Book Title: The Practice Of Humanity Bengali
Author(s): Dada Bhagwan
Publisher: Dada Bhagwan Aradhana Trust
Catalog link: https://jainqq.org/explore/034335/1

JAIN EDUCATION INTERNATIONAL FOR PRIVATE AND PERSONAL USE ONLY
Page #1 -------------------------------------------------------------------------- ________________ | দাদা ভগবান কথিত । | মানব ধর্ম। Bengali আমার নিজের যে সমস্ত কারণে দুঃখ হয় , সেই সব কারণে আমি যেন কাউকে দুঃখ না দিই। Page #2 -------------------------------------------------------------------------- ________________ দাদা ভগবান কথিত মানব ধর্ম সংকলন : ডাঃ নীরুবেন অমিন অনুবাদ : মহাত্মাগণ Page #3 -------------------------------------------------------------------------- ________________ প্রকাশক : শ্রী অজিত সি. প্যাটেল দাদা ভগবান আরাধনা ট্রাস্ট দাদা দর্শন, ৫, মমতাপার্ক সােসাইটি, নবগুজরাট কলেজের পিছনে উসমানপুরা, আহমেদাবাদ – ৩৮০০১৪ ফোন : (০৭৯) ৩৯৮৩০১০০ E-mail : info@dadabhagwan.org কপিরাইট : All Rights reserved - Deepakbhai Desai Trimandir, Simandhar City, Ahmedabad-Kalol Highway, Adalaj, Dist: Gandhinagar-382421, Gujarat, India. No part of this book may be used or reproduced in any manner whatsoever without written permission from the holder of this copyrights. ভাবমূল্য : ‘পরম বিনয় আর ‘আমি কিছু জানি না এই জাগৃতি দ্রব্যমূল্য : ১৫ টাকা প্রথম মুদ্রণ : 1, November 2014 মুদ্রণ সংখ্যা : ১০০০ মুদ্ৰক : B-99, Electronics G.I.D.C K-6 Road, Sector 25 Gandhinagar - 382044 E-mail : info@ambaoffset.com Website : www.ambaoffset.com ফোন : (০৭৯) ৩৯৮৩০৩৪১/ ৪২ Page #4 -------------------------------------------------------------------------- ________________ 20. ত্ৰি-মন্ত্ৰ নমো অরিহন্তানম্ নমো সিদ্ধান নমো আয়রিয়ানম্ নমো উবজ্জ্বায়ানম্ নমো লোয়ে সব্বসাহুনম্ এ্যায়সো পঞ্চ নমুক্কারো ; সব পাপনাশনো মঙ্গলানম চ সব্বেসিম্ ; পঢ়মম্ হবই মঙ্গলম্ ১ ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায় ২ ওঁ নমঃ শিবায় ৩ জয় সচ্চিদানন্দ Page #5 -------------------------------------------------------------------------- ________________ আত্মজ্ঞান প্রাপ্তির প্রত্যক্ষ লিঙ্ক ‘আমি তাে কিছু লােককে নিজের হাতে সিদ্ধি প্রদান করে যাব। তারপরে অনুগামীর প্রয়ােজন আছে না নেই ? পরের লােকেদের রাস্তার প্রয়ােজন আছে কি না ? – দাদাশ্রী পরমপূজ্য দাদাশ্রী গ্রাম-শহরে দেশ-বিদেশে পরিভ্রমণ করে মুমুক্ষুজনেদের সৎসঙ্গ আর আত্মজ্ঞান প্রাপ্তি করাতেন। দাদাশ্রী তাঁর জীবদ্দশাতেই পূজ্য ডাঃ নীরুবেহন অমিন (নীরুমা) -কে আত্মজ্ঞান প্রাপ্ত করানাের জ্ঞানসিদ্ধি প্রদান করেছিলেন। দাদাশ্রীর দেহত্যাগের পর নীরুমা একইভাবে মুমুক্ষুজনেদের সৎসঙ্গ আর আত্মজ্ঞান প্রাপ্তি নিমিত্তভাবে করাতেন। দাদাশ্রী পূজ্য দীপকভাই দেসাইকে সৎসঙ্গ করার সিদ্ধি প্রদান করেছিলেন। নীরুমার উপস্থিতিতেই তাঁর আশীর্বাদে পূজ্য দীপকভাই দেশ-বিদেশে অনেক জায়গায় গিয়ে মুমুক্ষুদের আত্মজ্ঞান করাতেন যা নীরুমা-র দেহবিলয়ের পর আজও চলছে। এই আত্মজ্ঞান প্রাপ্তির পর হাজার হাজার মুমুক্ষু সংসারে থেকে, সমস্ত দায়িত্ব পালন করেও আত্মরমণতার অনুভব নিয়ে থাকেন। পুস্তকে মুদ্রিত বাণী মােক্ষলাভাথীর পথপ্রদর্শক হিসাবে অত্যন্ত উপযােগী প্রমাণিত হবে, কিন্তু মােক্ষলাভ -এর জন্য আত্মজ্ঞান প্রাপ্ত হওয়া অপরিহার্য। অক্রম মার্গের দ্বারা আত্মজ্ঞান প্রাপ্তির পথ আজও উন্মুক্ত আছে। যেমন প্রজ্বলিত প্রদীপই শুধু পারে অন্য প্রদীপকে প্রজ্বলিত করতে, তেমনই প্রত্যক্ষ আত্মজ্ঞানীর কাছে আত্মজ্ঞান লাভ করলে তবেই নিজের আত্মা জাগৃত হতে পারে। Page #6 -------------------------------------------------------------------------- ________________ নিবেদন আত্মবিজ্ঞানীশ্রীঅম্বালাল মূলজীভাই প্যাটেল যাঁকে লােকে ‘দাদা ভগবান’ নামেও জানে তার শ্রীমুখ থেকে অধ্যাত্ম এবং ব্যবহার জ্ঞান সম্বন্ধীয় যে সমস্ত বাণী নির্গত হয়েছিল তা রেকর্ড করে সংকলন এবং সম্পাদনা করে পুস্তকরূপে প্রকাশ করা হচ্ছে। দাদাশ্রী যা কিছু বলেছিলেন, তা চরােতরী গ্রামীণ গুজরাতী ভাষায় বলেছিলেন। তাকে বাংলাভাষী মঙ্গলাকাঙ্ক্ষীদের কাছে পৌঁছানাের এটা যথাসম্ভব যথাশক্তি নৈমিত্তিক প্রয়াসমাত্র। | এই পুস্তকে মানব ধর্ম-এর সঠিক পরিভাষা দেওয়া হয়েছে। তার সাথে (জীবের) চার গতি আর তার থেকেও আগে মােক্ষ কিভাবে পাওয়া যায়, তার সুন্দর বর্ণনা পরমপূজ্যদাদাশ্রী দিয়েছেন। লােকেরা যাকে মানবধর্ম বলে মানে আর বাস্তবিক মানবধর্ম কি, তা যথার্থরূপে বােঝানাে হয়েছে। | “জ্ঞানী পুরুষ”-এর যে শব্দ তা ভাষার দৃষ্টিতে সহজ-সরল, কিন্তু “জ্ঞানীপুরুষ”-এর দৃষ্টি নিরাবৃত থাকে, সেইজন্যে ওনার প্রত্যেকটি শব্দ আশয়পূর্ণ (উদ্দেশ্যপূর্ণ), মর্মস্পশী, মৌলিক আর যার উদ্দেশ্যে বলা হচ্ছে। তার ভিউপয়েন্ট (দৃষ্টিভঙ্গী) যথার্থরূপে বুঝে নির্গত হয়। সেইজন্যে তা শ্রোতার দর্শনকে সুস্পষ্ট করে এবং আরও উচ্চতায় নিয়ে যায়। জ্ঞানীর বাণীকে বাংলা ভাষায় যথার্থরূপে অনুবাদ করার প্রযত্ন করা হয়েছে কিন্তু দাদাশ্রীর আত্মজ্ঞান -এর সঠিক আধার, যেমনকার তেমন, আপনি গুজরাতী ভাষাতেই অবগত হতে পারবেন। যাঁকে জ্ঞানের গভীরে যেতে হবে, তিনি এই উদ্দেশ্যে গুজরাতী ভাষা শিখে নিন, এই আমাদের অনুরােধ। | এই পুস্তকের কয়েকটি স্থানে বন্ধনীতে দেওয়া শব্দ বা বাক্য পরমপূজ্য দাদাশ্রী দ্বারা কথিত বাক্য অধিক স্পষ্টতাপূর্বক বােঝানাের জন্য লেখা হয়েছে। অন্য কয়েকটি স্থানে ইংরেজী শব্দের বাংলা অর্থ দেওয়া হয়েছে। দাদাশ্রীর শ্রীমুখ থেকে নির্গত কিছু গুজরাতী শব্দ যেমনকার তেমনই রাখা হয়েছে কারণ এই সমস্ত শব্দের এমন কোন বাংলা প্রতিশব্দ নেই, যা তার সম্পূর্ণ অর্থ বােঝাতে পারে। তা সত্ত্বেও এই সকল শব্দের সমার্থক শব্দ অর্থরূপে দেওয়া হয়েছে। অনুবাদ সম্পর্কিত ভুল-ত্রুটির জন্য আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। Page #7 -------------------------------------------------------------------------- ________________ সম্পাদকীয় মনুষ্য জীবন যাপন তাে সবাই করছে। জন্মালাে, পড়াশুনাে করলাে, চাকরি করলাে, বিবাহ করলাে, পিতা হলাে, পিতামহ হলাে আর তারপরে মৃত্যু এলাে। জীবনের পরিণতিকি এটাই ? এইরকম জীবনযাপনের অর্থ কি ? কেন জন্মনিতে হয় ? জীবনে কি প্রাপ্ত করতে হয় ? মনুষ্যদেহ প্রাপ্তি হয়েছে, সেইজন্যে নিজে মানব-ধর্ম পালন করা উচিত। জীবন ধন্য হল তখনই বলা যায় যখন মানবতা পূর্ণ থাকে। মানবতার পরিভাষা নিজেকেই তৈরী করতে হয়। যদি কেউ আমাকে দুঃখ দেয় তাহলে আমার ভাল লাগে না। সেইজন্য আমারও কাউকে দুঃখ দেওয়া উচিৎ নয়। এই সিদ্ধান্ত জীবনের প্রত্যেক ব্যবহারে যার ফিট (ক্রিয়াকারী) হয়ে গেছে, তার মধ্যে সম্পূর্ণ মানবতা এসে গেছে। | মনুষ্যজন্ম তাে চার গতির জংশন (কেন্দ্রস্থল)। এখান থেকে চার গতিতে যাওয়ার অনুমতি আছে। কিন্তু যেরকম কারণ (কর্ম) করা হয়, সেইরকম গতিতে যেতে হয়। মানবধর্মে থাকলে আবার মনুষ্যজন্ম হবে। আর মানবধর্ম থেকে বিচ্যুত হলে জানােয়ার গতি পাবে। মানবধর্মের চেয়েও উঁচু সুপার হিউম্যান (দৈবীগুণ সম্পন্ন মানুষ) –এর ধর্ম পালন করলে আর সারা জীবন পরােপকারে ব্যতীত করলে দেবগতিতে জন্ম হয়। আর যদি মনুষ্য জীবনে আত্মজ্ঞানীর কাছে আত্মধর্ম প্রাপ্ত করা যায় তাে অন্তে মােক্ষগতি-পরমপদ প্রাপ্ত করা যায়।। পরমপূজ্য