Book Title: The Fault is of the Sufferer Bengali
Author(s): Dada Bhagwan
Publisher: Dada Bhagwan Aradhana Trust
Catalog link: https://jainqq.org/explore/034332/1

JAIN EDUCATION INTERNATIONAL FOR PRIVATE AND PERSONAL USE ONLY
Page #1 -------------------------------------------------------------------------- ________________ দাদা ভগবান প্ররূপিত ভুগছে যে তার ভুল যা কিছু আমাদের ভােগ করতে হয়, তা আমাদের ভুলের পারিণাম। Bengali Page #2 -------------------------------------------------------------------------- ________________ দাদা ভগবান প্ররূপিত ভুগছে যে তার ভুল মূল গুজরাতী সংকলন ঃ ডাঃ নীরুবেন অমিন বাংলা অনুবাদ : মহাত্মাগন Page #3 -------------------------------------------------------------------------- ________________ প্রকাশক : শ্ৰী অজিত সি. প্যাটেল দাদা ভগবান আরাধনা ট্রাস্ট। দাদা দর্শন, ৫, মমতাপার্ক সােসাইটি, নবগুজরাট কলেজের পিছনে উসমানপুরা, আহমেদাবাদ – ৩৮০০১৪ ফোন : (৭৯) ৩৯৮৩০১০০ E-mail : info@dadabhagwan.org কপিরাইট : All Rights reserved - Deepakbhai Desai Trimandir, Simandhar City, Ahmedabad-Kalol Highway, Adalaj, Dist: Gandhinagar-382421, Gujarat, India. No part of this book may be used or reproduced in any manner whatsoever without written permission from the holder of this copyrights. প্রথম প্রকাশ : 1", November 2018 মুদ্রণ সংখ্যা : ২০০০ ভাবমূল্য : ‘পরম বিনয় আর ‘আমি কিছু জানিনা এই জাগৃতি দ্রব্যমূল্য : ১:২ টাকা মুদ্রক : B-99, Electrronics G.I.D.C K-6 Road, Sector 25 Gandhinagar - 382044 E-mail : info@ambaoffset.com Website : www.ambaoffset.com ফোন : | (০৭৯) ৩৯৮৩০৩৪১/ ৪২ Page #4 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ত্রি-মন্ত্র নমাে অরিহন্তানম্ নমাে সিদ্ধান নমাে আয়রিয়ানম নমাে উবজ্জায়ান নমাে লােয়ে সব্বসাহুন এ্যায়সে পঞ্চ নমুক্কারাে; সব্ব পাবগ্নাশনাে মঙ্গলানম চ সব্বেসি; পঢ়মম্ হবই মঙ্গলম্ ১ ওঁ নমাে ভগবতে বাসুদেবায় ২ ওঁ নমঃ শিবায় ৩ জয় সচ্চিদানন্দ Page #5 -------------------------------------------------------------------------- ________________ দাদা ভগবান ফাউন্ডেশন দ্বারা প্রকাশিত হিন্দী পুস্তকসমূহ ১. জ্ঞানী পুরুষ কি পহেচান ২৪. অহিংসা ২. সর্ব দুঃখে সে মুক্তি ২৫. প্রতিক্ৰমণ (সংক্ষিপ্ত) ৩. কর্ম কে সিদ্ধান্ত ২৭. কর্ম কা বিজ্ঞান। আত্মবােধ ২৮. চমৎকার। অন্তঃকরণ কা স্বরূপ ২৯. বাণী, ব্যবহার চেঁ. জগৎকর্তা কৌন ? ৩০. প্যয়সোঁ কা ব্যবহার (সংক্ষিপ্ত) ৭. ভুগতে উসী কি ভুল ৩১. পতি-পত্নী কা দিব্য ব্যবহার ৮. অ্যাডজাস্ট এভরিহােয়্যার টকরাও টালিয়ে ৩২. মাতা-পিতা ঔর বচ্চোঁ কা ১০. হুয়া সাে ন্যায় ব্যবহার (সং) ১১. চিন্তা ৩৩. সমঝসে প্রাপ্ত ব্রহ্মচর্য (সং) ১২. ক্রোধ। ৩৪, নিজদোষ দর্শন সে, .. নির্দোষ ১৩, ম্যাঁয় কৌন হুঁ ? ৩৫. ক্লেশ রহিত জীবন। ১৪. বর্তমান তীর্থঙ্কর শ্রী সীমন্ধর স্বামী। ৩৬. গুরু-শিষ্য। ১৫. মানব ধর্ম ৩৭. আপ্তবাণী - ১ ১৬ সেবা-পরােপকার ৩৮. আপ্তবাণী - ২ ১৭. ত্রিম ৩৯. আপ্তবাণী - ৩ ১৮. ভাবনা সে সুধরে জন্মেজন্ম ৪০. আপ্তবাণী - ৪ ১৯. দান। ৪১. আপ্তবাণী - ৫ ২০. মৃত্যু সময়, পহেলে ঔর পশ্চাৎ ৪২. আপ্তবাণী - ৬ ২১. দাদা ভগবান কৌন ? ৪৩. আপ্তবাণী - ৭ ২২. সত্য-অসত্য কে রহস্য ৪৪. আপ্তবাণী - ৮ ২৩. প্রেম ৪৫. সমঝসে প্রাপ্ত ব্রহ্মচর্য (উত্তরা)। * দাদা ভগবান ফাউন্ডেশন দ্বারা গুজরাতী ভাষাতেও অনেক পুস্তক প্রকাশিত হয়েছে। এই সমস্ত পুস্তক ওয়েবসাইট www.dadabhagwan.org - তেও উপলব্ধ।। * দাদা ভগবান ফাউন্ডেশন দ্বারা “দাদাবাণী” পত্রিকা হিন্দী, গুজরাতী ও ইংরাজী ভাষায় প্রতিমাসে প্রকাশিত হয়। প্রাপ্তিস্থান : ত্রি-মন্দির সঙ্কুল, সীমন্ধর সিটী, আহমেদাবাদ - কালােল হাইওয়ে, পােস্ট : অডালজ, জিলা : গান্ধীনগর, গুজরাত - ৩৮২৪২১ ফোন : (০৭৯) ৩৯৮৩০১০০, E-mail : info@dadabhagwan.org Page #6 -------------------------------------------------------------------------- ________________ দাদা ভগবান কে ? ১৯৫৮ সালের জুন মাসের এক সন্ধ্যায় আনুমানিক ৬টার সময় ভীড়ে ভর্তি সুরত শহরের রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্ম নম্বর ৩-এর এক বেঞ্চে বসা শ্রী অম্বালাল মুলজীভাই প্যাটেলরূপী দেহমন্দিরে প্রাকৃতিকভাবে, অক্রমরূপে, বহুজন্ম ধরে ব্যক্ত হওয়ার জন্যে ব্যাকুল দাদা ভগবান পূর্ণরূপে প্রকট হলেন— অধ্যাত্মের এক অদ্ভুত আশ্চর্য্য প্রকট হল। অলৌকিকভাবে এক ঘণ্টাতে ওনার বিশ্বদর্শন হল। আমি কে ? ভগবান কে ? জগত কে চালায় ? কর্ম কি ? মুক্তি কি ? ইত্যাদি জগতের সমস্ত আধ্যাত্মিক প্রশ্নের সমস্ত রহস্য সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ হল। এইভাবে প্রকৃতি বিশ্বকে এক অদ্বিতীয় সম্পূর্ণ দর্শন প্রদানকরল যার মাধ্যম হলেন গুজরাত-এর চরােতর ক্ষেত্রের ভাদরণ গ্রামনিবাসী পাটীদার শ্রীঅম্বালাল মুলজীভাই প্যাটেল যিনি কন্ট্রাকটরি ব্যবসা করেও সম্পূর্ণ বীতরাগী ছিলেন। | ‘ব্যবসা-তে ধর্ম থাকা প্রয়ােজন, কিন্তু ধর্ম-তে ব্যবসা নয়’ এই নীতি অনুসারেই তিনি সম্পূর্ণ জীবন অতিবাহিত করেন। জীবনে কখনও উনি কারাের কাছ থেকে অর্থ নেন নি, উপরন্তু নিজের উপার্জনের অর্থ থেকে ভক্তদের তীর্থযাত্রায় নিয়ে যেতেন। ওনার অদ্ভুত সিদ্ধজ্ঞান প্রয়ােগ দ্বারা ওনার যে রকম প্রাপ্তি হয়েছিল তেমনই অন্য মুমুক্ষুদেরও তিনি কেবল দু' ঘণ্টাতেই আত্মজ্ঞান প্রাপ্ত করাতেন। একে অক্রম মার্গ বলে। অক্রম অর্থাৎ বিনা ক্রমের আর ক্রম মানে সিঁড়ির পরে সিঁড়ি ক্রমানুসারে উপরে ওঠা। অক্রম অর্থাৎ লিফটু-মার্গ, সংক্ষিপ্ত রাস্তা। উনি স্বয়ংই ‘দাদা ভগবান’ কে ? এই রহস্য জানাতেন। উনি বলতেন “যাকে আপনারা দেখছেন তিনি দাদা ভগবান নন। তিনি তাে এ. এম. প্যাটেল ; আমি জ্ঞানী পুরুষ আর আমার ভিতর যিনি প্রকট হয়েছেন তিনিই ‘দাদা ভগবান। দাদাভগবানতাে চৌদ্দ লােকের নাথ। উনি আপনার মধ্যেও আছেন, সবার মধ্যেই আছেন, আপনার মধ্যে অব্যক্তরূপে আছেন, আর আমার মধ্যেসম্পূর্ণরূপে ব্যক্ত অবস্থায় আছেন। দাদা ভগবান’কে আমিও নমস্কার করি।” Page #7 -------------------------------------------------------------------------- ________________ সম্পাদকীয় নিজের কোন ভুল ছাড়াই যখন ভুগতে হয় তখন হৃদয় দ্রবিত হয়ে বারংবার বলে যে এতে আমার কি ভুল ? এতে আমি কি অন্যায় করেছি ? তবুও উত্তর আসে না ; তখন নিজের অন্তরের উকিল ওকালত শুরু করে দেয় যে আমার এতে কোন ভুল নেই। এ সামনের ব্যক্তির ভুল নয় কি ? শেষে এমনই ধারণা করিয়ে দেয়, জাস্টিফাই করিয়ে দেয় যে ও যদি এরকম না করতাে তাে তাহলে আমার এরকম খারাপ করার বা বলার কি দরকার ছিল ? এইভাবে নিজের ভুল ঢাকে আর সামনের ব্যক্তির-ই ভুল, এরকম প্রমাণ করে দেয়। আর কর্মের পরম্পরা সৃজন করে। পরমপুজ্য দাদাশ্রী অত্যন্ত সাধারণ মানুষেরও সমাধান করে দেয় এরকম জীবনােপযােগী সূত্র দিয়েছেন যে ‘ভুগছে যেতার ভুল। এই জগতে ভুল কার ? চোরের না কি যার চুরি হয়েছে তার ? এই দুজনের মধ্যে ভুগছে কে ? যার চুরি গেছে সেই তাে ভুগছে! যে ভুগছে তার ভুল ! চোরযখন ধরা পড়বে আর ভুগবে তখন তার ভুলের সাজা আসবে। আজ নিজের ভুলের সাজা পেয়েছে। নিজে ভুগছাে তাে পরে কাকে দোষ দেওয়ার থাকবে ? সামনের ব্যক্তিকে নির্দোষই দেখবে। নিজের হাত থেকে টি-সেট ভাঙলে কাকে বলবে ? আর চাকরের হাতে ভাঙে তাে ? এর মতই সব। ঘরে, ব্যবসায়ে, চাকরিতে সর্বত্রই ‘ভুল কার ?' খুঁজতে হয় তাে অনুসন্ধান করে দেখ ভুগছে কে?' তারই ভুল। যতক্ষণ ভুল আছে ততক্ষণ দুর্ভোগ আছে। যখন ভুল শেষ হয়ে যাবে তখন এই জগতের কোন ব্যক্তি, কোন সংযােগ তােমাকে ভােগাতে পারবেনা। প্রস্তুত সংকলনে দাদাশ্রী ‘ভুগছে যে তার ভুল’-এর বিজ্ঞান খুলে ধরেছেন। এরকম অমূল্য জ্ঞানসূত্র এতে আছে যা উপযােগে নিলে নিজের সমস্ত সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। ডাঃ নীরুবেহন অমিন-এর জয় সচ্চিদানন্দ Page #8 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল। প্রকৃতির ন্যায়ালয়ে .... এ জগতে ন্যায়াধীশ তাে জায়গায় জায়গায় রয়েছেন কিন্তু কর্মজগতে কুতী (প্রাকৃতিক) ন্যায়াধীশ তাে মাত্র একটাই। ভুগছে যে তার ভুল এই একটামাত্র ন্যায় আছে। এর দ্বারাই সমস্ত জগৎ চলছে আর ভ্রান্তির ন্যায় থেকে সমস্ত সংসার দাঁড়িয়ে আছে। | একটি ক্ষণের জন্যেও জগৎ নিয়মের বাইরে নয়। পুরস্কার যাকে | দেওয়ার তাকে পুরস্কার দিচ্ছে আর সাজা যাকে দেওয়ার তাকে সাজা দিচ্ছে। জগৎ নিয়ম-বহির্ভুত ভাবে চলেই না, নিয়মাধীন, সম্পূর্ণ ন্যায়পূর্বকই চলে। কিন্তু সাধারণের দৃষ্টিতে তা দেখা যায় না বলে বুঝতে পারে না। এই দৃষ্টি নির্মল হলে তখনই ন্যায় দেখতে পাবে। যতক্ষণ পৰ্য্যন্ত স্বার্থদৃষ্টি আছে ততক্ষণ পর্যন্ত ন্যায় কি করে দেখবে ? ব্রহ্মাণ্ডের স্বামীর দুর্ভোগ কেন ? এই সমগ্র জগৎ আমাদের অধিকারে আছে। আমরা নিজেরা ব্রহ্মাণ্ডের মালিক। তৎসত্ত্বেও কেন আমাদের দুঃখভােগ করতে হচ্ছে তা খুঁজে বার করাে। এ তাে আমরা নিজের ভুলে বাঁধা পড়েছি। কোনাে লােক এসে বাঁধেনি। এই ভুল ভাঙলে তবেই মুক্ত হবে। আর বাস্তবে তাে মুক্ত-ই আছে কিন্তু ভুলের কারণে বন্ধন ভােগ করছে। নিজেই বিচারক, নিজে-ই অপরাধী আবার নিজেই উকিল, তাে ন্যায় কার পক্ষ নেবে ? নিজের-ই পক্ষ নেবে ? তারপর নিজের সুবিধামত ন্যায়-ইতাে করে! নিজে নিরন্তর ভুল-ইকরতে থাকে। এইভাবেই জীব বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ভিতরের ন্যায়াধীশ বলেন যে তােমার ভুল হয়েছে। তাে ভিতরের উকিল ওকালত করে যে এতে আমার দোষ কোথায় ? এরকম করে নিজেই বন্ধনে আসে। নিজের আত্মহিতের জন্য জেনে নেওয়া চাই যে কার দোষে বন্ধন। যে ভুগছে তার-ই দোষ। দেখতে গেলে চলতি Page #9 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল ভাষাতে অন্যায়, কিন্তু ভগবানের ভাষাতে ন্যায় তাে এটাই বলে যে, ‘ভুগছে। যে তার ভুল। এই ন্যায়ে তাে বাইরের ন্যায়াধীশের কোনও কাজ-ই নেই। জগতের বাস্তবিকতার রহস্যজ্ঞান লােকেদের জানা নেই আর যার কারণে ঘুরে মরতে হয় সেই অজ্ঞান-জ্ঞান সবাই জানে। এই যে পকেটমার হলাে এতে ভুল কার ? এর পকেট থেকে গেলাে না আর তােমার কেন গেল ? তােমাদের দুজনের মধ্যে আজকে কে ভুগছে ? ‘যে ভুগছে তার ভুল!' দাদা এই জ্ঞানে ‘যেমনটি তেমন’ দেখেছেন যে ভুগছে তার-ই ভুল। সহ্য করা না সমাধান করা ? লােকে সহ্যশক্তি বাড়াতে বলে কিন্তু তা কতটা পৰ্য্যন্ত থাকবে ? জ্ঞানের রশি তাে শেষ পর্যন্ত পৌঁছাবে। সহ্যশক্তির রশি কতদূর পৌঁছাবে ? সহ্যশক্তির লিমিট আছে, কিন্তু জ্ঞান আনলিমিটেড। এই জ্ঞান-ই এমন যে কিঞ্চিৎমাত্র সহ্য করতে হয় না। সহ্য করা তাে লােহাকে দৃষ্টি দ্বারা গলানাে। তার জন্যে শক্তি চাই। কিন্তু জ্ঞানে কিঞ্চিৎমাত্র সহ্য না করেও পরমানন্দের সাথে মুক্তি! পরে বুঝতে পারে যে এতাে হিসাব পুরাে হচ্ছে। আর মুক্ত হচ্ছে। যে দুঃখ ভােগ করছে তা তার ভুল আর সুখ ভােগ করছে তাে সেটা তার পুরস্কার। কিন্তু ভ্রান্তির আইন নিমিত্তকে ধরে। ভগবানের আইন রিয়াল আইন, তা যার ভুল তাকেই ধরে। এই আইন একদম সঠিক, এতে কোনাে পরিবর্তন কেউ করতে পারে না। জগতে এরকম কোনাে আইন নেই যা কাউকে দুর্ভোগ দিতে পারে! সরকারী আইনও দুর্ভোগ দিতে পারে না। এই চায়ের কাপ তােমার হাতে ভাঙলে তােমার দুঃখ হয় ? নিজে ভাঙলে সেখানে তােমাকে সহ্য করতে হয় ? আর যদি তােমার ছেলের হাত থেকে ভাঙে তাে দুঃখ, চিন্তা আর ক্লেশ হয়। নিজের ভুলেরই এই হিসাব এটা যদি বুঝতে পারা যায় তাে দুঃখ অথবা চিন্তা হয় কি ? এ তাে পরের Page #10 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল দোষ বের করে দুঃখ আর চিন্তা খাড়া করছে আর দিন-রাত নিখাদ জ্বলনে জ্বলছে আবার তার উপর নিজের এরকম মনে হয় যে আমাকে অনেক সহ্য করতে হচ্ছে। নিজের কিছু ভুল আছে বলেই না সামনের ব্যক্তি বলছে ? সেইজন্যে ভুল ভেঙে নাওনা! এই জগৎ এমনই স্বতন্ত্র যে কোন জীব অন্য জীবকে কষ্ট দিতে পারে না আর যদি কষ্ট দিচ্ছে তাে আগে গণ্ডগােল করেছিল সেইজন্যে। সেই ভুল থেকে বেরিয়ে এসে পরে আর হিসাব থাকবে না। প্রশ্নকর্তা : এই থিয়ােরি ঠিকমত বুঝতে পারলে মনের সমস্ত প্রশ্নের সমাধান পাওয়া যায়। দাদাশ্রী : সমাধান নয়, এজ্যাক্ট এইরকমই হয়। এ কিছু তৈরী করা নয়, বুদ্ধিপূর্বক বলা কথা নয়, এ জ্ঞানের কথা। | আজ কে দোষী—লুটেরা অথবা যাকে লুটেছে ? | খবরের কাগজে রােজ পড়া যায় যে, আজ ট্যাক্সিতে দুজন লােক কারাের সব লুটে নিয়েছে, অমুক ফ্ল্যাটে কোনাে মহিলাকে বেঁধে লুটপাট করেছে। এ পড়ে তােমার ভয় পাওয়ার দরকার নেই যে আমারও যদি লুটে নেয় তাে ? এরকম চিন্তাই ভুল। এর বদলে তুমি তােমার মত সহজভাবে ঘােরাে না ! তােমার হিসাব থাকলে তবেই লুটে নিয়ে যাবে, নয়তাে কোনও বাবাও জিজ্ঞেস করবে না। সুতরাং তুমি নির্ভয়ে থাকো। এই খবরের কাগজওয়ালারা তাে লিখবে, তাতে কি আমরা ভয় পাব ? এ তাে ভাল যে ডাইভাের্স খুব কম হয়, যদি বেশীমাত্রায় হতে শুরু করে তাে সবারই শঙ্কা হতে থাকবে যে আমারও যদি ডাইভাের্স হয় তাে ? যেখানে এক লাখ লােকের থেকে লুট হয়েছে সেখানেও তােমার ভয়ের কিছু নেই। কোনও বাপ-ও তােমার উপরে নেই। লুটেরা ভুগছে কি যার লুট হয়েছে সে ভুগছে ? কে ভুগছে সেটা দেখে