________________
যতদূর জানা যায়, প্রাকৃত কাব্যজগতে সর্বাপেক্ষা প্রাচীম কাব্যগ্রন্থ হচ্ছে মিলসূরি কৃত ‘পউমচরিয়’ (পদ্মচরিতম্)। গ্রন্থখানি জৈনমহারাষ্ট্র ভাষায় আছন্দে রামায়ণের বিষয় অবলম্বনে লিখিত। লেখকের মতানুসারে গ্রন্থের রচনাকাল মহাবীরের নির্বাণলাভের ৫৩ বৎসর পরে। ১১৮টি সর্গে ৯০০০ গােকে গ্রন্থকার পরে অর্থাৎ রামচন্দ্রের জীবনচরিত বর্ণনা করেছেন। এই গ্রন্থে রামচন্দ্রের নাম পদ্ম রাখা হয়েছে। ঐরূপে সীতা, হনুমান, সুগ্রীব প্রভৃতির নামাবলীরও পরিবর্তন ঘটেছে। লেখক বহু ব্যাপারেই বাল্মীকিকে অনুসরণ করেন নি এবং সমস্ত ঘটনার মধ্যেই একটা জৈন ভাবের পরিচ্ছ দিয়েছেন। গ্রন্থখানি পাঠে বিমল আনন্দ অনুভূত হয়।
| এত মহাভারত প্রাকৃত ভাষার আর একটি মহাকাব্য হচ্ছে, ধবলকবি কতৃক বিচিত, ‘প্রকৃত মহাভারত’ হরিবংশ-পুরাণ। গ্রন্থের রচনাকাল লেখকের মতে, দশম বা একাদশ খ্ৰীষ্টাব্দ। মহাভারতের কাহিনী সর্বাংশে অস্ত না হলেও, লেখক এতে কৃষ্ণ ও বলরামের এবং কুরু ও পাণ্ডবদের ঘটনানিচয় সুন্দরভাবে রূপায়িত করেছেন এবং সকলকেই, হয় জৈনধর্মে দীক্ষিত না হয় জৈন ভাবাপন্ন করে তুলেছেন।
প্রাকৃত পুরাণ বা চরিতাবলী যেমন রামায়ণ ও মহাভারতের ঘটনা অনুসরণে প্রাকৃত রামায়ণ ও মহাভারত লেখা হয়েছিল, ঠিক তেমনি, পুরাণের পন্থা অনুসরণে, প্রাকৃত পুরাণ রচিত হ’ল। অর্থাৎ জৈন মহাপুরুষ বা তীর্থঙ্করদের জীবনী অবলম্বনে এই প্রাকৃত পুরাণের সৃষ্টি হ’ল। দিগম্ববেরা এই জাতীয় গ্রন্থকে পুরাণ বলেন, আর খেতাম্বরেরা চরিতাবলী’ বলে আখ্যা দিয়ে থাকেন। এই প্রাকৃত পুরাণের রচনাকাল খ্রীষ্টাব্দ অষ্টম শতক থেকে যােড়শ শতাব্দী পর্যন্ত। ‘ষিষ্টিলক্ষণমহাপুরাণে ‘ত্ৰিষষ্টিশলাকাপুরুষচরিত’ প্রভৃতি গ্রহােক্ত তীর্থ কর মহাপুরুষদের জীবনচরিত অবলম্বনে পরবর্তী কালে বহু গ্রন্থ রচিত হয়েছিল। তন্মধ্যে ১৮২ খ্রীষ্টাব্দে গুণচন্দ্র গণির (১) মহাবীর চরিম, ১১৫৯ খৃঃ