Page #1
--------------------------------------------------------------------------
________________
দাদা ভগবান প্ররূপিত
সংঘাত পরিহার
Page #2
--------------------------------------------------------------------------
________________
দাদা ভগবান প্ররূপিত
সংঘাত পরিহার
সংকলন ঃ ডঃ নীরুবেন অমিন
Page #3
--------------------------------------------------------------------------
________________
প্রকাশক
E-mail : info@dadabhagwan.org
কপিরাইট : All Rights reserved Deepakbhai Desai
: অজীত সি. প্যাটেল,
দাদা ভগবান আরাধনা ট্রাস্ট দাদা দর্শন, ৫, মমতাপার্ক সোসাইটি, নবগুজরাট কলেজের পিছনে উসমানপুরা, আহমেদাবাদ – ৩৮০০১৪ ফোন ঃ (০৭৯) ৩৯৮৩০ ১০০
দ্রব্যমূল্য
মুদ্রক
First Edition : 2000 Copies, January 2016
ভাবমূল্য
: ‘পরম বিনয়’ আর
‘আমি কিছু জানি না’ এই জাগৃতি
ফোন
-
Trimandir, Simandhar City, Ahmedabad - Kalol Highway, Adalaj, Dist: Gandhinagar - 382421, Gujarat, India. No part of this book may be used or reproduced in any manner whatsoever without written permission from the holder of this copyrights.
ঃ ১০ টাকা
: অম্বা অফসেট,
পার্শ্বনাথ চেম্বার্স (বেসমেন্ট), আর. বি. আই-এর নিকট, উসমানপুরা, আহমেদাবাদ – ৩৮০০১৪
: (০৭৯) 27542964, 30004823/24
Page #4
--------------------------------------------------------------------------
________________
ত্ৰি-মন্ত্ৰ
વર્તમાનતીર્થંકર
શ્રીસીમંધર સ્વામી
নমো অরিহন্তান
নমো সিদ্ধানম্
নমো আয়রিয়ান
নমো উবজ্জ্বায়ানম্
নমো লোয়ে সব্বসাহুম্ এ্যায়সো পঞ্চ নমুক্কারো;
সব্ব পাবপ্পনাশনো মঙ্গলানম চ সব্বেসিম্; পঢ়মম্ হবই মঙ্গলম্ ১
ওম নমো ভগবতে বাসুদেবায় ২
ওম নমঃ শিবায় ৩
জয় সৎ চিৎ আনন্দ
Page #5
--------------------------------------------------------------------------
________________
দাদা ভগবান কে?
১৯৫৮ সালের জুন মাসের এক সন্ধ্যায় আনুমানিক ৬টার সময় ভীড়ে ভর্তি সুরত শহরের রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্ম নম্বর ৩-এর এক বেঞ্চে বসা শ্রী অম্বালাল মুলজীভাই প্যাটেলরূপী দেহমন্দিরে প্রাকৃতিকভাবে, অমরূপে, বহুজন্ম ধরে ব্যক্ত হওয়ার জন্যে ব্যাকুল দাদা ভগবান পূর্ণরূপে প্রকট হলেন। - অধ্যাত্মের এক অদ্ভুত আশ্চর্য্য প্রকট হল। অলৌকিকভাবে এক ঘন্টাতে ওনার বিশ্বদর্শন হল। আমি কে? ভগবান কে? জগত কে চালায়? কর্ম কি? মুক্তি কি?’ ইত্যাদি জগতের সমস্ত আধ্যাত্মিক প্রশ্নের সমস্ত রহস্য সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ হল। এইভাবে প্রকৃতি বিশ্বকে এক অদ্বিতীয় সম্পূর্ণ দর্শন প্রদান করল। যার মাধ্যম হলেন গুজরাত-এর চরােতর ক্ষেত্রের ভাদরন গ্রামনিবাসী পাটীদার শ্রী অম্বালাল মুলজীভাই প্যাটেল যিনি কন্ট্রাকটরি ব্যবসা করেও সম্পূর্ণ বীতরাগী ছলেন।
‘ব্যবসা-তে ধর্ম থাকা প্রয়ােজন, কিন্তু ধর্ম-তে ব্যবসা নয়’ এই নীতি অনুসারেই তিনি সম্পূর্ণ জীবন অতিবাহিত করেন। জীবনে কখনও উনি কারাের কাছ থেকে অর্থ নেন নি, উপরন্তু নিজের উপার্জনের অর্থ থেকে ভক্তদের তীর্থযাত্রায় নিয়ে যেতেন।
ওনার অদ্ভুত সিদ্ধজ্ঞান প্রয়ােগ দ্বারা ওনার যে রকম প্রাপ্তি হয়েছিল তেমনই অন্য মুমুক্ষুদের-ও তিনি কেবল দু’ঘন্টাতেই আত্মজ্ঞান প্রাপ্ত করাতেন। একে অক্রম মার্গ বলে। অক্রম অর্থাৎ বিনা ক্রমের আর ক্রম মানে সিঁড়ির পরে সিঁড়ি - ক্রমানুসারে উপরে ওঠা। অক্রম অর্থাৎ লিফট-মার্গ, সংক্ষিপ্ত রাস্তা।
উনি স্বয়ংই ‘দাদা ভগবান’কে? এই রহস্য জানাতেন। উনি বলতেন “যাকে আপনারা দেখছেন তিনি দাদা ভগবান নন। তিনি তাে এ.এম.প্যাটেল; আমি জ্ঞানী পুরুষ আর আমার ভিতর যিনি প্রকট হয়েছেন তিনিই ‘দাদা ভগবান’। দাদা ভগবান তাে চৌদ্দ লােকের নাথ। উনি আপনার মধ্যেও আছেন, সবার মধ্যেই আছেন; আপনার মধ্যে অব্যক্তরূপে আছেন, আর আমার মধ্যে সম্পূর্ণরূপে ব্যক্ত অবস্থায় আছেন। দাদা ভগবান’কে আমিও নমস্কার করি।”
Page #6
--------------------------------------------------------------------------
________________
ভাষান্তরণ সম্পর্কে সূচনা।
জ্ঞানীপুরুষ অম্বালাল এম প্যাটেল যিনি দাদাশী, দাদাজী বা দাদা নামেই বেশী পরিচিত ছিলেন তিনি সবসময়েই বলতেন যে আত্ম-জ্ঞান প্রাপ্তির বিজ্ঞানের উপর এবং সাংসারিক ব্যবহারের কলা-র উপর দেওয়া তার সৎসঙ্গ অন্যভাষায় একদম সঠিকভাবে অনুবাদ করা অসম্ভব। ভাষান্তরনের সময় মুমুক্ষু-র কাছে যে অর্থ পৌঁছানাের যে ভাবনা থাকে তার গভীরতা সামান্য হলেও নষ্ট হয়ে যায়। তিনি তার সমস্ত উপদেশ সঠিকভাবে বােঝার জন্যে গুজরাতী ভাষা শেখার উপর জোর দিয়েছেন।
তাহলেও দাদাশ্রী তার মূল বাণীকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছানাের জন্য ইংরাজী এবং অন্যান্য ভাষায় ভাষান্তরিত করার জন্যে আশীর্বাদ দিয়েছেন। জগতের সন্তপ্ত মানুষ যেন তার মধ্যে প্রকাশিত অপূর্ব ‘অক্রম-বিজ্ঞান’ দ্বারা এই জীবনেই মুক্তির স্বাদ অনুভব করে - এই তার গভীরতম ইচ্ছা এবং আকাঙ্খ ছিল। তিনি আরও বলেছেন যে এমন একদিন আসবে যেদিন সমগ্র জগৎ এই বিজ্ঞানের অলৌকিক ক্ষমতায় বিস্মিত হয়ে যাবে।
| জ্ঞানীপুরুষ দাদাশ্রী-র উপদেশের সারমর্ম জগতের কাছে পৌঁছে দেওয়ার এটা একটা বিনম্র প্রচেষ্টা। তার বাণীর প্রকৃত অর্থ এবং লয়-সুর বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত যত্ন নেওয়া হয়েছে। এটা তার বাণীর আক্ষরিক অনুবাদ নয়। অনেক ব্যক্তি এই ভাষান্তরণের জন্য অধ্যবসায়ের সাথে পরিশ্রম করেছেন। - আমরা তাদের সবার কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।
তার উপদেশের বিশাল, নতুন ধন-সম্পদের এটা একটা প্রাথমিক ভূমিকা মাত্র। এই অনুবাদে যদি কোন ভুল থাকে তাহলে তার জন্য অনুবাদকরাই সম্পূর্ণভাবে দায়ী-এর জন্য আমরা আপনাদের ক্ষমা প্রার্থী।
Page #7
--------------------------------------------------------------------------
________________
সম্পাদকীয়
‘সংঘাত পরিহার করুন।' কেবলমাত্র যদি এই সূত্রটা কেউ নিজের জীবনে আত্মস্থ করতে পারে তাহলে তার প্রতিদিনের জীবন সুন্দর হয়ে উঠবে। মোক্ষ নিজে তার সামনে উপস্থিত হবে। এতে কোন সংশয় নেই।
হাজার হাজার লোক অক্রমবিজ্ঞানী পূজ্য দাদাশ্রী-র এই মৌলিক উপদেশ পালন করে মুক্তির স্বাদ অনুভব করেছেন। তাঁদের জীবন শান্তি এবং আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে এবং তাঁরা মুক্তিপথের তীর্থযাত্রী হয়েছেন। এইরকম স্থিতিতে পৌঁছতে গেলে যে কোনভাবে সংঘাত এড়ানোর দৃঢ় সংকল্প করতে হবে। ‘বিপক্ষ যত নাছোড়বান্দা-ই হোক না কেন আমি কিছুতেই তার সাথে সংঘাতে যাব না’-এটাই দৃঢ় সঙ্কল্প। কোন ব্যক্তি যদি শুধু এইটুকুই সঙ্কল্প করে তাহলে তার মধ্যে প্রাকৃতিকরূপে একটা স্বতঃস্ফূর্ত সংঘাত এড়ানোর দিশা আসবে।
যদি আপনি রাতের অন্ধকারে ঘর থেকে বার হতে গিয়ে কোন দেওয়ালে ধাক্কা খান তখন কি আপনি দেওয়ালকে লাথি মেরে চিৎকার করবেন, ‘আমার রাস্তায় কেন এসেছো? দূর হও! এটা আমার বাড়ি!' না, তার পরিবর্তে আপনি হাতড়ে হাতড়ে বাইরে বেরনোর রাস্তা খুঁজে বেরিয়ে যাবেন। কারণ আপনি যদি দেওয়ালের সাথে সংঘাতে লিপ্ত হন তাহলে নিজেরই মাথা ফেটে যাবে সে বোধ আছে।
একজন রাজাকেও সংকীর্ণ রাস্তায় উন্মত্ত ষাঁড়কে পথ ছেড়ে দিতে হয়। তিনি কি ষাঁড়কে বলতে পারেন, ‘আমার রাস্তা থেকে সরে যা, এ আমার রাজ্য, আমার রাস্তা, আমি রাজা’? তাহলে তো ষাঁড় বলবে, ‘তুই রাজা তো আমি মহারাজা! চলে আয়!' এরকম পরিস্থিতিতে রাজার রাজাকেও পথ ছেড়ে দিতে হয় কারণ ষাঁড়ের সাথে সংঘর্ষে আহত না হওয়াটাই তাঁর লক্ষ্য।