দাদাশ্রী তাে মানুষ নিজের মানবধর্মতে প্রগতি করতে পারে এরকম সুন্দরবােধ সৎসঙ্গের মাধ্যমে প্রাপ্ত করিয়েছেন। এই সমস্তই এই প্রস্তুত সংকলনে অঙ্কিত হয়েছে। এই বােধ আজকের শিশু এবং যুবাদের কাছে যদি পৌঁছায় তাে জীবনের প্রারম্ভ থেকেই মানবধর্মে এসে এই মনুষ্যজন্মকে সার্থক করে তুলে ধন্য হয়ে যাবে এই প্রার্থনা। – ডাঃ নীরুবেহন অমিন Page #8 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানবধর্ম মানবতার ধ্যেয় প্রশ্নকর্তা: মনুষ্য জীবনের ধ্যেয় কি ? দাদাশী: মানবতায় পঞ্চাশ প্রতি শত নম্বর পাওয়া। যা মানবধর্মতার অন্ততঃ পঞ্চাশ প্রতি শতনম্বর পাওয়া – এটাই মনুষ্য জীবনের ধ্যেয়। আর যদি উচ্চ ধ্যেয় রাখতে হয় তাহলে অন্ততঃনব্বই প্রতিশত নম্বর আসা চাই। মানবতার গুণ থাকা উচিৎ নয় কি ? যদি মানবতাই না থাকে তাে মনুষ্য জীবনের ধ্যেয়ই কোথায় রইলাে ? | এ তাে ‘লাইফ’ (জীবন) সমস্ত ‘ফ্র্যাকচর’ (ভঙ্গ) হয়ে গেছে। কিসের জন্য বাঁচা তারও কোন বােধ নেই। মনুষ্যসার কি ? যে গতিতে যেতে চায় সেই গতি লাভ করে আর যদি মােক্ষ-এ যেতে চায় তাে মােক্ষ লাভ করে। | এ সন্ত সমাগম থেকে আসে। প্রশ্নকর্তা : মানবের যা ধ্যেয় তা প্রাপ্ত করার জন্য এখন কি করা অনিবার্য এবং কত সময় পৰ্য্যন্ত ? | দাদাশ্রী : মানবতার মধ্যে কি কি গুণ আসে, আর তা কেমন করে পাওয়া যায়, এই সমস্ত জানতে হবে। এমন সন্ত পুরুষ যিনি মানবতার গুণে সমৃদ্ধ, তাঁর কাছে গিয়ে তােমাকে বসতে হবে। এই সত্যিকারের মানব ধর্ম ! এখন কোন ধর্ম পালন করছাে ? প্রশ্নকর্তা: মানব ধর্ম পালন করছি। দাদাশ্রী : মানব ধর্ম কাকে বলে ? প্রশ্নকর্তা: ব্যাস্, শান্তি ! দাদাশ্রী : না, শান্তি তাে মানব ধর্ম পালন করলে তার ফলস্বরূপ। আসে। কিন্তু মানব ধর্ম অর্থাৎ তুমি কি পালন করছাে ? Page #9 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম প্রশ্নকর্তা:পালন করার কিছু নেই। কোন সম্প্রদায় না রাখা, ব্যাস। জাতিভেদ না রাখা – এই মানব ধর্ম। দাদাশ্রী : না, ওটা মানব ধর্ম নয়। প্রশ্নকর্তা : তাহলে মানব ধর্ম কি ? দাদাশ্রী : মানব ধর্ম কি ? সে সম্পর্কে অল্প বিস্তর বলছি। পুরাে বলতে গেলে তাে অনেক বড় হবে কিন্তু সামান্য কিছু বলছি। সংক্ষেপে তাে কোন মানুষের আমার নিমিত্তে দুঃখ না হয়। অন্যান্য পশুর কথা তাে ছেড়েই দিলাম কিন্তু কেবলমাত্র মানুষকেই সামলে চলাে কি এর যেন আমার নিমিত্তে কোন দুঃখ না হয় – এটাই মানব ধর্ম। নয়তাে বাস্তবিক মানবধর্ম কাকে বলে ? যদি তুমি মালিক হও আর চাকরকে খুব বকাবকি করছাে তাে সেই সময় তােমার মনে এরকম ভাবনা আসা উচিৎ যে আমি চাকর হলে কি হতাে?' এটুকু বিচার এলে তুমি রীতি মেনে বলবে, খুব বেশী বলবে না। যদি তুমি কারাের ক্ষতি করছাে, তাে সেই সময় তােমার এরকম বিচার আসা উচিৎ যে আমি এর ক্ষতি করছি, কেউ আমার ক্ষতি করে তাে তাহলে কিরকম হয় ? মানব ধর্ম অর্থাৎ তােমার যা ভালাে লাগে তাই অন্যকে দেবে আর নিজের যা ভালাে লাগেনা তা অন্যকে দেবে না। তােমাকে যদি কেউ ঘুষি মারে তা ভাল লাগবেনা, তাই তুমিও অন্যকে মারবে না। কেউ তােমাকে গালাগালি করলে তােমার ভাল লাগে না, সেইজন্য তুমিও অন্যকে গালি দেবে না। মানব ধর্ম অর্থাৎ তােমার নিজের জন্য যা পছন্দ নয় তা তুমি অন্য কারাের সাথে করবে না। তােমার নিজের জন্য যা ভাল লাগে তা অন্যের জন্যে করা, এরই নাম মানব ধর্ম। এটা খেয়ালে থাকে, কি থাকে না ? কাউকে হয়রান করছাে ? না, তাহলে তাে ভালাে ! | “আমার জন্য যেন কারাের অসুবিধা না হয়” – এইটুকু যদি থাকে তাে কাজ হয়েই গেল। রাস্তায় যদি টাকা কুড়িয়ে পাও তাে .... Page #10 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম যদি কারাের পনেরাে হাজার টাকা একশাে টাকার নােটের একটা বাণ্ডিলে রাস্তায় কুড়িয়ে পেলে, তাে তােমার মনে এরকম ভাবনা আসা উচিৎ যে আমার যদি এত টাকা পড়ে যেত তাহলে আমার কি রকম দুঃখ হতাে ? তাহলে এর কত দুঃখ হচ্ছে ? সেইজন্যে তােমার কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া উচিৎ যে, “যার টাকা সে বিজ্ঞাপন দেওয়ার খরচ দিয়ে এবং প্রমাণ দিয়ে যেন নিজের টাকা নিয়ে যায়। ব্যাস্, এইভাবেই মানবতা বুঝতে হবে। কারণ তােমার যেমন দুঃখ হয় তেমনি অন্যেরও দুঃখ হয়, এটা তাে তুমি বােঝো। এইরকম বিবেচনা তােমার প্রত্যেক প্রসঙ্গে আসা উচিৎ। কিন্তু আজকাল এই মানবতা তাে বিস্মৃত হয়ে গেছে ! হারিয়ে গেছে ! এত দুঃখ তাে সেইজন্যেই। মানুষ তাে একমাত্র নিজের স্বার্থ নিয়েই পড়ে আছে। একে মানবতা বলে না। আজকাল তাে লােকে এরকম বলে যে, যা পাওয়া গেছে তা তাে নিখরচায় পাওয়া গেছে। তাহলে ভাই, তােমার যখন কিছু হারাবে, তখন সেটা যে পাবে সেও নিখরচায় পাবে! | প্রশ্নকর্তা; কিন্তু আমি যে টাকা পেয়েছি তা যদি অন্য কিছু না করে, নিজের কাছে না রেখে গরীবদের মধ্যে বিলি করে দিই তাে ? | দাদাশ্রী: না, গরীবকে নয়, খোঁজ-খবর করে বিজ্ঞাপন দিয়ে এর মালিককে পৌঁছে দেবে। তা সত্ত্বেও যদি মালিকের খোঁজ না পাওয়া যায়, বিদেশী হয় তাে তুমি এই অর্থ কোন ভাল কাজেই খরচ করবে। নিজের কাছে রাখবে না। তুমি যদি কাউকে ফেরৎ দাও তাে তােমাকেও ফেরৎ দেওয়ার। কাউকে পেয়ে যাবে। আর তুমি যদি ফিরিয়ে না দাও তাে তােমারটা কি করে ফেরৎ পাবে ? অর্থাৎ নিজের মানসিকতা বদলাতে হবে। এরকম করা যায় না; একে তাে কোন পথ-ই বলা চলে না। এতাে এতাে টাকা রােজগার করছাে, তবুও সুখী নও, এ কিরকম কথা ?! এখন ধরাে তুমি কারাের কাছে দু-হাজার টাকা ধার নিয়েছ আর Page #11 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম | ০ পরে ফেরৎ দেওয়ার সুবিধা না হয়, তখন যদি মনে এরকম ভাব আসে যে, “এখন আমি কিভাবে ওকে ফেরৎ দেব ? আমি দেব না বলে দেব।” এইরকম হলে সেই মুহূর্তে মনে বিচার আসা উচিৎ যে আমার কাছ থেকে। কেউ যদি নিয়ে যায় আর এরকম ভাবনা করে তাে আমার কি দশা হবে! অর্থাৎ তােমার মধ্যে খারাপ ভাবনার উদয় না হয় এভাবে যদি চলাে, তারই নাম মানব ধর্ম। কারাের দুঃখ না হয় এটাই সব থেকে বড় জ্ঞান। এইটুকুই সামলে চলাে। কন্দমূল খায় না অথচ মানবতা পালন করতে জানে না, তাহলে তা ব্যর্থহয়। এরকম তাে লােকেদের ঠকিয়ে ঠকিয়ে কতজন পশুযােনিতে গেছে, এখনও পর্যন্ত ফিরে আসেনি। এ তাে নীতি-নিয়মের রাজ্য ; এটা কোন অন্ধকারের রাজ্য নয়। এখানে ঠকানাে চলে না, সম্পূর্ণ ঠকানাে ! একি কোন অন্ধকার নগরী ? রাজ্যে নিয়মের রাজ চলে নাকি অন্ধকারের রাজ ? প্রশ্নকর্তা: স্বাভাবিক রাজ চলে। দাদাশ্রী : হ্যা, স্বাভাবিক রাজ চলে। না, অন্ধকারের রাজ চলে না।। ভাই, কিছু বুঝলে কি ? আমার যতটা দুঃখ হয়, সেরকম ওর-ও হয় কিনা ? এরকম বিচার এলে তা সমস্তই মানব ধর্ম। নয়তাে মানব ধর্ম কি করে বলবে ? | দেনার টাকা শােধ না করে তাে ? যদি তােমাকে কেউ দশ হাজার টাকা ধার দেয়, আর তুমি পরে শােধ করাে তাে সেই সময়ে তােমার মনে এই বিচার আসা উচিৎ যে, “আমি কাউকে ধার দিলে সে যদি শােধ না দেয় তাে আমার কত দুঃখ হবে ?!” সেইজন্য একে যত শীঘ্র সম্ভব ফিরিয়ে দিবে। নিজের কাছে রাখবে না। মানব ধর্ম মানে কি ? যে দুঃখ তােমার হয়, সে দুঃখ অন্যেরও হয়-ই। কিন্তু মানবধর্ম প্রত্যেকের আলাদা আলাদা হয়। যার যেরকম ডেভেলাপমেন্ট Page #12 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম (আন্তরিক বিকাশ) তার সেরকম মানবধর্ম হয়। মানব ধর্ম একই প্রকারের হয় না। কাউকে দুঃখ দেওয়ার সময় এরকম মনে হওয়া উচিৎ যে কেউ আমাকে দুঃখ দিলে কি হবে ? সেইজন্যে দুঃখ দেওয়া বন্ধ করে দেওয়াই মানবতা। ঘরে অতিথি এলে তখন .... কারাের ঘরে অতিথি হয়ে গেলে গৃহকর্তার কথা ভাবা উচিৎ যে আমার ঘরে পনেরাে