________________
‘সর্বসর্শনসংগ্রহ” নামক অন্য গ্রন্থে সর্বদর্শন সংগ্রহ হইতে অধিক বিষয় বর্ণিত হয় নাই।
“অদ্বৈত ব্ৰহ্মসিদ্ধি গ্রন্থ রচয়িতা ব্রহ্মানন্দ সরস্বতীর শিষ্য কাশ্মীরক সদানন্দ যতি তাহার এই সন্দর্ভে ছয় খানি আস্তিকদর্শন এবং ছয়খানি নাস্তিক-দর্শন -আস্তিকদর্শন মধ্যে (১)। “মীমাংসা” (২) “বেদান্ত” (৩) “ন্যায়” (৪) “সংখ্য” (৫) “বৈশেষিক’ (৬) “যােগদর্শন”। নাস্তিক দর্শন মধ্যে “বৌদ্ধ যােগাচার’, “সৌভ্রান্তিক, বৈভাষিক”, “মাধ্যমিক”, “জৈন “চার্বাকু”—এই দ্বাদশখানি দর্শন পরিগৃহীত হইয়াছে।
শ্রীমৎ সায়ণ মাধবাচার্যের “সর্বদর্শনসংগ্রহে” চার্বাক, বৌদ্ধ, আহত (জৈন), রামানুজ, পূর্ণপ্রজ্ঞ, পাশুপত (শৈব ), প্রত্যভিজ্ঞা (অপর শৈব ) রসেশ্বর ( আয়ুর্বেদ ও মন্ত্রশাস্ত্রীয়), ঔলুক্য (কাণাদ), অক্ষপাদ (ন্যায় ), জৈমিনীয় (পূর্ব মীমাংসা ), পাণিনি, সাংখ্য, পাতঞ্জল (যােগ ), শাঙ্কর (বেদান্ত), শৈবদর্শন (কাশ্মীরের), এই লেখানি দর্শনের নাম উল্লিখিত আছে। যােলখানির আর অধিক দর্শনশাস্ত্রীয় (মূল) গ্রন্থের সন্ধান পাওয়া যায় না। এইগুলির মধ্যে “প্রত্যভিজ্ঞাদর্শন” শৈবদর্শনের অন্তর্গত। কাশ্মীর হইতে এই দর্শনের অনেকগুলি গ্রন্থ প্রকাশিত হইয়াছে। “রসেশ্বর দর্শন” প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের মধ্যে সন্নিবিষ্ট, তাহারও বহু পুস্তক বােম্বাই হইতে মুদ্রিত হইয়াছে। ইহার সঙ্গে যােগশাস্ত্র ও তন্ত্রশাস্ত্রের সম্বন্ধ দেখা যায়।
এক্ষণে জৈনদর্শন ও বতর্মান গ্রন্থ সম্বন্ধে কয়েকটা বিষয়ের অবতারণা করা হইতেছে।
জৈনগণ আর্যাবর্তের আর্যজাতিরই অন্তর্গত। তঁাহারা দুই সমাজে বিভক্ত দিগম্বর ও শ্বেতাম্বর। তাঁহাদের দর্শন অবতীর্ণ জিনদেবের উক্তি পূর্ণদর্শন। ইহার নামান্তর জৈনসিদ্ধান্ত, অনেকান্তবাদ, স্যাদ্বাদ, আহতমত, জৈনদর্শন, অহিংসাশাস্ত্র। [ স্বাত্মনীবজিনাে যথা—যােগবাশিষ্ট রামায়ণ। ]
জৈনদর্শনের সন্দর্ভনিচয়ের মধ্যে উমাস্বাতি আচার্যের (অথবা উমাস্বামী) “তত্বার্থ সুত্র” কিংবা “তত্ত্বার্থাধিগমসূত্ৰই সুধীসমাজে প্রসিদ্ধ আছে। এই সূত্র এবং তাহার ভাষ্য রচয়িতা শ্ৰীমন্ উমাম্বাতি আচার্য। শ্বেতাম্বর এবং দিগম্বর এই উভয় সমাজের মধ্যে তত্বার্থসূত্র শ্রদ্ধেয় সন্দর্ভ। সূক্তে দার্শনিক তত্ত্বসকলের মধ্যে সুত্রের পাঠরীতিতে কিছু মতের অনৈক্য দেখিতে পাওয়া যায়। গবর্ণমেন্ট বেঙ্গল সংস্কৃত এসােসিএশনের উপাধি পরীক্ষায় সভায় তত্ত্বাৰ্থ সুত্র (জৈন দর্শনের) গৃহীত হইয়াছে। এই সূত্রগ্রন্থে দশটী অধ্যায় আছে। গন্ধহস্তিমহাভাষ্য’ নামে প্রসিদ্ধ শ্লোকাত্মক গ্রন্থখানি উক্ত তত্বার্থসূত্রের একটি বৃহৎ ভাষ্য। সম্প্রতি এই গ্রন্থ ভারতবর্ষে পাওয়া যায় না। ইহাতে দশটি অধ্যায় আছে। প্রতি অধ্যায়ই দার্শনিক তত্ত্ববিচারে পরিপূর্ণ। তাহার শ্লোকের পরিমাণ (৮৪০০০ ) চতুরীতিসহস্র। দিগম্বর সম্প্রদায়ের মতে এই ভাষ্যগ্রন্থ প্রণেতা শ্রীমৎ সমভদ্র স্বামী, আর শ্বেতাম্বর সম্প্রদায়ের মতে শ্রীমৎ সিদ্ধসেন দিবাকরাচার্য। সম্প্রতি যে অভিনব তত্বার্থসূত্রের সন্ধান পাওয়া গিয়াছে সে সম্বন্ধে যতদূর সম্ভব লিখিতেছি। পূর্বের কথিত উমাস্বাতির তত্বার্থসূত্র ভিন্ন প্রভাচাচায়বিরচিত আর একখানি পুরাতন ব্যর্থ প্রকাশিত হইয়াছে। জৈন পতিসমাজ
Jain Education International
For Personal & Private Use Only
www.jainelibrary.org