনের সাথে নেওয়ার হলেও নেওয়া যায়। একজন জিজ্ঞাসা করল, আমার কি করলে? তাকে বলবে, “হ্যা ভাই, আপনার কথা মতই করব। দ্বিতীয় জনকেও এরকম বলবে, তুমি যেমন বলছ সেরকম করব।
‘ব্যবস্থিত’-এর বাইরে তাে কিছুই হবে না। সেজন্য ঝগড়া না হয়। এরকম কোন উপায় করবে। মুখ্য বস্তু ‘এডজাস্টমেন্ট’। হ্যা বললে মুক্তি। আমরা হা বললেও ‘ব্যবস্থিত’-এর বাইরে কিছু হবে কি? কিন্তু ‘না’ বললে ভীষণ ঝামেলা।
ঘরে স্বামী-স্ত্রী দুজনে স্থিরনিশ্চয় করবে যে আমাকে এডজাস্ট হতে হবে। তাহলে দুজনেরই সমাধান আসবে। ও বেশি টানাটানি করে তাে তুমি ‘এডজাস্ট’ হলে সমাধান বেরিয়ে যাবে। একজনের হাতে ব্যথা হচ্ছিল, কিন্তু সে অন্য কাউকে বলেনি, আর অন্য হাত দিয়ে সেই হাত টিপে ‘এডজাস্ট’ করছিল। এইরকম এডজাস্ট করতে পারলে সমস্যার সমাধান হবে। এডজাস্ট এভরিহােয়্যার’ না হলে তাে সবাই পাগল হয়ে যাবে। সামনের লােককে বিরক্ত করছিলে, সেই কারণেই সে পাগল হয়েছে। কুকুরকে একবার বিরক্ত করাে, দু-বার, তিনবার বিরক্ত করাে, ততক্ষণ পৰ্য্যন্ত আমার সম্মান রাখবে। কিন্তু বার-বার বিরক্ত করলে সে-ও আমাকে কামড়ে দেবে। সে-ও বুঝে যাবে যে এ রােজ-রােজ বিরক্ত করে,এ নালায়েক, নির্লজ্জ। এটা বােঝার মতাে কথা। এতটুকুও ঝঞ্ঝাট করবে না, ‘এডজাস্ট এভরিহােয়্যার।
যে ‘এডজাস্ট’ হওয়ার কলা শিখে গেছে সে দুনিয়া থেকে মােক্ষের দিকে ঘুরে গেছে। এডজাস্টমেন্ট’ হয়েছে, এরই নাম জ্ঞান। যে ‘এডজাস্টমেন্ট শিখে গেছে সে পার পেয়ে গেছে। যা ভুগবার সে তাে ভুগতেই হবে। ক্রুি যে এডজাস্টমেন্ট’ নতে শিখে গেছে তাকে বাধার সম্মুখীন হতে হবে
, হিসাব শােধ হয়ে যাবে। কখনও লুটেরার সামনে পড়লে, তার সাথ ‘ডিসএডজাস্ট’ হলে সে তাে মারবে। তার বদলে একদম স্থির করাে যে
[১৬]
Page #20
--------------------------------------------------------------------------
________________
এর সাথে এডজাস্ট’ হয়ে কাজ সারতে হবে। তারপরে জিজ্ঞাসা করাে, ভাই, তােমার কি ইচ্ছা ? দেখাে ভাই, আমি তাে যাত্রায় বেরিয়েছি। তার সাথে এডজাস্ট হয়ে যাবে।
স্ত্রী খাবার বানিয়েছে, তাতে ভুল বার করলে তা ব্লান্ডার। এরকম ভুল বার করবে না। যেন নিজে কখনও ভুল করাে না এভাবে কথা বলে। হাউ টু এডজাস্ট? এডজাস্টমেন্ট নেওয়া উচিৎ। যার সাথে সবসময় থাকতে হবে তার সাথে এডজাস্টমেন্ট নিতে হবে না? তােমার থেকে যদি কেউ দুঃখ পায় তাে তাকে ভগবান মহাবীর-এর ধর্ম কি করে বলবে? আর ঘরের লােকেদের তাে অবশ্যই দুঃখ না হওয়া চাই।।
ঘর - একটি বাগিচা। এক ভাই আমাকে বলছিল যে, ‘দাদাজী, আমার স্ত্রী ঘরে এইরকম করে, ওইরকম করে। তখন আমি তাকে বললাম যে তােমার স্ত্রী-কে জিজ্ঞাসা করলে সে বলবে, আমার পতিই নির্বোধ। এখন এতে তুমি তােমার একার ন্যায় কেন খুঁজছাে কেন? তখন সে ভাই বলল, “আমার তাে ঘর বিগড়ে গেছে, বাচ্চারা বিগড়ে গেছে, স্ত্রী বিগড়ে গেছে। আমি বললাম, “কিছুই বিগড়ে যায় নি। তােমার দেখার চোখ নেই। তােমার নিজের ঘর দেখতে পারা চাই। প্রত্যেকের প্রকৃতিকে চিনতে পারা চাই।
ঘরে এডজাস্টমেন্ট হয় না, তার কারণ কি? পরিবারে বেশী সদস্য হলে তাদের সবার মধ্যে তাল-মেল থাকে না। পরে দই জমার আগেই হাত দেওয়ার মত ব্যাপার হয়ে যায়। এরকম কেন হয়? মানুষের স্বভাব একরকম হয় না। যুগ যেরকম হয় স্বভাবও সেরকম হয়ে যায়। সত্যযুগে সবার মধ্যেই মিল থাকে। ঘরে একশাে-জন থাকলেও দাদাজী যা বলেন সেই অনুসারে সবাই চলত আর এই কলিযুগে তাে দাদাজী কিছু বললে তাকে লম্বা-চওড়া গালি শােনায়। বাবা যদি কিছু বলে তাে তাকেও সেরকমই শুনিয়ে দেয়।
এখন মানুষ তাে মানুষ-ই, কিন্তু তােমার চেনার ক্ষমতা নেই। ঘরে পঞ্চাশজন লােক আছে কিন্তু তুমি তাদের চিনতে সক্ষম নও। সেইজন্যে একে অন্যের ব্যাপারে দখল হয়ে যায়। এদেরকে চেনা তাে দরকার। ঘরে
[[ ১৭ ]
Page #21
--------------------------------------------------------------------------
________________
কোন ব্যক্তি যদি কিকি করে তাে সেটা তার স্বভাব। সেইজন্যে তােমাকে বুঝে নিতে হবে এর স্বভাব এইরকম। তুমি কি সত্যিই বুঝতে পারাে যে এ এইরকমই? তাহলে এতে আর বেশি খোঁজ করার কি দরকার? তুমি চিনতে পেরেছাে, তাহলে আর খোঁজ-খবরের কোন দরকার থাকে