দিন যদি কেউ অতিথি হয়ে থাকে তাে আমার কি দশা হবে ? অন্যের বােঝা হবে না। দুদিন থেকে কোন অজুহাত দেখিয়ে অন্যত্র চলে যাবে। | লােকে শুধু নিজের সুখ নিয়েই ব্যস্ত থাকে। অন্যের সুখ হলে যে আমারও সুখ, এই সমস্ত কথা বিস্মৃতির অতলে চলে যাচ্ছে। অন্যের সুখেই আমি সুখী তা ভুলে গিয়ে শুধুমাত্র নিজের সুখেই মগ্ন হয়ে আছে। আর বলছে আমি তাে চা পেয়েছি তাহলেই হল। তােমার অন্য কোন দায়িত্ব নেই। কন্দমূল খেতে হয়না –এ তােমার না জানলেও চলবে। কিন্তু এটুকুই যদি জানাে তাে অনেক। তুমি যে দুঃখ পেয়েছাে এরকম দুঃখ অন্য কেউ না পায় এভাবে থাকবে। একে মানবধর্ম বলে। এটুকু ধর্মহ যদি পালন করাে তাে অনেক হয়ে গেল। এখন এই কলিযুগে যে মানবধর্ম পালন করে তাকে মােক্ষের জন্য ছাপ দিয়ে দিতে হয় (মােক্ষের যােগ্য)। কিন্তু সত্যযুগে শুধুমাত্র মানবধর্ম পালন করলেই কাজ হতাে না। এখন তাে কম নম্বরেও পাস করিয়ে দিতে হয়। আমি কি বলতে চাইছি তা বুঝতে পেরেছাে কি ? কিসে পাপহয় আর কিসে হয়না তা বুঝে নিতে হবে। অন্যের উপরে খারাপ দৃষ্টি , সেখানে মানব ধর্ম হারালে! ফের এর চেয়ে আগে মানব ধর্ম অর্থাৎ কোন মহিলাকে দেখে আকৃষ্ট হলে সাথে সাথেই ভাবনা আসা উচিৎযে আমার বােনের উপর Page #13 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম। কেউ খারাপ দৃষ্টি দেয় তাে কি হবে ? আমার দুঃখ হবে। এরকম বিচার মনে আসলে তাকেই মানবধর্ম বলে। সেইজন্যে আমার কাউকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখা উচিৎ নয়। এরকম হয়ে গেলে পশ্চাতাপ করাে। এর জন্য সেইরকম ডেভেলপমেন্ট (আধ্যাত্মিক প্রগতি) হওয়া চাই। মানবতা মানে কি ? আমার স্ত্রীর ওপর কেউ কুদৃষ্টি দিলে তা আমার ভালাে লাগবে না, সেইজন্যে অন্যের স্ত্রীর ওপর আমারও কুদৃষ্টি | দেওয়া উচিৎ নয়। আমার মেয়ের উপর কেউ খারাপ দৃষ্টি দিলে তা আমার ভাল লাগবে না তাই আমারও অন্যের মেয়ের উপর দৃষ্টি দেওয়া উচিৎ নয়। কারণ নিজেকে এটা খেয়াল রাখতে হবে, যে আমি যদি কারাের মেয়েকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখি তাহলে কেউ আমার মেয়েকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখবেই। এটা খেয়ালে রাখতেই হবে, তাকেই মানব ধর্ম বলে। মানব ধর্ম মানে তােমার যা ভাল লাগে না তা অন্যের সাথে করবে না। নিজের যা পছন্দ নয় তা অন্যের সাথে কখনােই না করলে তারই নাম মানবধর্ম। মানবধর্ম লিমিটেড (সীমার মধ্যে)। লিমিট-এর বাইরে নয়। কিন্তু এটুকুই যদি কেউ করে তাে অনেকই হয়ে যায়। | তােমার নিজের স্ত্রীর ক্ষেত্রে ভগবান বলেছেন যে ভাই, তুমি বিয়ে করেছাে, তা জগৎ স্বীকার করেছে। তােমারশ্বশুরবাড়ির লােকজন, তােমার আত্মীয়-স্বজন, গ্রামের লােকজন সবাই স্বীকার করে নিয়েছে। সাথে নিয়ে সিনেমা দেখতে গেলে কেউ তােমার দিকে আঙুল তুলবে কি ? কিন্তু পরস্ত্রীকে নিয়ে গেলে তখন ? প্রশ্নকর্তা : আমেরিকাতে এতে কেউ আপত্তি করবে না। দাদাশ্রী : আমেরিকাতে করবে না, কিন্তু হিন্দুস্তানে তাে করবে। একথা ঠিক সেখানকার লােকেরা এটা বােঝে না, কিন্তু আমরা যে দেশে জন্মেছি, সেখানে তাে আপত্তি করবেই! এই আপত্তিকর কাজই দোষের। আমেরিকাতে এতে কোনও আপত্তি নেই, তাই সেখানে জানােয়ার গতিতে যাওয়ার ভাগ কম পাওয়া যায়। এখান থেকে তাে আশি শতাংশ মানুষ জানােয়ার গতিতে যাবে! বর্তমানের আশি শতাংশমানুষ। কারণমনুষ্যজন্ম লাভ করে এরা কি করছে ?বলা যায় নকল-এর মিশ্রণ করছে, অনধিকার Page #14 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম। ভােগ করছে, অনধিকার লুঠ করছে, অনধিকারের বিচার করছে অথবা পরস্ত্রীর প্রতি কুদৃষ্টি দিচ্ছে। নিজের স্ত্রীকে ভােগ করার অধিকার মানুষের আছে কিন্তু অনধিকারের পরস্ত্রীর প্রতি দৃষ্টি দেওয়া উচিৎ নয়। এর জন্যেও শাস্তি পেতে হবে। শুধুমাত্র খারাপ দৃষ্টির শাস্তি-ও জানােয়ার গতি। কারণ একে পাশবতা বলে; মানবতা থাকা উচিৎ। মানব ধর্ম মানে কি ? নিজের অধিকারেরটা ভােগ করা –এর নাম মানব ধর্ম। এটা তুমি স্বীকার করছাে, নাকি করছাে না ? প্রশ্নকর্তা: ঠিক আছে। দাদাশ্রী: আর অনধিকারের সম্বন্ধে ? প্রশ্নকর্তা : না, স্বীকার করা উচিৎ নয়। জানােয়ার গতিতে যাবে এর কোন প্রমাণ আছে কি ? দাদাশ্রী : হ্যা, প্রমাণ আছে। প্রমাণ ছাড়া এমনিই গল্প বলছি না। মনুষ্যত্ব কতক্ষণ থাকে ? অনধিকারের কিঞ্চিৎ মাত্রও ভােগ না করলে মনুষ্যত্ব থাকে। নিজের অধিকারেরটা খায় তাে মনুষ্য গতি পায় ; অনধিকারের খায় তাে জানােয়ার গতিতে যায়। নিজের অধিকারের (বস্তু) অন্যকে দিয়ে দিলে দেবগতি লাভ হয় আর অনধিকারেরটা মেরে ফেলে নিয়ে নিলে নরকগতি প্রাপ্ত হয়। মানবতার অর্থ। মানবতার অর্থ আমারটা আমি ভােগ করব, আর তােমারটা তুমি ভােগ করাে। যা আমার ভাগে এসেছে তা আমার আর যা তােমার ভাগে পড়েছে তা তােমার। মানবতার অর্থই অন্যের জিনিষে দৃষ্টিপাত না করা। আর পাশবতা অর্থ আমারটাও আমার আর তােমারটাও আমার। আর | দৈবীগুণ কাকে বলে ? তােমারটাও তােমার আর আমারটাও তােমার। যে পরােপকারী হয় সে নিজেরটা অন্যকে দিয়ে দেয়। এরকম দৈবীগুণ সম্পন্ন কেউ হয় কি হয় না ? এখন কি তুমি মানবতা কোথাও দেখতে পাও ? Page #15 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম প্রশ্নকর্তা: কোথাও দেখি আবার কোথাও দেখিনা। দাদাশ্রী : কোন মানুষের মধ্যে পাশবতা দেখতে পাও ? কেউ যদি শিং উঁচিয়ে আসে তাহলে কি তুমি বােঝ না যে এর স্বভাব মােষের মত, তাই শিং দিয়ে মারতে আসছে ! সেখান থেকে তােমাকে সরে আসতে হবে। এরকম মােষ (পশু প্রকৃতির মানুষ) তাে রাজাকেও ছেড়ে দেয় না। সামনে যদি রাজাও আসে তাহলেও এই মােষের ভাই হেলেদুলে চলতে থাকে। রাজাকেই সরে যেতে হয় কিন্তু এ সরে না।। | এ মানবতার থেকেও উচ্চ প্রকারের গুণ! আবার মানবতার থেকেও উপরে ‘সুপার হিউম্যান’ (অতিমানব) কাকে বলে ? তুমি দশবার তার ক্ষতি করাে তবু তােমার প্রয়ােজনের সময়ে এই মহাশয় তােমাকে সাহায্য করেন! তুমি আবার এর লােকসান করাে তবুও তােমার যখন দরকার তখন তােমাকে হেল্প করবে। সাহায্য করাই এর স্বভাব। এর থেকে তুমি বুঝতে পারবে এই ব্যক্তি “সুপার হিউম্যান।” একে দৈবীগুণ বলে। এরকম এক-আধজন মানুষই হয়। আজকাল তাে এরকম মানুষ পাওয়াই যায় না ! এরকম মানুষ লাখে একজন হয় তা প্রমাণ হয়ে গেছে! মানবতার ধর্মের বিরােধী যে কোন ধর্মের আচরণ করলে, যদি পাশবী ধর্মের আচরণ করে তাে পশুযােনি প্রাপ্ত হয়। যদি রাক্ষসী ধর্মের আচরণ করে তাে নরকগতি লাভ করে আর যে সুপার হিউম্যান-এর আচরণ করে যে দেবগতি প্রাপ্ত হয়। আমি যা বলতে চাইছি তা কি তুমি বুঝতে পারলে ? যতটুকু জানেন, ততটুকু ধর্ম শেখান! এখানে (ভারতবর্ষে) সন্ত পুরুষগণ আর জ্ঞানী পুরুষগণ জন্মগ্রহণ করেন এবং মানুষের কল্যাণ করেন। তাঁরা স্বয়ং পারে পৌঁছেছেন আর অন্যদের পারে পৌঁছাতে সাহায্য করছেন। স্বয়ং যা হয়েছেন, অন্যদেরও সেই স্তরে নিয়ে যান। যদি নিজে মানবধর্ম পালন করেন তাহলে মানব ধর্ম Page #16 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম শেখান। তারও আগে যাঁরা পৌঁছেছেন তাঁরা দৈবীধর্ম শেখান। অর্থাৎ অতিমানবের ধর্ম কি তা যাঁরা জানেন তাঁরা অতিমানবতার ধর্ম শেখান। তার মানে যিনি যে ধর্ম পালন করছেন তিনি তারই শিক্ষা দেন। আর যদি এই সমস্ত অবলম্বন থেকে মুক্তির জ্ঞান থাকে এবং মুক্ত হয়েছেন তাে মুক্তির জ্ঞান প্রদান করেন। পাশবতার ধর্ম এরকম! প্রশ্নকর্তা : সত্যিকারের ধর্ম তাে মানব ধর্ম। এখন এর মধ্যে বিশেষভাবে জানার এই যে সঠিক মানবধর্ম হল কারাের একটুও দুঃখ না হয়। এর সবথেকে সুদৃঢ় ভিত এটাই। ধন, লক্ষ্মী, সত্তা, বৈভব – এ সবের দুরুপযােগ করা উচিৎ নয়, সদুপযােগ করা উচিৎ। আমি মনে করি যে এ সমস্ত মানব ধর্মের সিদ্ধান্ত, আপনার কাছে জানতে চাইছি যে এটা ঠিক তাে ? দাদাশ্রী : সত্যিকারের মানবধর্ম এই যে কোন জীবকে কিঞ্চিৎমাত্র দুঃখ না দেওয়া। যদি কেউ দুঃখ দেয় তাে সে পাশবতা করছে, কিন্তু তুমি পাশবতা করবে না, যদি মানুষ থাকতে চাও তাে। আর মানবধর্ম যদি ভালভাবে পালন করাে তাে মােক্ষ-এ যাওয়ারও কোন বাধা নেই। মানব ধর্ম যদি কেউ বুঝতে পারে তাে অনেক হল। অন্য কোন ধর্ম বুঝতে যাওয়ার মতােই নয়। মানব ধর্ম অর্থাৎ পাশবতা রহিত ; তারই নাম মানব ধর্ম। যদি তােমাকে কেউ গালি দেয় তাে সে পাশবতা করছে। কিন্তু তুমি পাশবতা করতে পার না। তুমি মানুষ হিসাবে ব্যবহার করবে সমতা রেখে। আর জিজ্ঞাসা করবে, “ভাই আমার দোষ কোথায় ? যদি তুমি আমাকে বলাে তাে আমি দোষমুক্ত হওয়ার চেষ্টা করব।” মানব ধর্ম এরকম হওয়া উচিৎ যে তােমার দ্বারা কারাের যেন কিঞ্চিৎমাত্র দুঃখ না হয়। কেউ যদি তােমাকে দুঃখ দেয় তাে তার পাশবী ধর্ম। কিন্তু এর বদলা নিতে তুমি তার সাথে পাশবী ধর্ম পালন করতে পার না। পাশবিকতার সামনে পাশবতা করবে না, এরই নাম মানব ধর্ম। বুঝতে পারলে ? মানবধর্মে টিট ফর Page #17 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম ১০ ট্যাট (যেমন তুমি করবে, তেমনি আমি করবাে) চলবেনা। কোন মানুষ তােমাকে গালি দিল আর তুমিও উল্টে আবার তাকে গালি দিলে, কেউ তােমাকে মারল আর তুমিও তাকে বদলে মারলে তাহলে তাে পশুই হয়ে গেলে ! মানব ধর্ম কোথায় রইলাে ? অতএব ধর্ম এরকম হওয়া উচিৎ যে কেউ দুঃখ না পায়। আজকাল বলা হয় যে ইন্সন কিন্তু ইন্সানিয়াৎ (মানুষ আর মনুষ্যত্ব) তাে মুছে গেছে তাে এখন এর কি দরকার ? যে তিলে তেল নেই সেই তিল কোন কাজে লাগে ? একে তিল কিভাবে বলা যায় ? এর ইন্সানিয়াৎ তাে চলে গেছে, প্রথমে তাে ইন্সনিয়াৎ চাই। সেই জন্যে তাে সিনেমায় গান করে “কিত্সা বদল গয়া ইন্সন -----।” তাে তাহলে আর রইলাে কি ? মানুষ বদলে গেছে তাে সমস্ত পুঁজি হারিয়ে গেছে। ভাই এখন কিসের ব্যবসা করবে ? অধঃস্তনে -এর প্রতি কর্তব্য প্রশ্নকর্তা : আমার অধস্তন যারা আমার কাছে কাজ করে, সে নিজের ছেলেই হােক বা অফিসে কেউ হােক বা যে কেউ হােক, এরা নিজের কর্তব্যে ভুল করলে আমি সঠিক পরামর্শ দিই। এখন এতে ওদের দুঃখ তাে হয়। আর সে সময় বিরােধাভাস হচ্ছে এরকম মনে হয়। তাহলে সেখানে কি করবাে ? | দাদাশ্রী : তাতে অসুবিধা নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত তােমার দৃষ্টিভঙ্গী সঠিক ততক্ষণ কোন অসুবিধা নেই। এদের উপর তােমার পাশবিকতার ইচ্ছা যেন না থাকে। আর বিরােধাভাস মনে হলে ওদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবে। ভুল স্বীকার করে নেবে। মানব ধর্ম সম্পূর্ণ থাকা উচিৎ। চাকর লােকসান করলে তখন! লােকেদের মধ্যে মতভেদ কি কারণে হয় ? প্রশ্নকর্তা : স্বার্থের কারণে মতভেদ হয়। Page #18 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম ১১ দাদাশী: স্বার্থ তাে একেই বলে যখন ঝগড়া করে না। স্বার্থতে তাে সর্বদা সুখ হয়।। প্রশ্নকর্তা : আধ্যাত্মিক স্বার্থ হলে সুখ হয়, কিন্তু ভৌতিক স্বার্থ হলে তাে দুঃখই হয়। দাদাশ্রী: হঁ্যা, কিন্তু ভৌতিক স্বার্থেও সেয়ানা হয়। নিজের যে সুখ তা চলে না যায়, কম না হয়, বেড়ে যায়, এরকমই করে। এ তাে ক্লেশ করে ভৌতিক সুখ নষ্ট করে। স্ত্রীর হাত থেকে পেয়ালা পড়ে ভেঙে গিয়ে যদি কুড়ি টাকার লােকসান হয় তাহলে সাথে সাথেই মনে অশান্তি শুরু হয়ে যায় যে কুড়ি টাকা লােকসান করলাে। আরে মূখ, কোন লােকসান করেনি, এ তাে ওর হাত থেকে পড়ে গেছে। তােমার হাত থেকে পড়ে গেলে তুমি কোনন্যায় করতে ? সেই ন্যায়ই তুমি এখানে করবে। | কিন্তু সেখানে তুমি এরকম মনে করাে যে, “এ লােকসান করলাে”। একি কোন বাইরের মানুষ ? আর বাইরের মানুষ হলেও, এমনকি চাকর হলেও এরকম করা উচিৎ নয়। কেননা কোন নিয়মের অধীনে এটা পড়ে যায়, ফেলে দিয়েছে না পড়ে গেছে তার বিচার করা উচিৎ নয় কি ? চাকর কি জেনে বুঝে ফেলে দেয় ? | অতএব কি ধর্ম পালন করবে ? কেউ লােকসানকরলে কাউকে শত্রু বলে মনে হলে সে সত্যি সত্যিই তােমার শত্রু নয়। লােকসান কেউ করতে পারেই না। সেজন্য তার প্রতি দ্বেষভাব রাখবে না। সে যদি আমাদের ঘরের লােক হয় অথবা যদি চাকরের হাত থেকেও পেয়ালা পড়ে যায় তাহলেও চাকর তা ফেলে না। ফেলে দেওয়ার অন্য কেউ আছে। তাই চাকরের ওপর বেশী ক্রোধ করবে না । শান্তভাবে বলবে, “ভাই একটু আস্তে চলাফেরা করাে।” তােমার পা পুড়ে যায়নি তাে ?” এইরকম বলবে। দশ-বারােটা পেয়ালা ভেঙে যায় তাে আমাদের ভিতরে অশান্তি, ক্লেশ শুরু হয়ে যায়। যতক্ষণ অতিথিরা আছে, ততক্ষণ ক্রোধ করে না। কিন্তু ভিতরে ভিতরে অশান্তি হতে থাকে। অতিথিরা চলে গেলেই তাকে Page #19 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম ১২ একহাত নেয়। এরকম করার প্রয়ােজন নেই। এটাই সবথেকে বড় দোষ। কে করেছে তা জানে না। খালি চোখে যা দেখে, জগৎ তাে সেই নিমিত্তকেই কামড়াতে যায়। | আমি এতটুকু ছােট বাচ্চাদের বলে দেখেছি যে 'যাও, এই কাপ বাইরে ফেলে দিয়ে এসাে।' তাে এরা কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলেছে, না, এ বাইরে ফেলার নয়। কেউ লােকসান করে না। একটি বাচ্চাকে আমি বললাম, এটা দাদার বুট জুতাে, একে বাইরে ফেলে এসাে। তাে কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলে “ফেলতে হয় না”। কত্ত সুন্দর বােধ। অতএব এ কেউ ফেলে না ; চাকরও ভাঙ্গে না। এতাে মূর্খ লােকেরা চাকরকে হয়রান করে মারে। মূখ তুমি যখন চাকর হবে তখন বুঝতে পারবে। সেইজন্যে তুমি যদি এরকম করাে তাে যদি কখনও তােমার চাকর হওয়ার সময় আসে তাে তথন তুমি ভাল মনিব পাবে। | নিজেকে অন্যের জায়গায় রাখবে এর নাম মানব ধর্ম। অন্য ধর্ম তাে অধ্যাত্ম, এতাে তার চেয়ে উচ্চস্থানে আছে। কিন্তু এটুকু মানবধর্ম তাে আসা চাই। যতটুকু চরিত্রবল, ততটুকুই আচরণে ! | প্রশ্নকর্তা: কিন্তু জানা সত্ত্বেও অনেক সময়ে এটা আমার মধ্যে থাকে। , এর কারণ কি ? | দাদাশ্রী : কারণ এ জ্ঞান জানই না। সত্যিকারের জ্ঞান নেই। জ্ঞান যা আছে তা শুধুমাত্র বই থেকে জেনেছ কিন্তু কোন ‘কোয়ালিফায়েড গুরুর কাছ থেকে জাননি। কোয়ালিফায়েড (অধিকারী) গুরু মানে কি ? তিনি যা জানাবেন তা হুবহু তােমার মধ্যে এসে যাবে। আমি নিজে বিড়ি খাই আর তােমাকে উপদেশ দিই যে বিড়ি খাওয়া ছেড়ে দাও, তাে তাতে কোন কাজ হয় না। এর জন্য চরিত্রবল চাই। গুরু সম্পূর্ণ চরিত্রবল যুক্ত হলে তবে তুমি তা পালন করতে পারবে। না হলে এমনি এমনি তাে পালন Page #20 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম করতে পারবে না। | নিজের ছেলেকে তুমি বললে যে, এই শিশিতে বিষ আছে। এই দেখ, সাদা রঙের। এটাতে হাত দেবে না। তাে ছেলেটি কি জিগ্যেস করবে ? “বিষ মানে কি ?” তুমি বললে, “বিষ মানে খেলে মরে যায়।” আবার সে প্রশ্ন করে “মরে যাওয়া মানে কি ?” তুমি বললে “কাল ওনাকে বেঁধে নিয়ে যাচ্ছিল আর তুমি বলছিলে “নিয়ে যেও না, নিয়ে যেও না।” তাে মরে যাওয়া মানে নিয়ে চলে যাওয়া। তখন এ বুঝেযায়, আর ওতে হাত দেয় না। জ্ঞান বুঝে নেওয়া দরকার। একবার তােমাকে বলে দিয়েছি, “ভাই, এটা বিষ।” তারপর থেকে তােমার এ জ্ঞান হাজির থাকবে। আর যে জ্ঞান হাজির থাকে না, তা তাে জ্ঞান-ই নয়, ও তাে অজ্ঞান। এখান থেকে আমেদাবাদ যাওয়ার জ্ঞান, নকশা প্রভৃতি দিয়ে দিয়েছি। আর এর অনুসারে চলে যদি আহমেদাবাদ না আসে তাে নকশাতে ভুল আছে। সঠিক হলে আসবেই। চার গতিতে ঘােরার কারণ.... প্রশ্নকর্তা : মানুষের কর্তব্য সম্বন্ধে কিছু বলুন। দাদাশ্রী : মানুষের