________________
| [ ১ ]।
এত ব্যাকরণ ব্যাকরণ রচনায় প্রাকৃত সাহিত্যের একটু বিশেষত্ব লক্ষিত হয়েছে। যদিও এরা প্রাকৃতভাষার ব্যাকরণ লিখতে বসেছেন, তথাণি তাঁরা সংস্কৃত ভাষার অবলম্বন করেছেন। কচ্চায়নের ‘পালি ব্যাকরণ’ যেরূপ পালিভাষায় রচিত, এ প্রাতব্যাকরণ তাদৃশ নহে। সূত্র রচনায় এরা সংস্কৃতের পন্থাই অনুসরণ করেছেন। প্রাকৃত ব্যাকরণ বহুল পরিমাণে দৃষ্ট হয়। তন্মধ্যে—(১) বররুচির প্রাকৃত প্রকাশ, (২) চণ্ডের প্রাকৃত সক্ষণ, (৩) হেমচন্দ্রের প্রাকৃত ব্যাকরণ, (৪) ত্রিবিক্রমের প্রাকৃতব্যাকরণ, (৫) কমনীষরের সংক্ষিপ্তসারব্যাকরণ, (৬) লক্ষ্মীধরের ষডভাষাচন্দ্রিকা, (৭) সিংহরাজের প্রাকৃতরূপাবা, (৮) মার্কণ্ডেয়ের প্রাকৃতসর্বস্ব (৯) সাগরের ঔদার্থচিন্তামণি, (১০) রামশর্ম তর্কবাগীশের প্রাকৃতকল্পতরু প্রভৃতি উল্লেখযােগ্য। এ সমস্ত ব্যাকরণে মহারাষ্ট্র, শৌরসেনী, মাগধী, অর্ধমাগধী, পৈশাচী, অপভ্রংশ, প্রাচ্য, আবন্তী, চাখালী, শাবরী, টাকা, নাগর, ব্রাচড় প্রভৃতি প্রাকৃতভাষার লক্ষণাদি লিপিবদ্ধ আছে।
প্রাকৃত ছন্দোগ্রন্থ প্রভূত রচিত না হলেও, এর ছন্দোরাশি বিশাল। বিশেষ করে নব্যভারতীয় ছন্দের উৎপতির ব্যাপারে এর দান অনেক। পিঙ্গলাচার্যের ‘প্রাকৃতপিঙ্গল’ অপভ্রংশ ভাষায় রচিত একখানি প্রাকৃত ছন্দোগ্রস্থ। এতে ‘মাত্রাবৃত্ত’ ও ‘বর্ণবৃত্ত উভয় জাতীয় ছন্দই বিদ্যমান। গাহা, বিগগাহা, উগগাহা, রােলা, লোহা, ঘা, কলখণ, মল্লিকা, চচ্চরী প্রভৃতি ছন্দ বিশেষ উল্লেখযােগ্য। হেমচন্দ্রের ছন্দোনুশাসন’, আর একটি বিশাল প্রাকৃত ছন্দোপ্রস্থ। কবিদর্পণও প্রাকৃতছন্দের একটি উৎকৃষ্ট ছন্দোগ্রন্থ।
প্রাকৃত ভাষায় দর্শন জনগণ প্রাকৃতভাষায় স্বীয় ধর্মের দর্শন লিখতে আরম্ভ করলেন। আত্মার, অস্তিত্ব সঙ্গদ্ধে উপনিষদের সারগর্ভ বাণী যখন বৌদ্ধদের মধ্যে অনাস্থা স্থাপন করল তখন সৃষ্ট হ’ল বৌদ্ধদের শূন্যবাদ’ বা ‘নান্তিবাদ। কিন্তু এতেও শেষ হয়নি। জৈনগণ ‘অস্তি’ ও ‘নান্তির মধ্যে আর একটু নতুন দর্শনের সৃষ্টি করলেন, যাকে বলা হয় স্বাদ। এ দর্শন উভয় দর্শনের মধ্যগা পন্থা অবলম্বন করল। এ সর্শনকেই ভিত্তি করে জৈনগণ স্যায়, তর্কশাস্ত্র প্রভৃতির প্রতিষ্ঠা করতে