। কিছু লােকের রাতে দেরীতে শােওয়া স্বভাব, আবার কিছু লােক তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ে। তাে এদের মধ্যে সমন্বয় কি করে হবে? আর পরিবারে সব সদস্য যদি একসাথে থাকে তাহলে কি হবে? ঘরে যদি কারাের এরকম বলার অভ্যেস থাকে যে তােমার আক্কেল কম’ তাহলে তােমাকে বুঝে নিতে হবে যে এর কথাই এরকম। সুতরাং তােমাকে এডজাস্ট হতে হবে। তার বদলে তুমিও প্রত্যুত্তর দিতে থাকলে ক্লান্ত হয়ে পড়বে। কেননা সে তাে তােমাকে ধাক্কা দিয়েছ, কিন্তু তুমিও তাকে ধাক্কা দিলে তােমারও চোখ নেই এটাই প্রমাণিত হয়ে যায় না কি? আমি এটাই বলতে চাইছি | যে প্রকৃতির সায়েন্স জানাে। বাকী, আত্মা তাে আলাদা জিনিষ।
বাগিচার ফুলের বর্ণ - সুগন্ধ বিভিন্ন তােমার ঘর তাে বাগিচা। সত্য-ক্রেতা-দ্বাপরযুগে ঘর ক্ষেতের মত হত। কোন ক্ষেতে শুধুই গােলাপ, কোন ক্ষেতে শুধুই চম্পা। কিন্তু এখন ঘর বাগানের মত হয়ে গেছে। সেইজন্যে এটা জুই না গােলাপ তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে না? সত্যযুগে এইরকম ছিল যে একটা ঘরে গােলাপ হলে সবাই গােলাপ আর অন্য ঘরে একজন জুই হলে অন্য সকলেই জুই হত। এক পরিবারে সমস্তই গােলাপের গাছ, একটা ক্ষেতের মত। সেইজন্যে অসুবিধা হত না। আর আজকাল বাগানের মত হয়ে গেছে। এক ঘরে একজন গােলাপের মত তাে আরেকজন জুইয়ের মত। তাই গােলাপ চেঁচামেচি করে যে তুই কেন আমার মত নয় ? তাের রং দেখ, কেমন সাদা আর আমার রং কেমন সুন্দর! তখন জুই বলে তাের তাে খালি কাঁটা। এখন গােলাপ হলে কাটা থাকবে আর জুইফুল হলে কাটা থাকবে না। জুইফুল সাদা হবে আর গােলাপ ফুল গােলাপী হবে, লাল হবে। এই কলিযুগে একই ঘরে আলাদা আলাদা গাছ হয়। অর্থাৎ ঘর বাগানের মত হয়ে গেছে। কিন্তু এটা যার দেখার ক্ষমতা নেই তার কি হবে? তার দুঃখ তাে হবেই। জগতের এটা দেখার দৃষ্টি নেই। আসলে কেউ খারাপ হয় না।
[ ১৮ ]]
Page #22
--------------------------------------------------------------------------
________________
এই মতভেদ তাে নিজের অহংকারের জন্যে হয়। যে দেখতে জানে তার অহংকার আছে। আমার অহংকার নেই তাই সারা সংসারে কারাের সাথে আমার মতভেদ হয় না। আমি দেখতে পাই এটা গােলাপ’, এটা ‘জুই’, এ ধুতুরা’, এটা কটু কুদরু’-র ফুল। এরকম সব আমি চিনতে পারি। মানে বাগানের মত হয়ে গেছে। এটা প্রশংসনীয় নয় কি? তােমার কি মনে হয়?
প্রশ্নকর্তা ঃ ঠিক আছে।
দাদাশ্রী ঃ কথা হল যে প্রকৃতিতে পরিবর্তন হয় না। ও তাে যেমনকার তেমন জিনিস, ওতে কোন পার্থক্য হয় না। আমি প্রত্যেক প্রকৃতিকে জেনেছি, সেইজন্য তাড়াতাড়ি চিনতে পারি। তাই আমি প্রত্যেকের সাথে তার প্রকৃতি অনুসারে থাকি। সূর্যের সাথে যদি আমি দুপুর বারােটার সময় বন্ধুত্ব করি তাে কি হবে? এইভঅবে যদি আমি বুঝতে পারি যে এ গ্রীষ্মের সূর্য, এ শীতের সূর্য, এরকম সব বুঝলে কোন অসুবিধা হবে কি ? | আমি প্রকৃতিকে চিনি, সেইজন্যে তুমি ধাক্কা দিতে চাইলেও আমি ধাক্কা লাগতে দেব না, সরে যাব। নয়তাে দুজনেরই অ্যাক্সিডেন্ট হবে আর দুজনেরই স্পেয়ারপার্টস ভেঙে যাবে। কারাের যদি বাম্পার ভেঙে যায় তাে ভিতরে যারা বসে আছে তাদের কি অবস্থা হবে? যারা বসে আছে তাদের দুর্দশা হবে না! সুতরাং প্রকৃতিকে চেনাে। ঘরে সবার প্রকৃতি চিনে নিতে হবে।
এই কলিযুগে প্রকৃতি ক্ষেতের মত নয়, বাগিচার মত। একজন চম্পা তাে অন্যজন গােলাপ, জুই, চামেলী এইসমস্ত। তাই সব ফুল ঝগড়া করে। একজন যদি বলে আমার এইরকম তাে আরেকজন বলে আমার এইরকম। তখন একজন বলবে তাের কাটা আছে, চলে যা, তাের সাথে কে থাকবে। এইরকম ঝগড়া চলতেই থাকে।
কাউন্টারপুলীর চমৎকার আমার নিজের মত প্রথমে রাখা উচিৎ নয়। সামনের জনকে জিজ্ঞাসা করবে যে এই প্রসঙ্গে তুমি কি বলতে চাও? সে যদি নিজের মত ধরে রাখে তাে আমি নিজের মত ছেড়ে দিই। আমার তাে এটাই দেখার যে। কোনভাবে যেন সামনের জনের দুঃখ না হয়। নিজের অভিপ্রায় সামনের
[ ১৯ ]।
Page #23
--------------------------------------------------------------------------
________________
লােকের উপর চাপিয়ে দেবে না। সামনের জনের অভিপ্রায় তােমাকে নিতে হবে। আমি তাে সবার অভিপ্রায় নিয়ে ‘জ্ঞানী’ হয়েছি। আমি নিজের অভিপ্রায় অন্যের উপর চাপিয়ে দিলে তাে আমিই অবুঝ হয়ে যাব। নিজের অভিপ্রায় থেকে কারাের দুঃখ যেন না হয়। তােমার ‘রিভল্যুশন’ আঠারাে শাে আর অন্যজনের ছ’শাে, আর তুমি ওর উপর নিজের অভিপ্রায় চালিয়ে | দিলে তাে ওর ইঞ্জিন ভেঙে পড়বে। ওকে সমস্ত ‘গীয়ার’ বদলাতে হবে।
প্রশ্নকর্তা ও রিভল্যুশন’ মানে কি?
