________________
এই স্থলে উল্লেখে বিরত হইলাম। একজন আচার্যের অবস্থা ও সময় বা কার্য ভেদে অনেক নাম দেখিতে পাওয়া যায়। যেরূপ কুকুন্দস্বামীর পদ্মনন্দী, এলাচার্য, বক্ৰগ্রীব, গৃপিচ্ছ। প্রভৃতি নাম প্রকাশিত আছে। পদ্মনন্দী নামে অাচার্য স্থানীয় সপ্তম ও অষ্টম অনেক অাচার্য হইয়াছিলেন ; তাহাদের মধ্যে “পঞ্চবিংশতিকা” এবং “জম্বুদ্বীপ প্রজ্ঞপ্তি” সন্দর্ভ প্রণেতা বিখ্যাত। এই প্রসঙ্গে প্রশস্তির শ্লোক দেখিতে পাওয়া যায়,-
. . “তন্যান্বয়েহুবিদিতেবভুব যঃ পদ্মনন্দী প্রথমাভিধান। শ্রীকুকুন্দাদিমুনীশ্বরাখ্যঃ সৎ সংযমাদুদ্ভুত-চারণৰ্দ্ধিঃ ॥” ১। “অভুদুমাতিমুনীশ্বরােহসাবাচার্য শব্দোত্তর গৃধ্রপৃচ্ছঃ।
তদন্বয়ে তৎসদৃশে হিস্তি নাঃ স্যাৎকালিকাশেষ পদার্থবাদী ॥ ২॥ পূর্বের লিখিত প্রথম ও দ্বিতীয় শ্লোকের মধ্যে কিছু পাঠের তারতম্য দৃষ্ট হয়। এই গ্রন্থকার প্রথমে কুলকুলাদিনামে পরিচিত হইয়া পরিণত বয়সে উমাস্বাতি আচার্য-গৃধপিচ্ছাদি নাম ধারণ করিয়াছিলেন। প্রাকৃত বৈদগাহা (প্রাকৃত বৈদ্যগাথ।) নামে চিকিৎসা শাস্ত্রীয় একখানি প্রাকৃত গ্রন্থ কুকুৰাচার্যের বিরচিত দেখিতে পাওয়া যায়। ইহাতে চিকিৎসা বিষয়ে চারিহাজার গাথা আছে। ভাষ্যকার উমাস্বাতির পরবর্তী অপর এক উমাস্বাতি ছিলেন তঁাহার বিরচিত গ্রন্থ-পঞ্চ নমস্কার স্তবন” এবং “শ্রাবকাচার” (সন্দর্ভ) ইহা প্রসিদ্ধ আছে। অপর কাহারও মতে কুল কুন্দ স্বামী-বিরচিত চতুরশী তি সংখ্যক প্রভৃত (পাহুড়) সন প্রখ্যাত রহিয়াছে। এই সকল গ্রন্থ হইতে দেখা যায় প্রাকৃত নাটক সময়সার, পঞ্চাস্তিকায়, প্রবচনসার, রয়ণসার, পাহুড় প্রভৃতি প্রকৃত ভাষায় বহুগ্রন্থ প্রচারিত রহিয়াছে, কিন্তু উমাস্বাতি আচার্য-বিরচিত একমাত্র সংস্কৃত তত্ত্বার্থসূত্ৰভাষ্য ভিন্ন অপর কোন সংস্কৃত সন্দর্ভ পাওয়া যাইতেছে না। সম্প্রতি তত্ত্বাৰ্থসূত্রের ভাষ্যকার, টীকাকারগণের কথা বলিয়া তাহার পর দর্শনােক্ত পদার্থ বিষয়ে কিছু বলিবার ইচ্ছা আছে। এই তত্ত্বার্থাধিগমসূত্রের ভাষ্য ও টীকা-বৃত্তিকার অনেক। এখন তত্ত্বাৰ্থসূত্রের যে সকল ব্যাখ্যা পাওয়া যায় তৎসমূহের সংক্ষেপে বিবরণ প্রদান করিতেছি—(১) উক্ত সূত্ৰভাষ্য শ্রম সমন্ত ভদ্রস্বামী-বিরচিত, ইহার শ্লোক সংখ্যা চতুরশীতিসহস্র (৪৪০০০)। এই ভাষ্য সম্প্রতি ভারতবর্ষে দুষ্প্রাপ্য, শতবৎসর পূর্বে ইহা ভারতবর্ষে বিদ্যমান ছিল। এই ভাষ্যের প্রারম্ভিক মঙ্গলাচরণ একশত পনের (১১৫) শ্লোকে পূর্ণ হইয়াছে। এই মঙ্গলাচরণকে “দেবাগমস্তোত্ৰ” বা “অপ্তমীমাংসা” নামে অভিহিত করা হইয়াছে। অপ্তমীমাংসার উপরে ভট্ট অকলঙ্ক দেব “অষ্টশতী” এবং বিদ্যানন্দস্বামী “অষ্টসহস্রী” পুস্তক প্রণয়ন করিয়াছেন। এই দুইখানি সন্দর্ভ দার্শনিক সমাজে বিশেষ সমাদৃত।
“আরাধনাকথাকোষ” নামক সন্দর্ভে সমস্ত ভদ্রস্বামীর চরিতকথা স্পষ্টরূপে বর্ণিত আছে। তাহার সময় বিক্রম সম্বতের ১২৫ শকাব্দ বলিয়া প্রাচীন আচার্যের। সিদ্ধান্ত করিয়াছেন; তাহার জীবনী সম্বন্ধে “আপ্তমীমাংস।” পুস্তকের ভূমিকায় স্পষ্টভাবে আলোচিত হইয়াছে।
Jain Education International
For Personal & Private Use Only
www.jainelibrary.org