________________
যা ঘটেছে তা ন্যায় প্রকৃতিতে সবসময় ন্যায় হয়
যা প্রকৃতির ন্যায় তাতে একমুহূর্তের জন্যেও অন্যায় হয়নি। প্রকৃতিতে একপলের জন্যেও কখনো অন্যায় হয় না। কোর্টে অন্যায় হতে পারে কিন্তু প্রকৃতিতে নয় ৷
‘যা ঘটেছে তাই ন্যায়’- প্রকৃতির এই নিয়মকে বুঝতে পারলে আপনি জগৎ থেকে মুক্ত হয়ে যাবেন কিন্তু ক্ষণিকের জন্যেও যদি প্রকৃতিকে অন্যায্য মনে করেন তাহলে তা জগতে আপনার সমস্যার কারণ হবে। প্রকৃতিকে ন্যায়ী বুঝতে পারাই জ্ঞান। সমস্ত কিছুর স্বরূপকে বুঝতে পারা-ই জ্ঞান আর এই স্বরূপকে চিনতে না পারাটা-ই অজ্ঞান।
জগতে ন্যায় খুঁজতে গিয়েই তো সমস্ত দুনিয়ায় যুদ্ধ হয়েছে। জগৎ ন্যায়স্বরূপ। তাই জগতে ন্যায় খুঁজতে যেও না। যা ঘটছে তাই ন্যায়; যা ঘটে গেছে তা-ও ন্যায়। জগতের লোকে ন্যায় পেতে আইন-আদালত তৈরী করেছে কিন্তু সেখানে ন্যায়বিচার পাবে এটা ভাবা তাদের বোকামি। তার বদলে কি ঘটছে তার দ্রষ্টা হও – সেটাই ন্যায়। লোকসংজ্ঞার ন্যায় আর প্রকৃতির ন্যায় পৃথক। ন্যায় আর অন্যায় – দু'টোই পূর্বজন্মের কর্মফল। তার পরিবর্তে নিজেদের সংজ্ঞা অনুযায়ী ন্যায় খুঁজতে গিয়ে লোকে আদালতের দ্বারস্থ হয় আর নিজেদেরকে নিঃশেষ করে ফেলে।
যদি আপনি কাউকে অপমান করেন আর সে আপনাকে তার বদলে বহুবার অপমান করে তো আপনার সেটা অন্যায় মনে হবে। কিন্তু আপনাকে এটা বুঝতে হবে যে আপনার পূর্বজন্মের কর্মফলের হিসাব অনুযায়ী সে আপনাকে অপমান করেছে অর্থাৎ আপনার হিসাব পুরো করেছে। প্রকৃতির নিয়ম কি? আপনার পুরানো হিসাব সব একসাথে করে মিটিয়ে দেয়। যদি কোন স্ত্রী তার স্বামীকে উত্যক্ত করছেন তাহলে সেটাও প্রকৃতির ন্যায়। স্ত্রী মনে করছেন স্বামী খারাপ আর স্বামী মনে করছেন স্ত্রী খারাপ। কিন্তু এও প্রকৃতির ন্যায়-ই। কারোর টাকা খোয়া গেলে সেটা তার এজন্মের কষ্টার্জিত টাকা হতে পারে কিন্তু তার নিশ্চয়ই পূর্বজন্মের হিসাব বাকি আছে। পূর্বজন্মের হিসাব না থাকলে কেউ কারো থেকে কিছু নিতে পারে এমন শক্তি-ই কারোর নেই। এমন কেউ এ পৃথিবীতে জন্মায় নি যে পূর্বজন্মের হিসাব ছাড়া কোন লেনাদেনা করতে পারে। প্রকৃতি এমনই নির্ভুল নিয়ামক।
[ ৩৮ ]