দাদাশ্রী ঃ এই যে চিন্তা করার স্পীড, তা প্রত্যেকের আলাদা - আলাদা হয়। কোন ঘটনা ঘটলে মন তাে একমিনিটেই কত কিছু দেখিয়ে দেয়। ওর সমস্ত পর্যায় ‘অ্যাট এ টাইম’ দেখিয়ে দেয়। এই বড়-ভড় প্রেসিডেন্টদের এক মিনিটে বারাে-শাে ‘রিভল্যুশন’ ঘােরে আর আমার পাঁচ-হাজার আর ভগবান মহাবীর-এর লাখ ‘রিভলুশন’ ঘুরতাে!
এই মতভেদ-এর কারণ কি? তােমার স্ত্রী-র ‘রিভলুশন’ একশাে আর তােমার ‘রিভল্যুশন’ পাঁচ-শাে, অথচ তুমি মধ্যিখানে কাউন্টারপুলী’ দিতে জান না। সেই কারণেই স্ফুলিঙ্গ বার হয় আর ঝগড়া হতে থাকে। আরে, কখনাে কখনাে তাে ইঞ্জিন’ ও ভেঙে পড়ে। রিভলুশন’ জিনিষটা বুঝলে? তুমি যদি এই মজদুরের সাথে কথা বলাে তাে তােমার কথা ও বুঝতে পারবে না। ওর রিভলুশন’ পঞ্চাশ আর তােমার পাঁচ-শাে। কারাের হাজার হয়, কারাের বারাে-শাে হয়, যার যেরকম ‘ডেভেলপমেন্ট’ সেই অনুযায়ী তার ‘রিভলুশন’ হয়। মাঝখানে কাউন্টারপুলী’ দিলে তখন তােমার কথা সে বুঝতে পারবে। কাউন্টারপুলী’ মানে তােমাকে মধ্যে পাটা দিয়ে নিজের ‘রিভলুশন’ কম করতে হবে। আমি প্রত্যেক মানুষের সাথে কাউন্টারপুলী’ দিয়ে দিই। শুধু নিরহংকার হলেই যে কাজ হবে তা নয়। কাউন্টারপুলী’ প্রত্যেকের সাথে নিতে হবে। এই কারণে আমার কারাে সাথে মতভেদ হয়ই না। আমি জানি যে এই ভাইয়ের ‘রিফশন’ এত, আর সেই অনুসারে আমি কাউন্টারপুলী’ দিই। আমার তাে ছােট বাচ্চাদের সাথেও খুব ভালাে। জমে যায়। কেননা আমি তাদের জন্যে চল্লিশ রিভলুশন’ করে রাখি। তাই তারা আমার কথা বুঝতে পারে। নয়তাে এই ‘মেশিন’ ভেঙে যাবে।
| [ 20]
Page #24
--------------------------------------------------------------------------
________________
প্রশ্নকর্তা ঃ কেউ যখন সামনের জনের লেভেলে আসে তখনই কথা হয় ? | দাদাশ্রী ঃ হ্যা, ওর ‘রিভলুশন’-এ আসলে তবেই কথা হবে। তােমার। সাথে কথা বলতে বলতে আমার ‘রিভলুশন’ তাে কোথায় কোথায় ঘুরে এল। সমস্ত বিশ্ব ঘুরে এল। তুমি কাউন্টারপুলী’ দিতে জান না। এতে কম ‘রিলুশন’-এর ইঞ্জিনের দোষ কি? ওতাে তােমার দোষ যে তুমি কাউন্টারপুলী’ দিতে জান না।
শেখাে, ফিউজ লাগাতে | এটুকুই বুঝে নেবে যে এই ‘মেশিনারী’ কি রকম আর এর ‘ফিউজ’ উড়ে গেলে কিভাবে এতে ‘ফিউজ লাগানাে যায়। সামনের জনের প্রকৃতির সাথে এডজাস্ট’ হতে পারা চাই।
আমার তাে যদি সামনের জনের ‘ফিউজ’ উড়ে যায় তাহলেও তার সাথে এডজাস্টমেন্ট’ হয়। কিন্তু সামনের জনের যদি ‘এডজাস্টমেন্ট’ ভেঙে যায় তাে কি হবে? ‘ফিউজ চলে গেলে তাে দেওয়ালের সাথে ধাক্কা খাবে, দরজার সাথে ধাক্কা খাবে, কিন্তু ওয়্যার (তার) নষ্ট হয় নি, কানেকশন নষ্ট হয় নি। সুতরাং কেউ যদি ফিউজ লাগিয়ে দেয় তাে আবার সব ঠিক হয়ে যাবে, নয়তাে ততক্ষণ পর্যন্ত অশান্তিতে থাকবে।
আয়ু সংক্ষিপ্ত আর ঝামেলা বেশী সবথেকে বড় দুঃখ কি? ‘ডিসএঞ্জাস্টমেন্ট। সেখানে ‘এঞ্জাস্ট এভরিহােয়্যার’ করে নিলে অসুবিধা কি?
