________________
আমরা যেদিনের কথা বলছি সে সময়ে লিম্বী গণতন্ত্রের রাজধানী বৈশালীতে রাজত্ব করছিলেন শ্রীমন্ মহারাজ চেটক। চেটকের সুশাসনে বৈশালীর তখন সমৃদ্ধির অন্ত ছিল না। সেই সময় গণ্ডকী নদীর পশ্চিম তীরে ক্ষত্রিয়কুণ্ড বলে একটী ক্ষুদ্র জনপদ ছিল যেখানে জ্ঞাত ক্ষত্রিয়েরা বাস করতেন। এই জ্ঞাত ক্ষত্রিয়দের নায়ক বা নেতা ছিলেন রাজা সিদ্ধার্থ। মহাবীর এই সিদ্ধার্থের ঘরে রাণী ত্রিশলার গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন খৃষ্ট জন্মের ঠিক ৫৯৯ বছর আগে চৈত্র-শুক্লা এক এয়ােদশীতে। মহাবীর মাতাপিতার দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন। তাঁর অগ্রজের নাম ছিল নন্দীবর্দ্ধন।।
| মহাবীর শৈশব হতেই সকলের প্রিয় ছিলেন। প্রিয় ছিলেন কারণ তার জন্মের পূর্বে ত্রিশলা চোদ্দটি স্বপ্ন দেখেছিলেন ? হস্তী, বৃষ, সিংহ, লক্ষ্মী, পুষ্পমালা, চন্দ্র, সূর্য, ধ্বজ, কলস, সরােবর, সমুদ্র, দেববিমান, রত্ন ও নিধুম অগ্নি—যার ফলে জাতক হয় রাজ-চক্রবর্তী রাজা নয়ত সর্বজ্ঞ তীর্থঙ্কর হন। মহাবীরের জীবনে দ্বিতীয়টি সত্য হয়েছিল। তিনি সর্বজ্ঞ তীর্থঙ্কর হয়েছিলেন।
মহাবীরের পিতৃদত্ত নাম কিন্তু মহাবীর ছিল না, ছিল বর্ধমান। যেদিন হতে মহাবীরের আসবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল, যেদিন হতে ত্রিশলা তার আসবার দিন গুণছিলেন, সেদিন হতে রাজ্যের শ্রীবৃদ্ধি। ধন ও ধান্যে পূর্ণ হয়েছিল কোষ ও কোষ্ঠ। সামন্তনৃপতিরা আনুগত্য জানিয়ে গিয়েছিল আপনা হতেই, বশ্যতা স্বীকার করেছিল তারাও যারা এতদিন বশ্যতা স্বীকার করে নি। অকারণ-লব্ধ নয় এই ঋদ্ধি। তাই সিদ্ধার্থ নবজাতকের নাম দিয়েছিলেন বর্ধমান। তারপর এই বর্ধমানই তার কঠোর তপস্যা ও নির্ভয়তায়, ত্যাগ এবং তিতিক্ষায় মহাবীর আখ্যা লাভ করেন। মহাবীর অর্থাৎ বীরের মধ্যে যিনি শ্রেষ্ঠ। পরাক্রান্ত শত্রুকে জয় করা এমন কি আর শক্ত, তার চাইতে অনেক বেশী শক্ত নিজেকে
৪৮
Jain Education International
For Personal & Private Use Only
www.jainelibrary.org