নেবে। লুটেরা এসে লুটে নিলে কান্নাকাটি করবে না, প্রগতির পথে এগিয়ে যাবে। Page #11 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল জগৎ দুঃখ ভােগ করার জন্য নয়, সুখ ভােগ করার জন্য। যার যেটুকু হিসাব আছে সেটুকুই হয়। কতজন তাে শুধু সুখই ভােগ করে, তাই বা কি থেকে ? নিজেই এরকম হিসাব নিয়ে এসেছে সেইজন্যে। | ‘ভুগছে যে তার ভুল' – এই একটা বাক্যই যদি ঘরে লিখে রাখাে তাে দুর্ভোগের সময় জানবে যে ভুল কার ? সেইজন্যে অনেক বাড়ীতে বড় বড় অক্ষরে দেওয়ালে লিখে রেখেছে ‘ভুগছে যে তার ভুল’! এর পরে আর একথা ভুলবেনা।। যদি কেউ সারা জীবন এই শব্দ যথার্থভাবে বুঝে ব্যবহার করে তাে গুরু করার প্রয়ােজন নেই আর এই সূত্রই তাকে মােক্ষে নিয়ে যাবে।। এ অদ্ভুত ওয়েল্ডিং হয়েছে! ‘ভুগছে যে তার ভুল’ এ খুব বড় সূত্র। সংযােগানুসারে কালের হিসাবে শব্দের ওয়েল্ডিং হয়। ওয়েল্ডিং না হলে তাে কাজেই আসবে না ! ওয়েল্ডিং হওয়া প্রয়ােজন। এই শব্দ ওয়েল্ডিং হয়ে এসেছে। এত বেশী সারবস্তু এতে আছে যে এর উপরে একটা বড় বই লেখা যায়। এক ‘ভুগছে যে তার ভুল’ এটুকুই যদি বলি তাে একদিকের পাজল সমাধান হয়ে যায় আর দ্বিতীয় ব্যবস্থিত’ যদি বলি তাে অন্যদিকের পাজল-এরও সমাধান হয়। নিজেকে যে দুঃখ ভােগ করতে হচ্ছে তা নিজেরই দোষ; অন্যকারাের দোষনয়। যে দুঃখ দিচ্ছে তার ভুলনয়। যে দুঃখ দিচ্ছে সংসারে তার ভুল বলে আর ভগবানের নীতিতে যে ভুগছে। তার ভুল। প্রশ্নকর্তা : দুঃখ যে দিচ্ছে তাকে তাে ভুগতে হবেই ? দাদাশ্রী : পরে যখন সে ভুগবে তখন তার ভুল ধরা হবে কিন্তু আজ তাে তােমার ভুল ধরা পড়েছে। Page #12 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল ৫ ভুল, বাবার না ছেলের ? একজন লোকের ছেলে রাত দু'টোর সময় ঘরে ফিরত। সে তো পঞ্চাশ লাখের পার্টি। বাবা রাস্তা দেখতে থাকতো যে ছেলে ফিরলো কি ফিরলো না। আর সে আসে তো টলতে টলতে ঘরে ঢোকে। বাবা পাঁচসাতবার বোঝানোর চেষ্টা করেছিল, ছেলে শুনিয়ে দিয়েছে। এইভাবেই চলছিল। পরে আমার মত কেউ বলে যে ‘ঝঞ্ঝাট ছাড়ো না। ওকে পড়ে থাকতে দাও ৷ তুমি তোমারমত একান্তে শুয়ে পড়ো। তখন বলে, ‘ছেলেটা তো আমার'! নাও, মনে হচ্ছে যেন এর গর্ভেই জন্ম নিয়েছে। ছেলে তো এসে শুয়ে পড়ে। পরে আমি বাবাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ছেলে তো ঘুমিয়ে পড়েছে, তুমি ঘুমোচ্ছ কি না ?' তাতে বললো, ‘আমার কি করে ঘুম আসবে ? এই মোষটা তো মদ খেয়ে আসে আর শুয়ে পড়ে, আমি তো আর মোষ নই।' আমি বললাম, ‘ও তো সেয়ানা হয়েছে।' আর দ্যাখো, এই সেয়ানা দুঃখ পাচ্ছে । আমি তাকে আবার বললাম, ‘ভুগছে যে তার ভুল', ছেলে ভুগছে না তুমি ভুগছো ?' তখন বললো, ‘এ’ তো আমিই ভুগছি, সারা রাত জেগে থাকা....।' আমি বললাম, ‘এর ভুল নয়, এ তোমারই ভুল। তুমি পূর্বজন্মে একে ফুসলিয়ে নষ্ট করেছিল, তার ফল এটা হয়েছে। তুমি একে নষ্ট করেছিলে তো সেই জিনিষই তোমাকে ফেরত দিতে এসেছে।' অন্য তিন ছেলে ভাল তো তুমি কেন এদের আনন্দ নিচ্ছ না ? সমস্ত কিছুই নিজের তৈরী করা মুস্কিল। এই জগৎটা বোঝা দরকার ! এই বৃদ্ধের বিগড়ে যাওয়া ছেলেকে আমি একদিন জিজ্ঞাসা করলাম, ‘তোর বাবা এত দুঃখ পাচ্ছে তো তোর কিছু দুঃখ হয় না ?' ছেলেটা বললো, ‘আমার কিসের দুঃখ? বাবা পয়সা জমিয়ে বসে আছে তো আমার চিন্তা কিসের ? আমি তো মজা করছি।' তাহলে বাপ-বেটার মধ্যে ভুগছে কে ? বাবা। সেইজন্যে বাবারই ভুল। ভুগছে যে তার ভুল। এই ছেলেটা জুয়া খেলে, যা খুশী করতে Page #13 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল থাকে, তবুও এর ভাইরা তাে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ে। এর মা-ও তাে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ে! আর এই অভাগা বৃদ্ধই একা জাগে। সেইজন্যে এরই ভুল। এর কি ভুল ? তাতে বলা যায় যে পূর্বজন্মে এই বৃদ্ধ এই ছেলেটিকে নষ্ট করেছিল। তাে পূর্বজন্মে এরকম ঋণানুবন্ধ হয়ে গেছে। বলে বৃদ্ধকে আজ ভুগতে হচ্ছে আর ছেলেটি যখন দুর্ভোগে পড়বে তখন তার ভুল ধরা পড়বে। দুজনের মধ্যে কে দুঃখ পাচ্ছে ? যে দুঃখ পাচ্ছে। তার-ই ভুল। এইটুকু নিয়ম যদি কেউ বুঝে যায় তাে সমগ্র মােক্ষমার্গ খুলে যায়। | পরে ওই বৃদ্ধকে বললাম যে এখন এ যাতে ভালাে হয়ে চলে তার | চেষ্টা করতে থাকো। এর কি করলে ভালাে হয়, লােকসান না হয় তা | দেখতে হবে। মানসিক দিক থেকে কষ্ট দেবে না। শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করাবে। তােমার কাছে পয়সা থাকে তাে দেবে, কিন্তু মনে দুঃখী হবে না। নয়তাে আমাদের এখানে নিয়ম কি ? ভুগছে যে তার ভুল। ছেলে মদ খেয়ে এসে আরামে ঘুমােচ্ছে আর তােমার সারারাত ঘুম আসে না। তারপরে আমাকে বলছাে এ মােষের মত শুয়ে আছে আর আমার ঘুম আসে না। আমি তাে বলবাে আরে, তুমি ভুগছাে তাে ভুল তােমারই। পরে এ যখন ভুগবে, তখন এর ভুল। প্রশ্নকর্তা: মা-বাবা ভুলের জন্য ভুগছে তা তাে মমতা আরদায়িত্বের কারণেই ভুগছে, না কি ? দাদাশ্রী : শুধু মমতা আর দায়িত্বই নয়, মুখ্য কারণ এদের ভুল। মমতা ছাড়াও অন্য অনেক কজেজ হয়, কিন্তু তুমি যখন ভুগছাে তখন ভুল তােমারই। সেইজন্য কারাের দোষ বের করবেনা, নয়তাে ফের সামনের জন্মের হিসাব বাঁধবে। অর্থাৎ এই দুইয়ের নিয়ম আলাদা। প্রকৃতির নিয়ম মানলে তােমার রাস্তা সুগম হয়ে যাবে, আর সরকারের নিয়মকে মান্যতা দিলে সমস্যা হবে। প্রশ্নকর্তা: কিন্তু দাদা, একে নিজের ভুল তাে বুঝতে হবে ? Page #14 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল দাদাশ্রী : না, নিজে দেখতে পাবেনা। দেখিয়ে দেওয়ার জন্যে কাউকে চাই। তার প্রতি বিশ্বাস আছে এরকম হওয়া চাই। একবার ভুল দেখতে পেলে দু-তিনবারে অনুভবে এসে যাবে। ৭ সেইজন্যেই তো আমি বলেছি যে যদি বুঝতে না পারো তো ঘরে এইটুকু লিখে রাখো, ‘যে ভুগছে তার ভুল'। তোমার শাশুড়ী তোমাকে খুব কষ্ট দিচ্ছে, রাতে ঘুম আসছে না; অথচ শাশুড়ীকে দেখতে যাও তো সে ঘুমিয়ে গেছে, নাক ডাকিয়ে ঘুমাচ্ছে; এর থেকে কি বুঝতে পারছ না যে এ তোমার ভুল। শাশুড়ী তো নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়েছে। ভুগছে যে তার ভুল। এই কথাটা তোমার পছন্দ হলো কি হলো না ? তো ভুগছে যে তার ভুল, এটুকুই যদি কেউ বুঝে যায় তো ঘরে একটাও ঝগড়া হবে না । প্রথমে তো জীবনে বাঁচতে শেখো। ঘরে ঝগড়া কম হলে তারপরে অন্য কিছু শিখবে। সামনের ব্যক্তি যদি না বোঝে তো ? প্রশ্নকর্তা : কতজন এমন হয় যে আমি যত ভাল ব্যবহারই করি না কেন, তবুও তারা বোঝে না। দাদাশ্রী : সে যদি না বোঝে তো সেটা আমারই ভুল যে সমঝদার লোক কেন পাই নি ? এর সংযোগ-ই বা আমার কেন হল ? যখনই আমাকে কিছুমাত্র দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তা