প্রশ্নকর্তা ও তাতে তাে পুরুষার্থ চাই।
দাদাশ্রী ঃ কোন পুরুষার্থ চাই না। আমার আজ্ঞা পালন করবে যে দাদাজী বলেছেন ‘এডজাস্ট এভরিহােয়্যার’, তাহলেই ‘এডজাস্ট’ হতে থাকবে। স্ত্রী যদি বলে, তুমি চোর। তাহলে বলবে, ইউ আর কারেক্ট। স্ত্রী দেড়শাে টাকার শাড়ী আনতে বললে তুমি পঁচিশ টাকা বেশী দেবে তাহলে ছ'মাস পর্যন্ত তাে চলবে!
[ ২১ ]
Page #25
--------------------------------------------------------------------------
________________
দেখাে, ব্রহ্মাজীর একদিন মানে আমাদের পুরাে জীবন! ব্রহ্মাজীর একদিনের বরাবর জীবনে বাঁচার জন্য এত অশান্তি করা কেন? যদি তুমি ব্রহ্মাজীর একশাে বছর বাঁচতে তাহলে ভাবতে ‘ঠিক আছে, কি জন্যে এডজাস্ট হব?’ দাবী ঠুকে বলতে। কিন্তু এ তাে জলদি শেষ করতে হবে, এর কি করবে? ‘এজাস্ট হয়ে যাবে না কি দাবী করবে? কিন্তু এ তাে একদিন মাত্র, এ তাে তাড়াতাড়ি শেষ করতে হবে। যে কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করতে হবে, সেখানে কি করা উচিৎ? ‘এডজাস্ট’ হয়ে ছােট করে নিতে হবে নয়তাে বেড়েই চলবে, না কি বাড়বে না? স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করলে রাতে ঘুম আসবে কি? আর সকালে ভাল জল-খাবার পাবে না।
আত্মস্থ করাে, জ্ঞানীর জ্ঞানকলা! কোন দিন স্ত্রী বলে, “আমাকে ওই শাড়ীটা এনে দেবে না? ওই শাড়ী আমাকে এনে দিতে হবে। স্বামী প্রশ্ন করল, ‘কিরকম দামের শাড়ী দেখেছাে? স্ত্রী বলল, বেশী নয়, বাইশ শাে টাকার। তখন এ বলে, তুমি বাইশ শাে টাকার বলছাে, কিন্তু এখন আমি টাকা পাব কোথায়। এখন হাতে টাকা নেই, দু-তিন শাে হলে এনে দিতাম, কিন্তু তুমি তাে বাইশ শাে বলছ। ও রাগ করে বসে থাকল, তখন কিরকম দশা হবে! এরকমও মনে হয় কি আরে, এর চেয়ে তাে বিয়ে না করলেই ভাল ছিল। বিয়ের পর পশ্চাতাপ, তাতে কি লাভ? অর্থাৎ এসবই দুঃখ।
প্রশ্নকর্তা ঃ আপনি কি বলছেন স্ত্রীকে বাইস শাে টাকার শাড়ী এনে দিতে হবে?
দাদাশ্রী ? এনে দেওয়া না দেওয়া তােমার উপর নির্ভর করছে। রাগ করে রােজ রাতে খাবার বানাবাে না’ বললে তুমি কি করবে, কোথা থেকে রাঁধুনী আনবে? এইজন্যে ধার করেও শাড়ী এনে দিতে হবে নাকি ?
তুমি এমন ব্যবস্থা করাে যাতে শাড়ী ও নিজেই না আনে। তুমি যদি মাসে আট হাজার টাকা পাও তাে এক হাজার নিজের হাত খরচের জন্যে রেখে সাত হাজার ওকে দিয়ে দেবে। তারপরে কি আর সে বলবে যে শাড়ী নিয়ে এসাে ? উল্টে তুমিই কোনদিন মজা করে বলতে পারাে, ওই শাড়ীটা খুব সুন্দর ছিল, নিলে না কেন?’ নিজের ব্যবস্থা ওকে নিজেকেই করতে হবে। যদি তুমি ব্যবস্থা করতে যাও তাে ও তােমার উপর জোর
[ ২২ ]
Page #26
--------------------------------------------------------------------------
________________
করবে। এই সমস্ত কথা আমি জ্ঞান হওয়ার পূর্বেই শিখেছি। সমস্ত কলা-ই আমার কাছে আসার পর আমার জ্ঞান হয়েছে। এখন বলাে, এই কলা জানা নেই, সেইজন্যেই না এই দুঃখ! তােমার কি মনে হয় ?
প্রশ্নকর্তা ও হ্যা, ঠিকই।
দাদাশ্রী ঃ এটা তুমি বুঝতে পারলে ? ভুল তাে তােমার নিজেরই, না? কলা জানা নেই বলেই না? কলা শেখার প্রয়ােজন আছে।
| ক্লেশের মূল কারণ ও অজ্ঞানতা প্রশ্নকর্তা ও কিন্তু ক্লেশ হওয়ার কারণ কি? স্বভাবে মিল হয় না বলে ?