এই সহজ উদাহরণগুলো দেওয়া হল যাতে আপনি বুঝতে পারেন যে সমস্ত ব্যক্তি আপনার সাথে সংঘাতে লিপ্ত হতে চাইছেন তারা এই দেওয়াল বা ষাঁড়ের-ই মত। তাই আপনি যদি সংঘাত এড়াতে চান তো বুদ্ধিমানের মত রাস্তা থেকে সরে যান। জীবনের সমস্ত পরিস্থিতি-তে সংঘাত পরিহার করুন । কারণ সংঘাত রহিত জীবন-ই ক্লেশরহিত জীবন, মোক্ষপ্রাপ্তির উপায় । জয় সচ্চিদানন্দ।
-ডঃ নীরুবেন অমিন
Page #8
--------------------------------------------------------------------------
________________
সংঘাত পরিহার সংঘাতে লিপ্ত হবেন না
‘কারোর সাথে সংঘাতে লিপ্ত হবে না – সংঘাত এড়িয়ে চলো।' আপনি যদি আমার এই কথাগুলো আত্মস্থ করেন তাহলে আপনি মুক্তি পাবেন। আপনার সমর্পণ এবং আমার বাণীর শক্তিই সমস্ত কাজ করবে। আপনার প্রস্তুত থাকা দরকার। আমার এই একটি বাক্য সঠিকভাবে পালন করতে পারলেই মুক্তি সম্ভব। আরে, যদি আপনি আমার একটা শব্দও যেমন বলা হয়েছে ঠিক তেমনভাবে গ্রহণ করতে পারেন তাহলে মুক্তি আপনার হাতে এসে পড়বে, এমনই। কিন্তু এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে এই সমস্ত শব্দ যেমনটি বলা হয়েছে ঠিক তেমনটিই গ্রহণ করতে হবে।
শুধুমাত্র একটি দিনের জন্যেও যদি আমার একটি শব্দের প্রতি আধ্যাত্মিক আনুগত্য থাকে তাহলে তা অন্তরের শক্তি প্রচন্ডভাবে বাড়িয়ে তুলবে। আপনার ভিতরেই অনন্ত শক্তি আছে যে সব সমস্যা সমাধান করতে পারে, সে যত কঠিনই হোক না কেন। যে ইচ্ছুকভাবে নিজের ধ্বংসের পথ বেছে নিয়েছে এরকম ব্যক্তির সাথে কি জন্যে সংঘাতে যাওয়া? এরকম ব্যক্তি কখনই মুক্তি পাবে না এবং আপনার মুক্তির পথেও বিঘ্ন ঘটাবে। তা হলে কি চলবে? আপনার বুদ্ধিমত্তাকে এরকম ব্যক্তির সাথে জড়িত করা থেকে বিরত থাকুন । যদি মুক্তি চান তো এই সমস্ত উপলক্ষ্যগুলোতে অত্যন্ত সতর্ক থাকুন। কোন সংঘর্ষে না জড়িয়ে প্রস্থান করুন। যখন আপনার মুক্তির ট্রেন প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়ছে তখন যদি আপনার কাপড় কাঁটাতারে আটকে যায় তাহলে সেটা ছাড়ানোর জন্যে অপেক্ষা করবেন না। কাপড় ছিঁড়ে ফেলে দৌড়ান এবং ট্রেন ধরা সুনিশ্চিত করুন। কোন সাংসারিক পরিস্থিতিতে এক মুহূর্ত্তের জন্যেও আটকে যাওয়ার কোন মুল্য নেই। অন্যের সাথে কথোপকথন বা মেলামেশায় যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। সেরকম হলে আপনি নিজের আত্মাকেই ভুলে যাবেন।
যখন আপনি কারো সাথে সংঘাতে জড়িয়ে পড়বেন অনিচ্ছাকৃতভাবে বা অন্যভাবে তখন আপনাকে সেই পরিস্থিতি ধৈর্যের সাথে মোকাবিলা করে বা কোনরকম শত্রুতা তৈরী না করে তার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
Page #9
--------------------------------------------------------------------------
________________
ট্রাফিক-এর নিয়ম-কানুন দুর্ঘটনা থেকে বাঁচায়। আপনি যখন কোন ব্যস্ত রাস্তা পারাপার করেন তখন খুব সতর্ক থাকেন যাতে কোন দুর্ঘটনা না ঘটে। আপনার দৈনন্দিন জীবনে অন্যের সাথে ব্যবহারেও সেরকম সতর্ক থাকুন। কোন ব্যক্তি যত দুর্নীতিপরায়ণ বা ঘৃন্য হােক না কেন আপনার দৃঢ় সঙ্কল্প থাকা উচিৎ কাউকে আঘাত না দেওয়ার। আপনার সমস্তরকম সতর্কতা এবং সঙ্কল্প সত্ত্বেও কেউ আপনার সাথে সংঘাতে লিপ্ত হতে পারে। তাতে আপনি আহত হবেন। সমস্ত সংঘাতে দুই পক্ষই আহত হয়। আপনি কাউকে আঘাত করলে অবশ্যম্ভাবীরূপে আপনিও সেই মুহুর্তে ব্যথা অনুভব করবেন। আমি ট্রাফিক-টা উদাহরণ হিসাবে দিয়েছি। আপনি যদি দুর্ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন তাহলে আপনার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। একই কথা সংঘাতের জন্যেও প্রযােজ্য। সেইজন্যে আপনি কারাের সাথে সংঘাতে জড়াবেন না। সাংসারিক জীবনে কারাের সাথে ব্যবহারে কোনরকম সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি করবেন না কারণ এতে সব সময়েই ঝুঁকি থেকে যায়। তাছাড়াও সংঘর্ষ মাঝে-মধ্যে হয়; এমন নয় যে মাসেরমধ্যে দু’শােবার সংঘাত হচ্ছে - নয় কি? আপনার জীবনে মাসে কতবার এরকম হয়?
প্রশ্নকর্তা ও হয়তাে দু-চার বার হয়।
দাদাশ্রীঃ এই সংঘর্ষগুলাের বিরাম দরকার। সংঘর্ষে জড়িয়ে আমরা কেন আমাদের সবকিছু নষ্ট করব? আর এসব আমাদের শােভা পায় না। লােকেরা ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলে যা কিনা খুব কঠোর নীতি কিন্তু নিজেদের মর্জিমতাে গাড়ি চালায় না। ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলে বলে তারা দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায়। তেমনি আপনার দৈনন্দিন জীবনেও নিয়ম-নীতি মেনে চলবেন যা আপনাকে সংঘাত থেকে রক্ষা করবে। সংঘর্ষ হয় কারণ আপনি নিজের নিয়ম আর তার নিজস্ব ব্যাখ্যাকে অনুসরণ করেন। যখন লােকেরা ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলে তখন যান-বাহন চলাচলে কোন অসুবিধা হয় না। যদি আপনি এই নিয়ম একই উপলব্ধির সাথে দৈনন্দিন ব্যাবহারেও প্রয়ােগ করেন তাহলে কখনই অসুবিধায় পড়বেন না। জীবনের নীতি-নিয়মগুলাের নিজস্ব, সীমিত ব্যাখ্যার কারণেই অসুবিধার সৃষ্টি হয়। জীবনের নিয়মগুলাে বােঝার ক্ষেত্রেই গােড়ায় গলদ থেকে যায়। যিনি এই নিয়মগুলাের ব্যাখ্যা
| [ ৬ ]
Page #10
--------------------------------------------------------------------------
________________
দেন তার নিজের এগুলাের ব্যাপারে সম্পূর্ণ অভিজ্ঞতা থাকা দরকার।
আপনি কত নিষ্ঠার সাথে ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলেন। তার কারণ আপনি এই নিয়মগুলাে মেনে চলার দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আপনার অহংকার কেন আপনাকে এই নিয়মগুলাে উপেক্ষা করতে বলছে না? কারণ আপনি বুদ্ধি দিয়ে বুঝতে পারছেন যে নিয়মগুলাে অমান্য করলে আপনি আহত হতে পারেন এমনকি মারাও যেতে পারেন। এর ফল আপনি ইন্দ্রিয় দ্বারা সরাসরি অনুভব করতে পারেন। কিন্তু কোন ব্যাক্তির সাথে সংঘাতে যাওয়ার মারাত্মক পরিণাম আপনার বুদ্ধি আপনাকে বােঝাতে পারে না কারণ এটা ইন্দ্রিয় দ্বারা উপলব্ধি করা যায় না। এটা অত্যন্ত সূক্ষ্ম ব্যাপার এবং যে ক্ষতি এটা করে
| প্রথমবার ব্যক্ত হল এই সূত্র ১৯৫১তে আমার কাছে কাজ করত এমন একজন জন্ম-মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি পাওয়ার রাস্তা জানার জন্য আমার কাছে এসেছিল। আমি তাকে শুধুমাত্র এই একটি নিয়মই দিয়েছিলাম, তাকে বলেছিলাম, সংঘাত পরিহার করাে।
একদিন আমি একটা আধ্যাত্মিক বই পড়ছিলাম, তখন সে আমার কাছে এল। সে আমাকে বলল তাকে কিছু আধ্যাত্মিক জ্ঞান দিতে। আমি তাকে বললাম, আমি তােমাকে কি দেব? তুমি সবার সাথে ঝগড়া করে বেড়াও। এমনকি তুমি মারামারি পর্যন্ত করাে। সে বােকার মতাে আমাদের প্রতিষ্ঠানের টাকা নয়ছয় করত। সে বিনা টিকিটে ট্রেনে চড়তাে আর তার উপরে কর্তৃপক্ষের সাথে ঝগড়া করতাে। আমি তার সম্পর্কে সব কিছু জানতাম। তা সত্ত্বেও সে। নাছােড়বান্দা হয়ে বারবার অনুরােধ করতে লাগল, ‘দাদাজী, দয়া করে আমাকেও হিসাবের মধ্যে রাখুন। আপনি আশ-পাশের সবাইকে যে আধ্যাত্মিক জ্ঞান প্রদান করেন তার কিছু আমাকেও দিন। আমি দ্বিধান্বিত হয়ে তাকে বললাম, ‘এই জ্ঞান তােমার কি কাজে লাগবে? তুমি তাে পাল্টাবে না। এ সত্ত্বেও তুমি লােকের সাথে ঝগড়া করে বেড়াবে!’
