________________
কারোর সাথে মতভেদ হওয়া আর দেওয়ালে ধাক্কা লাগা - দুই-ই সমান এদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। দেখতে না পাওয়ার কারণেই দেওয়ালের সাথে ধাক্কা লাগে। তেমনি কারোর সাথে মতভেদও দেখতে না পাওয়ার কারণেই হয়। প্রথমক্ষেত্রে সে দেখতে পায় না সামনে কি আছে আর দ্বিতীয়ক্ষেত্রে সে আগে থেকে কোন সমাধান বার করতে পারে না তাই ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে। ক্রোধ-মান-মায়া-লোভ যা এই মতভেদ-এর কারণ তা কেউ দেখতে পায় না বলে এর মধ্যে জড়িয়ে পড়ে। এই কথাটা বোঝা দরকার। যার লাগে তারই দোষ- দেওয়ালের দোষ নয়। দেওয়ালে ধাক্কা খেলে আপনি দেওয়ালের সাথে ঝগড়া করতে যান কি? এই সংসারের সমস্ত কিছুই দেওয়ালের মত; দেওয়ালের স্থিতিতেই আছে। এইজন্যে কে ঠিক কে ভুল বা কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল তা বোঝাতে যাওয়ার কিছু প্রয়োজন নেই ।
সংঘাত – নিজের অজ্ঞানতা
-
-
সংঘাতের কারণ কি? অজ্ঞানতা। যতক্ষন কারোর সাথে মতভেদ হচ্ছে ততক্ষন সেটা আপনার দুর্বলতার প্রকাশ। মতভেদে ভুল আপনারই – অন্য লোকের নয়। অন্যের ভুল হয়ই না। যদি কেউ জেনেশুনে ইচ্ছে করেও সংঘাতে জড়াতে আসে তো ওখানে আপনাকে ক্ষমা চেয়ে বেরিয়ে আসতে হবে, “ভাই, এ আমি বুঝতে পারছি না' বলে। যেখানে মতভেদ হচ্ছে সেখানে ভুল আপনার।
ঘর্ষণে শক্তিক্ষয়
সমস্ত আত্মশক্তি যদি কোন কিছুতে নষ্ট হয়ে যায় তাহলে সেটা ঘর্ষণে। একটুও সংঘর্ষ হলেই শেষ। কেউ ঝগড়া করতে আসলে আপনাকে সংযম রাখতে হবে। মতভেদ হওয়া কাম্য নয়। যদি শুধু সংঘাত বন্ধ হয় তাহলেই মানুষ মুক্তি পাবে। কেউ যদি এটুকুও শিখতে পারে যে ‘আমি কোন সংঘাতের মধ্যে যাব না’-তাহলে তার কোন গুরু বা আর কারোর প্রয়োজন নেই। একদু জন্মে মুক্তি পেয়ে যাবে। ‘সংঘাতের মধ্যে যাব-ই না' – এরকম যদি কারোর বোধে আসে আর সে দৃঢ় নিশ্চয় করে নেয় তাহলে তখন থেকেই তার সতি (আত্মবোধের শুরু) হয়ে যাবে।
জ্ঞান-এর পরে অজ্ঞান অবস্থায় সংঘাতজনিত কারণে যে শক্তিক্ষয় হয়েছিল তা প্রথমে ফিরে আসে। কিন্তু তখন আবার নতুন করে সংঘাতে লিপ্ত হলে সমস্ত শক্তি নষ্ট হয়ে যাবে আর তা নাহলে শক্তি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।
[ ৩৬ ]