________________
উত্তররূপে ছত্রিশটী অধ্যয়নের উপদেশ দিয়াছিলেন। তন্মধ্যে এই উত্তরাধ্যয়ন সূত্রের ছত্রিশটী অধ্যয়নই মহাবীরের উপদিষ্ট উক্ত ছত্রিশটী অজিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর। কিন্তু বর্তমানে উপলব্ধ উত্তরাধ্যয়ন সুত্রের সমস্ত অধ্যয়নগুলি যে মহাবীরের কথিত ইহাও স্বীকৃত হয় নাই। বাস্তবিক পক্ষে এই সমস্ত মতবাদের দ্বারা নামকরণের সমস্যা মীমাংসিত হইয়াছে বলিয়া মনে হয় না। এই গ্রন্থের অধ্যয়নগুলি পাঠ করিলে সমস্ত অধ্যয়নই যে একজনের দ্বারা কথিত বা রচিত বলিয়া অনুমিত হয় না। হইতে পারে যে ভগবান্ মহাবীরের উক্তিগুলি কতক তাহার নিজের ভাষায় কতক রচয়িতার নিজের ভাষায় গ্রথিত হইয়া বিভিন্ন ব্যক্তি কর্তৃক বিভিন্ন অধ্যয়নরূপে রচিত হইয়াছে। কোন কোন অধ্যয়ন সম্পূর্ণরূপে কিংবা বহুলভাবে মহাবীরের উক্তি ও ভাষা প্রকাশ করিতেছে তাহা অস্বীকার করা যায় না। মনে হয়, পরবর্তী কালে এই সমস্ত নানাবিষয়ক রচনা একত্রিত করিয়া আগমশাস্ত্রগুলি সংগৃহীত ও ব্যবস্থিত করিবার সময় একটী পৃথক্ গ্রন্থরূপে গ্রথিত করিয়া মূলসূত্র বিভাগের অন্তভুক্ত করা হয়। এই জন্যই এই গ্রন্থ উত্তরাধ্যয়ন বা শেষের গ্রথিত অধ্যয়ন নামে পরিচিত। বলা বাহুল্য এই সমস্ত মতবাদই অনুমানপ্রসূত। গ্রন্থকর্তা বা সংকলনকর্তার অভিপ্রায় কি ছিল তাহা এত দীর্ঘকালের পর নিশ্চিতরূপে অবধারণ করা সম্ভব বলিয়া মনে হয় না।
যাহা হউক উত্তরাধ্যয়ন সূত্র আগমশাস্ত্রের মধ্যে একটী অতি প্রসিদ্ধ এবং জনপ্রিয় গ্রন্থ। ইহার ভাষা ও ভাব প্রকাশের ভঙ্গী যে বহু পুরাতন তৎসম্বন্ধে কোন রূপ সন্দেহ থাকিতে পারে না। এই গ্রন্থটী জৈন আগমশাস্ত্রের মধ্যে সর্বাপেক্ষা পুরাতন গ্রন্থসমূহের মধ্যে যে একটী তাহাতেও কোনরূপ সন্দেহের অবকাশ থাকিতে পারে না। এই সূত্রগ্রন্থ পাঠ করিলে পুরাতন জৈন মহাপুরুষগণের ভাবধারার সহিত পরিচিত হইবার সুযােগ প্রাপ্ত হওয়া যায় এবং তাহারা আধ্যাত্মিক বিকাশের মার্গে কিভাবে অগ্রসর হইতেন তাহারও পরিচয় পাওয়া যায়।
এই গ্রন্থ সম্পাদন করিতে প্রধানতঃ তিনটী টীকার সাহায্য গ্রহণ করা হইয়াছে। ১নং শ্রীলক্ষ্মীবল্লভগণি প্রণীত অর্থদীপিকা নামক টীকা যাহা
১। “পণপন্নং অজঝয়ণাইং কল্লাফলবিবাগাইং পণপন্নং অজঝয়ণাইং পাবফলবিবাগাইং ছত্তীসং চ অপুটুঠ বাগরণইং বাগরিত্তা” কল্পসূত্র ১৪৭।