আমারই ভুলের পরিণাম । প্রশ্নকর্তা : তাহলে কি আমাকে এটাই বুঝতে হবে যে আমার কর্মই এরকম ? দাদাশ্রী : অবশ্যই। নিজের ভুল না থাকলে আমাকে ভুগতে হতো না। এই জগতে এমন কেউ নেই যে আমাকে সামান্যতম দুঃখও দিতে পারে, আর যদি কেউ দুঃখ দেওয়ার থাকে তো তা নিজেরই ভুলের কারণে। সামনের ব্যক্তির দোষ নেই, সে তো নিমিত্তমাত্র। ‘ভুগছে যে তার ভুল'। Page #15 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল স্বামী-স্ত্রী নিজেদের মধ্যে খুব ঝগড়া করে শুয়ে পড়ার পর যদি তুমি চুপিচুপি দেখতে যাও আর দ্যাখাে যে স্ত্রী গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন অথচ স্বামী এপাশ-ওপাশ করছে তাে বুঝবে যে সব ভুল স্বামীরই। স্ত্রী তাে কষ্ট পাচ্ছে না। যার ভুল সেই ভােগে। আর যদি সে সময় স্বামী ঘুমাচ্ছে আর স্ত্রী জেগে আছে তাে জানবে | যে ভুল স্ত্রী-র। ‘ভুগছে যে তার ভুল’, এ এক গভীর ‘সায়েন্স’। সমগ্র জগৎ তাে নিমিত্তকেই কামড়াতে যায়। এর ন্যায় কি ? এই জগৎ নিয়মের অধীনে চলছে, এ কোন গল্পকথা নয়। এর ‘রেগুলেটর অফ দি ওয়ার্ল্ড’-ও আছে যা নিরন্তর এই ওয়ার্ল্ডকে। রেগুলেশনে রাখছে। বাসস্ট্যাণ্ডে কোন মহিলা দাঁড়িয়ে আছে ; এখন বাসস্ট্যাণ্ডে দাঁড়িয়ে থাকা কি দোষ ? ইতিমধ্যে সাইড থেকে একটা বাসস্ট্যাণ্ডের ওপরে উঠে গেল কারণ ড্রাইভার স্টীয়ারিং -এর উপর কন্ট্রোল রাখতে পারেনি আর সেই মহিলাকে চাপা দিল এবং বাসস্ট্যাণ্ডও ভেঙে ফেললাে। পাঁচশ’ লােক সেখানে জড়াে হয়ে গেল। এখন এই লােকেদের যদি বলা হয় যে এর ন্যায়বিচার করাে তাে তারা বলবে এই মহিলা বেচারা বিনা দোষে মারা গেলাে। এতে এই মহিলার কি দোষ ছিল ? এই ড্রাইভারই অপদার্থ। তার পরে চার-পাঁচজন বুদ্ধিমান মিলে বলতে থাকলাে, এই বাস ড্রাইভার কিরকম, এসব লােককে তাে জেলে পাঠানাে দরকার, এই করা উচিৎ, ওই করা উচিৎ। বেচারী মহিলা তাে বাসস্ট্যাণ্ডে দাঁড়িয়ে ছিল, তার কি দোষ ? আরে, তােমরা এর দোষ জান না, দোষ ছিলাে তাই তাে মারা পড়লাে। আর এই ড্রাইভারের দোষ যখন এ ধরা পড়বে তখন হবে। এখন তাে ওর কেস চলবে আর কেসে যদি দোষী প্রমাণিত হয় তাে হল নয়তাে নির্দোষ বলে ছেড়ে দেবে। এই মহিলার ভুল আজ ধরা পড়ে গেছে। আরে, হিসাব ছাড়া কি কেউ মারতে পারে ? মহিলা তার আগের হিসাব Page #16 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল পুরো করলো। বুঝে নেবে ওই মহিলাকে ভুগতে হলো সেটা তার ভুল । পরে যদি ওই ড্রাইভার ধরা পড়ে তখন তার ভুল। আজ যে ধরা পড়েছে সেই দোষী । ৯ আবার কতজন তো এমনও বলে, ‘ভগবান থাকলে এমন হতো না । সেইজন্যে ভগবান বলে কোন বস্তু এই সংসারে আছে বলে মনে হয় না ! এই মহিলার কি দোষ ছিল ? এই দুনিয়াতে এখন আর ভগবান নেই ! নাও!! এরা এরকম সারাংশ বের করলো ! আরে, এতে কার ভালো ? ভগবানকে কি জন্যে বদনাম করছো ? কি জন্যে তাঁর ঘর খালি করছো ? ভগবানের ঘর খালি করাতে বেরিয়ে পড়েছেন! আরে ভাই, ভগবান যদি না থাকেন তো এই জগতে রইলো কি ? এরা ভাবছে যে ভগবানের হাতে ক্ষমতা নেই। এতে ভগবানের উপর থেকে আস্থা চলে যায়। এরকম নয় এ সমস্ত হিসাব চলে আসছে। এ তো একজন্মের হিসাব নয়। আজ এই মহিলার ভুল ধরা পড়াতে তাকে ভুগতে হলো। এ সমস্ত ন্যায়ই হয়েছে। এই মহিলা যে পিষে গেলো তাও ন্যায়। এই জগৎ নিয়মপূর্বক চলে। সংক্ষেপে এইটুকু কথাই বলার । যদি এই ড্রাইভারের ভুল হতো, তো সরকারের কঠোর নিয়ম হতো, এত কঠোর যে ওই ড্রাইভারকে যেখানে আছে সেখানেই দাঁড় করিয়ে গুলি করে মেরে ফেলতো। কিন্তু এ তো সরকারও করে না কারণ এভাবে হত্যা করতে পারে না। সত্যি সত্যিই এ দোষী নয়। ও নতুন দোষ খাড়া করেছে, সেই দোষ যখন ভুগবে তখন কিন্তু এখন তো ও তোমাকে দোষ থেকে মুক্ত করেছে। তুমি দোষমুক্ত হয়েছো। ও দোষে বাঁধা পড়লো। সেইজন্য আমি সদ্ধি দিতে বলি যে দোষ করে বাঁধা পড়ো না ৷ অ্যাক্সিডেন্ট অর্থাৎ ... এই কলিযুগে অ্যাক্সিডেন্ট (দুর্ঘটনা) আর ইন্সিডেন্ট (ঘটনা) এমন হয় যে মানুষ অস্থির হয়ে পড়ে। অ্যাক্সিডেন্ট মানে কি ? ‘টু মেনি কজেজ Page #17 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল ১০ অ্যাট এ টাইম' (অসংখ্য কারণ একই সময়ে) আর ইন্সিডেন্ট মানে কি ? ‘সাে মেনি কজেজ অ্যাট এ টাইম’ (অনেক কারণ এই সময়ে) সেইজন্যেই আমি বলি ‘ভুগছে যে তার ভুল’ আর অন্যজন যখন ধরা পড়বে তখন সে তার ভুল বুঝতে পারবে। এ তাে যে ধরা পড়েছে তাকে চোর বলে। যেমন অফিসে একজন ধরা পড়লাে তাে তাকে চোর বলে কিন্তু অফিসে কি আর কেউ চোর নয় ? প্রশ্নকর্তা : সবাই আছে। | দাদাশ্রী : যতক্ষণ ধরা পড়ে নি ততক্ষণ মহাজন। প্রকৃতির ন্যায়কে তাে কেউ জাহির করেই নি। খুবই সরল আর সঠিক । সেইজন্যে তাে সমাধান চলে আসে! ‘শর্টকাট !’ ‘ভুগছে যে তার ভুল’, এই একটি বাক্য বুঝতে পারলেই সংসারের অনেক বােঝা হাল্কা হয়ে যায়। ভগবানের নিয়ম তাে এই বলছে, যে ক্ষেত্রে, যে কালে, যে ভুগছে। সে নিজেই দোষী। এতে অন্য কাউকে এমনকি উকিলকেও জিজ্ঞাসা করার প্রয়ােজন নেই। কারাের পকেট কাটা গেলে তা তাে পকেটমারের জন্যে আনন্দের কথা, সে হয়তাে জিলিপী খাচ্ছে, হােটেলে চা-জলখাবার খাচ্ছে আর ঠিক সেই সময়ে যার পকেট কাটা গেছে সে কষ্টভােগ করছে। সেইজন্যে যে ভুগছে তারই ভুল। এ আগে কখনও চুরি করেছে তাই আজ ধরা পড়েছে আর পকেটমার যেদিন ধরা পড়বে সেদিন তাকে চোর বলবে।। | আমি কখনও তােমার ভুল খুঁজতে যাব না। সমস্ত জগৎ সামনের ব্যক্তির ভুল দেখছে। ভুগছে নিজে, কিন্তু ভুল অন্যের দেখছে। এতে উল্টে দোষ দ্বিগুণ হয়ে যায় আর ব্যবহারে সমস্যাও বেড়ে যায়। এই কথা বুঝে নিলে সমস্যা কম হতে থাকবে। মােরবীর বন্যা, কি কারণ ? মােরবী শহরে যে বন্যা হয়েছিল আর তাতে যা কিছু ঘটেছিল, সে সব কে করেছিল ? তা একটু খুঁজে বের করাে। কে করেছিল সে সব ? Page #18 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল সেইজন্যে একটা শব্দ-ই আমি লিখেছি যে এই জগতে ভুল কার ? নিজের বোঝার জন্যেই একই বস্তুকে দুদিক থেকে বুঝতে হবে। যে কষ্ট পাচ্ছে তাকে ‘ভুগছে যে তার ভুল’– এইভাবে বুঝতে হবে আর যে দেখছে তাকে, ‘আমি একে সাহায্য করতে পারছি না, আমার সাহায্য করা উচিৎ' –এইভাবে দেখতে হবে। ১১ এই জগতের নিয়ম এমন যে যা চোখে দেখতে পায় তাকে ভুল বলে আর প্রকৃতির নিয়ম এরকম যে ভুগছে ভুল তারই। প্রভাব পড়ে সেখানে .... জ্ঞান না বুদ্ধি ? প্রশ্নকর্তা : খবরের কাগজে যখন পড়ি যে ঔরঙ্গাবাদে এরকম হয়েছে আর মোরবীতে অমুক হয়েছে তো আমার উপর এর প্রভাব পড়ে। পড়ার পরে যদি কোনরকম প্রভাব না পড়ে তো তাকে কি জড়তা বলে ? দাদাশ্রী : প্রভাব যদি না পড়ে তো তার-ই নাম জ্ঞান। প্রশ্নকর্তা : আর প্রভাব পড়লে তাকে কি বলে ? দাদাশ্রী : তাকে বুদ্ধি