সে দশটাকার ট্রেনভাড়া দিত না কিন্তু অন্যদের চা-জলখাবারে কুড়ি টাকা খরচ করত। আমাদের ব্যবসার দশ টাকা নেট লােকসান হত। এমনই ছিল তার ‘মহানতা’। যখন সে আসতাে আমি তাকে আন্তরিক অভ্যর্থনা জানালে
| [৭]
Page #11
--------------------------------------------------------------------------
________________
সে খুশীতে ভরে উঠতাে। মিনতি করে বলতাে, আমাকে কিছু শেখান দাদা। আমি তাকে বলতাম, “তুমি প্রত্যেকদিন লােকের সাথে ঝগড়া করে আমার কাছে আসাে আর আমাকে তাদের নালিশ শুনতে হয়। তবুও সে বলতাে, তাহলেও আমাকে কিছু দিন। শেষ পর্যন্ত তাকে বললাম, “আমি | তােমাকে একটা মাত্র বাক্য দেব এই শর্তে যে এটা তােমাকে মেনে চলতে হবে। সে প্রতিজ্ঞা করলাে যে মেনে চলবে। তখন আমি তাকে বললাম, ‘কারাের সাথে সংঘাতে জড়াবে না। যখন সে সংঘাত বলতে আমি কি বােঝাচ্ছি তা জানতে চাইলাে তখন আমি তাকে বুঝিয়ে বললাম। মনে করাে তুমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছ আর তােমার চলার পথে একটা ল্যাম্পপােস্ট আছে; তুমি কি সেটা এড়িয়ে যাবে না তার সাথে ধাক্কা খাবে?” সে বললাে, যদি আমি ধাক্কা খাই তাহলে আমার মাথা ফাটতে পারে। আমি আবার বললাম, ‘যদি একটা ষাঁড় তােমার সামনে চলে আসে তুমি কি তার রাস্তা থেকে সরে যাবে না-কি তার দিকেই হাঁটতে থাকবে? সে উত্তর দিল, তার সামনে এগিয়ে গেলে আমি চোট পেতে পারি তাই তাকে এড়িয়ে যাব। আমি তাকে আবার জিজ্ঞাসা করলাম, আর যদি তুমি রাস্তায় একটা সাপ বা বিশাল পাথর দেখতে পাও তাহলে কি করবে। তাতে সে বললাে, আমাকে তাদেরকেও এড়িয়ে চলতে হবে। আমি কারণ জানতে চাইলে সে বললাে, “আমারই ভাল-র জন্য, যদি আমি সংঘাতে যাই তাতে আমারই ক্ষতি।
এই জগতে বিভিন্ন ধরনের মানুষ আছে; কেউ পাথরের মত, কেউ ষাঁড়ের মত, কেউ সাপের মত, কুে ল্যাম্পপােস্টের মত আর কেউ শুধুই সাধারণ। মানুষ। তাদের কারাের সাথেই সংঘাতে জড়াবে না; এড়িয়ে যাবে। আমি তাকে এই উপদেশ 1951 সালে দিয়েছিলাম; সে গুরুত্বের সাথে তা নেয় এবং তারপর থেকে কারাের সাথে কখনও সংঘাতে লিপ্ত হয় নি। তার ওপরওয়ালা, যিনি তার-ই কাকা তিনি এই পরিবর্তনের কথা জানতে পেরে তাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্ররােচিত করার চেষ্টা করেন। তাকে সমস্তরকমভাবে প্ররােচিত করার চেষ্টা করেও তিনি সফল হন নি কারণ সে কোন কিছুকেই নিজেকে প্রভাবিত করার রাস্তা দিত না। 1951 সালের পরে সে আর কারাের সাথে সংঘাতে জড়ায় নি।
[ ৮ ]
Page #12
--------------------------------------------------------------------------
________________
জীবন ব্যবহারে সংঘাত এইভাবে সমাধান করুন আপনি ট্রেন থেকে নেমে আপনার মালপত্রের জন্য কুলি খুঁজছেন। কয়েকজন কুলি আপনার দিকে দৌড়ে এল; তাদের মধ্যে একজনকে আপনার মাল-পত্র নিতে বললেন। সে আপনার জিনিসপত্র বাইরে নিয়ে এল কিন্তু পয়সা দেওয়ার সময় আপনি তার সাথে ঝগড়া শুরু করলেন। আপনি তাকে ভয় দেখাতে লাগলেন; ‘আমি স্টেশন-মাস্টারকে ডাকছি, তােমার এত টাকা | চাওয়ার সাহস হয় কি করে ? কিন্তু এটা বােকামি! এই সামান্য ব্যাপারে বাদবিসম্বাদ-এ জড়িয়ে পড়া উচিৎ নয়। যদি সে পঁচিশ টাকা চায় তাহলে আপনার তাকে ভালভাবে বােঝানাে উচিৎ, দ্যাখাে ভাই, এ আসলে দশটাকার কাজ, কিন্তু যাই হােক তুমি কুড়িটাকা নিয়ে খুশী হয়ে যাও। আপনার বােঝা উচিৎ সে আপনাকে এত সহজে ছাড়বে না তাই একটু বেশী দিয়েও ব্যাপারটা মিটিয়ে ফেলা দরকার। এটা সংঘর্ষ তৈরির জায়গা নয়। তার মেজাজ বেশি খারাপ করে দিলে সে কি করে বসবে তা আপনার জানা নেই। সে হয়তাে বাড়ী। থেকেই খারাপ মেজাজ নিয়ে বেরিয়েছে তার ওপর আপনি যদি তা আরও বাড়িয়ে দেন তাহলে সে আপনাকে ছুরিও মারতে পারে। একশাে’য় তেত্রিশ পেয়ে মানুষ রয়েছে, বত্রিশ পেলেই তাে ষাঁড় হয়ে যায়।
যখন কেউ আপনার সাথে কর্কশ ভাষায় কথা বলে বা গালিগালাজ করতে থাকে তখন আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে এবং তার সাথে সংঘাত এড়াতে হবে। শুরুতে এই বাদানুবাদ আপনার মনে কোন ছাপ না ফেললেও পরে আপনার খারাপ লাগবে এবং আপনার মনে তার প্রভাব পড়বে। আপনাকে বুঝতে হবে যে এই ব্যক্তি আপনার মনের উপর প্রভাব ফেলছে এবং আপনাকে তার রাস্তা থেকে সরে যেতে হবে। যেমন-যেমন আপনার বােধশক্তি বাড়বে। তেমন-তেমনই আপনি সংঘাত এড়াতে সক্ষম হবেন। সংঘাত এড়াতে পারলেই মুক্তি সম্ভব।
এই জগৎ নিজেই এক বিশাল সংঘাত। এই সংঘাত তরঙ্গরূপে। সেইজন্যে সংঘাত এড়ান। জগৎ সৃষ্টি হয়েছে সংঘাত দ্বারা এবং স্থায়িত্ব পাচ্ছে প্রতিহিংসা দ্বারা। প্রত্যেক ব্যক্তি এমনকি প্রত্যেক জীব প্রতিহিংসার ভাবনা করতে সক্ষম। সংঘাত অত্যধিক হলে প্রতিশােধ না নিয়ে কেউ আপনাকে ছাড়বে না। সে
| [ ৯ ]
Page #13
--------------------------------------------------------------------------
________________
সাপ, বিছে, বলদ বা গােরু যাই হােক না কেন আপনার প্রতি তার শত্রুতা থাকবে। কারণ আত্মা সমস্ত জীবের মধ্যে আছেন এবং সবার মধ্যে আত্মার শক্তি এক সমান। এমন কোন জীব যার সাথে আপনি সংঘাতে জড়িয়েছেন সে আপনার চেয়ে দুর্বল হলে সেই সময় কষ্ট সহ্য করে নেবে কিন্তু মনের মধ্যে আপনার জন্যে শত্রুতা রাখবে। এই শত্রুতাই প্রতিহিংসার বীজ বুনবে যা আপনার পরবর্তী জীবনে ফলদায়ী হবে। | কোন ব্যাক্তি যদি খুব কথা বলেন তার কথা যেন আপনার মধ্যে সংঘাতের ইন্ধন না জোগায়। এই নীতি মেনে চলাই আপনার ধর্ম। হ্যা, নিশ্চয়ই শব্দ সবরকমের হতে পারে। কিন্তু এমন নয় যে কথাগুলাে শর্ত রেখে আসছে যে। তারা সংঘাত তৈরী করবে। মানুষের স্বভাবই হচ্ছে একে অন্যের সাথে সবসময় সংঘাতে জড়ানাে। নিজের অহংকার-কে তৃপ্ত করতে কথার মাধ্যমে অন্যকে বিরক্ত করাটাই সব থেকে বড় অপরাধ। যদি অন্য কেউ এরকম কথা উচ্চারন করে তাহলে সেটা পাশে ঠেলে দিয়ে ভুলে যাওয়াই ভাল। যে এরকম করতে পারে তাকেই মানুষ বলা যায়।
সহ্য করবেন না, সমাধান খুঁজুন। প্রশ্নকর্তাঃ দাদা, আপনি যখন বলেন যে আমাদের সংঘাত অবশ্য এড়ানাে উচিৎ, তাহলে তার মানে কি আমাদের সহ্য করা অভ্যাস করতে হবে?
দাদাশ্রী ও ব্যক্তি নিজে শুদ্ধাত্মা এবং প্রকৃতি (সহজাত গুন-ধর্ম) তার আপেক্ষিক সত্ত্বা। তার প্রকৃতিই আপনার পূর্বকর্মের ফল দিচ্ছে। আপনি শুদ্ধাত্মা এবং সে-ও তাই। আপনার প্রকৃতি এবং তার প্রকৃতি একে অন্যের হিসাব শােধ করছে। কর্মের অনুযায়ী কোন ব্যক্তি আপনাকে আঘাত দিচ্ছে বলে তখন বুঝতে হবে। তাই আমি বলেছি যে এ হল নিজের কর্মের উদয় আর সামনের জন নিমিত্তমাত্র। তা ফিরে পেয়েছেন সুতরাং আপনার হিসাব শােধ হয়ে গেছে। এই ‘সলুশন’ হয়ে গেলে আর তাে সহ্য করার কিছুই থাকে না !
এই কথাটা পরিস্কার না বুঝে যদি আপনি সহ্য করতে থাকেন তাে কি হবে? একদিন ওই স্পিংটা লাফিয়ে উঠবে। আপনি কি কোন স্প্রিংকে লাফিয়ে উঠতে দেখেছেন? আমার স্প্রিং প্রায়ই লাফিয়ে উঠতাে। আমি বেশ কিছুদিন ধরে সহ্য করতাম তারপরে সেটা লাফিয়ে উঠতাে। তখন আমি রেগে যেতাম
| [১০]
Page #14
--------------------------------------------------------------------------
________________
| এবং প্রত্যেককে বিপর্যস্ত করতাম। আমার অজ্ঞানদশাতে এগুলাে হতাে। আমি ভালভাবে স্মরণ করতে পারি। আমি এটা জানি বলেই আপনাকে সহ্য করতে বারন করছি। অজ্ঞান দশায় সবাইকে সহ্য করতে হয়। কিন্তু এই জ্ঞান দ্বারা আমাদেরকে এর পিছনের কারণ বিশ্লেষণ করে বুঝতে হবে। আমাদের স্পষ্ট বুঝে নিতে হবে এর কারণ কি? পরিনাম কি? হিসাব বইয়ে ঠিকমতাে দেখে নিতে হবে। হিসাবের বাইরে কিছুই হবে না।
সংঘর্ষে লিপ্ত - নিজের ভুলের জন্য । এই জগতে যে সমস্ত বিরােধিতার সম্মুখীন আপনাকে হতে হয় তা সমস্তই শুধুমাত্র আপনার নিজের ভুলের জন্য। অন্য কারাের দোযখ নেই। এতত্সত্ত্বেও লােকজন সংঘাতে জড়াবে। যদি তাদের প্রশ্ন করা হয়, কেন আপনি সংঘাতে লিপ্ত হলেন? উত্তর হবে, কারণ তারা হয়েছিল। সেইজন্যে সে অন্ধ আর তার সাথে সংঘাতে লিপ্ত হওয়ার কারণে আপনিও অন্ধ।।
প্রশ্নকর্তাঃ যদি আমরা সংঘাতের মধ্যেও সংঘাত তৈরি করি তাহলে কি হবে?
দাদাশ্রী ঃ আপনি আপনার মাথা ফাটাবেন! কোন সংঘাত তৈরি হলে আপনি কি বুঝবেন?
প্রশ্নকর্তা ঃ এটা আমার নিজের ভুল।
দাদাশ্রীঃ হ্যা, সাথে সাথে নিজের ভুল স্বীকার করুন। সংঘাত হলে আপনাকে বুঝতে হবে যে আপনি এর কারণস্বরূপ কিছু করেছেন। যখন আপনি বুঝবেন যে এটা আপনার নিজের ভুল তখন আপনার কাছে সমাধান আসবে আর আপনি ধাঁধার উত্তর পাবেন। যদি আপনি অন্যের দোষ খুঁজতে থাকেন তাহলে কোন কিছুতেই প্রশ্নের উত্তর পাবেন না। যদি আমরা বিশ্বাস করি এবং মেনে নিই যে আমরাই দোষী তাহলে আমরা এই জগৎ থেকে মুক্ত হতে পারব। এ ছাড়া আর অন্য কোন উপায় নেই। অন্য সব উপায় আরও অশান্তির কারণ হবে, আর উপায় খুঁজতে যাওয়া সে তাে নিজের ভিতরে লুকিয়ে থাকা অহঙ্কার। উপায় কেন খুঁজতে যাবে? যদি কেউ আপনাকে বলে যে আপনিই দোষী তাহলে সেটা মেনে নিন এবং বলুন, ‘আমি তাে প্রথম থেকেই দোষী।
[[ ১১ ]
Page #15
--------------------------------------------------------------------------
________________
বুদ্ধিই সংসারে সংঘাত ঘটায়। আরে, এক মহিলার কথামত চললেও পতন হয়, সংঘাত ঘটে যায়, আর এতাে বুদ্ধিবহেন! তার কথা শুনে চলবে তাে কোথা থেকে কোথায় ছুঁড়ে ফেলবে। আরে, রাত দু’টোর সময় ঘুম ভাঙিয়ে বুদ্ধিবহেন উল্টো দেখাবে। পত্নী তাে কিছু সময় সাথে থাকেন কিন্তু এই বুদ্ধিবহেন তাে নিরন্তর সাথে-সাথেই থাকবে। এই বুদ্ধি তাে ‘ডি-থ্রোন’ (পদচ্যুত) করায়, এমনই হয়।।
যদি তুমি মােক্ষ-এ যেতে চাও তাহলে বুদ্ধির কথা একেবারেই শুনবে । বুদ্ধি তাে এমনই যে জ্ঞানীপুরুষকেও উল্টো দেখায়। আরে, যার দ্বারা তােমার মােক্ষলাভ সম্ভব তাকেই উল্টো দেখানাে? এর ফলে তাে আপনার মুক্তি অনন্ত জন্মের জন্য পিছিয়ে যাবে।।
সংঘাত হল আমাদের অজ্ঞানতা। কারাের সাথে সংঘাত হলে তা আমাদের অজ্ঞানতার পরিচয়। সত্য-মিথ্যা ভগবান দেখেন না। ভগবান তাে এটাই দেখেন যে, “সে যাই বলুক না কোন সংঘাত তাে হয় নি? তখন বল, ‘না। ব্যাস, আমার এইটুকুই চাই। অর্থাৎ ভগবানের কাছে সত্য-মিথ্যা হয় না, ও তাে এই লােকেদের কাছে হয়। ভগবানের কাছে কোন দ্বন্দ-ই নেই!