কর্তব্যে, যে আবার মানুষই হতে চায় তার লিমিট (সীমা) বলবাে। উপরে না যেতে চাও অথবা নীচে নানামতে চাও, উপরে দেবগতি আর নীচে জানােয়ার গতি আর তার থেকেও নীচে নরক গতি। এরকম অনেক প্রকার গতি আছে। তুমি তাে মানুষের সম্পর্কেই জানতে চাইছাে ? প্রশ্নকর্তা : যতক্ষণ দেহ আছে ততক্ষণ তাে মানুষের যা কর্তব্য তা পালন করতে হবে নয় কি ? দাদাশ্রী: মানুষের কর্তব্য পালন করেছে বলেই তাে মানুষ হয়েছে। এতে তুমি উত্তীর্ণ হয়েছে, তাে আর কিসে উত্তীর্ণ হতে হবে ? জগৎসংসার দুই প্রকার। এক তাে মানুষ হয়ে জন্মে ক্রেডিট জমা করছে। Page #21 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম ১৪ ফলে উচ্চ গতি লাভ করছে। আর ডেবিট জমা করলে নীচ গতিতে যায়। আর যে ডেবিট ক্রেডিট দুইয়ের ব্যাপারই বন্ধ করে দেয় সে মুক্তি পায়। এই পাঁচ জায়গাই খােলা আছে। চারগতি আছে। খুব ক্রেডিট থাকলে দেবগতি হয়। ক্রেডিট বেশী, ডেবিট কম হলে মনুষ্যগতি লাভ হয়। ডেবিট বেশী আর ক্রেডিট কম হলে জানােয়ার গতি ; আর সম্পূর্ণ ডেবিট হলে নরক গতি হয়। এই চার গতি আর পঞ্চম হল মােক্ষগতি। এই চার গতি মানুষ লাভ করতে পারে। আর পঞ্চম গতি শুধু হিন্দুস্থানের লােকেরাই প্রাপ্ত করতে পারে। “ম্পেশ্যালফর ইণ্ডিয়া।” (ভারতের জন্যেই বিশেষরূপে)। অন্য লােকেদের জন্য এ নয়। | এখন কাউকে মনুষ্যগতি আবার লাভ করতে হলে তাকে বড়দের, পিতা-মাতার সেবা করতে হবে। গুরুর সেবা করতে হবে। লােকেদের সাথে অবলাইজিং নেচার (পরােপকারী স্বভাব) রাখতে হবে। আর ব্যবহারে। তাে দশ দিয়ে দশ ফেরৎ নেবে। ব্যবহার এই প্রকার শুদ্ধ রাখলে অন্যের সাথে কোন লেনদেন থাকে না। এইরকম ব্যবহার করাে, সম্পূর্ণ শুদ্ধ ব্যবহার। মানবতাতে তাে কাউকে মারার সময় বা তার আগেই খেয়াল আসা উচিৎ, মানবতা থাকলে খেয়াল আসবেই যে আমাকে মারলে কি হবে ? এই খেয়াল আগে এলে তবেই মানবধর্ম টিকে থাকবে। নয়তাে থাকবে না। এটা খেয়ালে রেখে যদি সমস্ত কাজ-কর্ম করা যায় তবেই পুনরায় মানবজন্ম লাভ হয়। অন্যথা পুনরায় মনুষ্যজন্ম প্রাপ্তি বেশ কঠিন। আর এ কথা যার খেয়ালে নেই, এর পরিণাম কি হবে, তারও কোন ধারণা নেই তাকে মানুষ বলে । চোখ খােলা রেখে ঘুমালে তা অজাগৃতি, তাকে মানুষ বলে না। যারা সমস্ত দিন অনধিকারের চর্চা করে, ভেজাল দেয় তারা জানােয়ার গতি প্রাপ্ত হয়। এখানে মানুষ থেকে সােজা পশুজন্ম লাভ করে আর ভুগতে থাকে। | নিজের সুখ যারা অন্যকে দিয়ে দেয়, নিজের অধিকারের সুখ অপরকে প্রদান করে তারা সুপারহিউম্যান অর্থাৎ দেবগতিতে যায়। যে সুখ নিজের ভােগ করার ছিল, নিজের জন্যেই যে সুখ তৈরী হয়েছিল, Page #22 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম ১৫ তার নিজের সেই সুখের প্রয়ােজন থাকলেও তা যদি অন্যকে দিয়ে দেয় তাহলে সে সুপারহিউম্যান, দেবগতিতে যায়। আর যে অর্থহীন ক্ষতি করে, নিজের কোন লাভ না থাকা সত্ত্বেও অন্যের ক্ষতি করে, সে তাে নরকগতি প্রাপ্ত হয়। আর যারা নিজের প্রাপ্য নয় এমন সুখ ভােগ করে তারা নিজের লাভের জন্যে ভােগ করছে, সেইজন্যে জানােয়ার গতি লাভ করে। যারা কোন কারণ ছাড়াই, বিনা কারণে লােকের ঘর জ্বালিয়ে দেয়, লড়াই-দাঙ্গা করে বা এই ধরণের অন্য কিছু করে তারা সব নরক গতির অধিকারী। জীবহত্যা করে অথবা পুকুরে বিষ দিয়ে রাখে, বা কুয়ােতে এইরকম কিছু ঢেলে দেয় তারা সবাই নরকের অধিকারী। সব দায়িত্ব নিজেরই। এই জগতে এক-একটা চুলেরও হিসাব পুরাে করতে হয়। প্রকৃতির রাজ্যে একচুলও অন্যায় নেই। মানুষের মধ্যে কখনও অন্যায় হতে পারে কিন্তু প্রকৃতির ঘর একদম ন্যায়সঙ্গত। সেখানে কখনই অন্যায় হয়নি। সমস্ত ন্যায়েই থাকে আর যা হচ্ছে তাও ন্যায়ই হচ্ছে। এটা যদি কেউ জানে, বুঝতে পারে তারই নাম জ্ঞান। আর ঘটছে তাকে। “এটা খারাপ, ওটা খারাপ, এটা ভালাে, এরকম বললে তাকে ‘অজ্ঞান বলে। যা ঘটছে তা কারেক্ট’ (সঠিক)। অধঃস্তন এর সাথে মানব ধর্ম | নিজের উপর কেউ ক্রোধ করলে তা সহ্য হয় না অথচ সারাদিন অন্যের উপর ক্রোধ করছে। আরে ! এ কিরকম বুদ্ধি ? একে মানব ধর্ম বলে না। নিজের ওপর সামান্য ক্রোধকরলেও সহ্য করতে পারেনা; আর সেই লােক সারাদিন অন্যের উপর ক্রোধ করছে, তারা ওর অধঃস্তন বলেই কি না ? অধঃস্তনকে মারা তাে খুব বড় অপরাধ। মারতে হয় তাে উপরওয়ালাকে মারাে। ভগবানকে বা উপরওয়ালেকে, কারণ এরা উপরে আছে এবং শক্তিশালী, এদের মারাে। অধঃস্তনের তাে কোন শক্তি নেই, সেইজন্য সমস্ত জীবন মারতে থাকে। আমি তাে অধঃস্তন যত দোষই করুক Page #23 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম কেন, তবু তাদের বাঁচিয়েছি। উপরওয়ালা যত ভালােই হােকনা কেন, আমার পছন্দ নয় ; আর আমি কারাের উপরওয়ালা হবে না। যদি উপরওয়ালা ভালাে হয় তাে আমার কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু এর মানে এই নয় যে এ সর্বদা এরকমই থাকবে। কখনও আমাকে ভাল মন্দ কিছু বলে দিতে পারে। উপরওয়ালা তাকেই বলে যে অধঃস্তনকে রক্ষা করে। সেই সত্যিকারের উপরওয়ালা। আমি তাে সত্যিকারের উপরওয়ালা খুঁজছি। আমার উপরে থাকো, কিন্তু সত্যিকারের উপরওয়ালা হয়ে। ধমক খাওয়ার জন্যে আমি কিন্তু জন্ম নিইনি। তুমি আমাকে ধমকাবে, আমি কি এইজন্যে জন্ম নিয়েছি ? তুমি আমাকে কি-ই বা দিতে পারাে ? আর তােমার কাছে যে কাজ করে তাকে তুমি কখনই তিরস্কার করবে না, বিরক্ত করবে না। সবাইকে সম্মানপূর্বক রাখবে। কে জানে কার থেকে কি লাভ পাওয়া যায় ! প্রত্যেক জাতিতে মানব-ধর্ম প্রশ্নকর্তা : এই মনুষ্যগতিতে তাে চৌদ্দ লাখ যােনি, লেয়ার্স (স্তর) আছে, কিন্তু মানবজাতি হিসাবে দেখতে গেলে বায়ােলজিক্যালি তাে কারাের মধ্যে কোন পার্থক্য দেখায় না। সবাইকে একরকমই দেখায়। পরন্তু এর মধ্যে এরকমই বুঝছি যে বায়ােলজিক্যালি পার্থক্য না থাকলেও যে মানসিকতা তাতে ----- দাদাশ্রী: এতাে ডেভেলপমেন্ট (আন্তরিক বিকাশ)-এর পার্থক্য এত প্রকারেরই হয়। | প্রশ্নকর্তা : আলাদা আলাদা লেয়ার্স হওয়া সত্ত্বেও বায়ােলজিক্যালি তাে সবাই একই রকম। তাহলে এদের জন্যে কোন কমন (সবার জন্যে একরকম) ধর্ম হতে পারে কি ? দাদাশ্রী:কমন ধর্ম তাে মানব ধর্ম। নিজের বােঝার ক্ষমতা অনুযায়ী সে মানবধর্ম পালন করতে পারে। প্রত্যেকে নিজের বােঝার ক্ষমতা Page #24 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম। ১৭ অনুসারে মানবধর্ম পালন করে কিন্তু বােধপূর্বক মানবধর্ম পালন করতে পারলে তাকে উত্তমের মধ্যেও উত্তম বলে। মানবধর্ম তাে খুব উচ্চস্তরের কিন্তু মানবধর্মে আসলে তবেই না ? এখন লােকেদের মধ্যে মানবধর্ম কোথায় ? মানব ধর্ম তাে খুব সুন্দর কিন্তু তা ডেভেলাপমেন্ট অনুসারে হয়। আমেরিকানদের মানবধর্ম আলাদা, আমাদের মানবধর্ম আলাদা। প্রশ্নকর্তা: এতেও পার্থক্য থাকে দাদাজী ? কি রকম পার্থক্য হয় ? দাদাশ্রী: অনেক পার্থক্য আছে। আমাদের মমতা আর এদের মমতায় তফাৎ হয়। পিতা-মাতার প্রতি আমাদের যে মমতা তা এদের থাকে না। মমতা কম থাকায় ভাবের তফাৎ হয়। ভাব ততটাই কম হয়। প্রশ্নকর্তা : যতটা মমতা কম হয় ততটাই ভাবের পার্থক্য হয় ! দাদাশ্রী : এই অনুসারেই মানবধর্ম হয়। অর্থাৎ এদের মানবধর্ম আমাদের মত নয়। এরা তাে মানবধর্মেই থাকে। প্রায় আশি শতাংশ লােক তাে মানবধর্মেই থাকে। শুধু আমাদের লােকেরাই থাকে না। অন্য সবাই নিজেদের হিসাবে মানবধর্মেই আছে। মানবতার প্রকার, আলাদা আলাদা প্রশ্নকর্তা : এই যে মানবজাতি, সে জৈন হােক, বৈষ্ণব হােক বা খ্রিষ্টান হােক, এদের যে বােধ তা একই প্রকারের নয় কি ? দাদাশ্রী : কথা হল যে যার যেরকম ডেভেলপমেন্ট হয়েছে, তার সেরকমই বােধশক্তি হয়। জ্ঞানীর মানবতা, তিনিও তাে মানুষই! জ্ঞানীর মানবতা, অজ্ঞানীর