________________
সম্পাদকীয়
‘সংঘাত পরিহার করুন।' কেবলমাত্র যদি এই সূত্রটা কেউ নিজের জীবনে আত্মস্থ করতে পারে তাহলে তার প্রতিদিনের জীবন সুন্দর হয়ে উঠবে। মোক্ষ নিজে তার সামনে উপস্থিত হবে। এতে কোন সংশয় নেই।
হাজার হাজার লোক অক্রমবিজ্ঞানী পূজ্য দাদাশ্রী-র এই মৌলিক উপদেশ পালন করে মুক্তির স্বাদ অনুভব করেছেন। তাঁদের জীবন শান্তি এবং আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে এবং তাঁরা মুক্তিপথের তীর্থযাত্রী হয়েছেন। এইরকম স্থিতিতে পৌঁছতে গেলে যে কোনভাবে সংঘাত এড়ানোর দৃঢ় সংকল্প করতে হবে। ‘বিপক্ষ যত নাছোড়বান্দা-ই হোক না কেন আমি কিছুতেই তার সাথে সংঘাতে যাব না’-এটাই দৃঢ় সঙ্কল্প। কোন ব্যক্তি যদি শুধু এইটুকুই সঙ্কল্প করে তাহলে তার মধ্যে প্রাকৃতিকরূপে একটা স্বতঃস্ফূর্ত সংঘাত এড়ানোর দিশা আসবে।
যদি আপনি রাতের অন্ধকারে ঘর থেকে বার হতে গিয়ে কোন দেওয়ালে ধাক্কা খান তখন কি আপনি দেওয়ালকে লাথি মেরে চিৎকার করবেন, ‘আমার রাস্তায় কেন এসেছো? দূর হও! এটা আমার বাড়ি!' না, তার পরিবর্তে আপনি হাতড়ে হাতড়ে বাইরে বেরনোর রাস্তা খুঁজে বেরিয়ে যাবেন। কারণ আপনি যদি দেওয়ালের সাথে সংঘাতে লিপ্ত হন তাহলে নিজেরই মাথা ফেটে যাবে সে বোধ আছে।
একজন রাজাকেও সংকীর্ণ রাস্তায় উন্মত্ত ষাঁড়কে পথ ছেড়ে দিতে হয়। তিনি কি ষাঁড়কে বলতে পারেন, ‘আমার রাস্তা থেকে সরে যা, এ আমার রাজ্য, আমার রাস্তা, আমি রাজা’? তাহলে তো ষাঁড় বলবে, ‘তুই রাজা তো আমি মহারাজা! চলে আয়!' এরকম পরিস্থিতিতে রাজার রাজাকেও পথ ছেড়ে দিতে হয় কারণ ষাঁড়ের সাথে সংঘর্ষে আহত না হওয়াটাই তাঁর লক্ষ্য।
এই সহজ উদাহরণগুলো দেওয়া হল যাতে আপনি বুঝতে পারেন যে সমস্ত ব্যক্তি আপনার সাথে সংঘাতে লিপ্ত হতে চাইছেন তারা এই দেওয়াল বা ষাঁড়ের-ই মত। তাই আপনি যদি সংঘাত এড়াতে চান তো বুদ্ধিমানের মত রাস্তা থেকে সরে যান। জীবনের সমস্ত পরিস্থিতি-তে সংঘাত পরিহার করুন । কারণ সংঘাত রহিত জীবন-ই ক্লেশরহিত জীবন, মোক্ষপ্রাপ্তির উপায় । জয় সচ্চিদানন্দ।
-ডঃ নীরুবেন অমিন