________________
দর্শনের মুখ্য গ্রহ এবং এই সমাজে শ্রদ্ধেয়। এই সূত্ৰসন্দর্ভে জৈনধর্ম ও দর্শনের সম্পূর্ণ সিদ্ধান্ত অতি সংক্ষেপে সুচিন্তায় সম্বন্ধ হইয়াছে। এইরূপ কোন ও তাত্ত্বিক বিষয় নাই যাহা এই সূত্ৰ গ্ৰহ সংগৃহীত হয় নাই। শাস্ত্ৰসিদ্ধান্তসমূদ্রকে অাচার্যদেব, তত্ত্বাৰ্থসূত্ররূপ ক্ষুদ্র ঘট মধ্যে সন্নিবিষ্ট করিয়া অতি দক্ষতা ও প্রতিভার পরিচয় দিয়াছেন।
এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তত্ত্বাৰ্থ সুত্রাবলীর অর্থগভীরতা দেখিলে সুধীসমাজকেও বিস্মিত হইতে হয়। এই সূত্রাবলী অপর কোন দর্শনের বিষয় ও সূত্রনিচয়ের অনুকরণে রচিত হয় নাই। কেবল প্রমেয় বা পদাৰ্থন রূপণ প্রমাণাধীনহেতু মহর্ষি গোতমোক্ত প্রত্যক্ষাদি প্রমাণের বিষয় উল্লিখিত ও অবধারিত হইয়াছে। এই তত্বার্থাধিগমসূত্রের প্রথম চারি অধ্যায়ে জীবতত্ত্ব, পঞ্চম অধ্যায়ে অঙ্গীবতত্ত্ব, (!) (যাহা পুদগল নামে খ্যাত ), ষষ্ঠ ও সপ্তম অধ্যায়ে আবতত্ব, অষ্টম অধ্যায়ে বন্ধতত্ব, নবম অধ্যায়ে সম্বর ও নির্জরতত্ত্ব, এবং দশম অধ্যায়ে মােক্ষতত্ত্ব বর্ণিত হইয়াছে। সকল দর্শনশাস্ত্রেরই চরম লক্ষ্য মােক্ষ বা পরিনির্বাণ, সুতরাং এই দর্শনেও সন্দর্ভের শেষ ভাগে মোকতত্ত্ব বিচারিত হইয়া মানবের চিরদুঃখনাশের পথ প্রদর্শিত হইয়াছে। এই গ্রন্থের শেষভাগে উক্ত জীবাদি সপ্ত পদার্থের ব্যাখ্যা করিবার অভিলাষ আছে।
| আচার্য উমাস্বামী গ্রোধিকা নগরীতে প্রাদুভূত হইয়াছিলেন; কিন্তু এই দর্শনশাস্ত্রপ্রণয়ন কুসুমপুর বা পাটলিপুত্র নগরে বিহরণকালে করিয়াছিলেন। জ্ঞান প্ৰদাত্রী সরস্বতী দেবীর উপাসনাকালে তিনি পাষাণময়ী দেবীর সঙ্গে আরাধনা তত্ত্ব বিষয়ে কথোপকথন করিয়াছিলেন বলিয়া সুধীসমাজে প্রসিদ্ধি আছে। ইহার পিতৃদেবের নাম স্বাতি, জননীর নাম উমা ও বাৎসী ; এই উভয় সংজ্ঞায় মিলিত হইয়। তিনি উমাস্বাতি নামে বিখ্যাত হইয়াছেন। আচার্য বিজয় সিংহ স্বীয় জম্ব, দ্বীপসমাস নামক টীকায়ও লিখিয়াছেন —“আচার্যের মাতার নাম উমা এবং জনকের নাম স্বাতি ছিল ইহাতেই তাহার নাম উমাস্বাতি হইয়াছে + + + “অন্য গ্রন্থকারস্যোম। মাতা স্বাতিঃ পিত। তৎসম্বন্ধা উমাম্বাতিরিতি সংজ্ঞা”। বৈয়াকরণসমাজেও উমাস্বাতি প্রসিদ্ধ ব্যাকরণাচার্য ছিলেন এইরূপ প্রচার রহিয়াছে। হেমচন্দ্ৰাচাৰ্যসূরি স্বরচিত “শব্দানুশাসন” নামক ব্যাকরণ গ্রন্থে অহ এবং উপ উপসর্গের উৎকৃষ্টত অর্থ প্রসঙ্গে উমাম্বাতির নাম উল্লেখ পূর্বক উদাহরণ করিয়াছেন।
| শ্বেতাম্বর সম্প্রদায়ের মতেও উমাম্বাতি কতৃক রচিত গ্রন্থের মধ্যে প্রশমরতি, “যশােধরচরিত্র”, “শ্রাবক প্রজ্ঞপ্তি”, “জম্বুদ্বীপসমাস, পূজাপ্রকরণ প্রভৃতি সন্দর্ভ পাওয়া যায়। জিন প্রভবসূরি স্বকীয় তীর্থকল্প” নামক গ্রন্থে এবং হরি ভদ্রমূরির প্রশমরতি নামক গ্রন্থের
| ! “নানামুনীনাং মহুয়ােবিভিন্নাঃ।” – অতএব জৈনমতে কাদঋষির বৈশেষিক দর্শনের ন্যায় সাতটি পদার্থ উক্ত আছে। জীব, অজীব, সম্বর, নির্জর, আস্রব, বন্ধ, মোক্ষ, এই সাতটি পদার্থের সংক্ষেপে জীব ও অজীব এই দুই পর্ব। এই পদার্থ সকলের বিবরণ বেদান্তভাষ্য, ভামতী, কল্পতরু, ষট্দর্শন সমুচ্চয়টীকা, অদ্বৈত ব্রহ্মসিদ্ধি, জৈনদর্শনের ভাষ্য, টীকা ও অন্যান্য সন্দৰ্ভাদিতে লিখিত আছে।
Jain Education International
For Personal & Private Use Only
www.jainelibrary.org