মানবতা, পাপীর মানবতা, পুণ্যশালীর মানবতা, সবার মানবতা আলাদা। মানুষ একই প্রকারের। জ্ঞানী পুরুষের মানবতা আলাদা আর অজ্ঞানীর মানবতা আলাদা। মানবতা সবার মধ্যেই আছে। অজ্ঞানীর মধ্যেও মানবতা আছে। যে আনডেভেলপ (অবিকশিত) তারও মানবতা থাকে কিন্তু তা অন্য ধরণের Page #25 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম | ১৮ এ আনডেভেলপ আর ইনি ডেভেলপ। আর পাপীর মানবতা, অর্থাৎ সামনে যদি চোরের সাক্ষাৎ হয়, চোর আসছে আর আমি যদি সামনে পড়ে যাই তাে তার মানবতা কেমন ? বলবে, দাঁড়াও। তখন তার মানবতা কেমন তা আমি বুঝে যাব তাে ? ও বলবে, দিয়ে দাও।” আমি বলবাে, এই নাও ভাই তাড়াতাড়ি। আমার সাথে তােমার সাক্ষাৎকার হওয়াটাই তােমার পুণ্য। মুম্বাইয়ের একজন লােক এত ভীতু, সে আমাকে বলতে লাগল, “এখন ত আর ট্যাক্সিতে চড়া যাবেনা।” আমি বললাম, কি হয়েছে ভাই, এই তাে দশ হাজার ট্যাক্সি আছে, তাতে চড়া যাবে না, এমন কি হল ? সরকার কোন নিয়ম করেছে কি ?” তখন বললাে যে, “না, লুট করে নিচ্ছে। ট্যাক্সিতে মারধাের করে লুটপাট করে নিচ্ছে।” আরে মূখ, আর কতদিন এরকম পাগলামি করবে তােমরা ? লুটপাটের শিকার হওয়া, তা কি নিয়মানুসারে হয়, না কি নিয়মানুসারে হয় না ? রােজ চারজনকে লুটপাটের শিকার করে, অতএব সেই পুরস্কার তােমার ভাগ্যে জুটবে এটা তুমি জানলে কি করে ? পুরস্কার তাে প্রথম জন পায় কোন একদিন। রােজ রােজ কি কেউ পুরস্কার পায় ? | এই খ্রিষ্টানদের বােঝাতে পারবে না। তুমি যতই বলাে যে তােমরা পুনর্জন্ম বােঝ না কেন, তাও তারা বুঝবে না। এটা (এরা ভুল করছে) তুমি বলবে না, আর তা বলা মানব ধর্মের বিরুদ্ধে যায়। কিছু বললে যদি অন্যজন সামান্য একটু দুঃখও পায় তাে তা মানব ধর্মের বিরুদ্ধে হয়। তােমার একে উৎসাহ দেওয়া উচিৎ। এইভাবে ভােলে মানবধর্ম মানবধর্ম মূল বস্তু। মানব ধর্ম একরকম হয় না। কারণ মানব ধর্ম যখন আচরণে আনার কথা হয় তখন সেই আচরণ তাে একজন ইউরােপীয়ান যখন তােমার সাথে মানবধর্ম পালন করে আর তুমি যখন তার সাথেমানব Page #26 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম ধর্ম পালন করো – এই দুইয়ের মধ্যে অনেক পার্থক্য । কারণ এর পিছনে ভাবনা কি ছিল ? আর তোমার ভাবনা-ই বা কি ? কারণ তুমি ডেভেলপড় (বিকশিত)। অধ্যাত্ম যেখানে বিকশিত হয়েছে, সেই দেশের। সেইজন্যে তোমার সংস্কার অনেক উচ্চস্তরের। মানব ধর্মে আসতে হলে তো আমাদের সংস্কার এতটাই উচ্চস্তরের যে তা একরকম অসীম। কিন্তু লোকেরা মানবধর্ম পালনে ভুল করে ফেলছে, লোভ আর লালসার কারণে এটা হচ্ছে। আমাদের এখানে ক্রোধ, মান, মায়া, লোভ ফুললি ডেভেলাপ (সম্পূর্ণ বিকশিত) হয়ে গেছে। এইজন্যেই লোকেরা মানবধর্ম ভুলে গেছে। কিন্তু এই লোকেরা মোক্ষের অধিকারী ঠিকই। এখানে ডেভেলাপ হয়েছে, সেখান থেকে মোক্ষের অধিকারী হওয়া শুরু হয়েছে। ওদেরকে (ইউরোপীয়ানদের) মোক্ষের অধিকারী বলে না। এরা ধর্মের অধিকারী, কিন্তু মোক্ষের নয় ৷ বলুন। ১৯ মানবতার বিশেষ বোধ প্রশ্নকর্তা : আলাদা-আলাদা মানবতার লক্ষণ বিষয়ে একটু বিস্তারিত দাদাশ্রী : মানবতার গ্রেড (স্তর) আলাদা আলাদা হয়। প্রত্যেক দেশে মানবতা আছে, তাদের ডেভেলপমেন্টের আধারে এই সমস্ত গ্রেড হয় । মানবতা অর্থাৎ স্বয়ং নিজের গ্রেড স্থির করতে হয় এইভাবে যে যদি আমাকে মানবতা আনতে হয় তাহলে আমার যা পছন্দের তা অন্যের প্রতি আমাকে করতে হবে। আমার পক্ষে যা অনুকূল তেমনই অনুকূল সংযোগ অন্যের প্রতি ব্যবহারেও আমাকে আনতে হবে, তাকেই মানবিকতা বলে ৷ এইজন্যে প্রত্যেকের মানবতা আলাদা আলাদা হয়। সবার মানবতা একপ্রকার হয় না। প্রত্যেকের গ্রেডেশন অনুযায়ী হয়। নিজের যা অনুকূল হয় তা অন্যের প্রতিও করতে হবে। আমার যদি দুঃখ হয় তো ওর কেন হবে না ? আমার যদি কিছু চুরি যায় তো Page #27 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম। আমার দুঃখ হয়। সেইজন্য কারাের কিছু চুরি করার সময় তােমার মনে বিচার আসা উচিৎ যে, “না, কারাের দুঃখ হবে এরকম কাজ কি করে করব ? যদি কেউ তােমার সাথে মিথ্যে বলে তাে তােমার দুঃখ হয়। তাহলে তােমারও এরকম করার আগে ভাবা উচিৎ। প্রত্যেক দেশের প্রত্যেক মানুষের গ্রেডেশন ভিন্ন ভিন্ন হয়। মানবতা অর্থাৎ নিজের যা ভাল লাগে এরকম ব্যবহার অন্যের সাথেও করবে। এই সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাটি ভাল কিন্তু প্রত্যেক দেশের লােকেদের আলাদা আলাদা প্রয়ােজন। তােমার নিজের জন্য যা অনুকূল নয় সেরকম উল্টো ব্যবহার অন্যের সাথে করবে না। তােমার নিজের যেরকম ব্যবহার পছন্দ হয়, সেরকম ব্যবহারই অন্যের সাথে করবে। তােমার বাড়ী আমি গেলে তুমি যদি আসুন-বসুন বলাে তাে আমার ভালাে লাগে, তেমনি আমার বাড়ী কেউ এলে তাকেও আমার ‘আসুন-বসুন’ বলা উচিৎ। এরই নাম মানব ধর্ম। তােমার বাড়ী কেউ এলে তুমি যদি তাকে আপ্যায়ণনা করাে অথচ তার কাছ থেকে আপ্যায়ণের আশা রাখাে, তাে তাকে মানবতা বলে না। তুমি কারাের বাড়ী অতিথি হয়ে গিয়ে যদি ভালাে ভােজনের আশা রাখাে তাে তােমারও বিচার করা উচিৎ যে তােমার কাছে কোন অতিথি এলে তােমাকেও ভালাে ভােজন করাতে হবে — যেরকম তুমি আশা করাে সেইরকম। এটাই মানবতা। | নিজেকে অন্যের জায়গায় রেখে সমস্ত ব্যবহার করবে, এর নামই মানবতা। এ প্রত্যেকের জন্যে আলাদা-আলাদা হয়। হিন্দুর আলাদা, মুসলমানের আলাদা, খ্রষ্টানদের আলাদা এমনকি জৈনদের মানবতাও আলাদা হয়। তােমার নিজের অপমান সহ্য হয় না অথচ অন্যকে অপমান করতে দক্ষ তাে একে কি করে মানবতা বলা যায় ? সেইজন্য সমস্ত বিষয়ে বিচার করে ব্যবহার করা, একেই মানবতা বলে। সংক্ষেপে প্রত্যেকের মানবতার রীতি আলাদা। “আমি কাউকে দুঃখ দেবনা” এ মানবতার বাউণ্ডারি (সীমা) আর এই বাউণ্ডারি প্রত্যেকের Page #28 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম ক্ষেত্রে আলাদা-আলাদা হয়। মানবতার একটাই মাপদণ্ড হয় না। আমার যাতে দুঃখ হয়, সেইরকম দুঃখ আমি কাউকে দেব না। কেউ আমাকে এরকমদুঃখ দিলে কেমনলাগবে ? যার যতটুকু ডেভেলপমেন্ট সে ততটাই করে। সুখ পাওয়া যায় সুখ দিলে । প্রশ্নকর্তা : আমরা জানি যে কারাের মনে যেন দুঃখ না হয়, এরকমভাবে জীবন যাপন করা উচিৎ। এ সমস্ত মানবতার ধর্ম বলেই জানি।। | দাদাশ্রী : এতাে মানবতার ধর্ম ঠিকই, কিন্তু আত্মার স্বাভাবিক ধর্ম জানলে চিরদিনের জন্য সুখ পাওয়া যায়। এই মানবধর্ম কি রকম হয় ? মানবধর্ম অর্থাৎ অন্যকে সুখ দিলে তুমিও সুখ পাবে। যদি তুমি সুখ দেওয়ার ব্যবহার রাখাে তাহলে ব্যবহারে তুমিও সুখ পাবে আর দুঃখ দেওয়ার ব্যবহার রাখলে ব্যবহারে দুঃখ পাবে। সেইজন্যে তােমার যদি সুখ চাই তাে ব্যবহারে সবাইকে সুখ দাও আর দুঃখ চাইলে দুঃখ দাও। প্রশ্নকর্তা : সবাইকে সুখ দেওয়ার শক্তি পাই, এরকম প্রার্থনা। করতে হবে। দাদাশ্রী : হ্যা, এরকম প্রার্থনা করতে পার। জীবন ব্যবহারে যথার্থ মানবধর্ম প্রশ্নকর্তা : এখন মানুষের প্রাথমিক প্রয়ােজনীয়তার মধ্যে যা কিছু আসে যেমন আহার, জল, বিশ্রাম আর বাসস্থান যাতে প্রত্যেক মানুষ পায় এর জন্যে প্রযত্ন করা কি মানবধর্ম বলে গণ্য হবে ? দাদাশ্রী:মানব ধর্ম পৃথক বস্তু। মানব ধর্ম তাে এতদূর পর্যন্ত যে এই জগতে যা লক্ষ্মী (ধন-দৌলত) আছে, তার ভাগ-বাঁটোয়ারা প্রাকৃতিক Page #29 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম রূপে হয়; এর মধ্যে এখন আমার ভাগে যা আছে তা তােমাকে দিতে হতে পারে। এইজন্য আমার লােভ করার প্রয়ােজন-ই নেই। লােভ না থাকে, তাকেই মানবধর্ম বলে। কিন্তু এতদূর পর্যন্ত তাে থাকে না। তবু মানুষ যদি এর কিছুটাও পালন করতে পারে তাে অনেক হল। প্রশ্নকর্তা : তার মানে এর অর্থ এই দাঁড়ালাে যে যেমন যেমন