দাদাশ্রী ও অজ্ঞানতার কারণে। সংসারের অর্থই হল কারাের সাথে কারাের স্বভাব মেলে না। এই জ্ঞান পাওয়ার একটাই রাস্তা, এডজাস্ট এভরিহােয়্যার’! কেউ তােমাকে মারলেও তার সাথে তােমাকে এডজাস্ট’ হতে হবে।
আমি এই সােজা - সরল রাস্তা বলে দিচ্ছি। আর সংঘর্ষ কি রােজরােজ হয় ? ও তাে যখন নিজের কর্মের উদয় হয়, তখনই হয়, সে সময় ‘এডজাস্ট’ হতে হবে। ঘরে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া হলে তারপর তাকে হােটেলে নিয়ে গিয়ে খাইয়ে খুশী করে দেবে। যেন ঝগড়ার রেশ (তাতাে) না থাকে।
সংসারের কোন কিছুই আমাদের ফিট (এডজাস্ট) হবে না। আমরা যদি তাতে ফিট হয়ে যাই তাে দুনিয়া সুন্দর আর যদি তাকে ফিট করতে যাই তাে দুনিয়া টেড়া। সুতরাং এডজাস্ট এভরিহােয়্যার। আমরা তাতে ফিট হয়ে গেলে কোন অসুবিধা নেই।
দাদাজী, পুর্ণতঃ এডজাস্টে একবার কঢ়ী (একপ্রকার ব্যঞ্জন) ভালাে হয়েছিল কিন্তু লবন বেশী ছিল। আমার মনে হল এতে লবন বেশী আছে, কিন্তু একটু তাে খেতেই হবে! তাই হীরাবা (দাদাজীর পত্নী) ভিতরে যেতেই আমি তাতে খানিকটা জল মিশিয়ে দিলাম। ও সেটা দেখে ফেললাে আর বললাে, এটা কি করলে? আমি বললাম, তুমি উনুনে বসিয়ে জল ঢাল, আর আমি নীচেই ঢাললাম। তাে বলে, কিন্তু আমি তাে জল ঢেলে ফুটিয়ে দিই। আমি
[ ২৩ ]
Page #27
--------------------------------------------------------------------------
________________
বললাম, আমার কাছে দুই-ই সমান। আমার তাে কাজের সাথে সম্পর্ক!
তুমি আমাকে এগারােটার সময় যদি বলাে, তােমাকে খেয়ে নিতে হবে। আমি বলবাে একটু পরে খেলে চলবে না?' তখন যদি বলাে যে, ‘না, খেয়ে নাও, কাজ শেষ হবে। তাহলে আমি সাথে সাথে খেতে বসে যাব। আমি তােমার সাথে এডজাস্ট হয়ে যাব।
থালায় যা আসবে তাই খেয়ে নেবে।। যা সামনে আসে তাই সংযােগ আর ভগবান বলেছেন যে সংযােগকে ধাক্কা মারলে সেই ধাক্কা তােমারই লাগবে। এইজন্যে আমার পছন্দ নয় এরকম জিনিষ থালায় দিলে তার থেকে দুটো খেয়ে নিই। না খেলে দুজনের সাথে ঝগড়া হবে। এক তাে যে রান্না করেছে তার সাথে ঝাট হবে, তিরস্কার করা হবে আর দ্বিতীয়তঃ খাদ্যবস্তুর সাথে। খাদ্যবস্তু বলবে, “আমার কি অপরাধ? আমি তােমার কাছে এসেছি, তুমি আমার অপমান করছাে কেন ? তােমার যেটুকু ঠিক মনে হয় তা নাও, কিন্তু আমার অপমান করাে না। এখন আমার একে মান দেওয়া উচিৎ নয় কি? আমাকে তাে পছন্দ নয় এমন জিনিষ কেউ দিলেও আমি তার মান দিই। কারণ একে তাে এমনি কিছুই পাওয়া যায়
, আর যদি পাওয়া গেল তাে তাকে মান দিতে হয়। কেউ তােমাকে কিছু খেতে দিয়েছে আর তুমি তার দোষ বের করলে তাে তাতে সুখ বাড়বে কমবে?
যাতে সুখ কমে যায় এমন কাজ না করাই উচিৎ, নয় কি? আমি তাে বহুবার পছন্দ নয় এমন সজীও খেয়ে নিই এবং তারপরে বলি আজকের সজীটা খুব ভালাে হয়েছে।
আরে, অনেক সময় তাে চায়ে চিনি না দিলেও আমি বলি না। তাতে লােকে বলে এরকম করলে ঘরে সবকিছু নষ্ট হয়ে যাবে। আমি বলি, ‘কাল কি হয় দেখাে না। পরের দিন শােনা গেল, কাল চায়ে চিনি দেওয়া হয় নি, তুমি তাে আমাকে কিছু বললে না। আমি বললাম, আমার বলার কি দরকার? তুমি তাে বুঝতেই পারবে! তুমি না খেলে আমার বলার দরকার ছিল। তুমি তাে খাও, তাহলে আর আমার বলার কি দরকার?!
প্রশ্নকর্তা : কিন্তু কত জাগৃতি প্রতি মূহুর্তে রাখতে হয়।
[ ২৪ ]
Page #28
--------------------------------------------------------------------------
________________
হল। এই ‘জ্ঞান’ এমনি এমনিই হয় নি। অর্থাৎ প্রথম থেকেই এই ভাবে সব ‘এডজাস্টমেন্ট নিয়েছি। যতটা হয়, ক্লেশ না দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
একবার স্নান করার সময় মগ দিতে ভুলে গিয়েছিল। এখন যদি এডজাস্ট না করি তাে আমি কিসের জ্ঞানী? আমি এডজাস্ট করে নিই। হাত দিয়ে দেখলাম জল খুব গরম। কল খুললাম তাে ট্যাঙ্ক খালি। শেষে আমি আস্তে-আস্তে হাত দিয়ে জল চাপড়ে চাপড়ে ঠান্ডা করে স্নান করলাম। সব মহাত্মারা বললাে, “আজ দাদাজীর স্নান করতে অনেক সময় লেগেছে। তাে কি করব? জল ঠান্ডা হলে তবে না। আমি কাউকে ‘এটা আনাে আর ওটা আনাে’ বলি না। এডজাস্ট হয়ে যাই। এডজাস্ট হয়ে যাওয়াই ধর্ম। এই দুনিয়ায় তাে প্লাস মাইনাসের এডজাস্টমেন্ট করতে হয়। মাইনাস হলে তাকে প্লাস আর প্লাস হলে তাকে মাইনাস করতে হয়। আমার বােধশক্তিকে যদি কেউ পাগলামি বলে তাে আমি বলি, হ্যা, ঠিক আছে। সাথে সাথে তাকে মাইনাস করে দিই। | যে এজাস্ট হতে পারে না তাকে মানুষ কি করে বলব? যে সংযােগের বশ হয়ে এডজাস্ট হয়ে যায় তার ঘরে কোন ঝাট হয় না। আমিও হীরাবার সাথে এডজাস্ট করেই এসেছি না! এর লাভ নিতে চাও তাে এডজাস্ট হয়ে যাও। এ তাে লাভের কোন বস্তুই নয়, আর শত্রুতা তৈরী করবে, সে তাে আলাদা। কেন না প্রত্যেক জীব স্বতন্ত্র আর নিজে সুখ খুঁজতে এসেছে। অন্যকে সুখ দিতে কেউ আসে নি। এখন সুখের বদলেদুঃখ পেলে শত্রুতা তৈরী হবে, সে স্ত্রী হােক বা সন্তান হােক।
প্রশ্নকর্তা ও সুখ খুঁজতে এসে দুঃখ পেলে শত্রুতা হয় ?