যারা সংঘর্ষে জড়ায় তারা সবাই দেওয়াল
আপনি যদি কোন দেওয়ালে ধাক্কা খান তাহলে দোষ কার, আপনার না। দেওয়ালের? যদি আপনি দেওয়ালকে অনুরােধ-উপরােধ করেন এবং আপনার রাস্তা থেকে সরে যেতে বলেন অথবা আপনাকে ন্যায় দিতে বলেন তাহলে সে কি তা করবে? যদি আপনি আপনার পূর্বনির্ধারিত রাস্তা বা চিন্তা-ভাবনা নিয়ে জেদাজেদি করেন তাহলে কার মাথা ফাটবে?
প্রশ্নকর্তা ঃ আমার!
দাদাশ্রীঃ তাহলে কাকে সাবধান হতে হবে? কার দোষ এটা? যে আঘাত পেয়েছে দোষ তারই। এই জগৎ একটা দেওয়ালেরই মত। আপনি যদি কোন দেওয়াল বা দরজার সাথে ধাক্কা খান তাহলে কি আপনি দেওয়াল বা দরজাকে প্রতিপক্ষ ধরে নেবেন?
প্রশ্নকর্তাঃ দরজা কোন জীবন্ত বস্তু নয়। দাদাশ্রীঃ তাহলে কি আপনি বলতে চাইছেন যে কিছুর মধ্যে প্রাণ থাকলেই
| [১২]
Page #16
--------------------------------------------------------------------------
________________
তা আপনার সঙ্গে সংঘর্ষের জন্যে দায়ী? এই জগতে আপনি যাদের বিরােধিতার সম্মুখীন হচ্ছেন তা সব-ই নির্জীব। সজীব কখনও সংঘাতে জড়াবে
। সেইজন্যে এরকম পরিস্থিতিতে একটা বিরতি নিন আর বলুন, ‘চলাে, চা খেয়ে আসি।
যদি কোন বাচ্চা পাথর ছুঁড়ে মারে আর তাতে আপনার রক্তপাত হয় তবে ওই বাচ্চার প্রতি আপনার ভাব কি হবে? ক্রোধ হবে; আর অপনি যাচ্ছেন, পাহাড়ের উপর থেকে পাথর এসে পড়ল, আপনার গায়ে লাগল এবং রক্তপাত হল, তখন কি করবেন ? ক্রোধ করবেন ? না। এর কারণ কি? কারণ সেটা পাহাড় থেকে পড়েছে। পাহাড় থেকে যে পাথর পড়ল সেটা কে করল? আর এদিকে বাচ্চাটি হয়তাে পাথর ছুঁড়ে পশ্চাতাপ করছে, এ আমি কি করলাম!
আপনি এই জগৎটাকে বুঝতে শিখুন। যদি আপনি আমার কাছে আসেন তাহলে আমি আপনাকে চিন্তামুক্ত করব। আপনি আপনার স্ত্রীর সাথে সুখে বসবাস করবেন আর সাংসারিকজীবনও উপভােগ করতে পারবেন। এমনকি আপনি আপনার ছেলে-মেয়ের বিয়ে দেওয়াটাও উপভােগ করবেন। আপনার স্ত্রী-ও খুব খুশী হবেন। তিনি আমার কাছে এসে বলবেন, “আমাকে মানতেই হবে, আপনি আমার স্বামীকে এত বিচক্ষণ করেছেন।
ধরুন আপনার স্ত্রী প্রতিবেশীর সাথে ঝগড়া করে এতটাই ক্রুদ্ধ হয়ে আছেন যে আপনি বাড়িতে প্রবেশ করা মাত্র আপনার উপর তর্জন-গর্জন শুরু করলেন। আপনি কি করবেন? আপনিও কি ক্রোধ করবেন ? যখন এই ধরনের ঘটনা ঘটবে তখন আপনাকে অ্যাডজাস্টমেন্ট নিতে হবে। আপনি কি করে জানবেন যে কার সাথে ঝামেলা হয়েছে আর কেন এত ক্রুদ্ধ হয়েছে? আপনি পুরুষ মানুষ, সুতরাং আপনার কোন বাদ-বিসম্বাদকে বাড়ানাে উচিৎ নয়। যদি তিনি আপনার সাথে তর্ক শুরু করেন তাহলে তাকে শান্ত করুন। মতের পার্থক্য মানে সংঘাত।
| বিজ্ঞান - উপলব্ধিযােগ্য। প্রশ্নকর্তা ঃ আমি সংঘর্ষ এড়াতে চাই কিন্তু যখন কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে ঝগড়া করতে আসে তখন আমাকে কি করতে হবে?
| [ ১৩ ]
Page #17
--------------------------------------------------------------------------
________________
দাদাশ্রী ঃ যদি আপনি এই দেওয়ালের সাথে ঝগড়া শুরু করেন তাহলে কতক্ষণ করতে পারবেন? যদি দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে আপনার মাথা ফাটে তাহলে আপনি কি দেওয়ালকে গালি দেবেন আর ঘুষি মারবেন। ঠিক একই ভাবে আপনার প্রতিপক্ষকে দেওয়াল বলে মনে করুন। তাকে দোষ দেওয়ার কোন প্রয়ােজন আছে কি? আমাদের নিজেদেরকেই বুঝতে হবে যে অন্য ব্যক্তি দেওয়ালের মত। এরকম করলে আপনি সব ধরনের সমস্যা এড়াতে পারবেন।
প্রশ্নকর্তাঃ আমরা যদি চুপ করে থাকি তাহলে তারা আমাদের উপর আরও বেশী বিরক্ত আর খিটখিটে হয়ে ওঠে এবং তারা এমনকি এটাও মনে করে যে দোষটা আমাদেরই।
| দাদাশ্রী ঃ আপনি কি মনে করেন যে আপনার চুপ থাকার সাথে এর কোন সম্পর্ক আছে? আপনি যদি বাথরুমে যাওয়ার জন্যে মাঝরাতে ওঠেন আর অন্ধকারের কারণে দেওয়ালে ধাক্কা খান তাহলে কি সেটা আপনার নীরব থাকার জন্যে ঘটলাে ?
আপনার কিছু কথা বলা বা নীরব থাকা – দু’টোর কোনটারই পরিস্থিতির উপর কোন প্রভাব নেই। আপনার নীরবতা বা এমনকি কথা বলা দিয়েও অন্যের উপর প্রভাব ফেলা যায় এমন কোন ব্যাপার নেই। কারােরই কোন স্বাধীন ক্ষমতা নেই পরিস্থিতিকে বদলানাের। সমস্ত কিছুই ব্যবস্থিত শক্তি (scientific circumstantial evidences) দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। যদি কারাের কাছেই কোন ক্ষমতা না থাকে তাহলে কি করে এই জগতে কিছু নষ্ট হতে পারে ? যদি দেওয়ালের কোন ক্ষমতা থাকত তাহলে আপনারও থাকত। এটা কি আপনার বিরােধিতা করতে পারে? একই কথা অন্য সবার | ক্ষেত্রেও প্রযােজ্য। যে হিসাব নিয়ে এসেছেন তা না শােধ হওয়া পর্যন্ত আপনাকে ছাড়বে না। আপনার হিসাব চোকানাের জন্য সে নিমিত্তমাত্র। আপনি এর থেকে পালাতে পারবেন না। যেখানে তার নিজের বাক্যের উপর কোন। নিয়ন্ত্রণ নেই সেখানে চিৎকার করে অভিযােগ জানাবার প্রয়ােজন কি? সেইজন্যে নিজেই একটা দেওয়ালের মত হয়ে যান। যদি আপনি স্ত্রী-কে কটু-কাটব্য করতেই থাকেন তাহলে তার ভিতরের ভগবান এটা মনে রাখবেন। অন্যদিকে যখন তিনি আপনার সাথে দুর্ব্যবহার করবেন তখন যদি আপনি দেওয়ালের
| [ ১৪ ]
Page #18
--------------------------------------------------------------------------
________________
মত হয়ে যান তাহলে আপনার ভিতরের ভগবান আপনাকে সাহায্য করবেন।
বাস্তবিকতা এই যে আপনার নিজের ভুলের জন্যই দেওয়ালের সাথে আপনার সংঘর্ষ বাধে। এটা দেওয়ালের ভুল নয়। লােকে প্রশ্ন করে, তাহলে কি সবাই দেওয়াল ? হ্যা, তারা সবাই দেওয়াল। এই ব্রহ্মান্ডে আমি আমার জ্ঞানদৃষ্টিতে এটা দেখেছি এবং যেমনটা দেখেছি আপনাকে ঠিক তেমনটাই বলছি। এটা মিথ্যা নয়।
দেওয়ালের সাথে ধাক্কা খাওয়া আর মতভেদ-এর কারণে কারাের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। মূলতঃ এটা একই ব্যাপার। উভযেই অন্ধ। এক ব্যক্তি দেওয়ালে ধাক্কা খায় কারণ সে দেখতে পায় না এবং অপরজন সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে কারণ সেও দেখতে পায় না। প্রথমক্ষেত্রে ব্যক্তি সামনে কি আছে দেখতে পায় না আর পরবর্তী ক্ষেত্রে সে আগে সমাধান খুঁজে বার করতে পারে না এবং সেইজন্যে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। সামনে কি আছে তা দেখতে অক্ষম বলেই এইসমস্ত ক্রোধ, মান, মায়া, লােভের সৃষ্টি হয়। এইভাবে আমাদের জিনিসটা বুঝতে হবে। দোষ দেওয়ালের নয়, দোষ তারই যে আহত হয়েছে। এরা সবাই দেওয়ালই শুধু। সমস্ত পরিস্থিতি কেবলমাত্র দেওয়ালের মত। যখন আপনি দেওয়ালে ধাক্কা খান তখন তার সাথে আমি ঠিক, তুমি ভুল’ এমন ঝামেলা করেন না তাে? কে ঠিক, কে ভুল তা প্রমান করার কোন প্রয়ােজন নেই।
যে সংঘাত করে সে দেওয়ালের মতাে, এটা আপনি বুঝে নিন। আর দরজা কোথায় তা খুঁজতে থাকলে অন্ধকারেও খুঁজে পাওয়া যায়। হাত দিয়ে অনুভব করতেকরতে গেলে দরজা খুঁজে পাওয়া যায়, কি যায় না? সেখান। দিয়ে বেরিয়ে এস। ধাক্কা দিও না। এই নিয়ম মেনে চলতে হবে যে আমি কারাের সাথে সংঘাতে যাব না।
জীবন এইভাবে কাটান কেউ জানে না কেমন করে বাঁচতে হয়। লােকে বিবাহের প্রথম কথা না। জেনেও বিবাহের জন্য ব্যগ্র হয়ে ওঠে। কি করে মাতা-পিতা হতে হয় তা তারা জানে না তবুও তারা মাতা-পিতা হয়ে যায়। আপনি আপনার জীবন এমন
[১৫]
Page #19
--------------------------------------------------------------------------
________________
সকালে আপনাদের সবার প্রতিজ্ঞা করা উচিৎ যে সারাদিন কারাের সাথে কোনরকম সংঘাতে জড়াবাে না। সংঘর্ষ থেকে কি লাভ আপনার হয় ?
প্রশ্নকর্তা ঃ আমরা শুধুই আঘাত পাই।
দাদাশ্রী ঃ শুধু তাই নয়, আপনার সমস্ত দিন নষ্ট হয়ে যাবে। তার উপরে সামনের জন্মে আপনি মনুষ্য-জীবনের অধিকার হারাবেন। যতক্ষণ আপনার মধ্যে ধার্মিকতা আর ভদ্রতা আছে ততক্ষণ আপনি মনুষ্যজন্ম পাবেন। আপনি যদি পশুর মত সবার সাথে যুদ্ধ করতে থাকেন আর সবাইকে শিং দিয়ে গুঁতােতে থাকেন তাহলে কি আপনি পুনরায় মনুষ্য-জন্মের যােগ্য ? কে শিং ব্যবহার করে, ষাড় না মানুষ?