কষায় রহিত (ক্রোধ-মান-মায়া-লােভহীন) হবাে, ততটাই মানব ধর্ম হবে ? দাদাশ্রী : না, এরকম বললে তা বীতরাগ ধর্মে এসে গেল। কিন্তু মানব ধর্ম তাে ব্যস্ এইটুকুই যে স্ত্রীর সাথে থাকো, সন্তানের সাথে থাকো, অমুকের সাথে থাকো, তন্ময়াকার হয়ে যাও, বিবাহ করাে, সমস্ত কিছুই। এতে তাে কষায়-রহিত হওয়ার প্রশ্নই নেই। কিন্তু তােমার যাতে দুঃখ হয় তাতে অন্যেরও দুঃখ হবে এরকম ধরে নিয়ে তুমি চলাে।। প্রশ্নকর্তা : হা, কিন্তু এ তাে এরকম হল যে ধরাে আমার ক্ষিদে পেয়েছে। ক্ষিদে তাে একরকম দুঃখই। এর জন্যে আমার কাছে ব্যবস্থা আছে খাওয়া-দাওয়া করার। যার সে ক্ষমতা নেই তাকে তা দিতে হবে। এই যে আমার যাতে দুঃখ হয় সে দুঃখ অন্যের না হয় এরকম করা এও এক ধরণের মানবতা-ই হল কিনা ? দাদাশ্রী : না, এই যে তুমি এরকম মানছাে, এটা মানবতা নয়। কুদরত্ (প্রকৃতি)-এর নিয়ম এই যে, যেই হােক না কেন তাকে তার খাবার পৌঁছে দেয়। এই হিন্দুস্থানে এমন একটা গ্রাম নেই যেখানে কেউ কোন মানুষকে খাবার দিতে যায়, কাপড় দিতে যায়, এরকম কিছুই নেই। এ তাে এসব যে শহরে আছে তা একধরণের লােকেদের তৈরী করা ব্যবসায়ী কায়দা লােকেদের থেকে পয়সা নেওয়ার জন্য। অসুবিধা কোথায় হয় ? মধ্যবিত্ত লােকেরা যারা চাইতে পারে না, বলতে পারে না, তাদেরই অসুবিধা হয়। অন্যসব জায়গায় এতে কিসের অসুবিধা ? এতাে অকারণেই নিয়ে বসে আছে ! Page #30 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম প্রশ্নকর্তা : এ রকম কারা ? দাদাশ্রী : আমাদের সমগ্র সাধারণ মধ্যবিত্তবর্গ-ই এরকম। সেখানে যাও, তাদের জিজ্ঞাসা করাে যে ভাই তােমার কি অসুবিধা আছে, আর এদের, এই যাদের কথা তুমি বলছাে না, যে এদের জন্যে দান করা উচিৎ, এই সমস্ত লােক তাে মদ খেয়ে মজা করে। | প্রশ্নকর্তা : সে তাে ঠিকই কিন্তু আপনি বলছেন সাধারণ মানুষের প্রয়ােজন আছে। সেখানে দান করলে তাে ধর্মই হলাে ? | দাদাশ্রী: হা, কিন্তু এর সাথে মানবধর্মের কি লেনা-দেনা ? মানবধর্ম মানে কি ? আমার যাতে দুঃখ হয় তাতে অন্যেরও দুঃখ হয় ; সেইজন্যে ওর দুঃখ না হয় এরকম ব্যবহার করা উচিৎ। প্রশ্নকর্তা : সে রকমই হলাে না ? কারাের কাপড় নেই ----। দাদাশী:না, এতাে দয়ালুর লক্ষণ। সবাই দয়াকি করে করবে ? এ তাে যার কাছে পয়সা আছে সেই করতে পারে। প্রশ্নকর্তা : সাধারণ মানুষ যাতে ঠিকমত পায়, তাদের প্রয়ােজন পূর্ণ হয় তার জন্যে সমাজিক স্তর থেকে প্রযত্ন করা কি উচিৎ ? সামাজিক স্তর থেকে অর্থাৎ আমরা সরকারকে চাপ দেব যে তােমরা এইসব লােকেদের দাও। এটা করা কি মানবধর্মের মধ্যে পড়ে ? দাদাশ্রী এ সমস্ত এইসব লােকেদের ভুল ইগােইজম (অহংকার)। এরা সমাজসেবা করে, লােকেদের সেবা করছি এরকম বলে, অথবা দয়া করছি, সহানুভূতি দেখাচ্ছি এরকম বলে। কিন্তু মানবঞ্চা তাে সবাইকে স্পর্শ করে। আমার যদি ঘড়ি হারিয়ে যায় তাে আমি জানব কোন মানবধর্ম সম্পন্ন লােক যদি পায় তাে ঘড়ি ফিরে আসবে। আর এই যে এরা সেবা করছে তারা সব কুসেবা করছে। একজনকে আমি বললাম “এ কি করছাে ? এইসব লােকেদের কিজন্যে দান করছাে ? এরকমভাবে দেয় কখনও ? খুব সেবা করতে এসেছেন! সেবক এসেছেন! কি দেখে সেবা Page #31 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম করতে বেরিয়েছেন ?” লোকেদের পয়সা ভুল রাস্তায় যায় আর লোকে দিয়েও দেয় ! প্রশ্নকর্তা : কিন্তু আজকাল তো একেই মানবধর্ম বলে ? 28 দাদাশ্রী : মানুষকে শেষ করে দিচ্ছে, তোমরা তাকে বাঁচতেও দিচ্ছ না। ওই লোকটিকে আমি খুব বকলাম। কি ধরণের মানুষ তুমি ? কে তোমাকে এসব শেখালো ? লোকেদের কাছ থেকে পয়সা আনবে আর যাকে তোমার গরীব বলে মনে হয় তাকে ডেকে এনে দিয়ে দেবে। আরে এর থার্মোমিটার (মাপদণ্ড) কি ? একে গরীব বলে মনে হয় সেইজন্যে দেবে আর একে মনে হয় না তাই দেবে না ? যে তার কষ্ট ঠিকমত জানাতে পারেনা, ভালভাবে বলতে পারে না বলে তাকে দিলে না আর যে ভাল বর্ণন করতে পারে তাকে দিলে! থার্মোমিটারওয়ালা এসেছেন! তখন আমাকে বলল, আপনি অন্য উপায় বলুন। আমি বললাম, এই লোকটি শারীরিকভাবে সুস্থ-সবল সেইজন্যে একে এক-দেড় হাজার টাকা দিয়ে একটা ঠেলাগাড়ি কিনে দাও আর দুশো টাকা দিয়ে বলো শাক-সব্জী কিনে এনে বিক্রী করতে। আর ঠেলার ভাড়া হিসাবে দু-চারদিন পরপর পঞ্চাশ টাকা দিয়ে যেতে বলবে। প্রশ্নকর্তা : বিনামূল্যে না দিয়ে ওকে রোজগার করার রাস্তা করে দেব। দাদাশ্রী : হ্যাঁ, নয় তো একে তো তুমি বেকার করে দিচ্ছ। সারা বিশ্বে কোথাও বেকারত্ব নেই, এই বেকারত্ব তুমিই ছড়াচ্ছো। আমাদের সরকার ছড়াচ্ছে। এ তো ভোট পাওয়ার জন্যে এইসব নাটক করছে। আর মানব ধর্ম তো সেফ সাইড-ই দেখায় । প্রশ্নকর্তা : এ কথা ঠিক যে আমরা দয়া দেখালে ওদের মধ্যে এক ধরণের মানসিকতা তৈরী হয় যে অন্যের দয়ায় বেঁচে আছে। দাদাশ্রী : ওরা খাবার-দাবার পেয়ে যায়, সেইজন্যে ওদের মধ্যে কেউ মদ রাখে তো সেখানে গিয়ে বসে। খায়-দায়, মদ খেয়ে ফূর্তি করে। Page #32 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম প্রশ্নকর্তা : মদ খায় দাদা, এর উপযোগ এইভাবেই হয়। দাদাশ্রী : যদি এইরকম-ই হয় তাহলে আমাদের উচিৎ নয় এদেরকে নষ্ট করা। যদি আমরা কাউকে শুধরাতে না পারি তো অন্ততঃ বিগড়ানো উচিৎ নয়। কি ভাবে ? অন্যের কাছ থকে কাপড় এনে ওদেরকে দেবে আর ওরা সেই কাপড় দিয়ে বাসন নেবে। এর বদলে কোন কাজে ওদেরকে লাগিয়ে দাও । এইভাবে কাপড় দেওয়া, খাবার দেওয়া এ মানব ধর্ম নয়। আরে মূর্খ, দিতে হয় না। এদের কাজে কর্মে লাগাতে হয় ৷ প্রশ্নকর্তা : আপনি যা বলছেন সে কথা তো সবাই স্বীকার করবে আর ওদের তো শুধু দান করে পঙ্গুই বানানো হচ্ছে। দাদাশ্রী : এইজন্যেই পঙ্গু হচ্ছে। এতসব দয়ালু লোক, কিন্তু এত দয়া করার প্রয়োজন নেই। ওকে একটা ঠেলাগাড়ী দিয়ে দাও আর শাকসব্জী দিয়ে দাও। একদিন বিক্রি করে আসবে, দুদিন বিক্রি করে আসবে, রোজগার চালু হয়ে যাবে। এরকম অনেক রাস্তা আছে। মানব ধর্মের চিহ্ন প্রশ্নকর্তা : আমি আমার বন্ধুদের সাথে দাদার এই কথা আলোচনা করি তো তারা বলে যে আমরা মানবধর্ম পালন করি, তাই যথেষ্ট ; এই বলে এড়িয়ে যায়। দাদাশ্রী : হ্যাঁ, কিন্তু মানবধর্ম পালন করলে তাকে তো আমি ভগবান বলি। খাবার খাওয়া, চা খাওয়া, স্নান করা এসব তো মানব ধর্ম বলে না । ” প্রশ্নকর্তা : না। মানবধর্ম মানে একে অপরকে সাহায্য করা, কারোর ভালো করা, অন্যের উপকার করা, এই সমস্তকেই লোকে মানবধর্ম বলে মনে করে। দাদাশ্রী : সেটা মানবধর্ম নয়। বেচারা জানোয়াররাও নিজের পরিবারকে সাহায্য করার কথা বোঝে। Page #33 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম মানব ধর্ম অর্থাৎ প্রত্যেক প্রসঙ্গে এই বিচার আসে যে আমার এরকম হলে কি হবে ? এই বিচার প্রথমেই যার না আসে সে মানবধর্মে নেই। কেউ যদি আমাকে গালি দেয় তো আমিও তাকে পাল্টা গালি দেওয়ার আগে যদি একথা মনে হয়, “আমার যখন এতটা দুঃখ হচ্ছে তাহলে আমি যদি একে গালি দিই তো এর কতটা দুঃখ হবে।” এইরকম করে নিবৃত্ত হতে পারলে তবেই সমাপ্তি আসবে। ২৬ এই হল মানবধর্মের প্রথম চিহ্ন। এখান থেকে মানবধর্মের শুরু। মানবধর্মের বিগিনিং (সূত্রপাত) এখান থেকেই হওয়া উচিৎ। বিগিনিংই যদি না থাকে তো সে মানবধর্ম বোঝেই নি । প্রশ্নকর্তা : আমার দুঃখ হয় তাই অন্যেরও দুঃখ হয়, এই যে ভাব, এই ভাব যেমন যেমন ডেভলপ করে তেমনি এর পশ্চাতে মানুষের প্রতি মানুষের একাত্মবোধ সেটাও বেশী করে ডেভলপ করে তো ? দাদাশ্রী : সে তো হয়। সমগ্র মানবধর্মের উৎকর্ষ হয়। প্রশ্নকর্তা : হ্যাঁ, এ সহজভাবে উৎকর্ষ হতে থাকে। দাদাশ্রী : সহজভাবে হয় ৷ পাপ কমানো, সেটাই সত্যিকার মানব ধর্ম মানব ধর্ম দ্বারা তো অনেক