________________
দাদাশ্রী ঃ এটা এরকমভাবে বলা যায় যে ওষুধের দোকানে যত ওষুধ আছে সবই তাে প্রয়ােজনীয়। কিন্তু বিভিন্ন লােকের প্রয়ােজন বিভিন্ন। আপনার যতটুকু ওষুধ দরকার ততটুকুই তো আপনাকে নিতে হবে।
তেমনি ব্রত, তপ, নিয়ম এসবেরও প্রয়ােজন আছে। এ জগতে কিছুই ভুল নয়। জপ-তপ কিছুই ভুল নয়। কিন্তু প্রত্যেকের নিজস্ব দৃষ্টিকোণ এবং মান্যতা থেকে তা সত্যি।
প্রশ্নকর্তাঃ তপ আর ক্রিয়া করে মুক্তি পাওয়া যায় কি?
দাদাশ্রীঃ তপ আর ক্রিয়া করে ফল পাওয়া যায়, মুক্তি নয়। নীমের বীজ পুঁতলে কটু ফল পাবে আর আমের বীজ থেকে মিষ্টি ফল পাবে। তােমার যেমন ফল চাই তেমন বীজ বুনবে। মােক্ষপ্রাপ্তির তপ তাে অন্যরকম, অন্তর্তপ। কিন্তু লােকে বহির্তপকেই তপ বলে মনে করে। যে তপ বাইরে দেখা যায় তা মােক্ষলাভ-এর জন্য অচল। এই তপের ফল পূণ্যলাভ হয়। মােক্ষ-এর জন্য চাই অন্তর্ত প, অদীঠ ত প (যা বাইরে দেখা বা বােঝা যায় না)।
প্রশ্নকর্তা ও মন্ত্রজপ করলে মােক্ষলাভ হয় না জ্ঞানমার্গ থেকে মােক্ষলাভ হয় ?
দাদাশ্রী ও মন্ত্রজপ আপনাকে সংসারে শান্তি দেবে। মনকে যা শান্ত করে তাই মন্ত্র। এতে ভৌতিক সুখ লাভ হয়। আর মােক্ষলাভ তাে জ্ঞানমার্গ ছাড়া সম্ভব নয়। অজ্ঞান থেকে হয় বন্ধন আর জ্ঞান থেকে হয় মুক্তি। এই জগতে | যে জ্ঞান আছে তা ইন্দ্রিয়জ্ঞান; এটা ভ্রান্তি। অতীন্দ্রিয় জ্ঞানই হল আসল জ্ঞান।
যার নিজের স্বরূপকে চিনে মােক্ষে যেতে হবে তার কোন ক্রিয়ার প্রয়ােজন নেই। যার ভৌতিক সুখ আবশ্যক তারই ক্রিয়ার প্রয়ােজন আছে। মােক্ষে যেতে হলে প্রয়ােজন মাত্র দুটো জিনিষ, শুধু জ্ঞান আর জ্ঞানীর আজ্ঞা।
জ্ঞানী-ই ‘আমি’র পরিচয় করায় প্রশ্নকর্তা : আপনি বললেন যে নিজেকে জানাে; তাে নিজেকে জানার জন্যে কি করতে হবে? | দাদাশ্রী ঃ আমার কাছে এসে বলাে যে আমার স্বরূপকে জানতে চাই। আমি তার পরিচয় করিয়ে দেব।
প্রশ্নকর্তা : ‘আমি কে তা জানা কি সংসারে থেকে সম্ভব?