দাদাশ্রী ও হ্যা, সে ভাই হােক কি বাবা হােক, ভিতরে ভিতরে এই কারণে শত্রুতা হয়। এই দুনিয়াই এরকম, শত্রুতাই করে। স্বধর্মে কারাের সাথে শত্রুতা হয় না। প্রত্যেক ব্যক্তির জীবনে কিছু প্রিন্সিপল (সিদ্ধান্ত) তাে। হওয়াই চাই। আবার সংযােগানুসার আচরণও করা চাই। সংযােগের সাথে। | যে এডজাস্ট হয়ে যায় সেই মানুষ। প্রত্যেক সংযােগে যদি এডজাস্টমেন্ট নিতে শেখে তাহলে একদম মােক্ষে পৌঁছাতে পারে, এমন আশ্চর্য্য হাতিয়ার।
এই দাদাজী গভীর-গহনও, মিতব্যয়ী-ও আবার অমিতব্যয়ী-ও। নিশ্চিতভাবে অমিতব্যয়ী হওয়া সত্ত্বেও ‘কমপ্লীট এঞ্জাস্টেব। পরের
[ ২৫ ]
Page #29
--------------------------------------------------------------------------
________________
গহন। তাই সামনের লােক আমার ব্যবহার গভীরতা-পূর্ণ দেখে। আমার ইকোনমি এডজাস্টেবল, টপমােস্ট। আমি তাে জলও ব্যবহার করি মিতব্যয়ীতার সাথে। আমার প্রাকৃতগুণ সহজভাবে থাকে।
নাহলে ব্যবহারের ঝাট আটকাবে প্রথমে এই ব্যবহার শিখতে হবে। ব্যবহার না বােঝার জন্যেই তাে লােকে বিভিন্ন প্রকারে মার খাচ্ছে।
প্রশ্নকর্তা ঃ অধ্যাত্ম সম্পর্কে আপনার উপদেশ নিয়ে তাে কিছু বলারই নেই, কিন্তু ব্যবহারেও আপনার উপদেশ ‘টপ’ (সর্বোত্তম)।
দাদাশ্রী ঃ আসলে কি জান, ব্যবহারের বােধ ‘টপ’ না হয়ে কেউ মােক্ষে যায় নি। যতই দামী হােক না কেন, বারাে লাখের আত্মজ্ঞান হলেও ব্যবহার কি ছেড়ে দেবে? এ না ছাড়লে তুমি কি করবে? তুমি ‘শুদ্ধাত্মা’ তাে নিশ্চয়ই, কিন্তু ব্যবহার ছাড়লে তখন। তুমি ব্যবহারে ঝাট - ঝামেলা করছ। তাড়াতাড়ি সমাধান আনাে না!
এক ভাইকে বলা হল যে, যাও, দোকান থেকে আইসক্রীম নিয়ে এসাে। কিন্তু অর্ধেক রাস্তা থেকে ফিরে এলাে। জানতে চাইলাম, “কেন?” তাে হলে, রাস্তায় গাধা সামনে এসে গেল, অশুভ লক্ষণ!’ এখন ওর এরকম উল্টো জ্ঞান হয়ে গেছে, সেটা আমাকে দূর করতে হবে না? ওকে বােঝাতে হবে যে, ‘ভাই, গাধার মধ্যেও ভগবান বিরাজিত, তাই অশুভ কিছু হয় না। তুমি গাধাকে তিরস্কার করলে সে তিরস্কার ভিতরে বিরাজমান। ভগবানের কাছে পৌঁছাবে। এতে তােমার ভীষণ দোষ হবে। আর যেন এরকম না হয়। এইরকম উল্টো জ্ঞান হয়েছে, এই কারণেই লােকে এজ্জাস্ট হতে পারে না।
উল্টো-কে সােজা করে, সেই সমকিতী সমকিতী-র লক্ষন কি ? বলা হয়, ঘরের সবাই কিছু উল্টো করে রাখলেও নিজেই সব সরল করে দেয়। প্রত্যেক প্রসঙ্গ সরল করে নেওয়াই সমকিতীর লক্ষণ। আমি এই সংসারের অনেক সূক্ষ্ম খোঁজ করেছি। অন্তিম প্রকারের অনুসন্ধানের পরই আমি এই সব কথঅ বলছি। ব্যবহারে কেমন করে থাকতে তাও বলেছি, আবার মােক্ষে কেমন করে যেতে হয় তাও
[ ২৬ ]
Page #30
--------------------------------------------------------------------------
________________
বলেছি। তােমার বাধা-বিপত্তি কিভাবে কম হয় সেটাই আমার উদ্দেশ্য।
তােমার কথা সামনের লােকের এজাস্ট’ হওয়াই চাই। তােমার কথা সামনের লােকের সাথে এডজাস্ট’ না হলে সেটা তােমারই ভুল। ভুল ভাঙলে ‘এজাস্ট’ হবে। বীতরাগ-দের কথা এভরিহােয়্যার এজাস্টমেন্ট’এরই কথা।
প্রশ্নকর্তা ও দাদাজী, এই ‘এডজাস্ট এভরিহােয়্যার’ যা আপনি বললেন তা থেকে তাে সমস্ত মহত্ত্বপূর্ণ বিষয়ের সমাধান বেরিয়ে আসে।
দাদাশ্রী ঃ সবকিছুর সমাধান এসে যায়। আমার এই যে এক-একটা শব্দ, তা সকলের দ্রুত সমাধান আনার জন্য। এ সরাসরি মােক্ষ পৰ্য্যন্ত নিয়ে যাবে। সুতরাং এডজাস্ট এভরিহােয়্যার’!
