________________
হইয়া পড়িয়াছে। আচার্য ভদ্রবাহু এই সময়ে বহু দূরে পর্বতগুহায় আত্মসাধনায় নিমগ্ন ছিলেন। এইজন্য তিনি সাধুসমাগমে মিলিত হইতে পারেন নাই। সমবেত সাধুসঙ্ঘ ভদ্রবাহুর নিকট শাস্ত্রের বাচনা লইবার জন্য স্থলভদ্র প্রমুখ পাঁচশতজন সাধুকে তাঁহার নিকট প্রেরণ করেন। কিন্তু সেই স্থানের জীবনযাত্রার কাঠিন্যের জন্য সুলভদ্র ব্যতীত অন্যান্য সাধুগণ প্রত্যাবর্তন করেন। একমাত্র স্থূলভদ্র বহু কষ্ট সহ্য করিয়া ভদ্রবাহুর নিকট ক্রমে ক্রমে সম্পূর্ণ দশপূর্ব অধ্যয়ন করেন। ইতিমধ্যে স্থলভদ্রের ছয় জন ভগিনী সাধ্বী তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিবার জন্য তথায় গমন করেন ও ভদ্রবাহুর নির্দেশমত স্থূলভদ্রের গুহায় সাক্ষাৎ করিতে যাইয়া তথায় এক ভীষণ সিংহ দেখিয়া পলায়নপূর্বক ভদ্রবাহুর নিকট যাইয়া এই সংবাদ প্রদান করেন। ভদ্রবাহু ঈষৎ হাসিয়া সাধ্বীগণকে পুনরায় তথায় যাইতে বলেন। সাধ্বীগণ তদনুযায়ী তথায় গমন করিয়া স্থলভদ্রের দর্শন প্রাপ্ত হন। এই ঘটনার পরে স্থূলভদ্র পুনরায় ভদ্রবাহুর নিকট পাঠ গ্রহণ করিতে গেলে ভদ্রবাহু বাকি চার পূর্বের পাঠ দিতে অস্বীকার করেন ; কারণ স্থলভদ্র শাস্ত্রজ্ঞান জনিত অহংকারের দ্বারা প্রণােদিত হইয়া সাধ্বীগণকে ভয় দেখাইবার জন্য সিংহরূপ ধারণ করিয়া নিজের ঋদ্ধি প্রদর্শন করিয়াছিলেন। সাধুগণের পক্ষে এইরূপ ঋদ্ধি। প্রদর্শন করা শাস্ত্রানুমােদিত নয়। স্থলভদ্র নিজের ভুল বুঝিতে পারিয়া ভদ্রবাহুর চরণে পতিত হইয়া বহু অনুনয় করিলে ভদ্রবাহু বাকি চার পূর্বের পাঠ দিলেন কিন্তু দশ পূর্বের অতিরিক্ত অন্য চার পূর্বের অধ্যাপনা করিতে তাহাকে নিষেধ করিলেন। স্থূলভদ্রই শেষ চতুর্দশ পূর্বজ্ঞানী। তাহার পর হইতে বাকি চার পূর্বের জ্ঞান লুপ্ত হইয়া গেল।
পাটলীপুত্রে সাধুসঙ্ঘ সমবেত হইয়া অঙ্গশাস্ত্রের যে পাঠোদ্ধার করেন তাহাকে পাটলীপুত্ৰীয় বাচন বলে। ইহাই জৈন শাস্ত্রের প্রথম বাচনা। এই বাচনা কালে শাস্ত্রের পাঠ ব্যবস্থিত হইয়াছিল কিন্তু সেই পাঠ লিপিবদ্ধ করা হয় নাই বলিয়াই অনুমিত হয়। কেননা লিপিবদ্ধ হওয়ার উল্লেখ কোন গ্রন্থেই পাওয়া যায় না।
পাটলীপুত্ৰীয় বাচনার পর মহাবীর নির্বাণ অব্দ ৮২৭ ও ৮৪০ এর মধ্যে কোন এক সময়ে যুগপ্রধান আচার্য ঋলিল সূরির অধ্যক্ষতায় মথুরা নগরীতে
১। তীথোগালি পইন্নয়, শ্লোক ৭১৪-৮০২।