________________
ক্ষুব্ধ হয়ে বাহুবলী যখন ভরতকে আঘাত করবার জন্য মুষ্টি তুলেছেন তখন না জানি কোথা দিয়ে কি হয়ে গেল। বাহুবলীর মনে জাগতিক সুখ সম্পর্কে একটা ধিক্কার এলো। ভাবলেন, ধিক্। সামান্য রাজ্যসুখের জন্য কিনা তিনি তার অগ্রজকে হত্যা করতে যাচ্ছিলেন। বাহুবলী সেই মুহূর্তেই রাজ্য ধন সম্পদ সমস্ত কিছু পরিত্যাগ করে প্রব্রজ্যা গ্রহণ করলেন।
এর পর বাহুবলী কঠোর তপস্যায় মগ্ন হলেন। ধ্যানে তিনি এমনি তন্ময় হয়ে গেলেন যে তার গা বেয়ে লতা উঠল, পায়ের কাছে উইয়ে বাসা বাঁধল। কিন্তু এই কঠোর তপস্যা সত্ত্বেও বাহুবলীর কেবল-জ্ঞান লাভ হল না।
ভগবান ঋষভদেবের মেয়ে ব্রাহ্মী ও সুন্দরী, যাঁরা অনেকদিন প্রব্রজ্যা গ্রহণ করেছেন, তারা একদিন পিতাকে জিজ্ঞাসা করলেন, বাহুবলী কেবল-জ্ঞান লাভ করেছেন কিনা?
| সে কথা শুনে ঋষভদেব একটু হাসলেন। বললেন, না। হাতীর ওপর চড়ে থাকলে কেবল-জ্ঞান লাভ করা যায় না।
হাতীর ওপর চড়ে থাকা আর কিছু নয়, অভিমান। কিসের অভিমান ? শ্ৰমণ ধর্মানুযায়ী পূর্ব-দীক্ষিত ছােট ভাইদের বন্দনা করতে হবে বলে বাহুবলী যে এখনাে ঋষভদেবের কাছে আসতে পারেন নি সেই অভিমান।
ব্রাহ্মী ও সুন্দরী তখন বাহুবলীর কাছে গেলেন যেখানে তিনি গভীর ধ্যানে মগ্ন। তারা সেখানে গিয়ে গান করে তাকে সেই কথা জানিয়ে দিলেন--দিনের আলােয় গান করলেন, তারা ছিটিয়ে দেওয়া রাতের অন্ধকারে গান করলেন। সেই গানের সুরে বাহুবলীর ধ্যান-স্তিমিত চেতনা ধীরে ধীরে ফিরে এল। তিনি গানের তাৎপর্য বুঝতে পারলেন। তারপর যেই নিরভিমান হয়ে ঋষভদেবের কাছে যাবার জন্য পা তুলছেন,
Jain Education International
For Personal & Private Use Only
www.jainelibrary.org