বলে, অর্থাৎ সংসার বলে। বুদ্ধিতে ইমোশনাল হয় কিন্তু কিছুই করে না ৷ এখানে লড়াইয়ের সময় পাকিস্তান থেকে বোমা ফেলতে আসতো । আমাদের লোকেরা ওখানে বোমা পড়েছে এ কথা কাগজে পড়ে এখানে ভয় পেয়ে যেত। এইসব যে প্রভাব পড়ে তা বুদ্ধির কারণে, আর বুদ্ধিই এই সংসারকে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। জ্ঞান প্রভাবমুক্ত রাখে। কাগজ পড়ে কিন্তু তবুও প্রভাবমুক্ত থাকে। প্রভাবমুক্ত মানে আমাকে স্পর্শ করে না। আমার কাজ তো দেখা আর জানা। এই খবরের কাগজের কি করবে ? জানবে আর দেখবে, ব্যস্। জানা অর্থাৎ যার বিশদ বিবরণ লেখা হয়েছে তাকে জানা বলে আর বিশদ বিবরণ না হলে তাকে দেখা বলে। এতে কারোর কোনও দোষ নেই ৷ প্রশ্নকর্তা : কালের দোষ তো আছে ? Page #19 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল দাদাশ্রী : কালের কি দোষ ? ভুগছে যে তার ভুল। কাল তো ঘুরতেই থাকবে! কোন ভাল সময়ে তুমি ছিলে না কি ? চব্বিশ তীর্থঙ্কর যখন ছিলেন তখন কি তুমি ছিলে না ? প্রশ্নকর্তা : ছিলাম। ১২ দাদাশ্রী : তো সেই দিনে তুমি চাটনি খাওয়ার জন্যে পড়ে ছিলে। এতে কাল বেচারা কি করবে ? কাল তো নিজে থেকে আসতেই থাকবে ! দিনে কাজ না করলেও রাত আসবে কিনা ? প্রশ্নকর্তা : হ্যাঁ । দাদাশ্রী : পরে রাত দু'টোর সময় ছোলা কিনতে বেরোলে দ্বিগুণ দাম দিলেও কেউ দেবে কি ? লোকেদের মনে হয়, এ উল্টো ন্যায় এখন এক সাইকেল আরোহী ঠিক রাস্তায় যাচ্ছে আর একজন স্কুটারে চড়ে রং-ওয়ে (ভুল রাস্তা) দিয়ে এসে ধাক্কা মেরে তার পা ভেঙে দিল । দুর্ভোগ কার হলো ? প্রশ্নকর্তা : সাইকেল সওয়ারীর, যার পা ভাঙল তার। দাদাশ্রী : হ্যাঁ, এই দুজনের মধ্যে আজকে কে ভুগছে ? তখন বলবে, ‘যার পা ভেঙেছে সে।' আর আজ এই স্কুটারওয়ালার নিমিত্তে আগেকার হিসাব পুরো হলো। স্কুটারওয়ালার আজকে কোন কষ্ট নেই। এ তো যখন ধরা পড়বে তখন এর দোষ জানা যাবে। সেইজন্যে যে ভুগছে তার ভুল। প্রশ্নকর্তা : যার চোট লাগলো, তার কি দোষ ? দাদাশ্রী : তার দোষ, তার পূর্বের হিসাব, যা আজ শোধ হলো । হিসাব ছাড়া কেউ কোনরকম দুঃখ পায় না। হিসাব পুরো না হলে দুঃখ আসে। এ’তো এর হিসাব এসেছিল বলে ধরা পড়লো, নয়তো এত বড় দুনিয়াতে অন্য কেউ ধরা পড়লো না কেন ? তুমি কেন নির্ভয়ে ঘুরে Page #20 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল বেড়াচ্ছাে ? তাতে বলবে, “নিজের হিসাবে থাকলে হবে, আর হিসাবে না থাকলে কি হবে ?' লােকে এরকম বলে কি না ? প্রশ্নকর্তা : ভুগতে না হয় যাতে, তার জন্যে উপায় কি ? দাদাশ্রী : মােক্ষে যাওয়া। কাউকে কিঞ্চিৎমাত্র দুঃখ না দিলে আর কেউ দুঃখ দিলে তা জমা করে নিলে তােমার হিসাব-নিকাশ পুরাে হয়ে যাবে। কাউকে নতুন করে কিছু দেবে না, নতুন ব্যবসা শুরু করবেনা আর পুরানাে কিছু থাকলে তা গুটিয়ে নেবে, তাহলেই চুকেবুকে যাবে। প্রশ্নকর্তা : তাে যার পা ভাঙলাে সে এরকম মনে করে নেবে যে আমার-ই ভুল, সেইজন্যে সে স্কুটারওয়ালার বিরুদ্ধে আর কিছু করবে ? দাদাশ্রী: কিছু করবেনা এমননয়। আমি বলতে চাইছি যে মানসিক পরিণাম যেন না বদলায়। ব্যবহারে যা হচ্ছে তা দাও কিন্তু মনের মধ্যে রাগ-দ্বেষ যেন না হয়। যে আমার ভুল’ এরকম বুঝতে পারে তার রাগদ্বেষ হয় না। ব্যবহারে যদি পুলিশবলে যেনাম লেখাও তাে লেখাতে হবে। ব্যবহার সব পুরাে করবে কিন্তু নাটকীয়, ড্রামাটিকভাবে, রাগ-দ্বেষ করবেনা। আমি যদি আমারই ভুল এটা বুঝতে পারি তাে স্কুটারওয়ালা বেচারার কি দোষ ? এই জগৎ তাে খােলা চোখে দেখছে সেইজন্যে প্রমাণ তাে দিতে হবে কিন্তু স্কুটারওয়ালার প্রতি রাগ-দ্বেষ যেন না হয়। কারণ এর কোন ভুল-ই নেই; তুমি এরকম আরােপ করছাে যে এর ভুল’, এ তােমার দৃষ্টিতে অন্যায় দেখাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে তােমার দৃষ্টিভঙ্গীতে পার্থক্য হওয়াতে অন্যায় বলে মনে হচ্ছে। প্রশ্নকর্তা: ঠিক আছে। দাদাশ্রী : কেউ তােমাকে দুঃখ দিচ্ছে তা এর ভুল নয় কিন্তু তুমি যে দুঃখ পাচ্ছাে তা তােমারই ভুল। এ প্রকৃতির নিয়ম। আর জগতের নিয়ম কি ? যে দুঃখ দিচ্ছে তার ভুল। Page #21 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল | এই সূক্ষ্ম কথা বুঝতে পারলে তবেই স্পষ্টীকরণ হয় আর তাহলেই মানুষের সমাধান আসে। উপকারী, কর্ম থেকে যে মুক্ত করে বধূর মনে এরকম প্রভাব পড়ে যে আমার শাশুড়ী আমাকে খুব কষ্ট দিচ্ছে। এই কথা দিন-রাত মনে থাকে না ভুলে যায় ? প্রশ্নকর্তা : মনে থাকে। দাদাশ্রী : দিন-রাত মনে থাকে সেইজন্যে পরে শরীরের উপর এর প্রভাব পড়ে। তাই অন্য কোন ভাল বস্তুও সে দেখতে পায়না। সেইজন্যে আমি তাকে এটাই বােঝাই যে, ওর শাশুড়ী ভালাে, তার শাশুড়ী ভালাে আর তুমি কেন এরকম পেলে ? এ তােমার আগের জন্মের হিসাব, এ চুকিয়ে দাও। কেমন করে হিসাব চুকানাে তাও বলে দিই, যাতে ও সুখী হয়। কারণ এর শাশুড়ী দোষীনয়, ভুগছে যে তার ভুল। অর্থাৎ, সামনের ব্যক্তির দোষ নেই। জগতে কারাের দোষ নেই। যে দোষ বের করছে দোষ তার-ই। জগতে কেউ দোষী নেই-ই। সব নিজের নিজের কর্মের উদয়ে চলছে। যে ভুগছে তা আজকের ভুল নয়। পূর্বজন্মের কর্মের ফলস্বরূপ এ সমস্ত হচ্ছে। আজ তাে এর পশ্চাতাপ হচ্ছে কিন্তু আগের যে কন্ট্রাক্ট হয়ে গেছে তার কি ? সে তাে পুরাে না করে মুক্তি নেই। | এই জগতে যদি তােমার কখনও কারাের ভুল খুঁজে বের করতে হয় তাে যে ভুগছে তার-ই ভুল। পুত্রবধূ শাশুড়িকে দুঃখ দিচ্ছে অথবা শাশুড়ি পুত্রবধূকে তাে এতে ভুগছে কে ? শাশুড়ি। তাে ভুল শাশুড়ির। শাশুড়ি যদি পুত্রবধূকে দুঃখ দিচ্ছে তাে পুত্রবধূকে এটুকু বুঝে নিতে হবে যে ‘ভুল আমারই'। দাদার জ্ঞানের আধারে বুঝে নিতে হবে যে ভুগছে তার ভুল। এই হিসাব আমাকে চুকিয়ে দিতে হবে। শাশুড়ি পুত্রবধূকে বকাবকি করছে তবুও যদি বৌ সুখী থাকে Page #22 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল আর শাশুড়ি কষ্ট পায় তাে শাশুড়ির-ই ভূল বলতে হবে। ভাসুর-এর স্ত্রীকে খুঁচিয়ে যদি তুমি ভােগাে তাে তা তােমারই ভুল। আর কিছু না করা সত্ত্বেও সে যদি কষ্ট দেয় তাে তা পূর্বজন্মের যে হিসাব বাকী থেকে গিয়েছিল তা চুকাতে এসেছে। সেখানে তুমি আবার ভুল করবে না নয়তাে আবার ভুগতে হবে। সেইজন্যে মুক্তি পেতে হলে যা কিছু মিঠেকড়া (গালি ইত্যাদি) আসে তা জমা করে নাও। হিসাব চুকে যাবে। এই জগতে তাে হিসাব ছাড়া চোখের দেখাও হয় না তাে অন্যকিছু কি হিসাব ছাড়া হবে ? তুমি যাকে যাকে যেটুকু যেটুকু দিয়েছাে সেটুকু সেটুকুই তারা পরে তােমাকে ফেরৎ দিতে আসবে। তখন তুমি খুশী হয়ে তা জমা করে নেবে যে হ্যা, এখন আমার হিসাব পুরাে হবে। নয়তাে যদি ভুল করাে তাে আবার ভুগতেই হবে।। আমি ‘ভুগছে যে তার ভুল’ এই সূত্র প্রকাশ করেছি, লােকে তাকে খুব