প্রশ্নকর্তা ঃ এখনও পর্যন্ত যা ভালাে লাগতাে তাতে সবাই এডজাস্ট হতাম আর আপনার কথা শুনে তাে মনে হচ্ছে যেখানে ভালাে লাগে না, সেখানে নিজেকেই তাড়াতাড়ি এড় জাস্ট হয়ে যেতে হবে।
দাদাশ্রী ও ‘এভরিহােয়্যার এজাস্ট’ হতে হবে।
দাদাজীর আশ্চর্য্য বিজ্ঞান প্রশ্নকর্তা : ‘এজাস্টমেন্ট’-এর যে কথা হচ্ছে তার পিছনের ভাব কি? আর কতদূর পর্যন্ত ‘এঞ্জাস্টমেন্ট’ নেওয়া উচিৎ?
দাদাশ্রী ঃ ভাব শান্তির, হেতুও শান্তির। অশান্তি উৎপন্ন না করার। পদ্ধতি এটা। এ হল দাদাজীর এঞ্জাস্টমেন্ট’-এর বিজ্ঞান। এ এক অদ্ভূত ‘এজাস্টমেন্ট’। আর যেখানে ‘এজাস্ট’ হও না, সেখানে তার স্বাদ তাে তুমি পাও, না কি? ‘ডিসএড়জাস্টমেন্ট’-ই মূখর্তা। এডজাস্টমেন্ট’-কে। আমি ন্যায় বলি। আগ্রহ-দুরাগ্রহ এদেরকে ন্যায় বলে না। কোন প্রকারের আগ্রহ ন্যায় নয়। আমি কোন কথায় জেদ করি না। যে জলে মুগ সিদ্ধ হয়, তাতে সিদ্ধ করে নিই। শেষ অবধি নালার জলেও সিদ্ধ করে নিই।
এখনও পর্যন্ত একজন মানুষও আমার সাথে ডিসএডজাস্ট হয় নি। আর এই সমস্ত লােকের তাে ঘরের চারজন সদস্যও এডজাস্ট হয় না। | এডজাস্ট হতে পারবে কি পারবে না? এরকম হওয়া সম্ভব নাকি সম্ভব। নয় ? আমরা যা দেখি তাই শিখে যাই না কি? এই সংসারের নিয়ম হল
[ ২৭ ]।
Page #31
--------------------------------------------------------------------------
________________
তুমি যা দেখবে সেটা অন্ততঃ করতে পারবে। তাতে কিছু শেখার মত থাকে না। কি পারবে না? আমি যদি কেবল উপদেশ দিই সে তাে তােমার আসবে না। কিন্তু আমার আচরণ দেখলে তা সহজেই পারবে।
এখানে ঘরে ‘এজাস্ট’ হতে পারে না, কিন্তু আত্মজ্ঞান-এর শাস্ত্র পড়তে বসে যায়! ছাড় না! আগে তাে এটা’ শেখাে! ঘরে তাে এজাস্ট’ হতে পারে না। এ-রকমই এই সংসার।
সংসারে আর কিছু না পারলেও কোন অসুবিধা নেই। ব্যবসা ভাল জানলেও কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু এডজাস্ট হতে পারা চাই। অর্থাৎ পরিস্থিতির সাথে এডজাস্ট হতে শিখতে হবে। এইকালে এডজাস্ট না হতে পারলে মারা পড়বে। তাই ‘এজাস্ট এভিরিহােয়্যার’ হয়ে কার্যসিদ্ধি করে নেওয়া চাই।
- জয় সচ্চিদানন্দ।
[ ২৮ ]
Page #32
--------------------------------------------------------------------------
________________
দাদা ভগবান ফাউন্ডেশন দ্বারা প্রকাশিত হিন্দী পুস্তকসমূহ ১. জ্ঞানীপুরুষ কি পহেচান
২৪. মানব ধর্ম ২. সর্ব (দুঃখে) সে মুক্তি
২৫. সেবা-পরােপকার ৩. কর্ম কে সিদ্ধান্ত
২৬. মৃত্যু সময়, পহেলে ঐর পশ্চাৎ ৪. আত্মবােধ
২৭. নিজদোষ দর্শন সে...নির্দোষ ৫. ম্যায় কৌন ?
২৮. পতি-পত্নী কা দিব্য ব্যবহার ৬. বর্তমান তীর্থঙ্কর শ্রী সীমন্ধর স্বামী ২৯. ক্লেশ রহিত জীবন ৭. ভুগতে উসি কি ভুল
৩০. গুরু-শিষ্য। ৮. অ্যাডজাস্ট এভরিহােয়্যার ৩১. অহিংসা ৯. টকরাও টালিয়ে
৩২. সত্য-অসত্য কে রহস্য ১০. হুয়া সাে ন্যায়
৩৩. চমৎকার। ১১. চিন্তা
৩৪. পাপ-পুণ্য ১২. ক্রোধ
৩৫. বাণী, ব্যবহার মে... ১৩. প্রতিক্ৰমণ।
৩৬. কর্ম কে বিজ্ঞান ১৪. দাদা ভগবান কৌন ?
৩৭. আপ্তবাণী ১ ১৫. প্যয়সোঁ কা ব্যবহার।
৩৮. আপ্তবাণী ২ ১৬. অন্তঃকরণ কা স্বরূপ
৩৯. আপ্তবাণী ৩ ১৭. জগৎ কর্তা কৌন ?