প্রশ্নকর্তা ঃ দেখে তাে মনে হয় মানুষই বেশী ব্যবহার করে।
দাদাশ্রীঃ যদি কোন মানুষ ক্ষতি করে তাহলে তাকে প্রাণীজগতে জন্মাতে হবে, যেখানে সে চার পা আর একটা লেজ পাবে। জীবন সেখানে অনায়াস নয়; তা দুঃখ-কষ্ট আর বেদনায় পরিপূর্ণ। এটা আপনার খুব ভালাে করে বােঝা উচিৎ।
সংঘাত, অজ্ঞানের লক্ষণ প্রশ্নকর্তাঃ পছন্দমত না পাওয়াতেই কি আমরা আমাদের জীবনে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ি?
দাদাশ্রী ও সংঘাত-ই হয়, তাকেই বলা হয় সংসার। প্রশ্নকর্তা ও সংঘাত-এর কারন কি?
দাদাশ্রীঃ অজ্ঞান। আপনি যদি কারাের সাথে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন তাহলে সেটা আপনার দুর্বলতার লক্ষণ। অন্য লােকেদের দোষ নেই। তারা কখনই মতভেদের কারণ ঘটায় না। আপনার নিজের দোষেই মতপার্থক্য হয়। যদি কেউ উদ্দেশ্যপ্রণােদিত ভাবে আপনার সাথে সংঘর্ষে জড়ায় তাহলে আপনার তার কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ। যখনই আপনি কোন সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছেন, সেটা আপনারই দোষ।
প্রশ্নকর্তা ঃ আমরা সংঘর্ষ এড়াতে চাই কিন্তু আমাদের রাস্তায় একটা স্তম্ভ দাঁড়িয়ে আছে। ধরুন আমরা সেটাকে এড়িয়ে চলছি তবুও সেটা আমাদের ওপর পড়লাে, তাহলে আমরা কি করবাে?
[১৬]
Page #20
--------------------------------------------------------------------------
________________
দাদাশ্রী ঃ যখন এটা পড়ছে তখন আপনাদের উচিৎ সেটার থেকে সরে
যাওয়া।
প্রশ্নকর্তা ঃ যতভাবেই আমরা এড়াতে চেষ্টা করি না কেন এটা তবুও আমাদের আঘাত করে। উদাহরণ হিসাবে আমার স্ত্রীর কথা ধরুন। দাদাশ্রী : সংঘর্ষের সময় আপনাকে সমাধান খুঁজতে হবে। প্রশ্নকর্তা ঃ কেউ অপমান করলে আমরা যে অপমানিত বোধ করি, সেটা কি আমাদের অহংকারের জন্যে?
দাদাশ্রী ঃ বাস্তব সত্য এই যে কেউ যখন অপমান করে তখন সে আমাদের অহংকার বিনষ্ট করে দেয়, তাও ‘ড্রামাটিক’ অহংকার, যা অতিরিক্ত অহংকার আছে তাকেই নষ্ট করে। তাতে আমাদের ক্ষতি কি? এই কর্ম তো মুক্তি দেয় না। আমাদের উচিৎ ছোট বাচ্চাও যদি সামনে থাকে সেখানেও বলা ‘এবারে মুক্তি দাও ৷'
সমুদ্রের মতনিজের অন্তরে সবকিছু সমাহিত রাখুন :
প্রশ্নকর্তা ঃ দাদা, ব্যবহারে ভিউপয়েন্ট-এর সংঘাতে বড়রা ছোটদের ভুল দেখে, ছোটরা আবার আরও ছোটদের ভুল দেখে, এমন কেন হয় ? দাদাশ্রী ঃ বড় যেমন ছোটকে খেয়ে ফেলে তেমনি বড়রা ছোটদের ভুল দেখে, এইরকম। তার পরিবর্তে আপনি বলুন ‘ভুল আমারই।' ভুলকে স্বীকার করে নিলে তবেই সমাধান সম্ভব। ‘আমি’ কি করি, অন্য কেউ যদি সহ্য করতে অসমর্থ হয় তবে ‘আমি' তা নিজের উপর নিয়ে নি, অন্যের ভুল দেখাই না । অন্যকে কেন দোষ দেব? আমাদের অন্তঃকরণ সমুদ্রের মত বিশাল। এই দেখো না, বোম্বাইয়ের সমস্ত নর্দমার জল সমুদ্র নিজের অন্তরে গ্রহণ করে। আপনি ও সেরকমই করুন। তাতে কি হবে, এই বাচ্চারা আর সমস্ত লোকের উপর তার প্রভাব পড়বে। তারাও শিখবে। বাচ্চারাও বোঝে এর অন্তর সমুদ্রের মত বিশাল। যা আসবে সব জমা করে নাও। ব্যবহারে এইরকমই নিয়ম, যে অপমান করে সে নিজের শক্তি আমাদের দিয়ে যায়। সুতরাং অপমানকে হাসিমুখে স্বীকার করো!
[ ১৭ ]
Page #21
--------------------------------------------------------------------------
________________
‘ন্যায়স্বরূপ’ - নিজের হিসাব
প্রশ্নকর্তা : যদি আমরা সবরকম ভাবে বিবাদ এড়ানোর চেষ্টা করে কোন সমস্যা সমতার সাথে ধীরভাবে মিটিয়ে নিতে চাই তবুও যদি অপরপক্ষ আমাদের অপমান করে আর প্ররোচিত করে? তখন আমরা কি করব?
দাদাশ্রী ঃ কিছু না । এটা আমাদের নিজেদের ‘হিসাব’ তাই আমাদেরকেই এটা সমভাবে মিটিয়ে নিতে হবে। নিয়মের মধ্যে থেকে আমাদের নিজেদের সমস্যার সমাধান নিজেদের করতে হবে।
প্রশ্নকর্তা ঃ সংঘাত কি ব্যবস্থিত-এর কারনে হয় ?
দাদাশ্রী ঃ হ্যাঁ, সংঘাত ব্যবস্থিত-এর কারণেই হয়। কিন্তু সেকথা আপনি কখন বলতে পারেন? বাদ-বিবাদ হয়ে যাওয়ার পরেই শুধু আমরা তা বলতে পারি। আপনি নিশ্চয় করবেন যে, ‘আমি কারোর সাথে সংঘাতে জড়াতে চাই না।' যদি আমরা সামনে কোন স্তম্ভ দেখি তাহলে আমরা সেটাকে পাশ কাটিয়ে যাব, তাতে ধাক্কা মেরেযাব না। তা সত্ত্বেও যদি ওই স্তম্ভে আমরা ধাক্কা খাই শুধু তাহলেই আমরা বলতে পারি যে এটা ব্যবস্থিত। কিন্তু যদি আমরা প্রথমেই ব্যবস্থিত-এর অজুহাত দিই তাহলে ব্যবস্থিত-এর জ্ঞান-এর অপব্যবহার করা
হয়।
সংঘাত আধ্যাত্মিক ক্ষমতা কমায় :
যদি কোন জিনিস আধ্যাত্মিক ক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করে দেয় তাহলে সেটা সংঘাত ৷ যদি আপনি কোন ঝগড়ায় জড়িযে পড়েন তাহলে শেষ হয়ে যাবেন। আপনাকে কেউ প্ররোচিত করার চেষ্টা করলেও আপনাকে সংযত থাকতে হবে। কোনরকম সংঘাত হওয়া উচিৎ নয়। যে কোন মূল্যে এমনকি আপনার নিজের জীবনের বিনিময়েও সংঘাত এড়াতে হবে। বিন্দুমাত্র সংঘাত না হলে তবেই কেউ মুক্তি পেতে পারে। যদি কেউ এইটুকু শিখতে পারে যে “আমি সংঘাতে যাব না' তাহলে তার গুরু বা অন্য কাউকে প্রয়োজন হবে না। এক বা দুই জীবনেই সরাসরি মোক্ষ-এ যেতে পারবে। যখন কেউ অন্যের সাথে সংঘর্ষ এড়ানোর দৃঢ় নিশ্চয় করে এবং তা মেনে চলে সেখান থেকেই বিশুদ্ধ আস্থা (সতি)-র সূচনা হয়। অর্থাৎ যদি কেউ সতি লাভ করতে চায় তাকে আমি গ্যারান্টী দিয়ে বলছি যাও, সংঘাত না করার দৃঢ় নিশ্চয়
[[ ১৮ ]
Page #22
--------------------------------------------------------------------------
________________
করাে, তখন থেকেই সমকিত শুরু হবে। সংঘর্ষের প্রভাবে শরীরে যা। চোট লাগে তা কেউ ওষুধ দিয়ে সারাতে পারে কিন্তু মনের উপর সংঘর্ষ বা ঘর্ষণজনিত কারণে যে দাগ পড়ে তা কি করে কেউ সারাবে? হাজার জন্মেও তা মােছা যাবে না।
প্রশ্নকর্তা ও সংঘাত কি মন এবং বুদ্ধির ক্ষতি করে?
দাদাশ্রী ঃ শুধুমাত্র মন বা বুদ্ধির উপর নয় সমগ্র অন্তঃকরণের উপর এর প্রভাব পড়ে এমনকি শরীরের উপরেও এর প্রভাব দেখা যায়। অনেক রকমের অসুবিধা সংঘর্ষের ফলে উৎপন্ন হয়।।
প্রশ্নকর্তা ঃ আপনি বলছেন যে আমাদের সমস্ত শক্তি সংঘাতের কারণে নষ্ট হয়ে যায়। যদি আমরা জাগরূক থাকি তাহলে কি এই শক্তি আবার ফিরে আসবে?
দাদাশ্রী ঃ আপনাকে শক্তি টেনে আনতে হবে না। তারা আছেই, তারা এখন বাড়ছে। যে সমস্ত শক্তি আপনি পূর্বজন্মে সংঘাতের জন্যে হারিয়েছিলেন তা আপনার কাছে ফিরে আসছে। সাবধানে থাকুন যাতে নতুন করে আর কোন সংঘাতে জড়িয়ে না পড়েন। তাহলে আপনার সব শক্তি, এমনকি এখন যা আপনি অর্জন করলেন সমস্তই আবার নষ্ট হয়ে যাবে। সংঘাত না হলে তা ক্রমশঃ বাড়তে থাকবে।
এই জগতে প্রতিশােধের কারণেই সংঘাত তৈরি হয়। এই জগতের মূল কারণ প্রতিহিংসা। যে তার প্রতিহিংসা আর সংঘাত বন্ধ করতে পেরেছে সে মুক্ত। প্রেমে কোন বাধা নেই। যখন বিরুদ্ধাচরণ এবং শত্রুতা চলে যায় তখন প্রেম আসে।
সাধারণ জ্ঞান (commonsense) - সর্বত্র প্রযােজ্য
জাগতিক ব্যবহার শুদ্ধ করার জন্য কি প্রয়ােজন? শুধুমাত্র সাধারণ জ্ঞান সম্পূর্ণভাবে থাকা দরকার। একজনকে অটল, ঠান্ডা-মস্তিষ্কসম্পন্ন এবং সহানুভূতিশীল হতে হবে। সর্বোপরি তার সাধারণজ্ঞান থাকা প্রয়ােজন। সাধারন জ্ঞানের সংজ্ঞা-ই হচ্ছে যে এটা সর্বত্র প্রযােজ্য। কারাের যদি সাধারণজ্ঞানের সাথে আত্মজ্ঞানও থাকে তাহলে তিনি দীপ্তিময় হয়ে উঠবেন। প্রশ্নকর্তা ও সাধারণ জ্ঞান কেমন করে আসে ?
[ ১৯ ]
Page #23
--------------------------------------------------------------------------
________________
দাদাশ্রী ঃ কেউ আপনার সাথে সংঘাতে জড়াতে চাইলে আপনি যদি তার থেকে বিরত থাকেন তাহলে সাধারণ জ্ঞান আসবে। কিন্তু আপনি কারাের সাথে সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে এই জ্ঞান চলে যাবে। আপনার দিক থেকে কোনরকম বাদ-বিবাদ যেন না থাকে।
আপনার সাথে অন্য কারাের সংঘর্ষ থেকেই সাধারণ জ্ঞানের সৃষ্টি হয়। আত্মার শক্তি এমনই যে তা আপনাকে সংঘাতের সময় আপনার ব্যবহার কেমন করতে হবে তার উপায় দেখাবে। একবার এই জ্ঞান পেলে তা আপনাকে কখনাে ছেড়ে যাবে না। উপরন্তু আপনি আরও বেশী করে তা অর্জন করবেন। আমার প্রচন্ড সাধারণ জ্ঞান আছে কারণ আমি কারাের সাথে সংঘাতে জড়াই
। আপনি কিছু বললে তার ভিতরের অর্থ আমি তৎক্ষণাৎ বুঝে ফেলি। অন্যরা ভাবতে পারে যে যা বলা হচ্ছে তা দাদার পক্ষে ক্ষতিকারক কিন্তু আমি সাথে সাথে বুঝে নিই যে এতে কোন ক্ষতি নেই। এটা জাগতিক দৃষ্টিকোণ। থেকে ক্ষতিকারক নয়, এমনকি ধার্মিক দৃষ্টিকোণ থেকেও এটা ক্ষতিকারক নয়। এবং এটা নিশ্চিতভাবে আত্মার পক্ষেও ক্ষতিকারক নয়। লােকে ভাবতে পারে যে আত্মার পক্ষে এটা ক্ষতিকারক কিন্তু এর উপযােগিতা বুঝতে পারি। সাধারণ জ্ঞানের এমনই প্রভাব। সেইজন্য আমি আপনাকে সাধারণ জ্ঞানের সংজ্ঞা দিয়েছি, এটা “সর্বত্র প্রযােজ্য।” এই জ্ঞান বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে নেই। সাধারণ জ্ঞান বংশানুক্রমে ক্রমশঃই কমে যাচ্ছে।
আত্মবিজ্ঞান প্রাপ্তি হলে তারপর লােকে এইভাবে থাকতে পারে। অথবা সাধারন মানুষের মধ্যেও এক-আধজন থাকতে পারে, এরকম পুণ্যশালী লােকও হয় ! কিন্তু তারা কিছু জায়গায় থাকতে পারে, সব জায়গায় নয়।
প্রশ্নকর্তাঃ সমস্ত সংঘাতের কারণ কি এই নয় যে এক লেয়ার’ থেকে অন্য ‘লেয়ার’-এর অন্তর খুব বেশী?
দাদাশ্রী ও সংঘাত-ই তাে প্রগতি! যত ঝঞ্ঝাট হবে, ঘর্ষণ হবে, ততই উপরে ওঠার রাস্তা খুলে যাবে। ঘর্ষণ না হলে তাে যেখানকার সেখানেই থেকে যাবে। তাই লােকে ঘর্ষণ খোঁজে।।
[ 20]
Page #24
--------------------------------------------------------------------------
________________
সংঘাত নিয়ে যায় উন্নতির পথে প্রশ্নকর্তাঃ যদি আমরা সংঘাতকে আধ্যাত্মিক উন্নতির সহায়ক ভাবি তবেই আমরা এগাতে পারব? | দাদাশ্রী ঃ হা, কিন্তু লােকেরা এভাবে এটা বােঝে না। ভগবান আমাকে উপরে তুলবেন না; সংঘাত তুলবে। সংঘাত আপনাকে একটা উচ্চতায় নিয়ে | যেতে পারবে কিন্তু তারপরে কেবলমাত্র জ্ঞানীঃই (আত্মজ্ঞানী পুরুষ) আপনাকে সাহায্য করতে পারবেন। সংঘর্ষ স্বাভাবিকভাবেই উৎপন্ন হয়। ঠিক যেমনভাবে নদীবক্ষে পড়ে থাকা পাথর জলের ক্ষয়কারী শক্তি দ্বারা মসৃণ এবং গােলাকার হয়ে যায় ঠিক তেমনই সংঘর্ষ এবং সংঘাত আপনার জীবনের ধারালাে অংশগুলােকে মসৃণ করে দেয়।
প্রশ্নকর্তা ও ঘর্ষন আর সংঘর্ষ - এর মধ্যে কি তফাৎ?
দাদাশ্রী ও প্রাণহীন বস্তুর সাথে ধাক্কা হলে ঘর্ষণ, জীবিত প্রাণীর সাথে থাক্কা লাগলে সংঘর্ষ।।
প্রশ্নকর্তা ও সংঘর্ষ হলে আত্মশক্তি বাধাপ্রাপ্ত হয়, নয় কি?
দাদাশ্রী ঃ হ্যা, ঠিক কথা। সংঘর্ষ হলে ক্ষতি নেই, ‘আমি সংঘর্ষ করতে চাই’ এই ভাব ত্যাগ করতে হবে। আপনার সংঘর্ষ করার ভাব থাকবে না, ‘চন্দুলাল’ (নিজের নাম বলতে হবে) করে তাে করুক। আপনার ভাব-ই বাধা দেয়। এমন যেন না হয়।
প্রকৃতি (প্রত্যেকের স্বভাব) সংঘর্যের কারণ প্রশ্নকর্তা ও সংঘর্ষের কারণ কে, জড় অথবা চেতন?
দাদাশ্রীঃ আপনার পূর্বজন্মের সংঘর্ষ-ই আরও সংঘর্ষ তৈরী করে। এটা জড় বা চেতনের প্রশ্ন নয়। আত্মার সাথে এর কোন লেনা-দেনা নেই। পুদগল (মন-বচন -কায়ার যৌথ)-ই সমস্ত সংঘাতের কারণ। যাই হােক, অতীতের সংঘাত-ই আবার নতুন করে সংঘাত সৃষ্টি করে। যাদের অতীত সংঘর্ষমুক্ত তাদের এই অভিজ্ঞতা আর হয় না। সংঘাত-ই সংঘাত টেনে আনে, যা আবার আরও সংঘাতের কারণ হয়; এইভাবেই বাড়তে থাকে।
পুষ্পল মানে কি, এতাে পুরােপুরি জড় নয়, মিশ্রচেতন। একে বিভাবিত পুদ্গল বলা হয়। বিভাবিত মানে বিশেষ ভাব থেকে সৃষ্ট পুদগল, সেই সব
[ ২১ ]
Page #25
--------------------------------------------------------------------------
________________
করায়। যে পুদ্গল শুদ্ধ, সে এইসব করায় না। এই পুদ্গল তো মিশ্র চেতন হয়েছে। আত্মার বিশেষ ভাব আর জড়ের বিশেষ ভাব, দু’য়ে মিলে এক তৃতীয় রূপ পেয়েছে।
প্রশ্নকর্তা ঃ যেখানে কোন সংঘাত নেই তার মানে কি সেখানে অহিংসার সত্য ইচ্ছা জাগৃত হয়েছে?
দাদাশ্রী : না, সেরকমও নয়! কিন্তু দাদার কাছে তো জানা গেছে যে দেওয়ালের সাথে সংঘাত করে কত লাভ (!), তাহলে (অন্তর-নিবাসী) ভগবানের সাথে সংঘাত করে আরও কত লাভ হবে? ! এই বিপদ বুঝতে পারলেই নিজের পরিবর্তন হতে থাকবে।
অহিংসা সম্পূর্ণভাবে বোঝা কঠিন কারণ এটা এতই গভীর একটা বিষয় যে একে সামগ্রিক ভাবে বোঝা অসম্ভব। তার পরিবর্তে যদি আপনি এটুকুই ধরতে পারেন, ‘কখনও সংঘাতে জড়াবেন না' তাহলে আপনি আপনার শক্তি সঞ্চয় করতে পারবেন যা দিনে দিনে বাড়তে থাকবে। এইভাবে সংঘর্ষের কারণে আপনার কোন ক্ষতি হবে না। যদি আপনি কখনও সংঘাত জড়িয়ে পড়েন তাহলে তার পরিণাম প্রতিক্রমণ (আন্তরিক ভাবে ক্ষমা প্রার্থনা) করে মুছে ফেলতে পারেন। তা নাহলে পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে। এই জ্ঞানের সাহায্যে আপনি মোক্ষ লাভ করবেন কিন্তু সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে আপনাকে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হবে যা আপনার মুক্তিকে বিলম্বিত করবে।
দেওয়ালের সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তা আপনার ক্ষতি করবে না কারণ তা একপক্ষীয়, কিন্তু কোন জীবের প্রতি একটামাত্র নেতিবাচক চিন্তাও ক্ষতিকর। ক্ষতি দু'পক্ষেরই হবে। কিন্তু যদি আপনি পরে প্রতিক্রমণ করেন তাহলে আপনার দোষ মুছে যাবে। সেইজন্য কোথাও সংঘাত হলে প্রতিক্রমণ করুন যাতে সেখানেই তার সমাপ্তি হয় ।
সমাধান, সম্যক জ্ঞান থেকে
প্রশ্নকর্তা ঃ দাদা, অহংকার থেকে যে সংঘাতের সৃষ্টি হয় যা ঘরে, কর্মক্ষেত্রে এমনকি দাদার কাজ করার সময়ও প্রযোজ্য তার সম্পর্কে আপনি কি বলেন? এই সমস্ত পরিস্থিতির সমাধান তো দরকার ?
[ 22 ]
Page #26
--------------------------------------------------------------------------
________________
দাদাশ্রীঃ হ্যা, সমাধান দরকার যারা এই জ্ঞান পেয়েছে তারা সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধানে পৌঁছায় কিন্তু তারা কি করে যাদের এই জ্ঞান নেই? তাদের কাছে কি সমাধান আছে? তারা একে অন্যের থেকে আলাদা হয়ে যায়। যাদের এই জ্ঞান আছে তারা পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয় না।
প্রশ্নকর্তা ঃ কিন্তু দাদা, কারাের সংঘাতে জড়ানাে উচিৎ নয়।
দাদাশ্রী ও সংঘাত হয়,, সে তাে স্বভাবের কারণে। সেরকম ‘মাল’ ভর্তি করে এনেছে, তাই এরকম হচ্ছে। যদি সেরকম মাল না থাকত তাহলে এমন হতাে না। সুতরাং আমাদের বুঝে নিতে হবে যে লােকের স্বভাব-ই এইরকম। এইরকম বুঝে নিলে আমাদের উপর কোন প্রভাব পড়বে না। কারণ স্বভাব তাে স্বভাব (অর্থাৎ পূর্বর্সঞ্চিত সংস্কার) যার আছে তার, আর আমরা নিজস্বভাব (শুদ্ধাত্মা)! তাহলেই নিকাল হয়ে যায় (মিটে যায়)। আপনি আটকে থাকলে ঝাট বাড়ে। আর সংঘাত তাে হয়, সংঘাত হবে না এমন হয় না। কিন্তু তার জন্যে একে অপরের থেকে পৃথক না হয়ে যাই সেটাই দেখতে হবে। সে তাে পতি-পত্নীর মধ্যেও হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা একসাথেই থাকে না কি? সে তাে হয়-ই। এখানে তাে কেউ অন্যজনকে ‘সংঘাত করাে না’ বলে চাপ দেয়। নি।
প্রশ্নকর্তা ঃ কিন্তু দাদা, আমাদের সবসময় সংঘর্ষ এড়িয়ে চলার মানসিকতা রাখা উচিৎ নয় কি? | দাদাশ্রীঃ হ্যা, সেটা সবসময় থাকা দরকার। সেটাই আপনাকে করতে হবে। আপনাকে প্রতিক্রমণ করতে হবে এবং প্রতিপক্ষের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ মনােভাব রাখতে হবে। কোন একটি বিশেষ কর্মের ঘন আবরনের কারণে সংঘাত বারবার হতে থাকে এবং প্রত্যেকবার প্রতিক্রমণের পরে একটা করে স্তর কমে যায়। আমার ক্ষেত্রে, যখনই সংঘর্ষ হত, তখনই আমি মনে মনে টুকে রাখতাম যে কিছু মূল্যবান লাভ হলাে কারন এটা আমার জাগৃতিতে সাহায্য করতাে। সংঘাত আপনাকে পতন থেকে রক্ষা করবে এবং আপনার দৃষ্টি আত্মার প্রতি রাখবে। সেইজন্য সংঘাত আত্মার ভিটামিন। সংঘাত নিজে কোন সমস্যা নয়। মূল কথা হলাে সংঘাতের সময় সতর্ক থাকতে হবে যে অন্যজনের সাথে দূরত্ব তৈরী না হয়। এটাই আধ্যাত্মিক প্রচেষ্টার সার। যদি আপনি
[ ২৩ ]
Page #27
--------------------------------------------------------------------------
________________
প্রতিপক্ষকে দোষী দেখতে থাকেন বা তার সাথে তীব্র মতবিরােধ হয়। তাহলে প্রতিক্রমণ করে একে সমাপ্ত করতে হবে।
আমি কেমন করে সবার সাথে মানিয়ে চলি? আমি আপনার সাথে চলতে পারি, নয় কি? এ কথা সত্য যে উচ্চারিত শব্দের জন্য-ই সংঘাতের সৃষ্টি হয়। আমি প্রচুর কথা বলি কিন্তু আমি কি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ি?