আশ্চৰ্য্য বলে মনে করছে যে এ তাে একদম সঠিক খোঁজ! গীয়ারে আটকেছে আঙ্গুল, কার ভুল ? যে কটুতা ভােগ করে সেই কর্তা। কর্তা, সেটাই বিকল্প। যে মেশিন তুমি নিজে বানিয়েছে আর যার গীয়ারে হুইল আছে তার মধ্যে তােমার আঙ্গুল ঢুকে গেলে তুমি যদি মেশিনকে লক্ষ বার বলাে যে, ‘ভাই, এ আমার আঙ্গুল, আমি নিজে তােমাকে বানিয়েছি, তাে তাতে কি এই গীয়ার-হুইল আঙ্গুল ছেড়ে দেবে ? ছাড়বে না। এতাে তােমাকে বুঝিয়ে দিচ্ছে যে ভাই, এতে আমার দোষ কোথায় ? ভুগছাে তুমি, সেইজন্যে ভুল তােমার ! এইরকম বাইরে সবকিছুই চলমান মেশিনারী মাত্র। এই সমস্ত লােক গীয়ার-ই শুধু। গীয়ার যদি না হতাে তাহলে পুরাে মুম্বাই শহরে কোন মহিলা তার স্বামীকে দুঃখ দিত না আর কোন স্বামী তার স্ত্রীকে দুঃখ দিত না। নিজের ঘরে সবাইকে সুখেই রাখত, কিন্তু এরকম হয় না। এই স্বামী-স্ত্রী, ছেলে-মেয়েরা সবাই মেশিনারী মাত্র, গীয়ার মাত্র। Page #23 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল পাহাড়কে কি কেউ পাথর মারে ? | প্রশ্নকর্তা: কেউ আমাকে যদি পাথরমারে আর তাতে চোট লাগে। তাে খুব উদ্বেগ হয়। দাদাশ্রী : চোট লাগলে উদ্বেগ হয়, নয় কি ? আর পাহাড় থেকে পাথর গড়াতে গড়াতে মাথার উপর পড়ে আর রক্ত বার হয় তাে ? প্রশ্নকর্তা: সেরকম পরিস্থিতিতে কর্মের অধীন আমার চোট লাগার ছিল তাই লেগেছে এমনটা মনে করে নিই। দাদাশ্রী : কিন্তু পাহাড়কে গালাগালি দাও না ? সেই সময় ক্রোধ করাে না ? | প্রশ্নকর্তা : এতে ক্রোধ করার কারণ নেই ? কেননা কে করেছে তা আমি জানি না। | দাদাশ্রী : সেখানে কি করে সমঝদার হয়ে যাও ? এই বিবেচনা সহজরূপে আসে কি আসে না ? এরকম এরা সবাই পাহাড়-ই। যারা সবসময় পাথর মারছে, গালি দিচ্ছে, চুরি করছে তার সবাই পাহাড়-ই, চেতন নয়। এটা বুঝতে পারলেই কাজ হবে। দোষী দেখাচ্ছে, তা তােমার মধ্যে ক্রোধ-মান-মায়া-লােভ দেখায়। যার ক্রোধ-মান-মায়া-লােভ নেই, তাকে দোষী দেখানাের কেউ নেই আর সে কাউকে দোষী দেখেও না। বাস্তবে কেউ দোষী নয়। এ তাে ক্রোধমান-মায়া-লােভ ভিতরে ঢুকে পড়েছে আর তা ‘আমি চন্দুভাই এরকম মেনে নেওয়াতে ঢুকেছে। আমি চন্দুভাই' – এই মান্যতা চলে গেলে ক্রোধ-মান-মায়া-লােভ চলে যায়। তা সত্ত্বেও ঘর খালি করতে কিছু সময় লাগে, কারণ বহুদিন ধরে ঢুকে বসে আছে না ! এ তাে সংস্কারী রীতি-নীতি প্রশ্নকর্তা : একে তাে নিজে দুঃখ পাচ্ছে আর তা নিজের ভুলের জন্য, তার উপর লােকজন অতি চালাক সেজে আসে আর বলে, 'আরে, Page #24 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল | ১৭ কি হয়েছে, কি হয়েছে ? কিন্তু এক্ষেত্রে এরকম বলা যায় কি যে এতে তার কি লেনা-দেনা ? ও তাে ওর ভুলের জন্য ভুগছে। তােমরা কেউ ওর দুঃখ নিয়ে নিতে পারবে না। দাদাশ্রী : আসলে এই যারা খোঁজ নিতে আসছে, দেখা করতে আসছে তারা সবাই নিজেদের উচ্চ পর্যায়ের সংস্কারের নিয়মের আধারে আসছে। এরা দেখতে আসছে মানে কি ? সেখানে গিয়ে তারা সেই মানুষটিকে জিজ্ঞাসা করে, ভাই, কেমন আছ, এখন তােমার কেমন লাগছে ? তাতে সে বলে, “এখন ভাল আছি। ওর এরকম মনে হয়, ‘ওহােহাে..., আমার এত ভ্যালু। কত লােক আমার সাথে দেখা করতে আসছে ! এতে নিজের দুঃখ ভুলে যায়। গুণ করা – ভাগ করা যােগ করা আর বিয়ােগ করা, এই দুটি ন্যাচারাল অ্যাডজাস্টমেন্ট আর গুণ করা – ভাগ করা, এটা মানুষ তার বুদ্ধি দ্বারা করছে। রাতে শুয়ে পড়ার পরে মনে মনে চিন্তা করে এই প্লট-এর দাম বেশী পড়ে যাচ্ছে, অমুক জায়গায় সস্তা আছে, আমি সেখানে নেব। এইভাবে অন্তরে গুণ করতে থাকে। অর্থাৎ, সুখকে গুণকরে (বাড়ায়) আর দুঃখকে ভাগ করে (কমায়)। সুখকে গুণ করে বলেই ফের ভয়ঙ্কর দুঃখ পায়। আর দুঃখকে ভাগ করে কিন্তু দুঃখ কমে না ! সুখকে গুণ করে কি করে না ? এরকম হলে ভাল হয়, ওরকম হলে ভাল হয়, করে কি না ? আর এটা প্লাসমাইনাস হয়। দিস্ ইজ ন্যাচারাল অ্যাজ্জাস্টমেন্ট। দু'শাে টাকা হারিয়ে গেল অথবা ব্যবসায়ে পাঁচ হাজার টাকার লােকসান হলাে, এ সব ন্যাচারাল অ্যাড়জাস্টমেন্ট। কেউ দু'হাজার টাকা পকেট কেটে নিয়ে গেল, তাও ন্যাচারাল অ্যাঞ্জাস্টমেন্ট। ভুগছে যে তার ভুল', এ আমি জ্ঞানে দেখে গ্যারান্টী দিয়ে বলছি। প্রশ্নকর্তা : এরকম বলা হয় যে সুখকে গুণ করছে তাে এতে ভুল কোথায় ? Page #25 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল | ১৮ দাদাশ্রী : গুণ করতে হলে দুঃখকে করাে, সুখকে করলে ভীষণ বিপদে পড়বে। গুণ করার শখ থাকলে দুঃখকে করাে, যেমন একজনকে আমি একটা ঘুসিমারলাম আর সে আমাকে দুটো ঘুসি মারলাে তাে ভাবলাম ভালাে হয়েছে; আরও ভাবলাম যে এরকম অন্য কেউ মারে তাে ভালাে। এতে আমার জ্ঞান বাড়বে। যদি দুঃখকে গুণ করতে ভালাে না লাগে তাে করবে না কিন্তু সুখকে তাে গুণ করবেই না। | প্রভু-র সামনে দোষী হলাে | ‘ভুগছে যে তার ভুল', এ ভগবানের ভাষা। আর এখানে তাে যে চুরি করে লােকে তাকে দোষী বলে। কোর্টেও যে চুরি করে তাকে দোষী বলে মানে। সেইজন্যে এই বাইরের দোষ আটকাতে লােকেরা অন্তরের দোষ আরম্ভ করল। যা করলে ভগবানের কাছে দোষী হয় সেই ভুল শুরু করল। আরে বােকা, ভগবানের কাছে দোষী হয়াে না। এখানে দোষ হলে কোন অসুবিধা নেই ; দু’মাস জেলে থেকে ফিরে আসবে কিন্তু ভগবানের কাছে। দোষী হবে না। তুমি কি এটা বুঝতে পারলে ? যদি এই সূক্ষ্ম কথাটা বুঝতে পারাে তাে কাজ হয়ে যাবে। ভুগছে যে তার ভুল’, এটা তাে অনেকেই বুঝতে পেরেছে। কারণ এরা সবাই খুব বিচারশীল ব্যক্তি, যেমন-তেমন লােক নয় ! আমি একবার বােধ দিয়ে দিয়েছি। এখন বৌ শাশুড়িকে দুঃখ দিচ্ছে আর শাশুড়ি একটা বাক্যই শুনে রেখেছে যে, ‘ভুগছে যে তার ভুল’; তাই বৌ চব্বিশঘণ্টা দুঃখ দিলেও তৎক্ষণাৎ বুঝে যায় যে আমার ভুল আছে বলেই আমাকে দুঃখ দিচ্ছে! তাহলেই এর অন্ত আসবে, নয়তাে অন্ত আসবে না আর শত্রুতা বাড়তেই থাকবে। বােঝা কঠিন কিন্তু বাস্তবিকতা অন্য কারাের ভুল নেই। যা কিছু ভুল আছে তা নিজেরই ভুল। নিজের ভুলের কারণেই এই সমস্ত তৈরী হয়েছে। এর আধার কি ? তাতে অঙ্কত Page #26 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল ১৯ বলে, নিজের ভুল। প্রশ্নকর্তা : দেরীতে হলেও বুঝতে পারছি। দাদাশ্রী : ধীরে বােঝা ভালাে। একদিকে শরীর শিথিল হতে থাকে। আর বুঝতে থাকে, তার তাে কাজ হয়ে যায়। কিন্তু শরীর মজবুত আছে, সেই সময় বুঝতে পারে তাে ? | আমি ‘ভুগছে যে তার ভুল’ এই যে সূত্র দিয়েছি তা সমগ্র শাস্ত্রের সার। মুম্বাইতে যদি যাও তাে দেখবে সেখানে হাজার হাজার ঘরে বড় বড় অক্ষরে লেখা আছে, ‘ভুগছে যে তার ভুল'। যদি ঘরে পেয়ালা ভেঙে যায় তাে সে সময়ে বাচ্চারা দেখে বলে দেয়, মা, তােমার ভুল। হ্যা, বাচ্চারাও বুঝতে পারে। মাকে বলে যে তােমার মুখ বিষাদগ্রস্ত, এ তােমারই ভুল। কটীতে লবণ বেশী হয়ে গেলে দেখে নেবে যে কারমুখের ভাব খারাপ হয়েছে। হ্যা, এরই ভুল। ডাল পড়ে যায় তাে দেখবে কার মুখের ভাব খারাপ ; তারই ভুল। তরকারী বেশী ঝাল হলে দেখবে কার মুখের ভাব খারাপ ; তাে তার ভুল। এই ভুল কার ? ‘ভুগছে যে তার। | তােমার যদি সামনের ব্যক্তির মুখের ভাব খারাপ দেখায় তাে সেটা তােমার ভুল। সেক্ষেত্রে ওর শুদ্ধাত্মাকে স্মরণ করে ওরনামে বারবার ক্ষমা চেয়ে নেবে, তাহলে ঋণানুবন্ধ থেকে মুক্ত হবে। স্ত্রী তােমার চোখে ওষুধ দিল আর তােমার চোখে ব্যথা হতে থাকলাে তাে সে তােমার ভুল। বীতরাগ বলেছেন যে সহ্য করে তার ভুল, আর এইসব লােকে তাে নিমিত্তকেই ধরে।। | নিজের ভুলের জন্যেই মার খাচ্ছে। যে পাথর ছুঁড়ছে তার ভুল নয়, যার লেগেছে তার ভুল। তােমার আশে-পাশের বাচ্চারা যা খুশি ভুল বা অপকর্ম করুক না কেন, তার প্রভাব যদি তােমার উপর না পড়ে তাে তােমার ভুল নয় আর যদি প্রভাব পড়ে তবে তা তােমারই ভুল, এ একেবারে নিশ্চিতভাবে বুঝে নেবে। Page #27 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল ২০ জমা – ধারের নতুন রীতি দু'জন লোক, চন্দুভাই আর লক্ষ্মীচাঁদ-এর দেখা হলো আর চন্দুভাই লক্ষ্মীচাঁদের উপর আরোপ দিল যে তুমি আমার খুব ক্ষতি করেছো ; তো লক্ষ্মীচাঁদের রাতে ঘুম আসে না আর চন্দুভাই তো শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ে। সেইজন্যে ভুল লক্ষ্মীচাঁদের। কিন্তু দাদার বাক্য ‘ভুগছে যে তার ভুল' মনে পড়লে লক্ষ্মীচাঁদ—ও শান্তিতে ঘুমাবে নয়তো ওকে গালাগাল করতে থাকবে। তুমি কোন এক সুলেমানকে পয়সা দিয়েছো আর সে যদি ছ'মাসেও তোমার পয়সা ফেরৎ না দেয় তো ? আরে, কে ধার দিয়েছে ? তোমার অহংকার। সে পোষণ দিয়েছিল আর তুমি দয়ালু হয়ে পয়সা ধার দিয়েছিলে। সেইজন্যে এখন সুলেমানের খাতায় জমা করো আর অহংকারের খাতায় ধার লিখে রাখো ৷ এরকম পৃথকীকরণ তো করো যার বেশী দোষ সেই এ জগতে মার খায়। মার কে খাচ্ছে সেটা দেখবে। যে মার খাচ্ছে সেই দোষী । দুর্ভোগের মাত্রা থেকে হিসাব বেরিয়ে যায় যে কত ভুল ছিল! ঘরে দশজন সদস্য আছে, তার মধ্যে দু'জনের ঘর কেমন চলছে তার চিন্তা পৰ্য্যন্ত হয় না। দু'জন এরকম ভাবনা রাখে যে ঘরে সাহায্য করা উচিৎ, দু'তিন-জন সাহায্যকরে, একজন তো ঘর কিভাবে চলবে সমস্ত দিন সেই চিন্তায় ডুবে আছে আর দু'জন তো আরামে ঘুমিয়ে থাকে। তাহলে ভুল কার ? ভাই, যে ভুগছে, চিন্তা করছে তার—ই। যে আরামে ঘুমাচ্ছে তার কিছু নেই । ভুল কার ? বলে, কে ভুগছে তার খোঁজ নাও। চাকরের হাত থেকে দশটা কাপ পড়ে ভেঙে গেলে তার প্রভাব ঘরের লোকেদের উপর পড়ে কি পড়ে না ? এখন ঘরের লোকেদের মধ্যে যারা ছোটো তাদের তো Page #28 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল। কোনও দুঃখ হয় না, কিন্তু তাদের বাবা-মা আক্ষেপ করতে থাকে। তার মধ্যে মা-ও কিছু সময় পরে শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ে কিন্তু বাবা হিসাব কষতে থাকে যে পঞ্চাশ টাকার ক্ষতি হলাে। সে বেশী অ্যালার্ট, তাই বেশী ভুগবে। এর থেকে সিদ্ধান্ত ‘ভুগছে যে তার ভুল। ভুল তােমাকে খুঁজতে যেতে হবে না। বড়-বড় জজ বা উকিলও খুঁজতে যেতে হবে না। আমি এই যে সূত্র দিয়েছি, ‘ভুগছে যে তার ভুল’, এটাই থার্মোমিটার। কেউ যদি এটুকুই পৃথক করতে করতে এগিয়ে চলে তাে সরাসরি মােক্ষে পৌঁছে যাবে। ভুল ডাক্তারের, না রােগীর ? ডাক্তার রােগীকে ইঞ্জেকশন দিয়ে ঘরে গিয়ে শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়লাে আর রােগী সারারাত ইঞ্জেকশনের ব্যথায় কষ্ট পেলাে, তাে এতে ভুল কার ? রােগীর ! ডাক্তার তাে যখন কষ্ট পাবে তখন তার ভুল ধরা পড়বে। | বাচ্চার জন্যে ডাক্তার ডাকলে আর সে এসে দেখলাে যে নাড়ী। বন্ধ, তাে ডাক্তার কি বলবে ? আমাকে কি জন্যে ডাকলে ? আরে, তুমি হাত দিলে, সেই মুহূর্তেই বন্ধ হলাে, নয়তাে নাড়ী তাে চলছিল। কিন্তু ডাক্তার ধমকও দেয় আর তার উপর দশ টাকা ফীজ নিয়ে চলে যায়। আরে, ধমকাচ্ছাে তাে পয়সা নেবে না আর পয়সা নিচ্ছাে তাে ধমকাবে । কিন্তু না, ফীজ তাে নিতেই হবে। তাে পয়সা দিতে হয়। জগৎ এরকম-ই। সেজন্যে এই কালে ন্যায় খুঁজতে যেও না। প্রশ্নকর্তা : এমনও হয় যে আমার কাছ থেকে ওষুধ নেয় আর আমাকেই ধমকায়। দাদাশ্রী : হ্যা, এরকম-ও হয়। তা সত্ত্বেও সামনের ব্যক্তিকে যদি দোষী ভাবাে তাহলে তুমিই দোষী হবে। এখন তাে প্রকৃতি ন্যায়ই করছে। Page #29 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল অপারেশন করতে গিয়ে যদি রোগী মারা যায় তো ভুল কার ? কাদার উপর জুতো পরে চলতে গিয়ে যদি পিছলে যায় তো দোষ কার? ভাই, তোমারই ! এটা জানা ছিল না যদি খালি পায়ে চললে আঙ্গুলের ভর থাকতো আর পড়তো না ? এতে দোষ কার ? মাটির, জুতোর না তোমার ? ভুগছে যে তার ভুল! এটুকুই যদি পুরোপুরি বোঝা যায় তো এ মোক্ষে নিয়ে যাবে। এই যে লোকেদের দোষ দেখছে তা খুব ভুল হচ্ছে। নিজের ভুলের কারণে নিমিত্ত পাচ্ছে। এ তো জীবিত নিমিত্ত পেলে তাকে কামড়াতে যায়, আর যদি কাঁটা ফোটে তো কি করে ? চৌরাস্তায় কাঁটা পড়ে আছে আর হাজার হাজার মানুষ সেখান দিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কাউকে স্পর্শ করে না। অথচ চন্দুভাই যখন সেখান দিয়ে যায় তখন কাঁটা বেঁকে থাকলেও তার পায়ে ফুটে যায়। ‘ব্যবস্থিত শক্তি' কেমন হয় ? যার কাঁটা ফোটার হয় তারই ফোটে ; সমস্ত সংযোগ একত্র করে দেয়, কিন্তু এতে নিমিত্তের কি দোষ ? 12 যদি কোন ব্যক্তির ওষুধ দেওয়ার জন্যে কাশি হয় তো ঝগড়াঝাটি হয়ে যায় কিন্তু যদি লঙ্কা ফোড়ন দেওয়ার জন্যে কাশি হয় তো কেউ ঝগড়া করে ? এ তো যে ধরা পড়ে তার সাথে ঝগড়া করে, নিমিত্তকেই কামড়ায়। যদি বাস্তবিকতা-কে জানে যে কে করছে আর কিসের থেকে হচ্ছে তাহলে কি কোনও ঝঞ্ঝাট থাকে ? তীর যে মেরেছে তার ভুল নয়, তীর যার লাগলো তারই ভুল। তীর যে মারছে সে যখন ধরা পড়বে তখন তার ভুল। এখন তো যার তীর লেগেছে সে ধরা পড়েছে। যে ধরা পড়েছে সে প্রথম দোষী, অন্যজন তো যখন ধরা পড়বে তখন তার ভুল । বাচ্চাদের-ই ভুল বের করে সবাই তুমি যখন পড়াশুনো করতে তখন তাতে কোনো বাধা-বিঘ্ন এসেছিল ? প্রশ্নকর্তা : বাধা তো এসেছিল। Page #30 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল দাদাশ্রী : সে তােমারই ভুলের কারণে। এতে শিক্ষকের বা অন্য কারাের ভুল ছিল না। প্রশ্নকর্তা : এই ছেলেরা যে শিক্ষকের সামনে উদ্ধত হয়ে যায়, এরা কবে শুধরাবে ? দাদাশ্রী : যে ভুলের পরিণাম ভােগ করছে ভুল তার। এই গুরুরাও এমন জন্মেছে যে শিষ্যরা তাদের সামনে ঔদ্ধত্য দেখায়। এই ছেলেরা তাে সেয়ানাই কিন্তু গুরুরা আর মা-বাপ এমনই ঘনচক্কর জন্মেছে। আর গুরুজনরা যদি পুরােনােকেই