৪০. আপ্তবাণী ৪ ১৮. ত্রিমন্ত্র
৪১. আপ্তবাণী ৫ ১৯. ভাবনা সে সুধরে জন্মেজন্ম। ৪২. আপ্তবাণী ৬ ২০. মাতা-পিতা ঐর বচ্চো কা ব্যবহার ৪৩. আপ্তবাণী ৭ ২১. প্রেম
৪৪. আপ্তবাণী ৮ ২২. সমঝ সে প্রাপ্ত ব্রহ্মচর্য (সংক্ষিপ্ত) ৪৫. আপ্তবাণী ১৩ (পুর্বার্ধ) ২৩. দান
৪৬. সমঝ সে প্রাপ্ত ব্রহ্মচর্য (পুর্বার্ধ) ৪৭. সমঝ সে প্রাপ্ত ব্রহ্মচর্য (উত্তরা) * দাদা ভগবান ফাউন্ডেশন দ্বারা গুজরাতী ভাষাতেও ৫৫টি পুস্তক প্রকাশিত হয়েছে।
ওয়েবসাইট www.dadabhagwan.org থেকেও এই পুস্তক প্রাপ্ত করা যায়। *দাদা ভগবান ফাউন্ডেশন দ্বারা “দাদাবাণী” মাসিক পত্রিকা হিন্দী, গুজরাতী এবং
ইংরাজী ভাষায় প্রকাশিত হয়।
Page #33
--------------------------------------------------------------------------
________________
সম্পর্ক সূত্র। দাদা ভগবান পরিবার
oooo
অডালজ ও ত্রিমন্দির, সীমন্ধর সিটী, অহমদাবাদ - কলােল হাইওয়ে, পােঃ অডালজ,
জিলা - গাঁধীনগর, গুজরাত - 382421 ফোন ঃ (079) 39830100,
e-mail : info@dadabhagwan.org রাজকোট ও ত্রিমন্দির, অহমদাবাদ - রাজকোট হাইওয়ে, তরঘড়িয়া চৌকড়ী, পােঃ
মালিয়াসন, জিলা - রাজকোট, ফোন ঃ 9924343478 ভুজ ও ত্রিমন্দির, হিল গার্ডেন-এর পিছনে, এয়ারপাের্ট রােড, ফোন ঃ - (02832)
290123. মােরবী । ত্রিমন্দির, মােরবী - নলখী হাইওয়ে, পােঃ জেপুর, তালুকা-মােরবী,
জিলা - রাজকোট, ফোন ঃ (02822) 297097 সুরেন্দ্রনগর ও ত্রিমন্দির, সুরেন্দ্রনগর - রাজকোট হাইওয়ে, লােকবিদ্যালয়-এর নিকট,
মুলী রােড, ফোন ঃ 9737048322 অমরেলী ও ত্রিমন্দির, লীলীয়া বাইপাস চৌকড়ী, খারাবাড়ী, ফোন ঃ 9924344460 গােধরা : ত্রিমন্দির, ভামৈয়া গাঁও, এফ সি আই গােডাউন-এর সামনে, গােধরা ।
জিা-পঞ্চমহাল, ফোন : (02672) 262300. আহমদাবাদ : দাদা দর্শন, ৫, মমতাপার্ক সােসাইটি, নবগুজরাত কলেজের পিছনে,
উসমানপুরা, আহমদাবাদ - 380014 ফোন ঃ (079) 27540408 বড়ােদারা : দাদা মন্দির, ১৭ মামা-কি-পােল মুহল্লা, রাওপুরা থানার সামনে, সলাটবাড়া,
বড়ােদরা, ফোন ঃ 9924343335 মুম্বাই ঃ 9323528901
9810098564 | কোলকাতা : 9830093230.
চেন্নাই । 9380159957 জয়পুর । 9351408285
ভােপাল । 9425024405 ইন্দৌর ঃ । 9039936173
জব্বলপুর । 9425160428 রায়পুর । 9329644433
| ভিলাই । 9827481336 পাটনা : 7352723132
অমরাবতী : 9422915064 বেঙ্গলুর : 9590979099
হায়দ্রাবাদ ও 9989877786 পুনে ঃ 9422660497
জলন্ধর : 9814063043 U.S.A. : DBVITel. : +1 877-505-DADA (3232), UAE : +971 557316937 Email : info@us.dsdabhagwan.org Australia
Australia : +61 421127947 U.K. : +44 330-111-DADA (3232)
New Zealand : +64 21 0376434 Kenya : +254 722 722 063
Singapore : +65 81129229
ܘܘ ܘܘ ܘܘ
ܘܘ ܘܘ ܘܘ ܘܘ ܘܘ ܘܘ ܘܘ ܘܘ
ܘܘ ܘܘ ܘܘ ܘܘ
www.dadabhagwan.org
Page #34
--------------------------------------------------------------------------
________________
এডজাস্ট এভরিহােয়্যার। সংসারে যদি আর কিছু না জানে তাতে ক্ষতি নেই কিন্তু এডজাস্ট' হওয়া। তাে জানা চাই। সামনের অন যদি “ডিসএডজাস' হয় তাে তোমার অনুকূল হতে জানা চাই। তাহলে কোন দুঃখ হবে না। সেইজন্যে এডজাস্ট এভূরিহােয়্যার'। প্রত্যেকের সাথে এডজাস্টমেন্ট' হওযা, এই সব থেকে বড় ধর্ম। এই কালে তো প্রকৃতি ভিন্ন ভিন্ন, সেখানে এডজাষ্ট না হয়। কেমন করে চলবে।
আমি এই সংসারের অনেক সূক্ষ্ম অনুসন্ধান করেছি। অন্তিম প্রকারের খােজ করেই আমি এই সমস্ত কথা বলছি। ব্যবহারে কেমন করে থাকবে। তাও বলেছি, আবার মােক-এ কেমন করে যাবে তাও বলছি। তোমার
95936 Printed in India Price 10
dadabhagwan.org