সংঘর্ষ হয়। রান্নাঘরের বাসন-পত্রও পাশাপাশি থাকলে ঠোকাঠুকিতে আওয়াজ হয়। পুদ্গলের সহজাত গুণ-ই হল সংঘাত সৃষ্টি করা, কিন্তু শুধুমাত্র যদি এরকম হিসাব থাকে। জ্ঞান-এর আগে আমারও অতীতে অনেক সংঘাতের অভিজ্ঞতা আছে। জ্ঞান-এর পরে আর কোন সংঘাত নেই। এই জ্ঞান-ই একটা অভিজ্ঞতা। এই জ্ঞান-এর সাহায্যে আমি অতীতের সব হিসাব শােধ করে দিয়েছি। আপনার হিসাব মেটানাে এখনও বাকী আছে।।
আপনার দোষসমূহ প্রতিক্ৰমণ দ্বারা ধুয়ে ফেলুন কারাের সাথে সংঘাত হলে নিজের দোষ দেখা সুরু হয়, সংঘাত না হলে দোষ ঢাকা থাকে। রােজ পাঁচশাে-পাঁচশাে দোষ দেখতে পেলে বুঝবে পূর্ণাহুতির সময় হয়ে এসেছে।
| সুতরাং যেখানেই সংঘাত সেখানেই তা বর্জন করাে। এই সংঘাত করে। ইহলােক তাে বটেই, পরলােকও বিনষ্ট হয়! ইহলােক যে নষ্ট করে সে পরলােক নষ্ট না করে ছাড়ে না! যার ইহলােক উন্নত হয়, সে পরলােকেও উন্নতি করে। এই জন্মে যদি কোন প্রকার বাধা না আসে তাহলে বুঝবে পরজন্মেও কোন বাধা আসবে না। আর এখানে যদি বাধার সৃষ্টি কর তাহলে সে সবই সেখানেও আসবে।
তিন জন্মের নিশ্চয়তা (guarantee) যার সংঘাত না হবে, তার তিন জন্মে মােক্ষলাভ হবে, এই গ্যারান্টি আমি দিচ্ছি। যদি সংঘাত হয়ে যায় তাে প্রতিক্রমণ করে নেবে। সংঘাত পুৰ্গল করে আর পুদ্গল-এর সাথে পুদগল-এর সংঘাত প্রতিক্ৰমণ দ্বারা বিনষ্ট হয়।
অন্যজন যদি ভাগ করে তাহলে তােমাকে ‘গুণ’ করতে হবে যাতে অবশেষ না থাকে। ও আমাকে এইরকম বলেছে, ওইরকম বলেছে’, অন্যের
| [ ২৪ ]
Page #28
--------------------------------------------------------------------------
________________
সম্বন্ধে এই চিন্তা করাই পাপ। রাস্তায় চলতে গিয়ে যদি গাছে ধাক্কা লাগে তার সাথে কি ঝগড়া করো? গাছকে অচেতন কি করে বলবে? যারা ধাক্কা দেয় তারা সকলে গাছের মতই। গরুর পা যদি আমাদের পায়ে পড়ে, আমরা কি কিছু বলি? এইসব লোকেরাও তাই। “জ্ঞানীপুরুষ' সবাইকে কি ভাবে ক্ষমা করে দেন? তিনি এটাই মনে করেন যে এই বেচারারা গাছের মত, কিছু বোঝে না। আর যে বোঝে তাকে তো কিছু বলতেই হয় না, সে তো তৎক্ষণাৎ নিজের অন্তরেই প্রতিক্রমণ করে নেয়।
যেখানে আসক্তি, সেখানেই প্রতিক্রিয়া
প্রশ্নকর্তা ঃ অনেক সময়, যদিও কারোর প্রতি ঘৃণা পোষণ করার কোন ইচ্ছে আমার থাকে না, তবু এটা হয়। এর পিছনে কারণ কি?
দাদাশ্রী ঃ কার সাথে এটা হয় ?
প্রশ্নকর্তা : কখনও কখনও আমার জীবনসঙ্গীর ক্ষেত্রে হয়। দাদাশ্রী ঃ এটা ঘৃণা নয়। যে ভালবাসা আকর্ষণ থেকে জন্মায় তা প্রতিক্রিয়ামূলক এবং বিকর্ষণের বিষয়। যদি কোন পতি বিরক্ত হয়ে যায় তাহলে পত্নী তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। তিনি কিছু সময় এই দূরত্ব বজায় রাখেন যেটা তাঁর পতিকে আবার তাঁর কাছে প্রিয় করে তোলে এবং পত্নী হলে পতির প্রতি বা পতি হলে পত্নীর প্রতি আসক্তি বাড়ে। সংঘাত বেশী হলে আঘাতও বেশী হয় এবং একে অন্যের ব্যাপারে বেশী হস্তক্ষেপ করলে তার ফলস্বরূপ পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে যায়। আবার প্রেম জন্মায় আর তারা একত্রিত হয়। যেখানে এই ধরনের ভালবাসা অত্যধিক মাত্রায় থাকে সেখানে দখলদারিও হয়। অন্তরে তারা ভালবাসা আছে বলেই দখলদার হয়। পূর্বজন্ম থেকে নিয়ে আসা এরকম অত্যধিক ভালবাসা-ই তখলদারির কারণ । আপনি যেটার কথা বলছেন তা অত্যধিক ভালবাসা, তা নইলে কি দখলদারি হত? এটাই দখলদারির বৈশিষ্ট্য।
লোকে বলে সংঘাতের কারণে তাদের ভালবাসা বৃদ্ধি পায়। একথা সত্যি, এই আসক্তি সংঘাত থেকে উৎপন্ন হয়। যেখানে সংঘর্ষ কম সেখানে আকর্ষণও কম। কোন বাড়ীতে যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পরিমিত ঝগড়া হয় তাহলে বুঝতে হবে যে তাদের আকর্ষণ-ও পরিমিত। এটা বুঝলেন কি?
[ 25 ]
Page #29
--------------------------------------------------------------------------
________________
প্রশ্নকর্তাঃ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যখন অহঙ্কার মাথা তােলে তখন আমাদের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয় এবং অনেক স্ফুলিঙ্গ তৈরি হয় !
দাদাশ্রী ঃ এই স্ফুলিঙ্গ অহংকারের জন্যে নয়। দেখে মনে হয় এদের উৎপত্তি অহংকার থেকে আসলে তারা আপনার শারীরিক সম্পর্কের সাথে সম্বন্ধযুক্ত। যেখানে কোন শারীরিক সম্পর্ক নেই সেখানে কোন সংঘাত নেই। শারীরিক সম্পর্ক বন্ধ হলে সংঘর্ষ-ও থেমে যায়, সেইজন্যে যখন কোন স্বামীস্ত্রী এক বছরের জন্যে ব্রহ্মচর্য পালনের প্রতিজ্ঞা করে আমি তাদের প্রশ্ন করি যে তাদের জীবন এখন কিরকম। তারা উত্তর দেয়, “কোন স্ফুলিঙ্গ নেই, কোন ঝগড়া নেই, কোন সংঘর্ষ নেই, কোন সংঘাত নেই, সবকিছু স্থির হয়ে আছে। এই সবকিছুই শারীরিক সম্পর্কের জন্য।
| প্রশ্নকর্তা ঃ প্রথমে আমরা ভাবতাম যে এই সংঘাত ঘরের কাজের সাথে। সম্পর্কিত। কিন্তু ঘরের কাজে একে অন্যকে সাহায্য করা সত্ত্বেও সংঘাত চলতে থাকে।।
দাদাশ্রীঃ যতক্ষণ শারীরিক সম্পর্ক আছে ততক্ষণ এই সংঘাত চলতেই থাকবে। শারীরিক সম্পর্ক-ই সংঘাতের মূল কারণ। যিনি নিজের যৌন প্রবৃত্তিকে জয় করেছেন তিনি সবই জয় করেছেন। এইরকম মানুষের কাছে। যারাই আসে তাদের উপর তিনি প্রভাব বিস্তার করেন। |
স্থূল ওবং সূক্ষ্ম সংঘাত প্রশ্নকর্তা ঃ আপনার একটা উপদেশ আছে, ‘সংঘাত পরিহার’। যদি এই উপদেশ কেউ সম্পূর্ণ আন্তরিকতার সাথে পালন করে তাহলে তার মুক্তি হবে। সংঘাত পরিহারের স্থূলতম (gross) থেকে সূক্ষ্মতম (subtle) স্তরে উত্তরন দয়া করে বুঝিয়ে দিন।
দাদাশ্রী ঃ কেউ যখন সংঘাত পরিহার করার সংকল্পকে পালন করে উন্নতি করে তখন তার স্বতঃলব্ধ জ্ঞান (intuition) বাড়তে থাকে। তাকে কারাের কিছু দেখানাের প্রয়ােজন হয় না। তার শিক্ষা স্বঃস্ফূর্ত হয়। এই কথাগুলি এমনই যে তারা আপনাকে মােক্ষ-এ নিয়ে যাবে।
অন্য একটি সূত্র হল, ‘যে ভুগছে তার ভুল’ যা সবাইকে মুক্তি দিতে সমক্ষ। আমার প্রত্যেকটা শব্দই আপনাকে মুক্ত করবে। এটা আমার গ্যারান্টি (guarantee)।
[ ২৬ ]
Page #30
--------------------------------------------------------------------------
________________
প্রশ্নকর্তা ঃ আপনি আমাদের স্থূল সংঘর্ষের ঘটনার উদাহরন দিয়েছেন যেমন দেওয়াল। কিন্তু যে সমস্ত সংঘাত সূক্ষ্ম, সূক্ষ্মতর এবং সূক্ষ্মতম স্তরে হয় তারা কি? দয়া করে উদাহরন দিয়ে বুঝিয়ে দিন। সূক্ষ্ম সংঘাত কি?
দাদাশ্রী ? আপনার পিতার সাথে আপনার যে সংঘাত হয় তা সব-ই সূক্ষ্ম সংঘাত।
| প্রশ্নকর্তা ও সূক্ষ্ম সংঘাত কি মানসিক সংঘাত? মৌখিক সংঘাত-ও কি সূক্ষ্ম সংঘাতের মধ্যেই পড়ে?
দাদাশ্রী ঃ এরা স্থূল সংঘাতের মধ্যে পড়ে কারণ অন্যরা এর সম্বন্ধে জানতে পারে। যে সংঘাত অন্য কেউ দেখতে পায় না বা বুঝতে পারে না তা সূক্ষ্ম সংঘাত।
প্রশ্নকর্তা ও সূক্ষ্ম সংঘাত আমরা কি করে বর্জন করতে পারি ?
দাদাশ্রীঃ প্রথমে স্থল-এর সমাধান করুন তারপর সূক্ষ্ম, সুক্ষ্মতর এবং সবশেষে সূক্ষ্মতম-এর করবেন।
প্রশ্নকর্তা ও সূক্ষ্মতর সংঘাত কাকে বলে ?
দাদাশ্রীঃ যদি আপনি কারাের দ্বারা প্রহৃত হন এবং সেই সময় আপনার এই জাগৃতি আছে যে কোন ব্যক্তি আপনাকে প্রহার করছে না, ব্যবস্থিত কর্তা এবং আপনি শুদ্ধাত্মা কিন্তু এই জাগৃতি থাকা সত্ত্বেও আপনি যদি ওই ব্যক্তির সামান্যতম দোষ-ও দেখেন তাহলে সেটা সূক্ষ্মতর সংঘাতের উদাহরন।
প্রশ্নকর্তা ঃ দয়া করে আর একবার বুঝিয়ে দিন-এটা বুঝতে পারলাম না।
দাদাশ্রীঃ অন্যের মধ্যে যে সমস্ত দোষ আপনি দেখেন তা সব-ই সূক্ষ্মতর সংঘাতের আকার।
প্রশ্নকর্তা ও তার মানে অন্যের দোষ দেখা-ই সূক্ষ্মতর সংঘাত ?
