________________
ভূমিকা
জৈনদের প্রধান শাস্ত্রকে আগমশাস্ত্র বলে । প্রত্যেক তীর্থঙ্করের মুখ্য কয়েকজন শিষ্যকে গণধর বলে । এই গণধরগণ সেই সেই সময়ে যে তীর্থঙ্কর থাকেন তাঁহাকে বন্দনা করিয়া প্রশ্ন করেন, ভগবান, তত্ত্ব কি? এইরূপে তিনবার জিজ্ঞাসিত হইয়া প্রশ্নের উত্তরে তীর্থঙ্কর বলেন, “উপ্পণেই বা বিগমেই বা ধুবেই বা” অর্থাৎ উৎপন্ন হয়, বিনাশপ্রাপ্ত হয় ও ধ্রুব থাকে । এই বাক্যকে ত্রিপদী কহে। এই বাক্যকে অবলম্বন করিয়া জৈন দার্শনিকগণ বলেন যে প্রত্যেক সৎপদার্থের মধ্যে প্রতি সময়ে যুগপৎ উৎপত্তি, বিনাশ ও স্থিতির ক্রিয়া চলিতেছে । ইহাই জৈন দর্শনের সার কথা, ইহাই পরিণামবাদ । আবার এই বাক্যকেই অবলম্বন করিয়া গণধরগণ দ্বাদশাঙ্গ শাস্ত্র রচনা করেন । ইহাই দ্বাদশাঙ্গী গণিপিটক। গণি শব্দের অর্থ আচার্য। পিটক শব্দের অর্থ পেটিকা', অর্থাৎ আচার্যগণের পেটিকায় সযত্নে রক্ষিত রত্ন ।
এই দ্বাদশাঙ্গ শাস্ত্রকেই আগম বলে। কিন্তু এই দ্বাদশাঙ্গ ব্যতিরিক্ত আরও অন্য কিছু শাস্ত্র আছে যাহা আগম পদবাচ্য। তীর্থঙ্করগণের গণধর প্রত্যেক বুদ্ধ, শ্রুতকেবলী ও দশপূর্বজ্ঞ দ্বারা রচিত শাস্ত্র
T
১। বৌদ্ধশাস্ত্রের ত্রিপিটক শব্দের সহিত তুলনীয় ।
২। তীর্থঙ্করগণ প্রথম উপদেশের সময় কয়েকজন নবদীক্ষিত সাধুকে গণধরপদ প্রদান করেন ও অন্যান্য সাধুগণকে তাঁহাদেরই অধীনে শাস্ত্রাভ্যাস করিতে অনুজ্ঞা দেন। মহাবীর স্বামীর ইন্দ্রভূতি গৌতম প্রমুখ একাদশ জন গণধর ছিলেন। গণি বলিতেও আচার্য বুঝায়, অন্যান্য সাধুর মধ্যেও অনেক গণি হইতে পারেন। কিন্তু গণধর হইতে পারেন না। তীর্থঙ্কর নির্দিষ্ট সাধুগণই কেবল গণধরপদবাচ্য ।
৩। যাঁহারা আকাশের মেঘের আকারের পরিবর্তন দর্শন করিয়া বা অন্য কোন বাহ্য বস্তুর নিমিত্ত প্রাপ্ত হইয়া বৈরাগ্য ও সম্যক্ জ্ঞান লাভ করতঃ সিদ্ধিপ্রাপ্ত হন তাঁহাদিগকে প্রত্যেকবুদ্ধ বলে।
৪। যাঁহাদের চতুর্দশ পূর্বসমেত সম্পূর্ণ দ্বাদশাঙ্গের জ্ঞান আছে তাঁহাদিগকে চতুর্দশ পূর্বধারী বা শ্রুতকেবলী বলে। ইহারা কেবলজ্ঞান সম্পন্ন নহেন কিন্তু সমগ্র শ্রুতশাস্ত্রের জ্ঞান থাকায় কেবলজ্ঞানীর ন্যায় বস্তুতত্ত্ব প্রকাশ করিতে পারেন বলিয়া ইঁহাদিগকে শ্রুতকেবলী বলে ।
যাঁহাদের একাদশ অঙ্গশাস্ত্র ও দশ পূর্বশাস্ত্রের জ্ঞান আছে তাঁহাদিগকে দশপূর্বজ্ঞ
৫।
বলা হয় ।