আঁকড়ে থাকে তাে ছেলেরা উদ্ধত হয়ে যায় কি না ? এখন তাে মা-বাবার চরিত্রই এমন নয় যে ছেলেরা উদ্ধত হবে । এতাে গুরুজনদেরই চরিত্রের দৈন্যতা যে ছেলেরা উদ্ধত হয়ে যাচ্ছে। ভুলের সামনে দাদার বােধ ‘ভুগছে যে তার ভুল’ এই সূত্র মােক্ষে নিয়ে যাবে। কেউ যদি প্রশ্ন। করে যে আমি আমার ভুল কি করে খুঁজবাে ? তাে আমি একে শেখাই যে তােমাকে কোথায় কোথায় ভুগতে হয়েছে, সেখানে সেখানে তােমারই ভুল। তােমার কি ভুল হয়েছিল যে এমন ভুগতে হচ্ছে তা খুঁজে বের করাে। এতাে সমস্ত দিন দুর্ভোগ হচ্ছে, তাে খুঁজে বের করা দরকার যে কি কি ভুল হয়েছে ! | দুর্ভোগের সাথেই বুঝতে পারা যায় যে এ নিজেরই ভুল। যদি কখনও নিজের ভুল হয়ে যায় তাে আমার টেনশন হয়ে যাবে না। আমি সামনের ব্যক্তির ভুল কিভাবে বুঝতে পারি ? সামনের ব্যক্তির হােম (আত্মা) আর ফরেন (অনাত্মা) আলাদা দেখায়। সামনের ব্যক্তির ফরেনে ভুল হয়, দোষ হয় তাে আমি কিছু বলি না। কিন্তু হােমে যদি কিছু হয় তখন আমি ঠুকে দিই। মােক্ষে যেতে কোনও বাধা যেন না আসে। অন্তরে তাে অসীম বসতি আছে, তার মধ্যে কে ভুগছে তা জানা Page #31 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল যায়। কখনও অহঙ্কার ভুগছে তাে তা অহঙ্কারের ভুল। কোনাে সময় মন ভুগছে তাে তা মনের ভুল। কোনাে সময় চিত্ত ভুগছে তাে সেই সময় | চিত্তের ভুল। এ তাে নিজের ভুল থেকে স্বয়ং আলাদা থাকতে পারে। কথাটা বুঝতে হবে তাে ? আসল ভুল কোথায় ? ভুল কার ? ভুগছে যে তার! কি ভুল ? আমি চন্দুভাই’-এই মান্যতাই তােমার ভুল। কারণ এই জগতে কেউ দোষী নয়। সেইজন্যে কেউ দোষের ভাগী নয়। এরকম প্রমাণিত হয়। সত্যি সত্যিই এই জগতে কেউ কিছু করতে পারে এমন নয়, কিন্তু যে হিসাব হয়ে রয়েছে তা ছাড়বেনা। যে গণ্ডগােলের হিসাব হয়ে গেছে তা তাে ফল না দিয়ে ছাড়বে না। কিন্তু এখন নতুন করে আর গণ্ডগােল করাে ; এখন বন্ধ করাে। যখন থেকে এটা জেনেছাে তখন থেকে বন্ধ করাে। পুরােনাে গণ্ডগােল যা হয়ে রয়েছে তা তাে তােমাকে চুকিয়ে দিতে হবে, কিন্তু নতুন কিছু না হয় তা দ্যাখাে। সমস্ত দায়িত্ব নিজেরই, ভগবানের কোনাে দায়িত্ব নেই। ভগবান এতে হাত দেন না। সেইজন্যে ভগবানও কিন্তু একে ক্ষমা করতে পারেন না। অনেক ভক্ত এরকম মনে করে যে, ‘আমি পাপকরেছি, ভগবান ক্ষমা করবেন। ভগবানের কাছে ক্ষমা নেই।। দয়ালু লােকেরা ক্ষমা করে। দয়ালু ব্যক্তিকে বলাে যে, ‘সাহেব, আমি তােমার প্রতি অনেক ভুল করেছি। তাে তৎক্ষণাৎ ক্ষমা করে দেয়। | যে দুঃখ দিচ্ছে সে তাে নিমিত্তমাত্র, আসল ভুল তাে নিজেরই। যার জন্যে লাভ হচ্ছে সেও নিমিত্ত আর যার জন্যে লােকসান হচ্ছে সেও নিমিত্ত ; কিন্তু এ তােমারই হিসাব তাই এমন হচ্ছে। আমি তােমাকে খুলে বলছি যে তােমার বাউণ্ডারী’-তে কারাের আঙ্গুল দেওয়ারও শক্তি নেই আর যদি তােমার ভুল থাকে তাহলে যে কেউ এসে আঙ্গুল ঢােকাবে। আরে, লাঠি দিয়েও মেরে যাবে। কে ঘুসি মারছে তাকে তাে আমি চিনে নিয়েছি। সব তােমার নিজেরই ! কেউ তােমার ব্যবহার খারাপ করেনি ; Page #32 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ভুগছে যে তার ভুল। তােমার ব্যবহার তুমিই খারাপ করেছে। ইউ আর হােল অ্যাণ্ড সােল রেসপন্সিল ফর ইয়াের ব্যবহার। ন্যায়াধীশ, কম্পিউটার সমান ভুগছে যে তার ভুল, এ ‘গুপ্ততত্ত্ব'। এখনে বুদ্ধি ক্লান্ত হয়ে পড়ে। যেখানে মতিজ্ঞান কাজ করে না সেই কথা ‘জ্ঞানীপুরুষ’-এর কাছে স্পষ্ট হয়, আর তা যেমনটি তেমন’ হয়। এই গুপ্ত তত্ত্বকে খুব সূক্ষ্ম অর্থে বােঝা প্রয়ােজন। ন্যায় যে দেবে সে যদি চেতন হয় তাে সে কিন্তু পক্ষপাত করতে পারে। কিন্তু জগতকে যে ন্যায় দিচ্ছে সে নিশ্চেতন চেতন। একে জগতের পরিভাষায় বােঝাতে গেলে বলতে হয় যে একম্পিউটারের মত। কম্পিউটারে যদি প্রশ্ন দাও তাে কম্পিউটারের-ও ভুল হতে পারে, কিন্তু জগতের ন্যায়ে ভুল হয় না। এই জগতের ন্যায়ের কর্তা নিশ্চেতন চেতন আর বীতরাগ। জ্ঞানীপুরুষ’-এর একটা শব্দও যদি বুঝে যায় আর গ্রহণ করে তাে মােক্ষেই যাবে। কার শব্দ ? ‘জ্ঞানীপুরুষ’-এর! এতে তাে কাউকে কারাের পরামর্শ নিতে হয় না যে ভুল কার ? ‘ভুগছে যে তার ভুল। এ তাে সায়েন্স, সম্পূর্ণ বিজ্ঞান। এতে একটা অক্ষর-ও ভুলনয়। এ তাে বিজ্ঞান, অর্থাৎ সম্পূর্ণ বিজ্ঞান-ই। সমস্ত জগতের জন্যে এই বিজ্ঞান। এ শুধু ইণ্ডিয়ার জন্যে, এরকম নয়। ফরেনের সবার জন্যে-ও! যেখানে এরকম শুদ্ধ, নির্মল ন্যায় তােমাকে দেখিয়ে দিয়েছি, সেখানে ন্যায়-অন্যায়ের ভাগাভাগি করার কি রইলাে ? এ খুবই গভীর কথা। সমস্ত শাস্ত্রের সার বলে দিয়েছি। এ তাে সেখানকার জাজমেন্ট (ন্যায়) কোন রীতিতে চলে, তা এজ্যাক্ট বলছি যে, ‘ভুগছে তার ভুল'। আমার কাছ থেকে ‘ভুগছে যে তার ভুল’ এই সূত্র একদম এজ্যাক্ট নির্গত হয়েছে। যে কেউ একে ব্যবহার করবে, তার কল্যাণ হয়ে যাবে !!! জয় সচ্চিদানন্দ Page #33 -------------------------------------------------------------------------- ________________ সম্পর্ক সূত্র দাদা ভগবান পরিবার। মুম্বাই ? 9323528901 দিল্লী : 9810098564 কোলকাতা H 9830093230 চেন্নাই H 9380159957 জয়পুর : 9351408285 ভােপাল H 9425024405 ইন্দেীর H 9039936173 জব্বলপুর H 9425160428 রায়পুর H 9329644433 ভিলাই : 9827481336 পাটনা : 7352723132 9422915064 বেঙ্গলুর : 9590979099 হায়দ্রাবাদ : 9989877786 পুনে ও 9422660497 জলন্ধর : 9814063043 U.S.A. : DBVI Tell : +1 877-505-DADA (3232), UAE : +971 557316937 Australia : +61 421127947 Email : info@us.dsdabhagwan.org : +44 330-111-DADA (3232) U.K. New Zealand : +64 21 0376434 Kenya : +254 722 722 063 Singapore : +65 81129229 www.dadabhagwan.org [[30] Page #34 -------------------------------------------------------------------------- ________________ ‘ভুগছে যে তার ভুল এই যে পকেট মার হলাে, এতে ভুল কার ? এর পকেট কাটলাে না আর তােমার-ই কেন কাটলাে ? তােমাদের দুজনের মধ্যে এখন কে ভুগছে ? যে ভুগছে তারই ভুল।' | ‘ভুগছে যে তার ভুল' এই নীতি মােক্ষে নিয়ে যাবে। কেউ যদি প্রশ্ন করে যে আমি আমার ভুল কি করে বুঝবাে? তাে তাকে আমি শেখাই যে 'তােমার কোথায়। কোথায় ভুগতে হচ্ছে দ্যাখাে ; সে সব-ই তােমার ভুল। তােমার কি ভুল হয়ে থাকবে যার জন্যে এরকম ভুগতে হচ্ছে তা খুজে বের করাে।' এ তাে সারাদিন দুর্ভোগ চলছে, তাে খুঁজে বের করা উচিৎ যে কি কি ভুল হয়েছে ! | এ তাে নিজের ভুলেই বাঁধা পড়ে আছাে ; কোনাে লােক এসে বাঁধেনি। সেই ভুল ভাঙ্গলেই মুক্ত হবে। --দাদাশ্রী 15, 74--4551-27 978938551275 शलदीपक से पल कसे प्रकटे दीपमाला Printed in India dadabhagwan.org Price 15