দাদাশ্রী ঃ না, আপনি একবার যখন জ্ঞানের মাধ্যমে নিশ্চয় করেছেন যে অন্যরা নির্দোষ কিন্তু তবুও আপনি অন্যদের দোষারােপ করছেন তাকেই সুক্ষ্মতর সংঘাত বলে। তার কারণ অন্য ব্যক্তিও শুদ্ধাত্মা এবং তার সমস্ত দোষ থেকে সে পৃথক।
[ ২৭ ]
Page #31
--------------------------------------------------------------------------
________________
প্রশ্নকর্তা ঃ এটা কি মানসিক সংঘাত নয় ?
দাদাশ্রী ঃ সমস্ত মানসিক সংঘাত সূক্ষ্ম সংঘাতের মধ্যে পড়ে। প্রশ্নকর্তা ঃ তাহলে সূক্ষ্ম আর সূক্ষ্মতর সংঘাদের মধ্যে পার্থক্য কোথায় ? দাদাশ্রী ঃ সমস্ত সূক্ষ্মতর সংঘাত মনের স্তরের উপরে সংঘটিত হয়। প্রশ্নকর্তা ঃ তাহলে সূক্ষ্ম সংঘাতের সাথে কি সূক্ষ্মতর সংঘাত-এ থাকে? দাদাশ্রী ঃ সেটা জানার প্রয়োজন নেই। কেবলমাত্র জেনে রাখুন যে সূক্ষ্ম আলাদা আর সূক্ষ্মতর আলাদা। সূক্ষ্মতম হল একেবারে সর্বশেষ স্তর।
প্রশ্নকর্তা ঃ একবার আপনি সৎসঙ্গে বলেছিলেন যে যদি আমরা ‘চন্দুলাল’ (শরীরকে দেওয়া নাম)-এর সাথে তন্ময়াকার হয়ে যাই তাহলে সেটাই সূক্ষ্মতম সংঘাত।
প্রশ্নকর্তা ঃ হ্যাঁ, সূক্ষ্মতম সংঘাত। এইগুলির লোপ করতে হবে। অসতর্কভাবে আপনি একাত্ম হয়ে যান এবং পরে বুঝতে পারেন যে আপনি ভুল করেছেন। প্রশ্নকর্তা ঃ তার মানে সংঘাত এড়াতে প্রতিক্রমণ কি একমাত্র উপায়, না কি আর অন্য কিছু আছে?
দাদাশ্রী ঃ আর অন্য কোন অস্ত্র নেই। এই নয় কলম (দাদার ন’টি অমূল্য রত্ন) যা আমি আপনাকে দিয়েছি, তা সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিক্রমণ। আর কোন অস্ত্র নেই। এই জগতে প্রতিক্রমণ ছাড়া অন্য কোন হাতিয়ার নেই। এটাই চরম হাতিয়ার। এই জগৎ উদ্ভূত হয়েছে অতিক্রমণ (আক্রমণ) থেকে। তাই প্রতিক্রমণ-ই এর প্রতিষেধক।
প্রশ্নকর্তা : এটা বিস্ময়কর। আপনার সমস্ত উপদেশ : ‘যা ঘটছে তা ন্যায়’, ‘ভুল তার যে ভুগছে....ইত্যাদি অসাধারন এবং অলৌকিক। আর যখন আমরা দাদাকে সাক্ষী রেখে প্রতিক্রমণ করি তখন তার স্পন্দন অন্য ব্যক্তির কাছে সত্যিই পৌঁছায়।
দাদাশ্রী ঃ হ্যাঁ, তা ঠিক। স্পন্দন তৎক্ষণাৎ-ই তার কাছে পৌঁছে যায় এবং তা ফলপ্রসূ। তারা অভূতপূর্ব ফল দেয়। আমরা নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারি যে অন্য ব্যক্তির উপর এর প্রভাব পড়েছে।
প্রশ্নকর্তা ঃ কিন্তু দাদা, প্রতিক্রমণ তৎক্ষণাৎ হয়, সেই মুহূর্তে। এটা সত্যিই বিস্ময়কর দাদা! দাদার কৃপা অদ্ভূত!
দাদাশ্রী ঃ হ্যাঁ, এটা বিস্ময়কর। মোটের উপর এটা তো বৈজ্ঞানিক বস্তু । জয় সৎ চিৎ আনন্দ
[ ২৮ ]
Page #32
--------------------------------------------------------------------------
________________
দাদা ভগবান ফাউন্ডেশন দ্বারা প্রকাশিত হিন্দী পুস্তকসমূহ
oy
১. জ্ঞানীপুরুষ কি পহেচান ২. সর্ব দুঃখে সে মুক্তি।
কর্ম কে সিদ্ধান্ত
আত্মবােধ ৫. ম্যাঁয় কৌন ?
বর্তমান তীর্থঙ্কর শ্রী সীমন্ধর স্বামী ৭. ভুগতে উসি কি ভুল । ৮. অ্যাডজাস্ট এভরিহােয়্যার ৯. টকরাও টালিয়ে।
হুয়া সাে ন্যায়। ১১. চিন্তা ১২. ক্রোধ ১৩. প্রতিক্ৰমণ ১৪. দাদা ভগবান কৌন? ১৫. প্যয়সে কা ব্যবহার ১৬. অন্তঃকরণ কা স্বরূপ ১৭. জগৎ কর্তা কৌন ? ১৮. ত্রিমন্ত্র ১৯. ভাবনা সে সুধরে জন্মেজন্ম ২০. মাতা-পিতা ঐর বৰ্চ্চো কা ব্যবহার ২১. প্রেম। ২২. সমঝ সে প্রাপ্ত ব্রহ্মচর্য (সংক্ষিপ্ত) ২৩. দান
২.৪ মানব ধর্ম ২.৫ সেবা-পরােপকার ২.৬ মৃত্যু সময়, পহেলে ঔর পশ্চাৎ ২.৭ নিজদোষ দর্শন সে..নির্দোষ ২.৮ পতি-পত্নী কা দিব্য ব্যবহার ২.৯ ক্লেশ রহিত জীবন ৩০. গুরু-শিষ্য। ৩১. অহিংসা ৩২. সত্য-অসত্য কে রহস্য ৩৩. চমৎকার। ৩৪. পাপ-পুণ্য ৩৫. বাণী, ব্যবহার মে... ৩৬. কর্ম কে বিজ্ঞান
আপ্তবাণী ১ ৩৮. আপ্তবাণী ২ ৩৯. আপ্তবাণী ৩
আপ্তবাণী ৪ ৪১. আপ্তবাণী ৫ ৪২. আপ্তবাণী ৬ ৪৩. আপ্তবাণী ৭ ৪৪. আপ্তবাণী ৮ ৪৫. আপ্তবাণী ১৩ (পুর্বার্ধ) ৪৬. সমঝ সে প্রাপ্ত ব্রহ্মচর্য (পুর্বার্ধ) ৪৭. সমঝ সে প্রাপ্ত ব্রহ্মচর্য (উত্তরা)
দাদা ভগবান ফাউন্ডেশন দ্বারা গুজরাতী ভাষাতেও ৫৫টি পুস্তক প্রকাশিত হয়েছে। ওয়েবসাইট
www.dadabhagwan.org থেকেও এই সমস্ত পুস্তক প্রাপ্ত করা যায়। * দাদা ভগবান ফাউন্ডেশন দ্বারা “দাদাবানী” মাসিক পত্রিকা হিন্দী, গুজরাতী এবং ইংরাজী ভাষায়
প্রকাশিত হয়।
Page #33
--------------------------------------------------------------------------
________________
oooo
সম্পর্ক সূত্র
দাদা ভগবান পরিবার অডালজ ও ত্রিমন্দির, সীমন্ধর সিটী, অহমদাবাদ - কলােল হাইওয়ে, পােঃ
অডালজ, জিলা - গাঁধীনগর, গুজরাত -382421 ফোন ঃ (079)
39830100, e-mail : info@dadabhagwan.org রাজকোট ও ত্রিমন্দির, অহমদাবাদ - রাজকোট হাইওয়ে, তরঘড়িয়া চৌকড়ী,
পােঃ মালিয়াসন, জিলা - রাজকোট, ফোন ঃ 9924343478 | ত্রিমন্দির, হিল গার্ডেন-এর পিছনে, এয়ারপাের্ট রােড, ফোন ঃ -
(02832) 290123. মােরবী ত্রিমন্দির, মােরবী - নলখী হাইওয়ে, পােঃ জেপুর, তালুকা
মােরবী, জিলা - রাজকোট, ফোন ঃ (02822) 297097 সুরেন্দ্রনগর । | ত্রিমন্দির, সুরেন্দ্রনগর – রাজকোট হাইওয়ে, লােকবিদ্যালয়-এর
নিকট, মুলী রােড, ফোন ঃ 9737048322 অমরেলী । ত্রিমন্দির, লীলীয়া বাইপাস চৌকড়ী, খারাবাড়ী, ফোন ঃ
9924344460 গােধরা ঃ ত্রিমন্দির, ভামেয়া গাঁও, এফ সি আই গােডাউন-এর সামনে, গােধরা
জিা-পঞ্চমহাল, ফোন ঃ (02672) 262300.. আহমদাবাদঃ দাদা দর্শন, ৫, মমতাপার্ক সােসাইটি, নবগুজরাত কলেজের পিছনে,
উসমানপুরা, আহমদাবাদ -380014 ফোন ঃ (079) 27540408 বড়ােদরা দাদা মন্দির, ১৭ মামা-কি-পােল মুহল্লা, রাওপুরা থানার সামনে,
সলাটবাড়া, বড়ােদরা, ফোন ঃ 9924343335 মুম্বাই ? 9323528901
দিল্লী।
9810098564 কোলকাতা ঃ 9830093230
চেন্নাই
9380159957 জয়পুর : 9351408285
ভােপাল ঃ 9425024405 ইন্দৌর : 9039936173
| জব্বলপুর ঃ 9425160428 রায়পুর ঃ 9329644433
ভিলাই : 9827481336 পাটনা ও 7352723132
অমরাবতী : 9422915064 বেঙ্গলুর : 9590979099
হায়দ্রাবাদ : 9989877786 পুনে ? 9422660497
জলন্ধর : 9814063043
oo oo oo oo oo oo oo oo |
oo oo oo oo oo oo oo oo
Australia
:
+61 421127947
U.S.A. : DBVI Tel. : +1 877-505-DADA (3232),
Email : info@us.dsdabhagwan.org U.K. : +44 330-111-DADA (3232)
New Zealand : Singapore :
+64 21 0376434 +65 81129229
Kenya : +254 722 722 063
UAE : +971 557316937
www.dadabhagwan.org
Page #34
--------------------------------------------------------------------------
________________ সংঘাত পরিহার যেমন এই রাস্তা দিয়ে আমি সাবধানতাপূর্বক চলি, তার পরে সামনের জন যদি আমাকে ধাক্কা মেরে যায় আর ক্ষতি করে তাে সেটা আলাদা কথা। কিন্তু আমার ক্ষতি করার মানসিকতা না হওয়া চাই। আমি ওর ক্ষতি করতে চাইলে আমার নিজেরই ক্ষতি হবে। অর্থাৎ, প্রত্যেক সংঘাতে সবসময় দু-পক্ষেরই ক্ষতি হয়। তুমি সামনের জনকে দুঃখ দিলে সেই ক্ষণেই “অন দ্য মােমেন্ট’ একই রকম দুঃখ পাওয়ার থেকে তুমি বাঁচতে পারবে না! এটাই সংঘাত।। সেইজন্য আমি এই উদাহরণ দিচ্ছি যে রাস্তায় যানবাহন ব্যবহারের রীতি এইরকম যে সংঘর্ষ ঘটলে তুমি মরেও যেতে পার। সংঘাতের বিপদ আছে। সেইজন্যে কারাের সাথে সংঘাতে যাবে না। একইভাবে সমস্ত ব্যবহারিক কাজেও সংঘাতে জড়াবে না। সংঘাত পরিহার কর। -দাদাশ্রী ISBN 9859105 444; 04 Printed in India dadabhagwan.org Price 10