________________
বর্ধমান মহাবীর আলাে যেন প্রবেশ করল তার কুক্ষীতে। সে আলােয় আলােকিত হয়ে উঠেছিল সব কিছু—সে আলাে এমনি উজ্জ্বল। ঠিক যেন মধ্যাহ্ন দূৰ অথচ দাহহীন।
স্বামীকে তুলে সব কথা খুলে বললেন দেবানন্দা। বললেন, খারাপাতে নীপের বনে যেমন শিহরণ জাগে, সেই শিহরণ আমার সর্বাঙ্গে। সেই এক আনন্দের পরিপ্লাবন।
শুনে উল্লসিত হয়ে উঠলেন ঋষভদত্ত। তারপর দেবানন্দার আনন্দিত মুখের দিকে চেয়ে বললেন, দেবানন্দা তুমি যে স্বপ্ন দেখেছ, সে স্বপ্ন ভাগ্যবতী রমণীরাই দেখে থাকে। এতে আমাদের বেদবেদাঙ্গ-পাঙ্গত পুত্র হবে বলেই আমার মনে হয়। শুধু তাই নয়, আজ হতে আমাদের সর্ববিধ উন্নতি।
অঞ্জলিৰদ্ধ হাত কপালে ঠেকিয়ে দেবানন্দা মনে মনে প্রণাম করলেন ভগবান পার্শ্বকে। তারপর স্বামীর দিকে চেয়ে বললেন, দেবায়প্রিয়, তােমার কথাই যেন সত্য হয়।
দেবানন্দার স্বপ্ন দেখবার পর ছয় পক্ষকালও অতীত হয়নি। রাত তখন নিশুতি। শুয়ে শুয়ে আবার স্বপ্ন দেখছেন দেবানন্দা। এবারে হস্তী, বৃষ নয়। দেখছেন, যে আলাে তার কুক্ষীতে প্রবেশ করেছিল, সেই আলাে বেরিয়ে এসে ঘূর্ণি হাওয়ার মত পাক খেতে লাগল। তারপর তীরের বেগে ছুটে গেল ক্ষত্রিয়-কুণ্ডপুর জনপদের দিকে। দেবানন্দা আরাে দেখলেন, সে আলো ঘুরতে ঘুরতে ছেয়ে ফেলল ক্ষত্রিয়াণী ত্রিশলাকে। • ত্রিশলা চুরি করে নিয়ে গেল আমার স্বপ্ন—বলে স্বপ্নের মধ্যেই চীৎকার দিয়ে উঠলেন দেবানন্দা। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর ঘুম ভেঙে গেল। মুম ভেঙে গেল ঋষভদত্তেরও। কি হল—ৰলে সাড়া দিয়ে তিনি উঠে বসলেন।
কি বিঞ্জ স্বপ্নলে কান্নায় ভেঙে পড়লেন দেবানন্দা। প্রদীপের আলােয় দেবানন্দার মুখখানা তুলে ধরলেন ঋষভদও।