প্রশ্নের সমাধান হয়ে যায়, তবে মানবধর্ম লেভেল-এ (সামঞ্জস্যপূর্ণ) হওয়া চাই। লোকে যা ব্যাখ্যা করে, তাকে মানবধর্ম বলে না। অনেক লোক আছে যাদের মোক্ষের প্রয়োজন নেই, কিন্তু মানবধর্ম তো সবারই দরকার আছে। মানবধর্ম পালন করলে অনেক পাপ কম হয়ে যায়। , এ বোধপূর্বক হওয়া উচিৎ প্রশ্নকর্তা : মানব ধর্মে আমাদের অন্যের প্রতি যে অপেক্ষা থাকে কি সে-ও একইরকম আচরণ করবে, তো অনেক সময়ে তা অত্যাচার হয়ে Page #34 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম যায়। ২৭ দাদাশ্রী : না, প্রত্যেকের মানবধর্মে থাকা উচিৎ। ওর আচরণ এরকমই হবে, তেমন কোন নিয়ম নেই। মানবধর্ম পালন তখনই হয়, যখন নিজে বুঝে তা পালন করতে শেখে। প্রশ্নকর্তা : হ্যাঁ, নিজে বুঝে, কিন্তু এ তো অন্যকে বলে তুমি এরকম আচরণ করবে, এরকম করবে, সেরকম করবে। দাদাশ্রী : কার অধিকার আছে এরকম বলার ? গভর্ণর নাকি ? এরকম কেউ বলতে পারে না। প্রশ্নকর্তা : হ্যাঁ, সেইজন্যেই অত্যাচার হয়ে যায়। দাদাশ্রী : অত্যাচারই তো বলে ! এরকম করলে তা পুরোপুরি অত্যাচার! তুমি অন্যকে কর্তব্য করতে বাধ্য করতে পার না। তুমি তাকে বোঝাতে পার যে ভাই, এরকম করলে তা তোমার জন্য লাভদায়ক হবে, তুমি সুখী হবে। কর্তব্য করতে কাউকে বাধ্য তো করতেই পার না । এইভাবে মনুষ্য জীবন উজ্জ্বল করো একে কি মনুষ্যত্ব বলে ? সারাদিন খেয়ে দেয়ে ঘুরে বেড়ায়, দুচারজনকে ধমক-ধামক দিয়ে আসে আর রাত্রে ঘুমিয়ে পড়ে। একে মনুষ্যত্ব কিভাবে বলা যায় ? এভাবে তো মনুষ্য জীবন লজ্জিত হয়। মনুষ্যত্ব তাকেই বলে যখন বিশ-পঁচিশজনকে, অন্ততঃপক্ষে পাঁচজনকেও শান্তি দিয়ে সন্ধ্যাবেলা ঘরে ফেরে। আর এ তো মনুষ্যজীবনকে লজ্জিত করেছে। স্কুল-কলেজে বই পৌঁছে দাও নিজেকে কি মনে করে বসে আছো ? বলে, “আমরা মানুষ। আমাদের মানবধর্ম পালন করতে হবে।” আমি বলি, “হ্যাঁ, নিশ্চয়ই পালন করবে। না বুঝে অনেকদিন পালন করেছো। এখন সঠিক বুঝে মানবধর্ম পালন করতে হবে।” মানবধর্ম তো অতি শ্রেষ্ঠ বস্তু। Page #35 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম প্রশ্নকর্তা : কিন্তু দাদাজী, লোকে তো মানব ধর্মের পরিভাষাই অন্যরকম দেয়। মানবধর্মকে একদম আলাদা ভাবেই বুঝছে। ২৮ দাদাশ্রী : হ্যাঁ, এর উপর তো কোন ভাল পুস্তক নেই। কত সন্ত পুরুষ তো এর উপরে অনেক কিছু লিখেছেন, কিন্তু লোকেরা তা সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারে না। এইজন্যে এরকম হওয়া উচিৎ যে সবকিছু যদি পুস্তকরূপে পড়ে আর বোঝে তখন মনে হবে আমরা যা কিছু মানি তা সমস্তই ভুল। এই মানবধর্মের পুস্তক রচনা করে তা স্কুলে এক বিশেষ বয়সের বাচ্চাদের (যারা বুঝতে পারবে) শেখানো উচিৎ । জাগৃতির প্রয়োজন আলাদা আর এই সাইকোলজিক্যাল এফেক্ট (মানসিক প্রভাব) আলাদা । স্কুলে যদি এরকম শেখে তো তাহলে তার মনে পড়বেই। কারোর কিছু পড়ে যাওয়া জিনিষ খুঁজে পেলেই তার মনে হবে যে ভাই, আমার যদি পড়ে যেতো তো কি হতো ? এর জন্যে অন্যের কতটা দুঃখ হচ্ছে ? ব্যস, এটাই সাইকোলজিক্যাল এফেক্ট। এতে জাগৃতির প্রয়োজন নেই। সেইজন্যে পুস্তক ছাপিয়ে সেই বই সমস্ত স্কুল-কলেজে বিশেষ বয়সের বিদ্যার্থীদের দেওয়া উচিৎ। আর মানব ধর্ম পালন করলে (আলাদা করে) পুণ্য করার প্রয়োজন নেই। এতে তো পুণ্যই হয়। মানবধর্মের তো পুস্তক লেখা উচিৎ যে মানবধর্ম মানে কি ? এরকম পুস্তক লেখা উচিৎ যা ভবিষ্যতেও লোকেরা পড়তে পারে। প্রশ্নকর্তা : এই ভাই খবরের কাগজে লেখা ছাপছে তো ? দাদাশ্রী : না, এতো চলবে না। এই লেখা কাগজ তো রদ্দীতে চলে যাবে। এই কারণে বই ছাপানো উচিৎ। যদি ওই বই কারোর কাছে থাকে তো তা আবার ছাপানোর জন্যে কাউকে পাওয়া যাবে । সেইজন্যে আমি বলছি যে কয়েক হাজার বই আর সমস্ত আপ্ত বাণী ছাপিয়ে বিলি করতে থাকো। এক-আধটা বই-ও যদি থেকে যায় তা পরে লোকেদের কাজে লাগবে। নয়তো বাকী সব তো রদ্দীতে চলে যাবে। এই যে সব Page #36 -------------------------------------------------------------------------- ________________ মানব ধর্ম লেখে এর মধ্যে সোনার মত (দামী) লেখাও পরদিন রদ্দীওয়ালাকে বিক্রি করে দেয় আমাদের দেশের লোকজন ! মধ্যে ভাল লেখা থাকলেও তা ছিঁড়ে রাখবে না, তাহলে ওজন কম হয়ে যাবে না ? সেইজন্য এই মানবধর্মের ওপর যদি বই লেখা যায়... প্রশ্নকর্তা : মানব ধর্মের ওপর তো দাদার অনেক বাণী আছে ? : দাদাশ্রী : অনেক, অনেক, প্রচুর বেরিয়েছে। আমি নীরুবেনকে প্রকাশ করতে বলবো। নীরুবেনকে বলো না এই বাণী পৃথক করে পুস্তকরূপে প্রকাশ করতে। এই মানবতা মোক্ষ নয়। মানবতায় আসার পরে মোক্ষ -এর প্রস্তুতি শুরু হয়। নয়তো মোক্ষ লাভ কোন সহজ কথা নয় ৷ — জয় সচ্চিদানন্দ। Page #37 -------------------------------------------------------------------------- ________________ দাদা ভগবান ফাউন্ডেশন দ্বারা প্রকাশিত হিন্দী পুস্তকসমূহ 00 y no son ১. জ্ঞানী পুরুষ কি পহেচান ২৪. অহিংসা ২. সর্ব দুঃখে সে মুক্তি ২৫. প্রতিক্ৰমণ (সংক্ষিপ্ত) কর্ম কে সিদ্ধান্ত। ২৭. কর্ম কা বিজ্ঞান আত্মবােধ ২৮. চমৎকার অন্তঃকরণ কা স্বরূপ। ২৯. বাণী, ব্যবহার র্মে জগৎকর্তা কৌন ? ৩০. প্যয়সোঁ কা ব্যবহার (সংক্ষিপ্ত) ভুগতে উসী কি ভুল। ৩১. পতি-পত্নী কা দিব্য ব্যবহার অ্যাডজাস্ট এভরিহােয়্যার । (সং) ৯. টকরাও টালিয়ে ৩২. মাতা-পিতা ঔর বচ্চোঁ কা ১০. হুয়া সাে ন্যায় ব্যবহার (সং) ১১. চিন্তা ৩৩. সমঝসে প্রাপ্ত ব্রহ্মচর্য (সং)। ১২. ক্রোধ। ৩৪, নিজদোষ দর্শন সে, .. নির্দোষ ১৩, ম্যাঁয় কৌন হুঁ ? ৩৫. ক্লেশ রহিত জীবন। ১৪. বর্তমান তীর্থঙ্কর শ্রী সীমন্ধর স্বামী ৩৬, গুরু-শিষ্য ১৫. মানব ধর্ম ৩৭. আপ্তবাণী - ১ ১৬. সেবা-পরােপকার ৩৮. আপ্তবাণী - ২ ১৭. ত্রিমন্ত্র। ৩৯. আপ্তবাণী - ৩ ১৮. ভাবনা সে সুধরে জন্মেজন্ম ৪০. আপ্তবাণী - ৪ ১৯. দান। ৪১. আপ্তবাণী - ৫ ২০. মৃত্যু সময়, পহেলে ঔর পশ্চাৎ ৪২. আপ্তবাণী - ৬ ২১. দাদা ভগবান কৌন ? ৪৩. আপ্তবাণী - ৭ ২২. সত্য-অসত্য কে রহস্য ৪৪. আপ্তবাণী - ৮ ২৩. প্রেম ৪৫. সমঝসে প্রাপ্ত ব্রহ্মচর্য (উত্তরার্ধ) * দাদা ভগবান ফাউন্ডেশন দ্বারা গুজরাতী ভাষাতেও অনেক পুস্তক প্রকাশিত হয়েছে। এই সমস্ত পুস্তক ওয়েবসাইট www.dadabhagwan.org - তেও উপলব্ধ। * দাদা ভগবান ফাউন্ডেশন দ্বারা “দাদাবাণী’’ পত্রিকা হিন্দী, গুজরাতী ও ইংরাজী ভাষায় প্রতিমাসে প্রকাশিত হয়। প্রাপ্তিস্থান : ত্রি-মন্দির সঙ্কুল, সীমন্ধর সিটী, আহমেদাবাদ - কালােল হাইওয়ে, পােস্ট : অডালজ, জিলা : গান্ধীনগর, গুজরাত - ৩৮২৪২১ ফোন : (০৭৯) ৩৯৮৩০১০০, E-mail : info@dadabhagwan.org Page #38 -------------------------------------------------------------------------- ________________ জীবনে মানবধর্ম গ্রহণ করুন! মানবধর্ম অথাৎ প্রত্যেক প্রসঙ্গে মনে আসে যে আমার যদি এরকম হয়। তাে কি হবে ? যদি আমাকে কেউ কটু-কাটব্য করে আর সেই সময় যদি আমিও। তাকে কটু কথা বলি তার আগে আমার মনে এরকম ভাবনা আসা উচিৎ যে। 'আমার যদি এত দুঃখ হয়েছে তাে আমি কটু কথা বললে ওর কতটা দুঃখ হবে ! এইরকম চিন্তা করে যদি আপােষে মীমাংসা করে নেওয়া যায় তাে সমাধান আসে / এটাই মানবধর্মের প্রথম চিহ্ন। এখান থেকেই মানবধর্ম শুরু হয়। সেই জন্য এই পুস্তক মুদ্রিত করে সমস্ত স্কুল-কলেজে পড়ানাে উচিৎ। সমস্ত কথা যখন পুস্তক রূপে পড়ে আর বুঝতে পারবে তখন ওদের মনে হবে যে। আমরা যা কিছু মেনে নিয়েছি তা ভুল! এখন সত্য বুঝে নিয়ে মানবধর্ম পালন করতে হবে। মানবধর্ম তাে খুবই উত্তম বস্তু / / --দাদাশ্রী ISBN 978-03- 1-1 -4 9 78938551138) लदीपक से प्रकट से प्रकटे दीपमाला Printed in India Price 15 dadabhagwan.org